micro-story-testpaper

টেস্টপেপার
মনজিৎ গাইন


সুমি পড়াশুনোয় বেশ ভালো। তার ইস্কুলে সে বরাবর ভালো রেজাল্ট করে। ইস্কুলের হেডদি রমাদি সবসময় উৎসাহ দেয়, “সুমি, খুব ভালো করে পড়াশুনো কর। পরের বছর তো তুই ক্লাস টেনে উঠবি আর তার মানে সামনে মাধ্যমিক, খুব ভালো রেজাল্ট করতে হবে।“

সুমিও ঘাড় নেড়ে বলে, “হ্যাঁ বড়দি, আমি খুব মন দিয়ে পড়াশুনো করছি।“

বড়দি তাকে এই কথা না বললেও সে জানে তাকে খুব ভালো করে পড়াশুনো করতে হবে। তার বাবা একজন ট্রেনের হকার। খুব কষ্ট করে সে তার পড়াশুনোর খরচ যোগায়। বাবা রবি সবসময় তাকে বলে, “সুমি তুই পড়াশুনো খুব ভালো করে করছিস তো?”

সুমি এই কথা শুনে ঘাড় নাড়িয়ে বলে, “হ্যাঁ বাবা, আমি মন দিয়েই পড়াশুনো করছি।“

মেয়ের ওপর রবিরও খুবই অগাধ ভরসা। সে জানে সুমি যেভাবে হোক ঠিক ভালো রেজাল্ট করবেই। এই তো সেদিন সাগরদার মুদিখানার দোকানে গিয়েছে। সাগরদা রবিকে দেখেই বলল, “রবি, তোর মেয়ের শুনছি খুব পড়াশুনোয় মাথা ভালো। তুই তো খুব কষ্ট করে ওর পড়াশুনো করাচ্ছিস, আরেকটু কষ্ট করে পড়াশুনো করা নিশ্চয়ই তোর মেয়ে খুব ভালো রেজাল্ট করবে।“

রবির এই কথা শুনে সত্যি মেয়ের জন্যে গর্ব হয়, সে তাই খুবই আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “সাগরদা, তুমি এই কথা কোথায় শুনলে?”

“কেন, আমার দোকানে সুখেন এসেছিল সে বলল তোর মেয়ের কথা। তার মেয়ে শিখা তো তোর মেয়ের সঙ্গে এক ক্লাসেই পড়ে।“

সবার আশা মতো সুমি ক্লাস নাইনের রেজাল্ট খুব ভালো করল। ক্লাস টেনে সুমি আরও মন দিয়ে পড়ছে। সত্যি তার ওপর সবার একটা আশা তৈরি হয়ে গিয়েছে। সুমি সেই আশা সবার পূর্ণ করতে চায়। তার তো একুশ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা। সে তাই কুড়ি সালটা খুব ভালো করে পড়াশুনোয় মন দিতে চায়।

কিন্তু কুড়ি সালে শুরু হল ভয়ংকর এক করোনা মহামারী সারা বিশ্বজুড়ে। ভয়ানক সংক্রামক এই ব্যাধি থেকে বাঁচতে সারা দেশে লক ডাউন। সব কিছু বন্ধ। ট্রেনও পুরো বন্ধ আর রবির তো ট্রেনে হকারি করেই চলে। সে কী করবে কিছু বুঝে উঠতে পারে না।

সংসার চালানো খুব সমস্যার হয়ে যাচ্ছে। সুমি সবই বুঝতে পারছে। সে দেখতে পাচ্ছে তার বাবার চোখের কোণে জলের রেখা। সেদিনকেই সুমির মায়ের জন্যে ওষুধ আনতে গিয়ে সে একগাদা কথা শুনল দোকানদারের কাছ থেকে। তার একটাই কথা ওষুধ নিতে গেলে আগের ধার শোধ করতে হবে।

সেদিন রবি আর বাড়ি ফিরল না। পরের দিন সকালে তার গলায় দড়ি দেওয়া লাশটা পাওয়া গেল পাশের বাগানে।

সুমি ওর মায়ের সঙ্গে শুধু কাঁদল। তার মাধ্যমিক পরীক্ষা এবার সে কীভাবে দেবে? তবে ইস্কুলের দিদিমণিরা তাকে খুব সাহায্য করল। আর সাহায্য করল পাশের বাড়ির এক কাকু। সে নানা ভাবে সুমির হাতে টাকা দেয়। বই খাতা কিনে দেয়। সুমির এবার টেস্টপেপার লাগবে। তার সেই অবিনাশ কাকু বলল, “চল সুমি, তোকে এবার কলকাতায় নিয়ে গিয়ে টেস্টপেপার কিনে দেবো”

সুমি যেতে চাইনি কিন্তু মা বলল যেতে। সেদিন দুপুরে কলকাতায় গিয়ে টেস্টপেপার কিনে দুপুরে একটা হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করল। তারপর একটু রেস্ট নিতে কাকুর সঙ্গে হোটেলের ঘরে।

সুমি শুধু ওর দিকে হায়নার ক্ষুধা নিয়ে এগিয়ে আসা অবিনাশ কাকুর থেকে নিজেকে সদ্য কেনা টেস্টপেপার দিয়ে বাঁচাতে চাইল কিন্তু পারল না। অবিনাশ কাকু কিশোরী সুমির যৌবনবতী দুই স্তনের ওপর জোরে চেপে রাখা টেস্টপেপারকে প্রথমে টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলল তারপর সুমিকে।

যন্ত্রণাক্লিষ্ট সুমির চোখের জলে ভিজে গেল টেস্টপেপারের ছেঁড়া পাতাগুলো!

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *