জনতার কথা
(এক যুদ্ধ শিশু দৃপ্ত কথা)
শাহিদা মিলকি
কী এক মায়াজালে বদলে যায় প্রহরের পর প্রহর।
পরম প্রাপ্তির আলোয় যেন নিশ্চিন্তে অনর্গল কথা বলা।
গহন পাতাল থেকে একটার পর একটা,
সংরক্ষিত পতিত আলো অবমুক্ত হতে থাকে,
স্বপ্নের স্বরূপ বেরিয়ে যায়
দেহের সীমা অতিক্রম করে।
চলে ভাঙা গড়ার খেলা আর পিশাচের লেলিহান লালা।
চলে চেটে খাওয়ার হিংস্রতা আর ঘৃণ্য পিপাসার তৃপ্ততা
সবাই কি পাহাড়ের কাছে নতজানু হতে পারে?
দিগন্ত বিস্তারী তপ্ত বালুকাবেলায় এক ফোঁটা পানির প্রত্যাশা,
নীল হয়ে থাকা এক ভূখন্ড তড়পায়!
আর শিকারীর মৌন লোলুপতার উলঙ্গ উচ্ছ্বাস
হিড়িম্বার পীড়নকেও হার মানায়!
ট্যাগ না দিলেও কিন্তু অন্ধকারে আড়াল করা যায় না তারুণ্যের দীপ্তি,
লীন হয়ে থেকো অরণ্য কথায়!
মাটিও জানে বাগানীর থেকে ফুলের কদর বেশি,
যেমন ভালো লাগার কোনো জোরালো যুক্তি থাকে না,
তেমনি সুনীল আকাশের বুকে গভীর ক্ষত রেখার খোঁজ কখনোই কেউ রাখে না,
রাখে না খবর জনতারও।
সেই অমিয় ঐশ্বর্যের সুরভিত বুনন সাহসী বুকের দৃপ্ততা,
ভাটিয়ালী সুরে তপ্ত হয় ঘাস সবুজের দ্বি-প্রহর।
আত্মজার মসৃণ পেলবতা স্বপনহীন সাদায়
অস্থির হাওয়ার দোলায় হারিয়ে যায়।
কুয়াশা ভেজা সবুজাভ চাঁদোয়া, হলুদ সরিষার ঘ্রাণ
আস্থা হারানোর যুদ্ধক্লান্ত শরীর যন্ত্রণায় বুঁদ হয়।
প্রকৃতিকে প্রতারণা করে আষাঢ়ের আকাশ
চৈত্রের রুক্ষতার সাথে হাত মিলায়।
তাহলে কি নির্বাসন থেকে লোকালয়ে ফেরা হবে না?
চোখ ধাঁধাঁনো বর্তমানের জৌলুশে অতীতের সরলরেখা
হারিয়ে যায় কোনো গভীর নিশ্ছিদ্র রেখায়৷
তুমি জনতা এক ‘যুদ্ধশিশু’।
হাতে তুলে নিলে মায়ের তারুণ্যমাখা পদাবলির যাবতীয় গ্লানি আর ঘৃণ্য সমর্পণ।
জনতা বুঝিয়ে দেয় আমি আছি থাকব।
আমি কারুর দয়ায় নয়, কারুর মায়ায় নয়,
থাকব এ মাটির পলল আলোর দায়বদ্ধতায়।
আমাকে থাকতে হবে, আমি যে জনতা।
জনযুদ্ধের আমিও তো একজন অদৃশ্য রণক্ষেত্রের আরণ্যিক অন্ধকারে বেড়ে উঠা যোদ্ধা!
আমাকে থাকতে হবে, থাকতেই হবে আমাকে।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন