কথাটা শুনেছি ইস্তক মেজাজটা খনখনে হয়ে আছে। ইচ্ছে হচ্ছিল তক্ষুনি ছুটে গিয়ে পথ আগলে দাঁড়াই। কী কারণ এমন কথা বলার, জিজ্ঞাসা করি। কী দেখেছে ও আমার? কতটুকু চিনেছে? এতটা স্পর্ধা বা হয় কোথা থেকে? ওই শব্দের মানে জানে ও?
যাক গে। সে-মুহূর্তে পারিনি। আজ পারতেই হবে। উপযুক্ত জবাবটি মুখের উপর না-ছোঁড়া অবধি শান্তি-স্বস্তি নেই। কী ভেবেছে ও আমায়? যা খুশি বলবে? আমি খেলনা নাকি? স্থবির, জড়পদার্থ? কিচ্ছু বলব না? অসম্ভব। এর ষোলো আনা জবাব ওকে পেতেই হবে। তা আর কিছুক্ষণের মধ্যেই।
প্রায় আধা ঘণ্টা হতে যায় বটতলার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি। উদ্গ্রীব অপেক্ষায় রয়েছি ওর। মিসেস মালতী দত্ত। যে আমার মুখের উপর একটি অত্যন্ত সম্মানহানিকর শব্দ আওড়েছে কাল। প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলাম কথাটা শুনে। পরে রাগ হচ্ছিল খুব। মাথা-কান ঝমঝম করছিল। নেহাত ভদ্রতাবশেই চুপ থেকেছি। কিন্তু আজ ছাড়ছি না। ও আমায় এতটা তাচ্ছিল্য করতে পারে না। কক্ষনো না।
এখনো আসছে না কেন ও? পাড়ার সেলাইদিদিমণি। আজ ক’বছর ওর সঙ্গে লুকোচুরি খেলছি। মিন্স, এখানে-ওখানে টুকিটাকি মেলামেশা করছি। সে আমারই সৌজন্য। একটি নামকরা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করছি। মাসগেলে যথেষ্ট মাইনে। মালতীকে দেখে মায়া হত প্রথম-প্রথম। একার কাঁধে কীভাবে সংসারটাকে বয়ে চলেছে মেয়েটা। উপরি একই স্কুলের আমরা। একই ক্লাসের। স্কুলের অ্যানুয়াল প্রোগ্রামে দারুণ গান গাইত ও। আবৃত্তি করত। ছবি আঁকত। বাপ মরে যেতে ওর দুঃখ বাড়ল। সে যাক গে। কিন্তু ও কেন এত বড়ো অপবাদটি দেবে আমায়?
ব্যস, এসে পড়েছেন। ওই যে, অটো থেকে নামল।
শুরুতেই তর্ক জুড়লাম। একশোটা ‘কেন’ উচ্চারণ করে ওকে বিব্রত করলাম। তারপরও প্রতিউত্তর করার চেষ্টা করল না মালতী। মাথায় আগুন জ্বলল তাতে আরো। ভুলভাল বকে ফেললাম। ওর পথ আঁটকে দড়াম করে বলে বসলাম, না, তুমি আমাকে এমন বলতে পারো না, মালতী। আমি তোমাকে ভালোবাসি।…
মালতী মুখ ঘুরিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়াল। তারপর ধড়াস করে আমার বুকে ঝাঁপিয়ে বলল, এ-কথাটি বলতে যার এত্ত বছর সময় লাগল, সে তো ‘কাপুরুষ’-ই !
মিস্টার দেবনাথ, আপনার এই অণুগল্প “কাপুরষ” পড়ে বেশ ভালো লাগল! উপস্থাপন -গুণে সাধারণ ব্যাপারও যে পাঠককে আকৃষ্ট করতে পারে, “কাপুরষ” তারই প্রমাণ। আন্তরিক ধন্যবাদ।
Utsahito bodh korchhi. Anek Dhanyabad…
একদম ঠিক, ভালো লাগলো
Siddhartha, anek dhanyavad. Bhalo thakun…
বেশ কিছুদিন পর আপনার গল্প পড়ার সুযোগ ঘটলো । ছোট ছোট অনুভূতির অপ্রকাশ্য অভিমান কেমন করে অন্তরে বহন করে আমাদের মন ও মনন, তা বিধৃত করেছেন ছোট্ট পরিসরে । ভালো লাগলো । ভালো থাকবেন ।
Sachin Roy Chowdhury dada, anek dhanyavad. Galpota porlen, khub khushi. Apnar comments amay pranito korlo. Bhalo thakben…
বেশ কিছুদিন পর আপনার গল্প পড়ার সুযোগ ঘটলো । ছোট ছোট অনুভূতির অপ্রকাশ্য অভিমান কেমন করে অন্তরে বহন করে আমাদের মন ও মনন, তা বিধৃত করেছেন ছোট্ট পরিসরে । ভালো লাগলো । আরো লেখা দেখতে চাই ।