bibidho-bansh

বাঁশ
রম্যরচনা
উল্লাস মল্লিক


বহুদিন আগে একটা রসিকতা খুব চলত। রাইটার্স বিল্ডিং আর টিটাগড় পেপার মিলের বৈসাদৃশ্য কোথায়? তখন রাজ্যের প্রধান কার্যালয় ছিল রাইটার্স বিল্ডিং। ব্রিটিশ আমলে তৈরি লাল রঙের অট্টালিকার ভেতর নানা সরকারি দপ্তর। মৎস্য থেকে মৌমাছি।

মাকড়সার জাল আকর্ণ কালিঝুলি মাখা দেওয়াল আর সিলিং। হরপ্পা যুগের সিলিং ফ্যান যত না হাওয়া দিচ্ছে, শব্দ ছাড়ছে তার চাইতে বেশি। থাকে বলে, খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি। আর টেবিলের ওপর জমে থাকত ফাইলের স্তুপ। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর নট নড়ন চড়ন। এমন ধুলো জমে যে রংই চেনা যায় না ফাইলের। এক টেবিল থেকে আর এক টেবিলে নড়তে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করে। তারপরও চাই মধুর বাক্য আর টেবিলের তলদেশীয় লেনাদেনা এর জন্য অবশ্য কর্মচারীদের দোষ দেওয়া যায় না। তাদের প্রবল কাজের চাপ। অফিসে এসে প্রথম হাত পা ছড়িয়ে বিশ্রাম নেওয়া। পথের ক্লান্তি তো এভাবেই দূর করতে হয়। তারপর চা আর খবরের কাগজ। তারপর মারাদোনার হাঁটু, চিড়িয়াখানার বাঁদর, সোমালিয়ায় বোমা, উগান্ডার আলু, মঙ্গলে জল, জলে আর্সেনিক – এসব নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে গুরুগম্ভীর আলোচনা। জনগণেশের মঙ্গলচিন্তা। এসবের মধ্যে ফাইলের হাত দেবার সময় কোথায়! ঠিক এমনই এক সময়ে ওই রসিকতাটির জন্ম। টিটাগড় পেপার মিলের আর রাইটার্স বিল্ডিংয়ের মধ্যে অমিল কোথায়! উত্তর – প্রথমটায় বাঁশ ঢুকে কাগজ হয় আর দ্বিতীয়টায় কাগজ ঢুকে বাঁশ হয়। এ যে কত বড় অমোঘ বাণী তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন।

যাই হোক, আমাদের আজকের আলোচনা পেপার মিল বা রাইটার্স বিল্ডিং নিয়ে নয়। আজকের আলোচনা বাঁশ নিয়ে।

এক মহাপুরুষ নাকি বলে গেছেন, মানুষ পৃথিবীতে আসে সারাজীবন বাঁশ খাবে বলে। আমার নিজের অবশ্য ধারণা মানুষ বাঁশ খেতে খেতে একটা সময় মহাপুরুষ হয়ে যায়। তখন সে সুখ-দুঃখ, ঘাম-ঘামাচি, শীত-গ্রীষ্ম, বউয়ের মুখ ঝামটা, বসের খিঁচুনি, অতিবৃষ্টি, মাথার খুসকি সবকিছু দাঁত কেলিয়ে সহ্য করে নেয়।

আমাদের বাড়ির অদূরেই একটা বাঁশবাগান। বেশ একটা রহস্যময় হাতছানি। আলোআঁধারির লুকোচুরি। সন্ধের পর মাঝে মাঝে বেশ গোলমতো চাঁদ ওঠে। অমন চাঁদ দেখে একদিন আমার গলা খুসখুস করে উঠল। বাঁশবাগান আর চাঁদ বিষয়ক যে বহুল প্রচলিত গানটি আছে সেটাই গেয়ে উঠলাম। অনতিবিলম্বে বাঁশবাগানের অন্ধকার থেকে একদল শেয়াল ডেকে উঠল হৌ হৌ করে। একটু পরেই বুঝতে পারলাম ওরা সুর মেলাচ্ছে আমার সঙ্গে। সেই সঙ্গে এটাও বুঝলাম, ওদের রেওয়াজি গলা, সুরজ্ঞান আমার চাইতে অনেক ভাল। তাই আমি চুপ করে গেলাম। বাকিটা ওরাই শেষ করল।

মাঝে মাঝে দেখতাম, দু’চারজন লোক এসে বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কেন কাটছে কোথায় যাচ্ছে এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর বয়স তখন নয়। বাঁশবন তখন আমাদের কাছে লুকোচুরি খেলার জায়গা। সেই সময়ই বাঁশের অভিনব উপযোগিতার কথাটা প্রথম শুনি। বাঁশ দেওয়া। একদিন পাড়ার বাবলুকাকার দোকানে চিনি কিনতে গেছি; শুনলাম; বাবলুকাকা তারককাকাকে বলছে, গগন তরফদারের পিছনে এমন বাঁশ দেব ব্যাটা টের পাবে। শুনে মজা পেয়েছিলাম। হেসেও ফেলেছিলাম। কারণ চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল এক দৃশ্য। বিশাল লম্বা একটা বাঁশ ধরে আছে বাবলুকাকা আর সেই বাঁশের মাথায় বসে আছেন গগন তরফদার। বসে আছেন আর হাত পা ছুড়ে চিৎকার করছেন – ওরে বাবলু, তোর সব টাকা শোধ করে দেব; তুই আমাকে নামিয়ে দে বাবা।

কিছুদিন পর দেখলাম, আমাদের বাড়ির সামনের ঝাড়ে বাঁশ কাটা হচ্ছে, বড় বড় বাঁশগুলোই কেটে নিচ্ছে। আমি দৌড়ে বাবলুকাকার কাছে গেলাম। বললাম, ও কাকা, সব বড় বড় বাঁশ কেটে নিল যে। বাবলুকাকা বলল, তাতে কী হয়েছে। আমি বললাম, তাহলে গগনজেঠুর পিছনে কী দেবে! সেদিন যে বললে।

বাবলুকাকা বলল, দূর বোকা, এ বাঁশ সে বাঁশ নয়; বড় হলে বুঝবি।

খুব বড় হতে হল না। তার আগেই বুঝে গেলাম বাঁশ কাকে বলে। বাঁশ দিলেন মাননীয় কে. সি. নাগ। সঙ্গে এক বাঁদর। বাঁশটা আবার এমনি বাঁশ নয়, তেল মাখানো বাঁশ। আজ পর্যন্ত আমি কে. সি. নাগ ছাড়া আর কাউকে বাঁশে তেল মাখাতে দেখিনি। বেশিরভাগ মানুষই তেলা মাথায় তেল মাখায়। যাই হোক, সেই ব্যাটা বাঁদর বাঁশ বেয়ে কিছুটা ওঠে আবার হড়কে কিছুটা নেমে আসে। আবার ওঠে, আবার নামে। কতক্ষণে একেবারে টঙে উঠবে বাঁদর। পাতার পর পাতা ফুরিয়ে যায়। যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ ল.সা.গু. গ.সা.গু. ত্রৈরাশিক সিঁড়িভাঙা সব কিছু প্রয়োগ করি। কিন্তু বাঁদরের আর ভিকট্রি স্ট্যান্ডে ওঠা হয় না। রাতে ঘুমের মধ্যে সেই বাঁদর হানা দেয়। দেখেই বলে উঠি, উহ! কী মুশকিলে ফেললি আমায়।

বাঁদর বলে, আমি কী করব, আমিও কি কম নাকাল হচ্ছি! হাত পা ব্যথা হয়ে গেল।

আমি বললাম, বুদ্ধি করে যদি হাতে পায়ে একটু ছাই মেখে নিতিস, তাহলে আর হড়কাত না।

বাঁদর বলল, ইশ্‌, ঠিক বলেছ; তাহলে কবে আমি শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে টঙে উঠে যেতুম।

বাঁদর মাথা চাপড়াতে চাপড়াতে চলে গেল। ঘুম ভাঙতে দেখলাম কুলকুল করে ঘামছি।

স্কুল জীবনের পর তৈলাক্ত বাঁশ থেকে মুক্তি পেয়েছি। কলেজ জীবনে খেয়েছি প্রেমের বাঁশ।

কলেজের ফার্স্ট ইয়ারেই বন্ধুত্ব হল অনন্যার সঙ্গে। অনন্যা বেশ লম্বা। ফর্সা রঙ, মুখটা ভারী মিষ্টি। অনন্যা হাসলে আরও কেলেংকারি। দু’গালে টোল। সেই টোলে কখন যেন টাল খেয়ে গেলাম। ব্যাস, ক্লাস বাঙ্ক করে সিনেমা, ভিক্টোরিয়া। অনন্যারা আবার গরীব। ওর বাবার ছোট্ট একটা পানগুমটি আছে। তাই টিউশন নিতে পারে না অনন্যা। আমি পড়তাম হেড-ডিপু PNB-র কাছে। আমার নোটস অকাতরে দিতাম ওকে। এমনকী ফটোকপির পয়সাটাও। পরীক্ষায় আমার থেকে কিছু বেশি নম্বর পেল অনন্যা। আমি আটকে গেলেও ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়ে গেল ও। দেখাসাক্ষাতে ভাঁটা পড়ল। দেখা করার কথা বললেই বলে, ইমপর্টেন্ট ক্লাস আছে। ইউনিভার্সিটিতে এত ইমপর্টেন্ট ক্লাস থাকে জানা ছিল না। হতেও পারে। এ বিপুলা ধরণীর কতটুকুই বা জানি। এখনও নাকি কোনও কোনও লাইনে লোকাল ট্রেন ঠিক সময়ে পৌঁছায়। তাই ভাবলাম, হলেও হতে পারে। কিন্তু ক্রমে খবর পেলাম ব্যাপার আছে। অনন্যা ইমপর্টেন্ট ক্লাস করে বটে, কিন্তু কোনও স্যারের কাছে নয়। ইউনিভার্সিটি বিল্ডিং –এর পিছন দিকে রাকেশ নামে একটা ছেলের সঙ্গে। বুঝলাম ঠাকুর থাকবি কতক্ষণ…! একদিন অনার্সের নোটসগুলো দেখছিলাম। দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, আমার প্রেমটাও রাইটার্স বিল্ডিং-এ কাগজ ঢুকে বাঁশ হল।

বাঁশবনে ডোমকানা। সবাই জানে। আবার কখনও কখনও কানা প্রেমকে বাঁশবনে ঢুকে যেতে দেখেছিলাম আমরা। কানাইদা আর ঝুমুদি। প্রেম হল ওদের। কিন্তু বাড়ি তালিবানদের হেডকোয়ার্টার।

তাই দেখাসাক্ষাতের চান্স লিপ ইয়ারের মতো।

মোবাইল তখন সায়েন্স ফিকশনে। শুধু চিঠিই ভরসা। সেখানেই যত হৃদয়ের আকুতি মনের মাধুরী। কিন্তু তাতে কি প্রাণ তৃপ্ত হয়। বিরিয়ানির বর্ণনা পড়ে, তা সে যতই নিখুঁত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ হোক, সেই স্বাদ কি জিভে পাওয়া যায়। অতএব তারা ঠিক করল মোলাকাত করবে। করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে। কিন্তু দেখা করবে কোথায়! চারদিকে সমাজপতিরা প্রেম-ডিটেকটর নিয়ে সদা জাগ্রত। হেডকোয়ার্টারে ঠিক খবর চলে যাবে। অনেক বিচার বিশ্লেষণের পর ভেন্যু ঠিক হল। পশ্চিমপাড়ার বাঁশবাগান। ওদিকে জনসমাগম কম। বিশেষ করে সন্ধের পর একেবারে নির্জন।

পরিকল্পনা মতো নির্দিষ্ট সময়ে দুজনেই পৌঁছে গেল অকুস্থলে। অনেকদিন পর দেখা। যে কোনও বাঁশবাগান, শেয়ালের মতো, মশারও মুক্তাঞ্চল। মশা মারতে মারতে অনেক আবেগ থরোথরো মান অভিমানের কথা হল। এর মধ্যেই মিষ্টি একটা চাঁদ উঠল আকাশে। বাঁশপাতার ফাঁক গলে চাঁদের আলো। কাছাকাছি কোথাও একটা কোকিল আহ্লাদে আটখানা হয়ে ডেকে যাচ্ছে। তারপর একটা মিচকে দক্ষিণা বাতাস পটভূমিটাকে এমন আকুলি বিকুলি করে দিল যে একে অপরের হাত ধরে ফেলল। কান টানলে যেমন মাথা আসে, হাত টানলে বোধহয় ঠোঁট আসে। কানাইদার ঠোঁট এগোচ্ছিল ঝুমুদির ঠোঁটের দিকে। হঠাৎ ঝুপ করে ওপর থেকে কে যেন লাফিয়ে পড়ল দুজনের মাঝখানে। দুজনেই এমন ছিটকে গেল যেন মানুষ নয়, জাপানি বোমা পড়েছে। দেখা গেল, আর কেউ নয়, দাসবাড়ির বলাই। লোকে যাকে ছিটেল বলাই বলে জানে। আগে অবশ্যও এমন ছিটেল ছিল না। হঠাৎ কবিতা লেখা শুরু করল। ছোট বড় মাঝারি সবরকম পত্রিকায় পাঠাত সেই কবিতা। কিন্তু সবজায়গা থেকেই পত্রপাঠ নাকচ। তখন সে এলাকার লোকজনকে ধরে ধরে কবিতা শোনাতে লাগল। কিছুদিন পর দেখা গেল, বলাইকে দেখলেই লোকে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়াচ্ছে। ফলে আরও মনমরা হয়ে গেল বলাই। তখন সে গাছে উঠে বিড়বিড় করে পদ্য আওড়াত। স্বস্তি পেল লোকজন – যাগগে বাবা, গাছকে শোনাচ্ছে, শোনাক। তো সেদিন সে পশ্চিমপাড়ার বাঁশবাগানে ঢুকে বাঁশগাছে উঠে বসেছিল। কানাইদা আর ঝুমুদির চুম্বনের থার্ড বেল পড়ে গেছে দেখে আর সামলাতে পারলনা নিজেকে। ঝুপ করে ওপর থেকে পড়ল। আর পড়েই দুহাত তুলে নাচতে নাচতে কবিতা আওড়াতে লাগল – বাঁশবাগানে চুমু

কানাই এবং ঝুমু।

হতভম্ব কানাইদা, আর ঝুমুদি দেখল ছিটেল বলাই কবিতা আওড়াতে আওড়াতে দৌড়ে বেরিয়ে গেল বাঁশবাগান থেকে।

বলাইয়ের কবিতা সম্পাদককুল বুঝতে না পারলে কী হবে, পাড়ার লোকে প্রাঞ্জল বুঝে গেল।

চারদিকে ছিছিক্কার। ম্যা গো, সন্ধেবেলা বাঁশবাগানে।

পরদিন থেকে জেডপ্লাস নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হল ঝুমুদিকে। এবং দুমাসের মধ্যেই বিয়ে। বিশাল প্যান্ডেল আলো সানাই। পাড়াশুদ্ধ লোক কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে এল। চিলেকোঠার অন্ধকার ঘরে বসে একা একা আঙুল চুষল কানাইদা।

গল্প এখানেই শেষ নয়। কিছুদিন পর পাড়ায় হইচই। কানাই নাকি পুরষ্কার পেয়েছে। কী পুরষ্কার? না, কবিতার পুরষ্কার। কিছুদিন আগে ছন্দবাণী সাহিত্য পরিষদ কবিতা প্রতিযোগিতা কারে। সেখানে একটি কবিতা পাঠিয়েছিল কানাইদা। সেটাতেই ফার্স্ট প্রাইজ লেগে গেছে।

আমরা, যারা কবিতাটা পড়েছিলাম তারা অবাক।

বাঁশবাগানে চুমু

বলাই এবং কুমু।

অর্থাৎ ছিটেল বলাইয়ের কবিতাটাই একটু এদিক ওদিক করে লিখে দেওয়া হয়েছে।

বিচারকদের বিচারে ফার্স্ট হয়ে গেল সেই কবিতা।

তবে সমালোচকদের মধ্যে কিছু মতপার্থক্য দেখা দিল। কেউ বললেন, এটা প্রেমের কবিতা। কেউ বললেন নিছক প্রেমের কবিতা বললে ভুল হবে। এই কবিতার মধ্যে দিয়ে বিপ্লবের জয়গান গাওয়া হয়েছে, ভুখা মানুষকে বিদ্রোহে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বাঁশ শুধু পিছনে দেবার নয়। বাঁশের অন্য ব্যবহারও আছে। বাঁশ হচ্ছে বিদ্রোহের প্রতীক। সেই জন্যেই তিতুমীর বাঁশের কেল্লা করে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে।

আবার কেউ বললেন, এটা আসলে একটা যুদ্ধবিরোধী কবিতা। বলাই আর কুমু আসলে দুটো যুদ্ধরত দেশের প্রতীক। কবি তাদের যুদ্ধ থামিয়ে চুমু খেতে বলছেন, মানে কাছাকাছি আসতে বলছেন।

যাই হোক, মাত্র দুলাইনে বিরাট একটা দর্শনকে ধরেছেন কবি। এই রকম দুলাইনের কবিতাকে ইংরিজিতে বলে কাপলেট। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এমন অনেক কালজয়ী কাপলেট আছে।

কানাইদা দেখল, খেলাটা তো খারাপ নয়। ওরাং ওটাং মার্কা কবিতা লিখে ফার্স্ট প্রাইজ পাওয়া যায়। একটু চেষ্টা করলেই অমন কবিতা সে লিখতে পারে। তারপর থেকে কানাইদা কবিতা লেখা শুরু করল। এবং কী আশ্চর্য, ছোট-বড়-মাঝারি সব কাগজেই ছাপা হতে থাকল তার কবিতা। তবে তার আগে ছোট্ট একটা কাজ করেছে কানাইদা। ছদ্মনাম নিয়েছে। ‘তৃণদ্রুম’। কারণ তিনি বলেছেন, বাংলা সাহিত্যে ‘কানাই’ নাম নিয়ে কবি হওয়া যাবে না।

এমনই হইচই ফেলে দেওয়া একটা কবিতার কথা বলি –

তুমি টালির চাল, আমি মাটির দাওয়া

তুমি খেতের আল, আমি দখিন হাওয়া।

সমালোচকরা লিখলেন, এ কবিতা সাধারণ কোনও কবিতা নয়, এ কবিতা, প্রকৃতির কাছে ফিরে যাওয়ার কবিতা; কবি ভূয়োদর্শী, যন্ত্র সভ্যতার বিষময় ফল সম্পর্কে সাবধান করেছেন মানুষকে।

বেশ নাম ছড়িয়ে পড়েছে কবি তৃণদ্রুমের। প্রচুর সভাসমিতিতে ডাক পাচ্ছে। প্রচুর পাঠিকা। তার মধ্যে কার কার সঙ্গে প্রেম বোঝার উপায় নেই। সম্প্রতি কবি তৃণদ্রুম ওরফে কানাইদা একটা অন্যরকম বিষয় নিয়ে কিছু কবিতা লিখেছেন। প্রত্যেকটা কবিতার মধ্যে বাঁশের প্রসঙ্গ আছে। কাব্যগ্রন্থের নাম – ‘বংশ বাগিচা’। বইটি বেশ হোমরা চোমরা ধরণের একটা পুরষ্কারও পেয়েছে। বই থেকে একটা কবিতা আপনাদের শোনাতে পারি

– বাঁশের আগায় ঝরে নিশির শিশির,

তাতে কী এল গেল তোর মাসির পিসির!

ব্যাস, একটাই। এর বেশি পড়তে হলে বংশ বাগিচা কিনে পড়ুন। ৪০% স্পেশাল ডিসকাউন্ট চলছে!

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *