যশোধরা রায়চৌধুরী
বুলগেরিয়ার কবি, রাজনীতিবিদ। ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, নিজের দেশে কম্যুনিস্টদের অত্যাচারেরও বিরোধিতা করে বিরাগভাজন হয়েছেন তদানীন্তন সরকারের। আশির দশকে মূলত লিখেছেন । নিজের উপন্যাস প্রকাশের জন্যও তাঁকে লড়াই করতে হয়। ব্লাগা ছিলেন একজন স্লাভিক ভাষাবিদ এবং বুলগেরিয়ার রোডোপস পার্বত্য অঞ্চলের ইতিকথা লিপিবদ্ধ করেছেন।
যশোধরা রায়চৌধুরী অনুবাদ করেছেন নিচের দুটো কবিতা
একাকী নারী, রাস্তায়
সত্যিই ঝুঁকি আর অসুবিধে এটা
এখনো এ ‘পুরুষের’ পৃথিবীতে।
উদ্ভট কোন অতর্কিত মোলাকাত
প্রতিটি বাঁকের মুখে রয়েছে যেন।
এমনকি, সড়কেরাও কৌতূহলী চোখ দিয়ে
বিঁধিয়ে দিচ্ছে তোমায়।
একাকী নারী, রাস্তায়।
তোমার একমাত্র প্রতিরোধ
তোমার প্রতিরোধহীনতাই।
কোন পুরুষকে করে নাওনি তোমার ক্রাচ,
ভর দেবার জন্য।
বরং ভর দাও একটা গাছের গুঁড়িতেই
ঝড় থেকে বাঁচো একটা দেওয়ালে ভর দিয়েই।
একা রাস্তায় নেমেছিলে
সে-পুরুষের সঙ্গে সমানে সমানে মিলবে বলে
তাকে সত্যিকারের ভালবাসবে বলে।
তুমি কি নিজের গন্তব্যে পৌঁছবে,
না কি উলটে পড়বে, কাদা মাখামাখি হয়ে?
না কি চোখ ধাঁধিয়ে যাবে দৃশ্যপটে?
জানা নেই এখনো, তবু তুমি একগুঁয়ে।
পথেই ওরা তোমাকে ভেঙ্গেচুরে দেবে হয়ত
তবু এই বেরিয়ে পড়াটুকুই
তোমার সাফল্য।
একাকী নারী, রাস্তায়
তবু তুমি চলেছ
তবু তুমি থামনি।
একজন পুরুষ কখনো
এতটা একা হয়না
যতটা এক একা নারী।
তোমার সামনে গোধূলি বন্ধ করে দিল
একটা দরজা। তালা দেওয়া।
রাতের বেলায় একাকী নারী
কখনো নেমো না রাস্তায়।
সকালে যদিও সূর্য দারোয়ানের মত
তোমার চোখের দৃষ্টি খুলে দেয়
তবু তোমাকে ছায়াও মাড়াতে হয়।
পেছনে তাকিও না।
প্রতিটি পদক্ষেপ নিচ্ছ
বিশ্বাসের শপথ নিয়ে
সেই ছায়াচ্ছন্ন মূর্তির প্রতি
যার ভয় ওরা তোমাকে বহুদিন দেখিয়ে এসেছে।
পাথরে তোমার পায়ের শব্দ ওঠে।
একাকী নারী , রাস্তায়
সবচেয়ে পেলব আর সবচেয়ে সাহসী পা ফেলছ
অপমানিতা মা ধরিত্রীর বুকে।
সেও, আর এক একাকী নারী। রাস্তায়।
হোটেলের ঘর
( ভিয়েনা, ১৯৬৬)
তোমাকে দেওয়া হল একটা নম্বর।
যেমন দেয় কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে।
ঢুকে পড়, স্বাধীন হয়ে যাও
একমাত্র সম্ভাব্য স্বাধীনতা।
কোন ছাপ নেই
আগের অতিথির।
আলোবাতাস নেই
তবু, একমাত্র এখানেই অন্তত, তুমি নিঃশ্বাস নিতে পার।
একটা বেসিন, একটা খাট। একটা আলমারি।
ছাই ছাই রঙের ওয়ালপেপার।
এক্কেবারে নৈর্ব্যক্তিক।
কিন্তু এখানেই এসে তুমি নিজের চেহারাকে খুঁজে পেলে।
বিছানার পাশে আলোটা জ্বালাও
কথা আদানপ্রদান করবে যে,
কেউ নেই, এমন।
তবু পৃথিবীর স্পর্শে তুমি শিউরে ওঠো।
কোন রেশ
থাকবে না তোমার।
কোন স্মৃতি না।
কিন্তু তোমার স্বপ্নগুলো তুমি মনে রাখবে বছরের পর বছর।
অনন্ত চুম্বন রাখা আছে
বাঁধাছাঁদা স্যুটকেসের পাশে।
এক অবিচ্ছেদ্য আলিঙ্গনে বাঁধা
তোমার পকেটে, তোমার টিকিট।
সকালের সূর্যালোক
তোমার ঘুম ভাঙালো অচেনা এক কোণ থেকে।
তুমি কোথায়? একটা হোটেলের ঘরে…
এটাই তোমার সত্যিকারের ঘরবাড়ি।
যশোধরা রায়চৌধুরী অনুবাদ করেছেন নিচের দুটো কবিতা
একাকী নারী, রাস্তায়
সত্যিই ঝুঁকি আর অসুবিধে এটা
এখনো এ ‘পুরুষের’ পৃথিবীতে।
উদ্ভট কোন অতর্কিত মোলাকাত
প্রতিটি বাঁকের মুখে রয়েছে যেন।
এমনকি, সড়কেরাও কৌতূহলী চোখ দিয়ে
বিঁধিয়ে দিচ্ছে তোমায়।
একাকী নারী, রাস্তায়।
তোমার একমাত্র প্রতিরোধ
তোমার প্রতিরোধহীনতাই।
কোন পুরুষকে করে নাওনি তোমার ক্রাচ,
ভর দেবার জন্য।
বরং ভর দাও একটা গাছের গুঁড়িতেই
ঝড় থেকে বাঁচো একটা দেওয়ালে ভর দিয়েই।
একা রাস্তায় নেমেছিলে
সে-পুরুষের সঙ্গে সমানে সমানে মিলবে বলে
তাকে সত্যিকারের ভালবাসবে বলে।
তুমি কি নিজের গন্তব্যে পৌঁছবে,
না কি উলটে পড়বে, কাদা মাখামাখি হয়ে?
না কি চোখ ধাঁধিয়ে যাবে দৃশ্যপটে?
জানা নেই এখনো, তবু তুমি একগুঁয়ে।
পথেই ওরা তোমাকে ভেঙ্গেচুরে দেবে হয়ত
তবু এই বেরিয়ে পড়াটুকুই
তোমার সাফল্য।
একাকী নারী, রাস্তায়
তবু তুমি চলেছ
তবু তুমি থামনি।
একজন পুরুষ কখনো
এতটা একা হয়না
যতটা এক একা নারী।
তোমার সামনে গোধূলি বন্ধ করে দিল
একটা দরজা। তালা দেওয়া।
রাতের বেলায় একাকী নারী
কখনো নেমো না রাস্তায়।
সকালে যদিও সূর্য দারোয়ানের মত
তোমার চোখের দৃষ্টি খুলে দেয়
তবু তোমাকে ছায়াও মাড়াতে হয়।
পেছনে তাকিও না।
প্রতিটি পদক্ষেপ নিচ্ছ
বিশ্বাসের শপথ নিয়ে
সেই ছায়াচ্ছন্ন মূর্তির প্রতি
যার ভয় ওরা তোমাকে বহুদিন দেখিয়ে এসেছে।
পাথরে তোমার পায়ের শব্দ ওঠে।
একাকী নারী , রাস্তায়
সবচেয়ে পেলব আর সবচেয়ে সাহসী পা ফেলছ
অপমানিতা মা ধরিত্রীর বুকে।
সেও, আর এক একাকী নারী। রাস্তায়।
হোটেলের ঘর
( ভিয়েনা, ১৯৬৬)
তোমাকে দেওয়া হল একটা নম্বর।
যেমন দেয় কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে।
ঢুকে পড়, স্বাধীন হয়ে যাও
একমাত্র সম্ভাব্য স্বাধীনতা।
কোন ছাপ নেই
আগের অতিথির।
আলোবাতাস নেই
তবু, একমাত্র এখানেই অন্তত, তুমি নিঃশ্বাস নিতে পার।
একটা বেসিন, একটা খাট। একটা আলমারি।
ছাই ছাই রঙের ওয়ালপেপার।
এক্কেবারে নৈর্ব্যক্তিক।
কিন্তু এখানেই এসে তুমি নিজের চেহারাকে খুঁজে পেলে।
বিছানার পাশে আলোটা জ্বালাও
কথা আদানপ্রদান করবে যে,
কেউ নেই, এমন।
তবু পৃথিবীর স্পর্শে তুমি শিউরে ওঠো।
কোন রেশ
থাকবে না তোমার।
কোন স্মৃতি না।
কিন্তু তোমার স্বপ্নগুলো তুমি মনে রাখবে বছরের পর বছর।
অনন্ত চুম্বন রাখা আছে
বাঁধাছাঁদা স্যুটকেসের পাশে।
এক অবিচ্ছেদ্য আলিঙ্গনে বাঁধা
তোমার পকেটে, তোমার টিকিট।
সকালের সূর্যালোক
তোমার ঘুম ভাঙালো অচেনা এক কোণ থেকে।
তুমি কোথায়? একটা হোটেলের ঘরে…
এটাই তোমার সত্যিকারের ঘরবাড়ি।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন
Bah. Duto kobitai bhalo laglo. Dwitiyo anubad bishesh kore bhalo laglo er antornihito arthor jonyo.
বাহ্…. খুবই ভালো লাগলো । আপনি এই অনবদ্য কবিতা পড়ার সুযোগ দিয়েছেন , তাই আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন ।