micro-story-prokriti

প্রকৃতি
চন্দন আনোয়ার


পরিত্যক্ত একখন্ড জমি। জমিটি প্রায় জঙ্গলাকীর্ণ এবং চারিদিকে উঁচু বাউন্ডারি। কলেজ থেকে ফিরছি। তখনি চোখে পড়ল দৃশ্যটি। কালো হৃষ্টপুষ্ট একটি বিড়াল একটি ডানাভাঙা শালিখ পাখি সামনে নিয়ে খেলায় মত্ত। পাখিটি উড়াল দেবার জন্য যেই না দেহ উঁচায়, তখনি বিড়ালটি থাবা মেরে ফেলে দেয় মাটিতে। বিড়ালের গোঁফ খাড়া হয়ে উঠেছে। চোখ দুটি ক্ষুধার্ত বাঘের মতোই। মাথার ওপরে ভয়ানক আর্তনাদরত একটি পাখি কেবলি চক্কর মারছে।

শালা তো দেখছি, টপটেররদের মতো ঠান্ডা মাথার খুনি! খেলিয়ে খেলিয়ে পাখিটাকে ক্লান্ত করে তবেই নিকাশ করবে। আমি তাড়া দেই, কিন্তু বিড়ালটির তিলার্ধ ভ্রূপেক্ষ নেই। পাখিটার দিকেই সম্পূর্ণ আকর্ষণ। হাতের কাছে এমন কিছুই নেই যে, ঢিল ছুঁড়বো। পাখিটাকে নিশ্চিত খুন হওয়ার মুখে ফেলে যাই কী করে! এবার বাউন্ডারি ওয়ালের উপরে উঠে পড়ি। দুই হাত ছুঁড়ে তাড়ি, এই হারামি খুনি, দুর্বল অসহায় পাখিটাকে পেটে চালান করে দেবার ধান্ধা করছিস, অ্যাঁ!

এবার বিড়ালটি আমার দিকে তাকাল বটে, কিন্তু ভয়ানক ক্রোধ আর হিংস্রতার আগুন জ্বলে ওঠে ওর দুটি চোখে। আমার পা কেঁপে ওঠে। লাফিয়ে নামি। নিরীহ একটি পাখির খুন ঠেকাতে পারলাম না! প্রকৃতিরাজ্যে এতো নিষ্ঠুরতা কেন!

ক্লান্ত-ক্ষুধার্ত শরীর প্রায় ভেঙে পড়ছে। শূন্য বাসা। শিল্পী অর্থাৎ আমার স্ত্রী স্কুল থেকে এখনও ফেরেনি। দ্রুত প্যান্ট-শার্ট খুলে লুঙ্গি পরে হাতে-মুখে পানি ছিটিয়ে বসে যাই খাবার টেবিলে। একটি বাটির ঢাকনা খুলেই দেখি, দেশি কচি মুরগির রোস্ট, একটা নয়, দুইটা।
ক্ষুধার্ত পেট। পেটের শান্তি ফিরে এল। শিল্পীকে প্রাণভরে ধন্যবাদ দেই। ওর দেশি মুরগির রোস্ট রান্নার হাত ফাটাফাটি!


এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *