স্বাতী চ্যাটার্জী ভৌমিক
বড়পর্দার মায়ায় আচ্ছন্ন হননি এমন মানুষ সত্যিই বিরল। সিনেমা দেখতে, সিনেমার খবর পড়তে, তারকাদের জীবন সম্পর্কে জানতে আমরা সকলেই কমবেশী আগ্রহী হয়ে থাকি। কেমন হবে যদি প্রিয় তারকাদের সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য জানা যায়? শারদীয়া অপার বাংলার পাতায় আসুন জেনে নেওয়া যাক সিনেমা সম্পর্কে না-জানা কিছু কথা। প্রথমে বাংলা ছবি দিয়ে শুরু করা যাক।
পত্রিকা যখন সাহিত্যের তখন সাহিত্যের গুরুদেবকে দিয়েই শুরু করা যাক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে কখনো ছবিতে অভিনয় করেছিলেন এ কথা কতজন জানেন? আর পরিচালক রবি ঠাকুরের সম্পর্কেই বা কতজন মানুষ শুনেছেন? ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালনায় ‘তপতী’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন স্বয়ং স্রষ্টা। তবে ছবিটি শেষ হয়নি। এরপর ১৯৩২ এ কবিগুরুর পরিচালনায় ‘নটীর পূজা’ মঞ্চস্থ হয় শান্তিনিকেতনে। ‘পূজারিনী’ কবিতা অবলম্বনে এই নাট্যরূপকে সেলুলয়েডে আনার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। সেই মতো দুটি ষ্টেশনারী ক্যামেরা ব্যবহার করে পাঁচদিন শ্যুটিং করে কাজ সম্পূর্ণ হয়। তবে ‘নিউ থিয়েটার্স’ স্টুডিওতে আগুন লেগে এই ছবির রিল পরে নষ্ট হয়ে যায়। ২০১১ তে তার কিছু অংশ উদ্ধার করে সংরক্ষণ করা গিয়েছে।
মহালয়া বলতেই যার নাম আমাদের মনে আসে তিনি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। মহালয়ার ভোরের ওই বিশেষ অনুষ্ঠান ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ দিয়ে রেডিওর শ্রোতারা তাঁকে চিনলেও আরো নানাদিকে নিজের সাক্ষর রেখেছেন এই গুণী মানুষটি। অজস্র বেতার নাটক পরিচালনা করেছেন, চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’, ‘সতীর দেহত্যাগ’ এর মতো ছবিতে। ১৯৪৩ সালে তিনি একটি ছবিও পরিচালনা করেন, যার নাম ছিল ‘স্বামীর ঘর’।
এক সময়ের দাপুটে অভিনেত্রী কানন দেবী একবার ডাক পেয়েছিলেন হলিউডের ছবিতে। কিন্তু বাংলা ছবির কাজ ও তাঁর নিজস্ব প্রোডাকশন হাউস শ্রীমতি পিকচার্স ছেড়ে বিদেশে যেতে রাজি ছিলেন না সেই সময়ের বাংলা ছবির জনপ্রিয় এই নায়িকা।
সত্যজিত রায়ের দুটি ছবিতে আমরা মহানায়ককে দেখেছি। ‘নায়ক’ এবং ‘চিড়িয়াখানা। কিন্তু অনেকেই যা জানেন না তা হলো, ‘মহানগর’ ছবিটি করার সময়েও সুব্রতর চরিত্রে প্রথমে উত্তম কুমারকেই ভাবা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় ডেট নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ছবিটি আর করা হয়নি তাঁর। পরে সেই চরিত্রটি করেন আর এক অসাধারণ অভিনেতা অনিল চট্টোপাধ্যায়।
বাংলা ছবির আকাশে সূর্যের মতো উজ্জ্বল হলেও, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে কখনো হিন্দী ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি। তবে ১৯৮১ সালে পরিচালক শ্যাম বেনেগালের ছবি ‘কলযুগ’এর একটি চরিত্রর জন্য সৌমিত্রকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ছবিটিকে আধুনিক যুগের মহাভারত বলা যেতে পারে। গল্প অনুযায়ী যুধিষ্ঠিরের ছায়ায় যে চরিত্রটি ছবিতে ছিল সেই ভূমিকায় পরিচালক সৌমিত্রকে ভেবেছিলেন। কিন্তু হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ায় সৌমিত্র ছবিটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
এবার আসা যাক হিন্দী ছবির প্রসঙ্গে।
প্রথম জীবনে সুনীল দত্ত রেডিও সিলোনের সঞ্চালক পদে চাকরি করতেন। প্রিয় অভিনেত্রী নার্গিসের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে তিনি এতটাই ঘাবড়ে গেছিলেন যে একটিও কথা বলতে পারেননি। ফলে ইন্টারভিউ ক্যানসেল করতে হয়। বহু বছর পরে ১৯৫৭য় নার্গিসের সঙ্গে ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবি করতে গিয়ে অবশেষে দুজনে প্রণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এরপর ১৯৫৮ সালে বিয়ে করেন সুনীল-নার্গিস।
কমেডিয়ান অভিনেতা রাজেন্দ্রনাথকে সকলেই চেনেন। চিনবেন তার দাদা প্রেমনাথকেও। এদেরই আর এক ভাই নরেন্দ্রনাথও ছিলেন হিন্দি ছবির অভিনেতা। বহু ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে দেখা গেছে তাকে। এদের দুই বোন হলেন কৃষ্ণা ও উমা। কৃষ্ণা বিয়ে করেন রাজ কাপুরকে, অন্যদিকে উমা প্রেম চোপড়ার সহধর্মিনী হন।
আমজাদ খান আর একটু হলেই ‘শোলে’ থেকে বাদ পড়ছিলেন। কারণ, চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতারের মনে হয়েছিল আমজাদের কন্ঠস্বর গব্বরের চরিত্রের পক্ষে বেশ দুর্বল। তাই চরিত্রটির জন্য ড্যানি ডেঞ্জংপাকে প্রস্তাবও দেওয়া হয়। পরে যদিও আমজাদের ভাগ্যেই শিকে ছেঁড়ে।
বেশ কয়েকটি ছবিতে অমিতাভ বচ্চন ও শশী কাপুরকে দুই ভাইয়ের চরিত্রে দেখা যায়। তবে একমাত্র ‘সিলসিলা’ ছবিতেই শশী অমিতাভের বড় ভাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। অন্য সবকটি ছবি যেমন ‘সুহাগ’, ‘দিওয়ার’, ‘দো অউর দো পাঁচ’, ‘ত্রিশূল’এ অমিতাভ ছিলেন বড় ভাইয়ের চরিত্রে।
যতীন খান্না, ওরফে সুপারস্টার রাজেশ খান্নার তিন দশকের ফিল্ম কেরিয়ারে তিনি মাত্র কুড়িটি ছবিতে অন্য কোন নায়কের সঙ্গে সমান গুরুত্বের চরিত্র করেছেন। বাকি প্রায় একশোর ওপর ছবিতে তিনিই ছিলেন একক নায়ক।
পত্রিকা যখন সাহিত্যের তখন সাহিত্যের গুরুদেবকে দিয়েই শুরু করা যাক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে কখনো ছবিতে অভিনয় করেছিলেন এ কথা কতজন জানেন? আর পরিচালক রবি ঠাকুরের সম্পর্কেই বা কতজন মানুষ শুনেছেন? ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালনায় ‘তপতী’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন স্বয়ং স্রষ্টা। তবে ছবিটি শেষ হয়নি। এরপর ১৯৩২ এ কবিগুরুর পরিচালনায় ‘নটীর পূজা’ মঞ্চস্থ হয় শান্তিনিকেতনে। ‘পূজারিনী’ কবিতা অবলম্বনে এই নাট্যরূপকে সেলুলয়েডে আনার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। সেই মতো দুটি ষ্টেশনারী ক্যামেরা ব্যবহার করে পাঁচদিন শ্যুটিং করে কাজ সম্পূর্ণ হয়। তবে ‘নিউ থিয়েটার্স’ স্টুডিওতে আগুন লেগে এই ছবির রিল পরে নষ্ট হয়ে যায়। ২০১১ তে তার কিছু অংশ উদ্ধার করে সংরক্ষণ করা গিয়েছে।
মহালয়া বলতেই যার নাম আমাদের মনে আসে তিনি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। মহালয়ার ভোরের ওই বিশেষ অনুষ্ঠান ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ দিয়ে রেডিওর শ্রোতারা তাঁকে চিনলেও আরো নানাদিকে নিজের সাক্ষর রেখেছেন এই গুণী মানুষটি। অজস্র বেতার নাটক পরিচালনা করেছেন, চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’, ‘সতীর দেহত্যাগ’ এর মতো ছবিতে। ১৯৪৩ সালে তিনি একটি ছবিও পরিচালনা করেন, যার নাম ছিল ‘স্বামীর ঘর’।
এক সময়ের দাপুটে অভিনেত্রী কানন দেবী একবার ডাক পেয়েছিলেন হলিউডের ছবিতে। কিন্তু বাংলা ছবির কাজ ও তাঁর নিজস্ব প্রোডাকশন হাউস শ্রীমতি পিকচার্স ছেড়ে বিদেশে যেতে রাজি ছিলেন না সেই সময়ের বাংলা ছবির জনপ্রিয় এই নায়িকা।
সত্যজিত রায়ের দুটি ছবিতে আমরা মহানায়ককে দেখেছি। ‘নায়ক’ এবং ‘চিড়িয়াখানা। কিন্তু অনেকেই যা জানেন না তা হলো, ‘মহানগর’ ছবিটি করার সময়েও সুব্রতর চরিত্রে প্রথমে উত্তম কুমারকেই ভাবা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় ডেট নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ছবিটি আর করা হয়নি তাঁর। পরে সেই চরিত্রটি করেন আর এক অসাধারণ অভিনেতা অনিল চট্টোপাধ্যায়।
বাংলা ছবির আকাশে সূর্যের মতো উজ্জ্বল হলেও, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে কখনো হিন্দী ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি। তবে ১৯৮১ সালে পরিচালক শ্যাম বেনেগালের ছবি ‘কলযুগ’এর একটি চরিত্রর জন্য সৌমিত্রকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ছবিটিকে আধুনিক যুগের মহাভারত বলা যেতে পারে। গল্প অনুযায়ী যুধিষ্ঠিরের ছায়ায় যে চরিত্রটি ছবিতে ছিল সেই ভূমিকায় পরিচালক সৌমিত্রকে ভেবেছিলেন। কিন্তু হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ায় সৌমিত্র ছবিটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
এবার আসা যাক হিন্দী ছবির প্রসঙ্গে।
প্রথম জীবনে সুনীল দত্ত রেডিও সিলোনের সঞ্চালক পদে চাকরি করতেন। প্রিয় অভিনেত্রী নার্গিসের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে তিনি এতটাই ঘাবড়ে গেছিলেন যে একটিও কথা বলতে পারেননি। ফলে ইন্টারভিউ ক্যানসেল করতে হয়। বহু বছর পরে ১৯৫৭য় নার্গিসের সঙ্গে ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবি করতে গিয়ে অবশেষে দুজনে প্রণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এরপর ১৯৫৮ সালে বিয়ে করেন সুনীল-নার্গিস।
কমেডিয়ান অভিনেতা রাজেন্দ্রনাথকে সকলেই চেনেন। চিনবেন তার দাদা প্রেমনাথকেও। এদেরই আর এক ভাই নরেন্দ্রনাথও ছিলেন হিন্দি ছবির অভিনেতা। বহু ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে দেখা গেছে তাকে। এদের দুই বোন হলেন কৃষ্ণা ও উমা। কৃষ্ণা বিয়ে করেন রাজ কাপুরকে, অন্যদিকে উমা প্রেম চোপড়ার সহধর্মিনী হন।
আমজাদ খান আর একটু হলেই ‘শোলে’ থেকে বাদ পড়ছিলেন। কারণ, চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতারের মনে হয়েছিল আমজাদের কন্ঠস্বর গব্বরের চরিত্রের পক্ষে বেশ দুর্বল। তাই চরিত্রটির জন্য ড্যানি ডেঞ্জংপাকে প্রস্তাবও দেওয়া হয়। পরে যদিও আমজাদের ভাগ্যেই শিকে ছেঁড়ে।
বেশ কয়েকটি ছবিতে অমিতাভ বচ্চন ও শশী কাপুরকে দুই ভাইয়ের চরিত্রে দেখা যায়। তবে একমাত্র ‘সিলসিলা’ ছবিতেই শশী অমিতাভের বড় ভাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। অন্য সবকটি ছবি যেমন ‘সুহাগ’, ‘দিওয়ার’, ‘দো অউর দো পাঁচ’, ‘ত্রিশূল’এ অমিতাভ ছিলেন বড় ভাইয়ের চরিত্রে।
যতীন খান্না, ওরফে সুপারস্টার রাজেশ খান্নার তিন দশকের ফিল্ম কেরিয়ারে তিনি মাত্র কুড়িটি ছবিতে অন্য কোন নায়কের সঙ্গে সমান গুরুত্বের চরিত্র করেছেন। বাকি প্রায় একশোর ওপর ছবিতে তিনিই ছিলেন একক নায়ক।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন