micro-story-ja-ghotte-pare

যা ঘটতে পারে বা ঘটেনি

সপ্তর্ষি চ্যাটার্জী


– শুনেছেন তো মেয়েটাকে কীভাবে রেপ করা হল?
– হ্যাঁ! শুনেছি। ছবিও দেখলাম। আবার রেপ করে পুড়িয়েও দিয়েছে। কী নৃশংস!
– তাই? ছবি পেয়েছেন? ফরওয়ার্ড করুন প্লিজ! ওটা দিয়ে একটা জ্বালাময়ী পোস্ট দেব নেটে।
– করছি দাঁড়ান। আরে, ওই দেখুন কে আসছে হন্তদন্ত হয়ে।
– তাই তো! এই যে, চললে কোথায়?
– আর বলো কেন! আমার নাগরিকত্ব কার্ডের মধ্যে বিস্তর ছাপার ভুল। সেটা আর দশদিনের মধ্যে শুধরে নিতে না পারলেই সোজা গারদে পুরবে।
– সেকী! কিন্তু ভুল তো তোমার দোষে হয়নি!
– তাতে কী? পেয়াদারা সেসব শুনবে নাকি? ওরা তো যন্ত্রমানব। না মিললেই সোজা ধরবে আর…
– তাহলে তো আমারও মুস্কিল হল! অমন ভুল তো আমারও আছে দু’ একটা। শিগগির বাড়ি যাই।
– যাহ! দু’জনেই চলে গেল। একা বসে আর কী করি। একটু কেসবুকটা খুলি…
আরেহ! এ তো দারুণ অফার দিচ্ছে অনলাইনে! স্রেফ এই কটা তথ্য দিতে হবে? তাড়াতাড়ি করে ফেলি। এইবার… এই তো…
যাহ! কী হল? ইন্টারনেট ডেটা প্যাক এক্সটেন্ড! না না তা কী করে সম্ভব। সবে তো গত সপ্তাহেই…
আর আমি যে সব তথ্যও দিয়ে দিলাম ওদের! এখন উপায়? ওই তো উনি আসছেন, এসব ব্যপারে খুব দক্ষ। এই যে শুনছেন? চিনতে পারছেন না?
– না তো। ঐ মুখোশটা পরে থাকলে কী আর চেনা যায়?
– মুখোশ? কই মুখোশ?
– হা হা! ওভাবে হাতড়ে লাভ নেই। আমাদের সবার মুখ বা মুখোশগুলোই তো এক রকম দেখতে হয়ে গেছে। অনেক দিন হল। আপনি আয়না দেখেন না বহু দিন?
– না, কিন্তু কেন এসব বলছেন?
– আপনি, আপনারা বুঝতে পারছেন না খুব দ্রুত সব বদলে যাচ্ছে? চারপাশ, আমাদের ভাবনা, আমাদের চেহারা। এক একটা কোনও সমস্যা আসছে, সেটার সমাধান হতে না হতেই আরেকটা, তারপর আরেকটা সমস্যা বা বড় ঘটনা, বা দুর্ঘটনা, আর আমরা মেতে থাকছি, একটার পর একটা, নেশার মতো, সমাধান হচ্ছে না… আমরা একটা চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছি ক্রমাগত…
– তাহলে কী করব? মুখোশটা কি…?
– নাহ থাক, খুলতে হবে না। কে জানে, যদি দেখি আমরা ভিন্ন সম্প্রদায়ের? তাহলে তো আবার একটা ঘটনা বা দুর্ঘটনার আশঙ্কা… এই পরিস্থিতিতে বলা তো যায় না? তারপর আমরাই ক্ষণস্থায়ী একটা ব্রেকিং বা ফ্লোটিং নিউজ হয়ে যাব হয়তো!
– তা ঠিক। একী! বাতাসে একটা পোড়া গন্ধ না? আগুন জ্বলছে কোথাও! ওদিকে আমার বাড়ি তো… হায় হায়!
– আমার বাড়ি ওদিকে নয় অবশ্য… তবু, আগুন জ্বলেছে যখন, ছড়াতে কতক্ষণ? চলুন আমিও যাচ্ছি আপনার সঙ্গে… হাত ধরুন!

 

2 thoughts on “micro-story-ja-ghotte-pare

  1. অভিনব ভাবনা। এমন করে তো ভাবিনি কখনও। নগ্ন সমাজকে ফুটিয়ে তুললেন কয়েকটা আঁচড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *