aparbangla-editorial-edition-21

সম্পাদকীয়

একশো পঁচিশতম জন্মবার্ষিকী এইবছর, একজন নন, তিনজন ক্ষণজন্মা মানুষের। কিন্তু বাংলাসাহিত্য জগৎ এর কোথাও তেমন কোনো ঢেউ উঠতে দেখা গেল না। ১৮৯৯ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারীতে জীবনানন্দ দাশ, ২৪শে মে কাজি নজরুল ইসলাম আর ১৯শে জুলাই বনফুল ওরফে বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন। ১২৫ বছর পরেও এই তিনজনের মণীষা এবং রচনা সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। কিন্তু, কয়েকটি পত্রিকায় কয়েকপাতা ব্যয় করে সামান্য কিছু আলোচনা ছাড়া বাংলায় তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি, সরকারী বা বেসরকারী কোনো তরফেই।

তবে কাজটা জরুরি ছিল। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নতুন প্রজন্মের কাছে এঁদের লেখা পৌঁছে দেবার জন্য অনেক কিছুই করা যেতে পারত। তার মধ্যে একটি জরুরি কাজ, এইসব অসামান্য লেখাগুলোকে ডিজিটালাইজড করা। তাতে যেমন মাউস ক্লিক করলেই উৎসাহী পাঠকের সামনে খুলে যাবে এইসব রত্নভান্ডার তেমনই লেখাগুলোর উপযুক্ত সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়ে অবাঙালী পাঠকের জন্য সহজেই অনুবাদ করে ফেলা যাবে পৃথিবীর যেকোনো ভাষায়। এটা করা হলে যথোচিত মর্যাদা দেওয়া হবে নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ বনফুল সহ অন্যান্য প্রতিভাদের।

ব্যক্তিগত উদ্যোগে অবশ্য কাজটা করেছেন শ্রী মহীরূহ মুখোপাধ্যায়, সম্পর্কে তিনি বনফুলের প্রপৌত্র। বনফুলের সমস্ত লেখা তিনি ডিজিটালাইজড করে দিয়েছেন, এখন যে কেউ অনলাইনে পড়তে পারবেন তাঁর কালজয়ী ছোটগল্পগুলো। মহীরূহ মুখোপাধ্যায়কে আমরা ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা দুই-ই জানাই।

পৃথিবীতে ঘোর দুঃসময় এখন। যুদ্ধ এবং রাষ্ঠ্রীয় দমন পীড়নে জেরবার সাধারণ মানুষ। বাংলা ও বাঙালির জন্য এই মাস সংকটের সাক্ষ্য রেখে গেল। রাষ্ট্র যখন সাধারণ মানুষের অধিকারের আন্দোলনকে প্রতিহত করতে বন্দুক ওঠায় তার চাইতে খারাপ বোধহয় আর কিছু হয় না। প্রতিপালকের ঘাতক হয়ে ওঠা কিছুতেই সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা শোকপ্রকাশ করছি অসময়ে চলে যাওয়া তাজা প্রাণগুলোর জন্য। যে কোনো জাতির সবচাইতে অনূভূতিপ্রবণ অংশ এই ছাত্রসমাজের আন্দোলন থামাতে বন্দুকের ব্যবহার কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না।

“অপারবাংলা”র প্রাকপূজা সংখ্যাটিতেও রইল বর্ণময় সূচীপত্র।

প্রখ্যাত সাহিত্যিক অজিতেশ নাগ এর উপন্যাসিকা “আপেক্ষিক” এক নিঃশ্বাসে পরে ফেলতে হয়। বাংলাদেশ সাহিত্যের সর্বোত্তম পুরস্কার “একুশে পদক” প্রাপ্ত শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিক হরিশঙ্কর জলদাস এর গল্প টি পড়তে ভুলবেন না। লেখাটি যদিও পূর্ব প্রকাশিত, আমাদের বিশ্বাস এই গল্পটি অপারবাংলার সমগ্র পাঠকদের মধ্যে নতুন করে সাড়া জাগাবে। সব বিভাগেই আপনারা পড়তে পারবেন এই মুহূর্তের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম লেখকদের অসাধারণ লেখার সম্ভার। বিবিধ বিভাগে অভীক মুখোপাধ্যায় এর হিরোশিমা বম্বিং সংক্রান্ত লেখাটা লেখাটা বেশ ভালো। বিবিধ বিভাগে, রাজু আলাউদ্দিন লিখেছেন ফেদেরিকো গার্সিয়া লোর্কার ক্ষণস্থায়ী জীবনেও সাহিত্যের অপরিসীম অবদান নিয়ে। আর তার সাথে ওনার অনুবাদ। এবারের রান্নাঘরে জয়তী রায় লিখেছেন মেক্সিকান সভ্যতার রান্নার সাথে জড়িয়ে থাকা বিভিন্ন অজানা তথ্য, আর মেক্সিকান রেসিপি।

বিনোদন বিভাগে এবারে আমরা পেয়েছি পিয়া চক্রবর্তী কে। স্বনামধন্য সাহিত্যিক চুমকি চট্ট্যোপাধ্যায় এবং জয়তী রায় আলোচনা করেছেন তাঁর বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কাজ এবং ভবিষ্যতের কর্মকান্ড এর কিছু জায়গা নিয়ে। আপনারা জানতে পারবেন ওনার অনেক অজানা তথ্য। নিয়মিত বিভাগে, প্রিয়ব্রত দত্ত এর স্টুডিওপাড়ার ১২ নম্বর পর্ব তে এবার আছেন বীরেশ চ্যাটার্জী। বর্তমান রুপালি পর্দাতে ওনার মতো ডিরেক্টর এর বড় অভাব। অবগত হবেন ওনার অনেক কাজের সাথে এই পর্ব তে।

শারদীয়া অপারবাংলার কাজ শুরু হয়েছে হৈহৈ করে। খুব শিগিগিরি তা প্রকাশিত হবে। দ্রুত পরে ফেলুন এবারের সংখ্যা, আর তৈরী হয়ে থাকুন শারদীয়ার বিপুল সূচিপত্র র জন্য।

আনন্দ হোক।

শুভ নাথ
সম্পাদক
অপারবাংলা ত্রৈমাসিক বাংলা সাহিত্য পত্রিকা

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

2 thoughts on “aparbangla-editorial-edition-21

  1. এমন সম্পাদকীয় পড়ার ইচ্ছে জাগায়।

  2. এরূপ সম্পাদকীয় পড়ার ইচ্ছে জাগায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *