নেপোলিয়নের মিশর
সুবোধ সরকার
মিশরে একটা বাঘের বাচ্চা জন্মেছিল।
তার মুখ ছিল জ্যোৎস্না আর মাথা ছিল এক ঝুড়ি অমাবস্যা।
তার হৃদয় ছিল বিন্নাঘাস, হাত ছিল পাথরের তলোয়ার
কিন্তু সেই তলোয়ার নামিয়ে রেখে হাঁটুভাজ করে
বসতে পারতেন বেদুইনের মেয়ের সামনে।
কিন্তু বেদুইনের মেয়ে তাকে ভালবাসত না ।
মিশরে কোন বাঘ ছিল না
কিন্তু একটা বাঘের বাচ্চা জন্মেছিল।
নেপোলিয়ন যখন কচুকাটা করে এগিয়ে আসছিলেন
আলেকজান্দ্রিয়ার দিকে।
তখন তাঁর সামনে এসে দাঁড়াল সেই সুদর্শন যুবক
যাকে বেদুইনের মেয়ে ভালবাসেনি।
শুরু হল পাল্টা মার, ফরাসি সৈন্য ছিটকে গেল, তাদের মুন্ডু গড়াতে লাগল রাস্তায়।
নেপোনিয়ন বললেন, একে বন্দী করো, যে কোন শর্তে।
বাঘের বাচ্চাকে ধরা যায়, বন্দী করা যায় না।
নেপোলিয়নের সামনে আনা হল তাঁকে
নেপোলিয়ন বললেন, আমি তোমাকে হত্যা করব না
তুমি বীর, তুমি তোমার দেশের জন্য যা করেছ
তা তোমাকে অমর করে রাখবে।
তুমি আমাকে দশ হাজার স্বর্ণমুদ্রা দাও
আমার আহত সৈন্যদের জন্য।
বাঘের বাচ্চা বলল, আমার কোনও স্বর্ণমুদ্রা নেই
তবে আলেকজান্দ্রিয়ার বাজারে গেলে
ব্যবসায়ীরা এক লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা তুলে দেবে তোমাকে।
সারা গায়ে দড়ি বেঁধে, হাতে পায়ে শিকল পরিয়ে
বাজারে আনা হল বাঘের বাচ্চাকে।
কেউ একটা রৌপ্যমুদ্রাও দিল না।
বীর যদি কাদায় পড়ে তাকেও কেউ তুলতে আসে না।
মিশরে দাঁড়িয়ে এই কথাটা বলে হো হো করে হেসে উঠলেন নেপোলিয়ন।