মূল রচনা – ই কে শিবা
অনুবাদ – তৃষ্ণা বসাক
লেখক পরিচিতি — এই সময়ের বিশিষ্ট মলয়ালম লেখক। জন্ম ২০ মে ১৯৭৫। সাধারণ শিক্ষা বিভাগে সিনিয়র করণিক। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ দুনিয়া, ওয়াই টু কে, নীললোহিতম ইত্যাদি। পেয়েছেন আভানিবালা পুরস্কার, অংকনম ই পি সুষমা এন্ডাউমেন্ট প্রভৃতি।
বহুতল বাড়িটা, যার পেটে অন্তত তিরিশটি অফিস আছে, তাতে নিত্যকার ভিড়। লোকটা তার কালো ব্যাগ নিয়ে শোরগোল ভরা একটা অফিসে ঢুকল। ভিজিটরস প্লেসে টেলিভিশন সেট শব্দ দূষণ বাড়াচ্ছে। মাসের শেষ, ইনক্রিমেন্ট, বিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড, লোন ইত্যাদির কাজ চলছে। ছোট ছোট দলে লোকেরা অধৈর্য হয়ে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে কথা বলছে আর তাদের আওয়াজের তালে তালে ডিসকভারি চ্যানেলে একটা চিতা লাফ দিচ্ছে একটা মোষের ওপর। এতসব ক্যাচরম্যাচরের মধ্যে পঞ্চাশের ঘরে থাকা শীর্ণ লোকটিকে কেউ পাত্তা দিল না, যার চোখে সুখী জীবনের অবশেষ ঝিলিক দিচ্ছে।
হামবড়িয়া অফিসাররা ব্যাস্ততা আর ঔদাসীন্যের ভান দেখিয়ে ফাইল নিয়ে কাজ করছে, মহিলা কর্মীদের সঙ্গে গজালি মারছে আর আগের দিনের ক্রিকেট ম্যাচের খবর পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে বিনিময় করতে করতে চা খাচ্ছে। যে লোকগুলো নিজেদের ন্যায্য পাওনার জন্য এই অফিসারদের দয়ার অপেক্ষা করছে, তারা ঘড়ির দিকে বারবার চাইছে, তাদের স্বরে আর মুখে ফুটে উঠছে হতাশা।
সে এসবের কোন অংশ নয়, আর তাই কার সময় আছে যে তার দিকে এমনকি তাকাবে? তারা বিভিন্ন ডায়রেক্ট মার্কেটিং-র কম্পানি এক্সিকিউটিভদের আসায় অভ্যস্ত ছিল। প্রায় প্রতিদিন এমন সব লোক আসত গৃহস্থালির জিনিস, সাজের জিনিস, জামাকাপড়, বই ইত্যাদি বিক্রি করতে। অফিসের অবসরের সময়ে অফিসারররা তাদের সঙ্গে দরাদরি করে জিনিস কিনত। কিন্তু যদি তারা মাসের শেষে আসে যখন সবাই ব্যস্ত, তখন তাদের দৃঢ় গলায় ‘না’ বলে ভাগিয়ে দেওয়া ছাড়া তাদের কোন উপায় ছিল না।
আর এই দিনটিতে লোকের বাড়তি ভিড় ছিল সবাই ছিল ভীষণ ব্যস্ত। সে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি মাপছিল। তার অবশ্যই একটা অসাধারণ অতীত ছিল, কিন্তু এখানে সে স্রেফ আর পাঁচজন বিক্রেতার একজন।
‘এখানে কিছু সেক্স টয় আছে স্যার’ সে পরিষ্কার গলায় বলল। আচমকা ঘরটা চুপ হয়ে গেল, সমস্ত কর্মরত আঙুল, ক্যালকুলেটর, হিজিবিজি কাটা কলম আর কম্পিউটার স্থির হয়ে গেল। ‘প্লিজ আমাকে এগুলো দেখাবার অনুমতি দিন’ সে বলল, সেক্স টয় শব্দটার মোহিনী শক্তির কথা ভেবে।
কৌতূহলী চোখগুলো, তারা যেন আদৌ আগ্রহী নয়, এমন ভান করার চেষ্টা করল, কিন্তু সেই চোখগুলো যেগুলো আসলে লালসায় ভরা ছিল, এক্স রের মতো কালো ব্যাগ ভেদ করে দেখার চেষ্টা করছিল।
কেউ তাকে মুখে অনুমতি দিল না আর সে মনে হল সেটা আশাও করেনি। ‘সরি’ সে মহিলাদের দিকে চেয়ে বলল ‘এগুলো শুধু পুরুষদের জন্যে’।
টেবিলের ফাইল আর পেনের ওপরে সে বিদেশি ভাষায় লেখা সুন্দর সুন্দর প্যাকেট রাখল। চারপাশের লোকগুলো তাদের দ্রুত হৃৎস্পন্দন লুকোতে গিয়ে কাশির মতো বিচ্ছিরি শব্দ তুলল।
‘কৃত্রিম যোনি’ যেন বোম ছুঁড়ছে, এমনভাবে সে প্রথম বাক্সটা খুলল আর ঘরের প্রত্যেকে সেই সিলিকনের তৈরি প্লেজার ইন্সট্রুমেন্টের দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে রইল যেন রাস্তায় এক নগ্ন মেয়ে শুয়ে আছে।
‘ঠিক মানুষের যোনির মতোই’ সে বুঝিয়ে বলল ‘নরম, পিচ্ছিল, মাঝেমাঝে উত্তপ্ত। এটা এমনকি চিকিৎসার গবেষণাতেও ব্যবহার করা হয়। দেখুন এর মধ্যে চলমান অংশ আছে যা চার থেকে আট ইঞ্চি গভীর’ সে পরিস্কার ভাবে দেখাল। ‘ঠিক মেয়েদের যোনির মতোই এর স্থিতিস্থাপকতা আছে’।
চারপাশের সব লোক, যদিও বেশিরভাগই বিবাহিত, এর দিকে তাকিয়ে রইল। ওদের মধ্যে কয়েকজনের জিনিসটা পরখ করার তীব্র ইচ্ছেও হল।
সে অন্য বাক্স খুলল। ‘এই জিনিসটা অন্য উপাদানেও তৈরি হয় স্যার। নরম প্লাস্টিক, রবার…’ সে বোঝাল। ‘অনেক ভ্যারাইটি থেকে পছন্দ মতো বেছে নিতে পারবেন’।
যখন লোকে সেই বিচ্ছিন্ন কৃত্রিম অঙ্গগুলো দেখছিল, লোকটার মনে পড়ল ছ মাস আগে ওর মেয়ের পোস্ট মর্টেম রিপোর্টের ওপর ফ্লুরোসেন্ট পেনে লেখা ‘যোনিতে তিনটে গভীর ক্ষত। এতটাই গভীর যে জরায়ুর দেওয়ালে আঘাত করে মারাত্মক রক্তক্ষরণ হয়েছে’।
গত তেইশ বছর ধরে তার মেয়ের হাসি তার হৃদয়ে সদা রক্ত ঝরা ক্ষতের মতো রয়ে গেছে। যে ফ্ল্যাটটা সে কিনেছিল, সমুদ্রের সঙ্গীতে পূর্ণ, এখন একটা ভূতুড়ে জাহাজের মতো। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সে অপেক্ষা করে অজানা দেশ থেকে যদি তার স্ত্রী আর মেয়ে তাকে চিঠি লেখে।
মেয়ে চলে যাবার পর, একমাত্র স্ত্রীর জন্যেই সে বেঁচে ছিল। সে পঙ্গু হয়ে শুয়ে থাকত আর সে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তার পাশে থেকে তাকে দেখাশোনা করত। আর একদিন, সে দেখল পৃথিবীতে সে একদম একা। তার বাড়ি, যা একসময় জীবনের রোদ্দুরে ঝলমল করত, হঠাৎ রাক্ষসের অন্ধকার মুখে পরিণত হল। প্রতিটি সূর্যাস্ত তার জীবন থেকে রোজ একটু একটু করে রঙ, সৌরভ কেড়ে নিচ্ছিল ।
যেহেতু তার মেয়ের সমস্ত সময়টাই গবেষণায় চলে যেত, তার স্ত্রী তার সঙ্গে ইউ এস আসতে পারেনি। সে এই শহরে মেয়েকে নিয়ে থেকে গেছিল। তার পক্ষে ইউ এস চলে যাওয়া খুব কষ্টদায়ক হয়েছিল, যেহেতু সে কোনদিন ওদের ছেড়ে থাকেনি। কিন্তু নিজের দেশের সুরক্ষাকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে সে দেশ ছাড়ল।
বাড়িতে ছোট ছোট কত জিনিস মেয়ের কথা মনে পড়ায়- টেবিলে ছোট ছোট কানের দুল, ওয়ার্ড্রোবে পোশাক, মুখ খোলা নেলপালিশের শিশি। বই, বেহালা, আরও কত কী। স্ত্রীর মৃত্যুর পর এসবের কষ্ট আরও বেড়ে গেল। সে কখনও তার মোবাইল চালু করত না, রিংটোনে সেতারের সুর শোনার ভয়ে। হয়তো সেই সুর সমস্ত বাড়িটাকে চুরমার করে দেবে।
যে জিনিসগুলো একসময় তার ছিল, নীল রঙের ট্রাভেল ব্যাগ, একটা ভাঙ্গা ঘড়ি, সর্ষে হলুদ-সবুজ কুর্তি, ছাই রঙের জিন্স, কোর্টের ক্লিয়ারেন্সের পর তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অতগুলো কেমিকাল টেস্ট পার করে, কোনটাই তার মনে হচ্ছিল না। পাপী হাতের ছাপে ভরা ছিল সবকটা।
‘আমরা ব্যবহারের পর আবার পরিষ্কার করার জন্য একটা কেমিকাল ব্লিচ সলিউশন দিই’। সে বলেছিল, অপ্রীতিকর স্মৃতি ঝেড়ে ফেলার জন্যে।
‘আপনারা এগুলো যতটা সম্ভব চাপ দিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটা সবরকম খেয়াল সহ্য করতে পারে, হয়তো তাতে আরও দীর্ঘক্ষণ এবং উচ্চ স্তরের সুখ দিতে পারে’।
‘প্যাকেটের সব জিনিসই এক?’ না খোলা প্যাকেটের দিকে আঙুল দেখিয়ে অতিরিক্ত আবেগে শুকিয়ে যাওয়া গলায় একজন জিজ্ঞেস করল।
‘না’ সে বলল। ‘আমার কাছে আরো মাল আছে। এই দেখুন এরোটিক স্টিমুলেশন প্রডাক্ট, ভাইব্রেটর, লাভ পিলো, সেক্স ডল…
অনেকে জিনিসগুলোর দিকে তাকাল, তাদের মন তোলপাড় হচ্ছিল তাদের অতৃপ্ত যৌন জীবন, দুঃখজনক ঘটনা, সুস্থতা অসুস্থতা, স্ত্রীদের যৌন শৈত্য- এইসব ভেবে।
‘সব কিছু বিদেশের আমদানি, নির্ভরযোগ্য এবং দামিও’ সে চারদিকের হতাশ মুখগুলোর দিকে তাকিয়ে শেষ কথা বলল। ‘কিন্তু আমি আপনাদের খুব সুলভ দামে দেব। আপনারা যা দেবেন সেটাই এর দাম। এগুলো সেই পুরুষদের জন্যে যারা তৃপ্তির জন্য সব কিছু করতে পারে’।
‘সেকি?’ একজন বলল ‘এই ব্যবসায় কি লাভের দরকার হয় না?’
ক্ষতি আর লাভ। একসময় তার জীবনে এদের ভূমিকা ছিল, কিন্তু সেসব কত আগে? সে ভাবল।
শ্মশানে তার মুখ সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল আর এটা তাকে মনে পড়িয়ে দিয়েছিল প্রায় ২৩ বছর আগে যেদিন তাকে সে প্রথম দেখেছিল, তার মুখ সাদা কাপড়ে জড়ানো। যেদিন সে প্রথম তার দিকে তাকিয়েছিল, যেদিন সে তার হাত ধরে হেঁটেছিল আর যখন সে শেষবারের মতো ফোন করল ট্রেনে নিজের জীবন শেষ করে দেবার আগে। যদি সে জানত এই শেষবারের মতো তার গলার স্বর শুনছে, সে কখনোই ফোন রেখে দিত না। তার আর্তনাদ ডুবে গিয়েছিল ট্রেনের আওয়াজে। তার কব্জি থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল ভারি ধাতব দরজায়… যখন তাকে ট্রেন থেকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, তার খুলি বেরিয়ে এসেছিল, সে যখন শেষ নিঃশ্বাসের জন্যে লড়াই চালাচ্ছিল, তার শরীরে অজস্র ক্ষত!
আর তারপর একদিন তার স্ত্রীও জীবন থেকে মুছে গেল, অনন্ত দুঃখ থেকে মৃত্যুর শান্তির দিকে হেঁটে চলে গেল। লাভ লোকসান। কেউ এসব বুঝবে না…।
যখন সে বুঝতে পারল পাগল হয়ে যাওয়া কিংবা মৃত্যু দুটোই তার নাগালের বাইরে, সে তার সংক্ষুব্ধ হৃদয় সমুদ্র থেকে পরিত্রাণের একটা রাস্তা খুঁজল। সে ইচ্ছে করেই তার জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-র স্পেশালাইজেশনের দিকে তাকাল আর মানুষের যৌন লালসা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করল। সে ইন্টারনেট, পত্রিকা, সংবাদপত্র, বই, চ্যানেলের দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল…
এসব কিছুর মধ্যেই সে নিজের মেয়েকে দেখতে পাচ্ছিল। নগ্ন রক্তাক্ত রেললাইনে পড়ে আছে, সারা গায়ে নরখাদকদের অত্যাচারের ক্ষত, যারা তার শরীরটাকে ধ্বংস করেছে।
সে তাকে বারবার মরে যেতে দেখল- সেই চার বছরের মেয়েটির মধ্যে যাকে গাছের কোটরে মৃত খুঁজে পাওয়া যায়, যার যোনিতে তার তের বছরের প্রতিবেশী একটা স্ট্যাম্প ঢুকিয়ে দিয়েছিল। ক্লাস ওয়ানের গরিব মেয়েটির মধ্যে, যখন সে তার ক্লাস ফোরের লালসা পূর্ণ সহপাঠীদের সঙ্গে ব্যাঙ্গাচি দেখতে গেছিল, তাকে ডুবিয়ে মারা হয়, লোয়ার কেজির সেই মেয়েটির মধ্যে, যাকে স্কুল বাসের ড্রাইভার রূপী রাক্ষস শেষ করে দিয়েছিল, বার বছরের মেয়েটির মধ্যে, ছিয়াত্তর বছরের বৃদ্ধের যৌন লালসার শিকার হয়ে রক্ত ক্ষরণে যার মৃত্যু ঘটেছিল।
সে দেখতে পেল সমস্ত জগত কামনায় ভরা আর মেয়েদের শরীরের একটি গর্তেই তারা ঢুকতে চায়। আর এ থেকে কৃত্রিম যৌন অঙ্গের কথা তার মাথায় এল। যখন দুষ্টু বাচ্চাকে খেলনা দিয়ে শান্ত করা যায়, দুষ্টু বড়দের কেন তাদের উপযুক্ত খেলনা দিয়ে ভোলানো যাবে না? এই খেলনা পেলে হয়তো তারা তাদের সামনে এসে পড়া ছোট মেয়েদের রেহাই দেবে।
‘আপনাদের সবার মধ্যে একটা দুষ্টু ছেলে আছে, যারা কথা শোনে না, শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে চায়। আমার আশা আমার খেলনাগুলো তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। এইভাবে কিছু মেয়েকে বাঁচানো যাবে’।
সে ধীরে বলে চলল- ‘আপনারা কি জানেন একটা মানুষকে ঘিরে স্বপ্ন দেখার মানে কী? আপনারা কি জানেন যখন ঝড় আসে আর কিছুই অবশিষ্ট রাখে না, একদম এক সেকেন্ডের মধ্যে? এটা তখন ঘটে, যখন আপনি আপনার একমাত্র মেয়েকে হারান’। সে টেবিলে রাখা খেলনা গুলোর দিকে তাকাল, তার কথা আরও গতি পেল, তার নিঃশ্বাস দ্রুত হল।
‘প্লিজ সহযোগিতা করুন। যেটা আপনাকে তৃপ্তি দেবে, সেটা বেছে নিন। যখন খারাপ চিন্তা মাথায় আসবে, কিছুক্ষণ এটা নিয়ে খেলুন। ওই মেয়ে গুলোকে ছেড়ে দিন যারা আপনার সামনে দিয়ে যাচ্ছে বা কোন গাড়িতে একা, কিংবা একা একা অন্ধকার রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে’।
‘আমার সময় ইকোয়াল টু একটা মেয়ের জীবনের দাম। আমাকে অনেক জায়গায় যেতে হবে- স্কুল, বাড়ি, অফিস, রাস্তা, বাজার, গাড়িঘোড়া… আমাকে এই খেলনাগুলো দেখাতে হবে যেখানে যেখানে ছেলেদের জমায়েত’।
সে তৃপ্ত মনে দেখছিল প্যাকেটগুলো কেনার ব্যগ্রতা। বাকি প্যাকেট নিয়ে সে পরের অফিসের দরজায় গিয়ে দাঁড়াল।
‘স্যার, সেক্স টয়’ যেই তার পরিষ্কার গলা বিল্ডিং-র অফিস গুলোয় বাজছিল, দূর দূরান্তে থাকা একা মেয়েরা তার পিতৃপ্রতিম মুখের দিকে চেয়ে ভালবাসার হাসি হাসছিল।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন