
শিল্পীদের দুনিয়াটা বড় গোলমেলে। হেথায় অর্থ অনর্থ অবলীলায় হাত ধরাধরি করে চলে। সামনে ঝাঁ চকচকে গমগমে, গনগনে উত্তাপ। পেছনে অনিশ্চয়তার অসীম শীতল অন্ধকার। খ্যাতির মধ্যগগনে টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাড়ি, ঠাট-বাট। আলোটা ফিকে হতে শুরু করলেই পুরনো বাড়ির পলেস্তারার মত খসে পড়তে থাকে পুরু মেকআপ। ব্যস্ততার বাউন্ডুলেপনা। কেতার কিংখাব। বিস্মৃতির ব্ল্যাকহোলে বিলীন হয়ে যাওয়া মানুষ, থুড়ি শিল্পীরা ক্রমশ হয়ে পড়ে উপেক্ষার বাতিল ঘোড়া। একদা দুই হাতে টাকা উড়িয়ে ব্যক্তি জীবনের শেষ সিনে শুধু দারিদ্রে অথচ দর্পে নিভে যাওয়ার আগে প্রদীপের মত দপদপ করতে থাকেন। আত্মাভিমান আর দীর্ঘশ্বাস বুকে চেপে ইহলোক ত্যাগ করেন অধিকাংশ অভিনেতা-অভিনেত্রী। সেই রকম মানুষ সেদিনও ছিলেন, আজও আছেন।
প্রায় তিনশো-সাড়ে তিনশো ছবি, শ-খানেক নাটক, অসংখ্য রেডিও নাটক, অজস্র সিরিয়াল, টেলিফিল্ম, অগুন্তি শ্রুতি নাটকের অনুষ্ঠান করেছেন গীতা দে। এ কথা সত্য, তখনকার দিনে পারিশ্রমিক পর্যাপ্ত ছিল না। তা সত্বেও গীতা দে জীবনের শেষ কয়েকটা বছর ছাড়া সমস্ত মাধ্যমে দাপিয়ে অভিনয় করেছেন। সেই নিরিখে কলকাতা শহরের বুকে চোখ ধাঁধানো না হোক, অন্তত ছিমছাম, সাদামাটা নিজস্ব দু’কামরার একটা ফ্ল্যাট থাকতেই পারত ওঁর। বাগমারীর ওই নড়বড়ে বাড়ির চারতলায় এক কামরার প্রাচীন, পলেস্তারা খসা, বিশাল পালঙ্ক ও চতুর্দিকে স্তুপাকার সাংসারিক আসবাবে ঠাসা চৌহদ্দিটা কেন গীতা মায়ের গেরস্থলি হয়ে রইল সেটা সরাসরি জিজ্ঞাসা করার সাহস হয়নি কোনওদিন। তবুও কথার ফাঁকে বা ব্যক্তিজীবনের কোনও অনুযোগের সূত্র ধরে যদিও বা জিজ্ঞাসা করতাম, ‘তুমি এভাবে থাকো কিভাবে?’
শুনে সেই কর্কশ গলায় বলতেন, ‘কেন… খারাপটা কী দেখলি ছোঁড়া। বেশ আছি।’
বলতাম, ‘এই যে এত বিচিত্র ধরনের লোকের সঙ্গে তোমার আলাপ। কাজের এত বড় ক্ষেত্র। ইন্ডাস্ট্রির মানুষেরা নিশ্চয়ই তোমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তাঁদের বসা দাঁড়াবার তো একটা জায়গা দরকার। সবাইকে বেডরুমে অ্যালাও করবে কেন তুমি?’
বলতেন, ‘বেডরুম! এটাকে বেডরুম বলে মনে হচ্ছে তোর! এটা তো গুদোমঘর। ওসব বসার ঘর ফর আমাদের মত মানুষদের পোষায় না ছোঁড়া। ওসব সুচিত্রা, সাবিত্রী, মাধবীদের মানায়। আমার মত ঝি, ঝগড়ুটের পাঠ করা বুড়িদের এই গুদোমঘরই যথেষ্ঠ। পার্ট নিয়ে কথা বলতে এলে হয় ওই বারান্দা, না হয় গুদোমঘর… পোষালে বসো। না পোষালে এসো। তাতে গীতা দের কিসস্যু এসে যায় না।’
বলার সময় হাত মুঠো করে দুই বুড়ো আঙুল উঁচিয়ে দু’দিকে নাড়তেন।

সেদিন হাত ধরে টানতে টানতে আমাকে যখন ওই ‘গুদোমঘরে’র বিছানায় উঠে বসতে বললেন, খুব সঙ্কোচ হচ্ছিল। বাইরের জামাকাপড় পরে একেবারে কারোর বিছানায় বসবো? অস্বস্তি হচ্ছিল। ‘অত ম্যানার্স দেখাতে হবে না রে, ছোঁড়া। খাটে উঠে বস। আমি একটু আসছি।’ বলে ঘর থেকে বেরিয়ে রান্নাঘরে ঢুকলেন। চায়ের সরঞ্জাম বার করে চা বানাতে শুরু করলেন। ভাবছি, গীতা দে, ভয়ঙ্কর টাইপের এক অভিনেত্রী, দাপটে গোটা ইন্ডাস্ট্রি কাঁপে, তিনি কেমন মমতাময়ী মায়ের মত মন দিয়ে চা তৈরিতে মগ্ন। ওঁরাও হাতে আঁচল জড়িয়ে সশপ্যানের হ্যান্ডেল ধরে বাঁ হাতে ছাঁকনি ধরে পাত্রে চায়ের লিকার ঢালেন!
‘অমন হাঁ করে কী দেখছিস রে, ছোঁড়া?’ লিকারে চামচে করে দুধ মেশাতে মেশাতে না তাকিয়েই বলে উঠলেন।
আমি থতমত খেয়ে বলেই ফেললাম, ‘আপনাকে। ঠিক মেলাতে পারছি না!’
‘যে গীতা দে হাতে ঝাঁটা উঁচিয়ে বউদের সঙ্গে ঝগড়া করে, সেই বুড়িটা আবার চা-ও বানাতে জানে, এটাই তো!’
ওঁর বলার ধরনে ফিক করে হেসে ফেললাম। চায়ের কাপটা ডিশে সাজিয়ে উনি আনতে যাচ্ছিলেন। আমি বিছানা থেকে লাফ দিয়ে নেমে ঘর লাগোয়া রান্নাঘরে ঢুকে ওঁর হাত থেকে ডিশসহ কাপটা নিলাম। বললেন, ‘দেখ, খাটের তলায় একটা টুল আছে। ওটা টেনে নিয়ে, ওর ওপর কাপ-ডিশটা রাখ। আমি আসছি।’ আমি এক হাতে ডিশসহ কাপটা নিয়ে ঘরে ঢুকে খাটের তলা থেকে বাঁ হাতে টুলটা বার করে তাতে রাখলাম। ফের বিছানায় উঠে বসেছি, দেখি একহাতে একটা মাঝারি মাপের স্টিলের থালায় গোটা চারেক সিঙাড়া, দুটো বেগুনি, দুটো আলুর চপ সাজিয়ে অন্য হাতে একটা বড় স্টিলের বাটিতে মুড়ি, কাঁচা লঙ্কা, শশা, পেঁয়াজ জড়ো করে ঘরে ঢুকলেন। চোখ ছানাবড়া করে বললাম, ‘এত কে খাবে?’ ‘জোয়ান ছোঁড়া, এই বয়সে খাবি না তো আমার মত বুড়ো বয়সে খাবি? যা দিয়েছি লক্ষ্মী ছেলের মত খেয়ে নিবি।’
বিছানায় মুড়ি আর সিঙাড়া-চপের পাত্রটা রাখতে রাখতে বললেন। ‘বোস, সরষের তেল দিয়ে মেখে দিই। চানাচুরটা ফুরিয়ে গেছে।’ বলে সরষের তেল এনে মুড়ি মাখতে বসলেন। ‘নে শুরু কর। অনেকক্ষন আগে আনিয়েছি। আর দেরি করলে সব ম্যাদা মেরে যাবে।’ বলে সিঙাড়ার থালাটা এগিয়ে দিলেন।

বললাম, ‘একটা কিছু পেতে তার ওপর রাখুন (তখনও সম্পর্কটা তুমিতে পৌঁছয়নি)’ না হলে খেতে গিয়ে সিঙাড়ার গুঁড়ো, মুড়ি বিছানায় পড়তে পারে।
‘ছোঁড়ার দেখছি বেশ গেরস্ত জ্ঞানগম্যি আছে।’ বিছানার ছত্রিতে টাঙানো ওঁরই একটা শাড়ি বিছিয়ে দিয়ে তার ওপর সব রাখলেন। সরষের তেল ঢেলে শশা, পেঁয়াজ, লঙ্কা কুঁচি দিয়ে ভালো করে মুড়ি মাখলেন। আমি চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে এক মুঠো মুড়িমাখা মুখে দিলাম। অপূর্ব! জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ঠিক আছে?’ মুড়ি মুখে নিয়েই বললাম, ‘অসাধারণ। আপনি খাবেন না?’ বিছানায় গুছিয়ে বসতে একমুঠো মুড়ি মাখা হাতে তুলে নিয়ে বললেন, ‘এসব আর বেশি খাই না। গ্যাস, অম্বলের বাতিক। বেশি খেয়ে রাত বিরেতে চব্বর করি আর কি! কই দখি… কমল কী পাঠিয়েছে দেখি।’ এতক্ষণ গীতা দে’র ভিন্ন রূপ দেখতে দেখতে ভুলেই গিয়েছিলাম কী জন্য এসেছি। আমি রুমালে ভাল করে হাত মুছে ঝোলা থেকে প্যাকেটটা বার করলাম। উনিও আঁচলে হাত মুছে প্যাকেটটা নিয়ে ভেতর থেকে স্পাইরাল করা দুটো স্ক্রিপ্ট বার করলেন। বললেন, ‘ওপাশ থেকে চশমাটা দে তো।’ দেখি বিছানারই একপাশে মাথার বালিশের পাশে খাপে মোড়া চশমা। দিলাম। খাপ থেকে বার করে চশমাটা পরে স্ক্রিপ্টের পাতা ওল্টাতে লাগলেন। আমি একটা সিঙাড়া শেষ করে বেগুনি তুলে নিয়ে কামড় বসালাম।
একটা শ্রুতি নাটকের স্ক্রিপ্ট। নাটকের নামটা আজ আর মনে নেই। কিছুক্ষণ দেখে পাশে সরিয়ে রাখলেন। চশমাটা চোখ থেকে নামিয়ে স্ক্রিপ্টের ওপর রাখলেন। আমি গপগপ করে মুড়ি তেলেভাজা খাচ্ছি। চা শেষ। বললেন, ‘মুড়ি, তেলেভাজা শেষ কর। আবার চা দেব।’ নিজে একটা বেগুনি তুলে নিয়ে কামড় বসাতে গিয়ে বুঝতে পারলেন তখনও মুখে পান রয়েছে। বেগুনিটা থালায় রেখে মুখ ধুয়ে এলেন। এবার আয়েস করে বালিশে ঠেস দিয়ে শুরু করলেন প্রশ্ন, আমার ব্যাপারে। বাড়ি, পরিবার, পড়াশোনা, সাংবাদিকতা ইত্যাদি প্রভৃতি। গ্রুপ থিয়েটারে অভিনয় করি শুনে বললেন, ‘এই উচ্চারণ নিয়ে অভিনয় করিস!’ ধাক্কা খেলাম। অহংবোধে লাগল। বললাম, ‘আমায় শিখিয়ে দেবেন?’ বললেন, ‘ও শিখিয়ে হয় না। নিজেকে নিজের কানে শুনতে হয়। রোজ সকালে উঠে চিৎকার করে আবৃত্তি করবি। জোরে জোরে খবরের কাগজ পড়বি। আমরা যত না মুখে বলি, মনে মনে তার চেয়ে বেশি বলি। ভাবি মেরে দিয়েছি। আসলে সব লবডঙ্কা। বাঙালি নিজের নামটাই পরিষ্কার করে উচ্চারণ করতে পারে না তো রবীন্দ্র-নজরুল-দ্বিজেন-অতুল আওড়াবে! তা তুই তো গ্রুপ থিয়েটার করিস। আমরা সব কমার্শিয়াল থিয়েটারের অভিনেত্রী। সে সব তো গেছে। তা তোর তো অনেক জানাশোনা, শ্রুতি নাটকের কয়েকটা শো জোগাড় করে দে না।’

শুনে আমার গলায় সিঙাড়া আটকে গেল। ভীষণ জোর বিষম খেলাম। বলে কী! গীতা দে’র শ্রুতি নাটকের শো আমি জোগাড় করে দেবো! বললাম, ‘আমি! আপনার শো জোগাড় করে দেব? গীতা দে’কে? আপনি মুখ তুললেই তো মুখপাত্ররা সব ছুটোছুটি শুরু করে দেবে!’
‘হুঃ… তাহলেই হয়েছে… আমাদের মত বুড়িদের আর কেউ পোঁছে না, রে। সিনেমাই বা ক’টা? বছরে হয়তো দুটো! সিরিয়াল করে ক’পয়সাই বা পাওয়া যায়। হাতিবাগানে বার্ডের থিয়েটার সব বন্ধ হয়ে গেছে। সংসার চলে না রে। আমাকে দেখে অমন মনে হয়। আসলে সব ফক্কা। দেখ না… যদি শ্রুতি নাটকের দু’একটা শো পাওয়া যায়… দেড়হাজার নেব।’ পর্দায় কোনওদিন গীতা দে’কে
এমন কাতর স্বরে অভিনয় করতে দেখিনি। এ কোন গীতা দে! একটা কাজের জন্য, দুটো অর্থের জন্য গীতা দে’কে এমন কাকুতি মিনতি করতে দেখব, দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি! বাঙলা সিনেমার স্বর্ণযুগের অভিনেত্রী। ছয় বছর বয়সে প্রথম অভিনয়। দেশ স্বাধীন হবারও আগে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ। ঝুলিতে অসংখ্য সিনেমার মধ্যে ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘ডাইনী’, ‘নিশিপদ্ম’, ‘বাঘবন্দি খেলা’র মত রত্নখচিত সম্ভার। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী কিনা মাত্র দেড় হাজার টাকার জন্য নাতির বয়সী এক অর্বাচীনের কৃপা প্রার্থনা করছেন!
না, গীতা দে’কে আমি কোনও শ্রুতি নাটকের শো জোগাড় করে দিতে পারিনি। তার জন্য উনি আমাকে দুর ছাইও করেননি। বরং যত দিন গেছে শাসনে-স্নেহে সম্পর্ক আরও নিবিড় হয়েছে। সেই অন্তরঙ্গতা থেকেই অনুমান করতে পেরেছিলাম ওঁর দারিদ্রের কারণ। আসলে ভারতী দেবী, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, গীতা দে’রা ছিলেন সংসার যন্ত্রর ফুয়েল। জ্বালানী শক্তি। নিঃশব্দে সারাজীবন সংসারের আর্থিক দায়দায়িত্ব পালন করেছেন। কাকপক্ষীতেও টের পেত না। ওঁদের রক্ত জল করা অর্থ ভোগ করেছে পরিবারের ভাগীদাররা। দেহ পট সনে নট সকলি হারায়। যখন ওঁরা শক্তিহীন, কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, তখন ওঁদেরই পয়সায় পালিত ভাই, বোন, ভাইপো, ভাইজি স্তরের আপনজনেরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়া সত্বেও ‘লাইম লাইট’ থেকে হারিয়ে যাওয়া ‘টাকার মেশিন’দের ব্রাত্য করে দেয় ক্রমশ। না হলে অসুস্থতার অজুহাতে অনুশাসনে বন্দি।
এরপরেও আছে। এমন অনেকদিন হয়েছে গীতা মায়ের প্যাক আপ হয়ে গিয়েছে। মেকআপ তুলে পোশাক বদলে ভাউচারে সই করে টাকা নিলেন। এটা মূলত সিরিয়ালের শ্যুটিং-এর পর। প্রোডাকশন থেকে গাড়ি দিয়েছে। বাগমারীর বাড়িতে পৌঁছে দেবে। আমি হয়তো সেদিন স্টুডিও চত্বরেই আছি। বিকেল সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছে। কাউকে দিয়ে আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমাকেও নিয়ে যাবেন। ওই বাগমারী পর্যন্ত। তারপর তো আমার বাড়ি হাঁটা পথ। যদি সেদিনের মত কাজ হয়ে গিয়ে থাকত, আমিও গীতা মায়ের গাড়িতে উঠে পড়তাম। এমন অনেকদিন দেখেছি, গাড়িতে ওঠার আগে, প্রোডাকশনের বিশেষ কেউ হয়তো, তাকে ডেকে তার হাতে দুশো টাকা মুঠো করে গুঁজে দিলেন। পেয়েছেন হয়তো আটশো টাকা। তার মধ্যে দুশো তখনই খরচ। পুরো পারিশ্রমিকটা বাড়িই পৌঁছল না। গাড়িতে উঠতেই বলতেন, ‘কাকপক্ষীতে যেন না জানে।’ বললাম, ‘সে না হয় জানল না। তাই বলে এটা কী হল?’ ‘ওর মেয়েটার খুব শরীর খারাপ বুঝলি। টাইফয়েড না কী যেন হয়েছে। ফল কিনে নিতে বললাম।’ বোঝ। জুলাই মাস আসলেই বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, চ্যানেলে, পোর্টালে উত্তমকুমারের স্মৃতিচারণার হিড়িক পড়ে। তাতে প্রায় সবার মুখে উঠে আসে মহানায়কের মহৎ মনের পরিচয়ের কথা। তাঁর নিঃসাড়ে বহু শিল্পী, কলাকুশলীদের অর্থ সাহায্যের কথা। গীতা দে প্রয়াত হয়েছেন ২০১১ সালে। আজ পর্যন্ত কেউ বলেনি উনি ইন্ডাস্ট্রির কত দরিদ্র, অসহায় শিল্পী কলাকুশলীদের কীভাবে অর্থ সাহায্য করতেন। নিজে একজন দুঃস্থ শিল্পী হয়েও। শুধু গীতা মা নন, ভারতী দেবীর মত বর্ষীয়ান শিল্পীরা কত টেকনিশিয়ানকে সাহায্য করতেন তার কোনও প্রামাণ্য দলিল নেই। আপন সৃজনশীলতা থেকে শুরু করে অনুকম্পা আর অর্থ দান করে করে নিঃস্ব এই মরমী মানুষগুলো শেষ বেলায়, অন্তিম মুহূর্তে পেয়েছেন উপেক্ষা। বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গিয়েছে সন্তান স্নেহে একটা আস্ত ইন্ডাস্ট্রিকে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে ভালোবাসার বৃত্তান্ত। তাই তো উনি শুধু আমার না, গোটা ইন্ডাস্ট্রির গীতা মা ছিলেন।
