অতীতের শরীর ছেনে জন্ম নিল ভবিষ্যৎ, আমরা প্রবেশ করলাম আরও একটি নতুন বছরে। নতুন নিয়ে মানুষের আবেগ চিরকালই বড় বেশি, যদিও সকলেই জানে তাতে খুব বড়সড় কোনো পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা থাকে না। মুখে যতই বলি না কেন, নতুন বছরের সব শুভ হোক, মনে মনে আমরা বিলক্ষণ জানি, বিশ্বের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত দ্রুত গতিতে অশুভের দিকেই এগোচ্ছে। নতুন বছরে বিশ্বের উষ্ণায়ণ আরও দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকবে, বরফের চাদর গলতে থাকবে ততোদিক দ্রুততায়। দাবানল, বন্যা, সাইক্লোন, তুষারঝড়- এইজাতীয় প্রাকৃতিক দূর্যোগের সংখ্যা এবং ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে আরও বেশি সংখ্যায়।
বাংলাভাষীদের জন্য বিগত বছরের শেষদিকটা ভালো যায়নি। বাঙালি হিসাবে যে গরিমা আমরা অনুভব করি, তা খানিকটা ম্লান হয়েছে বৈকি! বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা আমাদের চিন্তায় রেখেছে। পরিবর্তনের নামে নিজেদের অতীতকে অস্বীকার করতে চাওয়া এবং তাকে মুছে ফেলতে চাওয়ার প্রচেষ্টা সমর্থনযোগ্য নয়। আর ধর্মের নামে নৃশংসতাকে কোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষই মেনে নেন না, নিতে পারেন না। ওদেশের বিপন্ন মানবতার ছাপ আগামীদিনেও থেকে যাবে প্রতিটি বাঙালির মননে। নতুন বছরে এই পরিস্থিতির যাতে পরিবর্তন হয়, সেই আশায় আমরা রইলাম।
বাঙালির তেরো নম্বর পার্বণ, বই-পার্বণের বৃহত্তম আয়োজন প্রস্তুত। বাংলার অক্ষরকর্মী এবং অক্ষরপ্রেমীরা বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন এই কয়েকটা দিনের জন্য। এই উৎসবের সঙ্গে যুক্ত সকলকে শুভকামনা জানাই। তবে এবছরের বইমেলা প্রাঙ্গনের কেন্দ্রে বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নের অনুপস্থিতি বইপ্রেমীদের বিশেষ মনোবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। একজন শিল্পীর মতো একজন সাহিত্যিকও জাত-ধর্মের উর্দ্ধে থাকেন, রাজনৈতিকদের উচিত এই সত্য সর্বদা স্মরণে রাখা। আর দাঙ্গাবাজদের একটাই ধর্ম, বর্বরতা। পৃথিবীর সব দেশে, সব কালে এটাই সত্য। নতুন বছরে আমরা বাংলাদেশের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি, শরীর ও মনের সমস্ত ক্ষত সারিয়ে ফেলে সেখানকার মানুষ যেন খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারে, আমরা অন্তর থেকে এটাই চাইব।
আমরা তাও নতুন আশা নিয়ে শুরু করি নতুন বছর। অনেক আশা নিয়ে অপেক্ষা করি বইমেলার জন্য। প্রকাশ করি নতুন বছরের নতুন সংখ্যা। অপারবাংলা সপ্তম বর্ষে পা দিলো। কিছুদিন আগে আটলান্টাতে অপারবাংলার পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছিলো এক অসাধারণ সান্ধ্য বৈঠক। আমরা কিছু সময় কাটাতে পেরেছিলাম সারা বিশ্বের অন্যতম আলোড়নকারী প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন এর সাথে। আটলান্টা তে সব রকমের প্রশাসনিক সুরক্ষা নিয়ে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের সম্বন্ধে জানতে পারবেন শুভশ্রী নন্দীর লেখায় বিনোদন বিভাগে।
উপন্যাস, গল্প, কবিতা, অণুগল্প, প্রবন্ধ, ফিচার, অনুবাদ, ভ্রমণ, রান্নাঘর সহ সব বিভাগেই আছে ভারত, বাংলাদেশ, আমেরিকার বিশিষ্ঠ লেখকদের অবদান। কলকাতা বইমেলাতে বাংলাদেশ না থাকলেও, সদ্য প্রকাশিত অপারবাংলাতে রয়েছে দুই বাংলার মিলন। আপনারা পড়ুন।
আপনারা শেয়ার করুন। গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া দিন আরো ভালো পত্রিকা প্রকাশের জন্য। বিদ্বেষ নয়, সহিষ্ণুতা চাই। পারস্পরিক সহযোগিতায় বাংলা সাহিত্যকে এক আকাশের তলায় রাখতে অপারবাংলা বদ্ধপরিকর।
আনন্দ হোক।
শুভ নাথ
সম্পাদক
অপারবাংলা ত্রৈমাসিক বাংলা সাহিত্য পত্রিকা
সম্পাদক
অপারবাংলা ত্রৈমাসিক বাংলা সাহিত্য পত্রিকা
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন