অভীক মুখোপাধ্যায়
লোকটার এক হাতে ঘাসের দানা আর অন্য হাতে টোটা –বন্দুক দেখে মা – ঘুঘুটার তো মাথাই ঘুরে গেল। ঘুঘুর ছানাটা জিজ্ঞেস করল, কী হল মা?
— হে ভগবান! এ কেমন দিনকাল পড়ল বাছা?
— কেন?
— আগেও শিকারির এক হাতে দানা দেখেছি, কিন্তু তখন অন্য হাতে ফাঁদ থাকত।
— দানা আর ফাঁদ দিয়ে কী হতো, মা?
— কত পাখি দানা খেতে গিয়ে ফাঁদে পড়ত!
— সব্বাই?
— না, সব্বাই নয়। কেউ কেউ ফাঁদ কেটে বেরোতেও শিখে গিয়েছিল। অনেকে আবার ফাঁদে পড়তই না। জাল ফেলা থাকলে আমরা সবাই মিলে জাল নিয়ে উড়ে চলে যেতাম।
— মা, লোকটার এক হাতে দানা দেখছি। অন্য হাতে ওটা কী?
— বন্দুক।
— বন্দুক দিয়ে কী করে?
— গুলি মারে। দানা না – খেলে খিদেতে মরব। খেতে গেলে গুলি খেয়ে মরব।
মা – ঘুঘু এদিক ওদিক তাকায়। কিছু –না – কিছু উপায় থাকবেই। বাচ্চাটাকে নিয়ে আরেকটু দূরে উড়ে যায়। সেখানেও একই চিত্র। সবার এক হাতে দানা, অন্য হাতে বন্দুক। দানা খুঁটে খেতে গেলেই গুলি করে মারবে। তারমানে যাই করবে মৃত্যু নিশ্চিত। মা – ঘুঘু এবার বলে, না – খেয়ে মড়ার চেয়ে গুলি খেয়ে মরা ভালো। অন্তত পেটটা তো ভরবে।
— মা, শিকারিরাও তো মানুষ। তুমি বলো মানুষের দয়ামায়ার শরীর হয়।
— হ্যাঁ, বাছা। তা বলি, কিন্তু কাউকে মারার জন্যে বন্দুক ধরলেই তার ভেতরের দয়ামায়া মরে যায়। আর ওসবের আশা করিস না।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন