দেবব্রত দাশ
“সাতফুট বাই পাঁচফুট মানে পঁয়ত্রিশ বর্গফুট জায়গার মাহাত্ম্যই আলাদা।” মন্তব্য করেই ইন্দ্রনীল ফারহা-র জন্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিল, “বলতে পারবি — কথাটার মানে কী?”
“সাতসকালে ঘুম থেকে উঠেই আবোলতাবোল বকতে শুরু করে দিলি আবার…তোকে নিয়ে আর পারি না রে ইন্দ্র! জ্বালাস না তো একদম।” ফারহা-র কণ্ঠস্বরে মৃদু ঝাঁজ, “আমাকে এখন অনেক কাজ সারতে হবে, তোর বুকনি শোনার সময় নেই।”
“নিশ্চিন্তে ঘর-সংসারের কাজ সার,” ফারহা-র অনুযোগ গায়ে না মেখে বলল ইন্দ্রনীল, “বেশি নয়, তিনদিন সময় দিলাম তোকে। কথাটা তো আমার নয়, বলেছেন এক বিদগ্ধ মানুষ, নাম অবশ্য মনে পড়ছে না এই মুহূর্তে…সে যাক গে, চেষ্টা করে যা। তবে, পারবি বলে তো মনে হয় না।”
কোনও জবাব না দিয়ে ইন্দ্রনীলের মুখের দিকে অগ্নিবর্ষী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বেডরুম থেকে বেরিয়ে কিচেন-এ ঢুকল ফারহা জাহান।
পেনসিলভেনিয়ায় মাত্র বছরখানেক হল জুটি বেঁধেছে এই দুই অনাবাসী ভারতীয় তরুণ-তরুণী। তরতরিয়ে চলছে তাদের সংসার-রথের চাকা। কপোত-কপোতীর মধ্যে যত ভাব, তত আড়ি। ঝগড়াঝাঁটি লেগেই আছে। সেদিনও অন্যরকম কিছু হল না, অফিস থেকে ইন্দ্রনীল ফিরতেই এ-কথায় সে-কথায় মুহূর্তে ধুন্ধুমার!
তারপর, ডিনার সেরে নিত্যকার অভ্যেসমতো ব্যালকনিতে ডেজার্ট নিয়ে বসল ফারহা-ইন্দ্রনীল। নির্বাক। ঝড়ের পর শান্ত প্রকৃতি যেন!
বিছানায় উল্টোমুখী দু’জনে। পিঠে পিঠ ঠেকছে, ঘুম আসছে না কিছুতেই। ভাব করতে চেয়েও মাঝে বাধার প্রাচীর। তারপর…আচমকাই ভেঙে পড়ল সে-প্রাচীর। একসঙ্গে ‘অ্যাবাউট টার্ন’ করে মুহূর্তে লিপ-লক কপোত-কপোতী।
মিলন-শেষে পরিতৃপ্ত সঙ্গিনীর উদ্দেশে বলল ইন্দ্রনীল, “সকালের প্রশ্নের উত্তর কি পেয়েছিস তুই ফারহা?”
“কোন্ প্রশ্নের?”
“তোকে জিজ্ঞেস করেছিলাম না— সাতফুট বাই পাঁচফুট, মানে পঁয়ত্রিশ বর্গফুটের মাহাত্ম্য কী?”
হাসতে থাকে ইন্দ্রনীল, “এখনও পেলি না…আশ্চর্য!” “না…মানে…” আমতা-আমতা করে বেচারি ফারহা।
“এই যে — সাতফুট বাই পাঁচফুট খাট, মিলিয়ে দিল তো আমাদের দু’জনকে! মানে — পঁয়ত্রিশ বর্গফুট জায়গাই যুগযুগ ধরে মিলিয়ে দিচ্ছে স্বামী-স্ত্রীকে অনায়াসে এবং চিরকালই দেবে, বুঝেছিস এবার?”
“সাতসকালে ঘুম থেকে উঠেই আবোলতাবোল বকতে শুরু করে দিলি আবার…তোকে নিয়ে আর পারি না রে ইন্দ্র! জ্বালাস না তো একদম।” ফারহা-র কণ্ঠস্বরে মৃদু ঝাঁজ, “আমাকে এখন অনেক কাজ সারতে হবে, তোর বুকনি শোনার সময় নেই।”
“নিশ্চিন্তে ঘর-সংসারের কাজ সার,” ফারহা-র অনুযোগ গায়ে না মেখে বলল ইন্দ্রনীল, “বেশি নয়, তিনদিন সময় দিলাম তোকে। কথাটা তো আমার নয়, বলেছেন এক বিদগ্ধ মানুষ, নাম অবশ্য মনে পড়ছে না এই মুহূর্তে…সে যাক গে, চেষ্টা করে যা। তবে, পারবি বলে তো মনে হয় না।”
কোনও জবাব না দিয়ে ইন্দ্রনীলের মুখের দিকে অগ্নিবর্ষী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বেডরুম থেকে বেরিয়ে কিচেন-এ ঢুকল ফারহা জাহান।
পেনসিলভেনিয়ায় মাত্র বছরখানেক হল জুটি বেঁধেছে এই দুই অনাবাসী ভারতীয় তরুণ-তরুণী। তরতরিয়ে চলছে তাদের সংসার-রথের চাকা। কপোত-কপোতীর মধ্যে যত ভাব, তত আড়ি। ঝগড়াঝাঁটি লেগেই আছে। সেদিনও অন্যরকম কিছু হল না, অফিস থেকে ইন্দ্রনীল ফিরতেই এ-কথায় সে-কথায় মুহূর্তে ধুন্ধুমার!
তারপর, ডিনার সেরে নিত্যকার অভ্যেসমতো ব্যালকনিতে ডেজার্ট নিয়ে বসল ফারহা-ইন্দ্রনীল। নির্বাক। ঝড়ের পর শান্ত প্রকৃতি যেন!
বিছানায় উল্টোমুখী দু’জনে। পিঠে পিঠ ঠেকছে, ঘুম আসছে না কিছুতেই। ভাব করতে চেয়েও মাঝে বাধার প্রাচীর। তারপর…আচমকাই ভেঙে পড়ল সে-প্রাচীর। একসঙ্গে ‘অ্যাবাউট টার্ন’ করে মুহূর্তে লিপ-লক কপোত-কপোতী।
মিলন-শেষে পরিতৃপ্ত সঙ্গিনীর উদ্দেশে বলল ইন্দ্রনীল, “সকালের প্রশ্নের উত্তর কি পেয়েছিস তুই ফারহা?”
“কোন্ প্রশ্নের?”
“তোকে জিজ্ঞেস করেছিলাম না— সাতফুট বাই পাঁচফুট, মানে পঁয়ত্রিশ বর্গফুটের মাহাত্ম্য কী?”
হাসতে থাকে ইন্দ্রনীল, “এখনও পেলি না…আশ্চর্য!” “না…মানে…” আমতা-আমতা করে বেচারি ফারহা।
“এই যে — সাতফুট বাই পাঁচফুট খাট, মিলিয়ে দিল তো আমাদের দু’জনকে! মানে — পঁয়ত্রিশ বর্গফুট জায়গাই যুগযুগ ধরে মিলিয়ে দিচ্ছে স্বামী-স্ত্রীকে অনায়াসে এবং চিরকালই দেবে, বুঝেছিস এবার?”
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন
বাঃ, বেশ। এ গল্প পেনসিলভেনিয়া থেকে পলাশডাঙ্গা —সব জায়গায় সব দম্পতির ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য।
সুন্দর খুবই
Darun hoyeche.
আশা মিটল না।”খুব ছোট গল্প “।তবে এই স্বল্প পরিসরে আপনি প্রত্যেক পাঠককে তার দাম্পত্য জীবনের বিশেষ বিশেষ মুহূর্তের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে পেরেছেন,এটাই আপনার কৃতিত্ব।
অনুগল্প হিসেবে চললেও আপনার গল্পের মধ্যে যে মাদকতা থাকে সেটি এখানে অনুপস্থিত।
অনুগল্প হিসেবে চললেও আপনার গল্পের মধ্যে যে মাদকতা থাকে সেটি এখানে অনুপস্থিত।
আমি প্রথমে বুঝতেই পারিনি আপনি কিং সাইজ খাটের কথা বলছেন! অপূর্ব হয়েছে গল্পটা। এক্কেবারে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে লেখা এক যুগোপযোগী অণুগল্প ।
ভালো লাগলো ।নতুনত্ব ।
প্রাসঙ্গিক
বাঃ!এতো অণুতে অসীম।