micro-story-meyeta

মেয়েটা
মৃত্যুঞ্জয় দেবনাথ


মেয়েটার আঙুলের ফাঁকে ব্লেড প্রস্তুত। আর কিছুক্ষণ। মুহূর্তের মধ্যে জানোয়ারটার পুরুষাঙ্গ রক্তাক্ত হয়ে ধুলায় লুটবে। আর ও-ও অনেক ধর্ষিতা-নির্যাতিতাদের মতো চিৎকার করবে, কে আছো, বাঁচাও। আমাকে বাঁচাও। ওঃ! কী কষ্ট! কী যন্ত্রণা! মরে যাচ্ছি…

মেয়েটা, মানে তিতলি। নিবাস, বালিগঞ্জ রেললাইনের ধারের ঝুপড়ি। সাদাসিধে মেয়ে তিতলি। কাগজকুড়োনো মেয়ে ও। বাপ মরেছে মদ গিলে। মা মরো-মরো। এখন নিজে রোজগার করে।

তিতলির পানপরাগ, চুটকি, রজনীগন্ধার নেশা। রাদ্দিন পথের ধারের নোংরা-আবর্জনা ঘাঁটে আর ওইসব খায়। রাত্তিরে দু’টি রুটি চিবিয়ে মুখে রজনীগন্ধা না-পুরলে ঘুম আসে না ওর। ফটকের ধারের লকাইয়ের দোকান থেকে তাই কিনতে গিয়েছিল ও। আসার পথে পথ আগলে দাঁড়াল জিতেন্দ্র। পাড়ার হোমরাচোমরা। গলা অবধি গিলে ফুললোড ছিল শালা। আগেও অনেকদিন তিতলির পিছু লেগেছিল ও। পাত্তা দেয়নি তিতলি। আজ ওর মুখ জাপটে তোল্লা করে নিয়ে ফেলল ওর ডেরায়। তারপর-

তিতলি অনেক কান্নাকাটি করল। ‘দাদা-দাদা’ বলে জিতেন্দ্রর হাতে-পায়ে ধরল। কিন্তু জিতেন্দ্রর তখন শরীর ফুটছে। শরীরের তপ্ত লাভার অগ্নুৎপাত ঘটতে থামল।

ঘরে ঢুকে প্রথমে কাঁদল তিতলি। বিছানায় অসুস্থ মা-টি ঘ্যানঘ্যানালেও উচ্চবাচ্চ করল না। রাত্তিরে ঘুমোলও না বেচারি। সকালে উঠে কাগজ কুড়োতে গেল। তারপর ফিরতি পথে থানায়। অভিযোগ শুনে থানার বড়োবাবু-মেজোবাবুরা হেসে গড়াগড়ি। মশকরা করল। শেষে বলল, ব্যাপারটা কিছু না। তুচ্ছ। এমনটি ঘটেই থাকে। বিষয়টি নিয়ে বেশি মাথা ঘামালে নিজেরই ক্ষতির আশঙ্কা। কেননা, জিতেন্দ্র পার্টির তাবড় নেতা হারু ঘোষের চ্যালা। ও-মাল নিয়ে নাড়াচাড়া না-করাই ভালো।

তার একমাস পরই তিতলি এই সিদ্ধান্ত নিল। তার আগে সলতে পাকিয়েছে বটে। মিছিমিছি ভাব করেছে জিতেন্দ্রর সঙ্গে। ট্যারা চোখে তাকিয়েছে। মিষ্টি কথা বলেছে। ওর প্রেমে হাবুডুবু খাওয়ার ভান করেছে। শেষে আজ বিকেলে কথা হয়েছে। তাই রাত্তিরে এ-মুহূর্তে দু’জনে মুখোমুখি। আপাতত জিতেন্দ্রর পাতা বিছানায় নেংটো হয়ে শুয়ে আছে ও। জিতেন্দ্রও জামা-প্যান্ট-জাঙ্গিয়া খুলে প্রস্তুত। ওর লোহশলাকা পুরুষাঙ্গের দিকে তাকিয়ে মনে-মনে খটখটিয়ে হাসে তিতলি!

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

3 thoughts on “micro-story-meyeta

  1. মিস্টার দেবনাথ, আপনার অণুগল্প পড়লাম । চেনা প্লট । উপস্থাপন-গুণে মনছুঁয়ে যাবে সংবেদনশীল পাঠকের । শেষ করেছেন নিখুঁত ভাবে একেবারে সঠিক জায়গায় । নতুন বছরে এমন সুন্দর উপহারের জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ।

    1. অনেক ধন্যবাদ দাদা। আপনার লেখাটিও পড়ার অপেক্ষায়। ভালো থাকুন।

  2. মিস্টার দেবনাথ, আপনার অণুগল্প পড়লাম । চেনা প্লট । উপস্থাপন-গুণে মনছুঁয়ে যাবে সংবেদনশীল পাঠকের । শেষ করেছেন নিখুঁত ভাবে একেবারে সঠিক জায়গায় । নতুন বছরে এমন সুন্দর উপহারের জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *