মহুয়া ব্যানার্জী
‘বিষে বিষে নীল,
শিরায় শিরায় জ্বলছে আগুন’
উচ্চস্বরে ডিজে বাজছে। লাল নীল ঘূর্ণায়মান আলোগুলো পিছলে পড়ছে সুতন্বী, সুঠাম নামমাত্র পোশাকে আচ্ছাদিত অতি আধুনিক শরীরগুলোয়। রাত যত গভীর ততই ঘন হচ্ছে জোড়া জোড়া নৃত্যরত শরীর। ডিস্কের বার কাউন্টারে নেশাতুর মানুষের লোভী চোখগুলোও নিয়ন আলোর মতই ঘোরাফেরা করছে নৃত্যরত শরীরগুলোর ওপর। কামনার বিষাক্ত দৃষ্টিতে চেটে খাচ্ছে মাংস। খাদ্য ও খাদক উভয়েই খুব এনজয় করছে ব্যপারটা।
উত্তাল উল্লাসের মাঝেই মিসেস বনশালীর দৃষ্টি ঘন হচ্ছে সুপুরুষ দীর্ঘদেহী যুবকটির দেহে। স্থূলকায়া মধ্যবয়সী শরীর উত্তপ্ত হচ্ছে, সিক্ত হচ্ছে।
পেগটা শেষ করে একটা মেসেজ করলেন হোয়াটসঅ্যাপে। তারপর টলমল পায়ে এগিয়ে গেলেন এই পাঁচতারা হোটেলে তার নির্দিষ্ট বিলাসকক্ষে।
টুং করে মেসেজ ঢুকল। দেখেই একটা বিষাক্ত হাসি খেলে গেল সুমেধার মুখে।
নাচতে নাচতেই নিজের পার্টনারের কানে কানে বলে উঠল,
– তুমি যেমন চেয়েছ তাই করেছি। রিতা ইজ ওয়েটিং ফর ইউ। রুম নম্বর 102। ভয় নেই ওকে আগেই নেশায় আচ্ছন্ন করে চোখ বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
ছেলেটির চোখ চকচক করে উঠল। অনেকদিন ধরে রিতার ওপর নজর ছিল তার। আঠের বছরের ডবকা মাল। তাদের প্রতিবেশী। আঙ্কল আঙ্কল করে প্রায়ই কথা বলত। শালা, ইয়ের আঙ্কল রে তোর। উফ। আজ আঙ্কল তোর সুগার ড্যাডি হবে। উমমম। উত্তেজনায় সুমেধার হাত চেপে ধরে সে।
– দ্যাটস মাই বেবি। এরকম গুড গার্ল হয়ে থাকলে তোমায় কিচ্ছু করব না সোনা। মনে থাকে যেন। হিসহিস করে উঠল ছেলেটি। সুমেধাকে ধাক্বা দিয়ে অচেনা এক মদ্যপের গায়ে ফেলে নিজের গন্তব্যের দিকে এগিয়ে গেল।
নোংরা হাতগুলোর ছোঁয়া কোনমতে এড়িয়ে বিধ্বস্ত সুমেধা সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে এল।
– আহ! প্লিজ লিভ মি ইউ বিচ! চিৎকার করতেই সপাটে একটা চড় আছড়ে পড়ল ছেলেটির গালে। নগ্ন দেহে এই তিন ঘন্টায় অজস্র আঁচড়, কামড় আর সিগারেটের ছ্যাঁকার ক্ষত। মিসেস বনশালী ছিবড়ের মত শুষে নিয়েছে ছেলেটির যৌন ক্ষমতা।
ভয়ঙ্কর বিকৃত কামনা এই মহিলার। বারবার তাকে নিজের ভেতর প্রবেশ করায় কামসূত্রের নানান ভঙ্গিমায়। তারপর চলে বিকৃত কামের খেলা।
পাশবিক অত্যাচার ছেলেটির সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
নেশা কেটে গিয়ে ছেলেটি এখন মুক্তি ভিক্ষা চাইছে। কয়েকঘন্টা আগের কামুক, নির্মম নারী শিকারী ছেলেটি আজ নিজেই শিকার।
মিসেস বনশালী ওষুধের ডোজে আবার সক্রিয়। চাবুক আর জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে পোষা কুকুরকে ডাকার মত করে বলে উঠল,
– কাম অন রিক। শালে, তেরে লিয়ে বহত পয়সা দি থি উস এজেন্ট কো। জিগোলো তো তু হ্যায়। তো ফির নখরা কিউ বে। আ। তু তু তু। পিয়াস বুঝা দে শালে।
ছেলেটি ঘরময় দৌড়চ্ছে। পেছনে নগ্ন শরীরে কুৎসিত শ্বাপদের মত মিসেস বনশালী।
বেরনোর পথ নেই। বাইরে থেকে দরজাটা বন্ধ। শুধু দরজা নয়, মিসেস বনশালীর টাকা অনেক কিছুই বন্ধ করতে জানে। এই হোটেলের প্রতিটা কোণ মিসেস বনশালীর অর্থ আর প্রতিপত্তির গোলাম।
সপ্তাহের তিন চার রাত এই রুমের প্রতিটি দেওয়াল নির্মম পাশবিক কাম চরিতার্থ করার সাক্ষী হয়।
সুইমিংপুলের ধারে বসে সুমেধা নিজের শরীরে রিকের অত্যাচারের চিহ্নগুলোয় হাত বোলায়। রোজ রোজ তাকে ঠেলে দিত নিজের বিষাক্ত বন্ধুদের কাছে। রিক নিজেও প্রতিনিয়ত মেয়েদের লালসার শিকার বানিয়েছে। সুমেধা প্রতিবাদ করলেই মারধোর, ছ্যাঁকা সব চলত। ভাগ্যিস শপিং মলে মিসেস বনশালীর হারানো ফোন সুমেধা খুঁজে পেয়েছিল। এভাবেই পরিচয় শুরু। তারপর তার একার নিখুঁত প্ল্যান। এই মুহূর্তে ওই রুমের গোপন সিসিটিভি ক্যামেরায় সব রেকর্ড হচ্ছে।
নিজের ফোনে রিকের ধর্ষিত হওয়ার লাইভ টেলিকাস্ট দেখতে দেখতে পাগলের মত হেসে ওঠে সুমেধা। রাতের আকাশ থেকে টুপটাপ শিশির সুমেধার চোখের জলে মিশে যায়। হাসি কখনও কখনও কান্নার রূপও নেয় যে।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন
Khub sundor hoyeche. Bhalo laglo besh.