poem-ghumonto-gorar-deshe

ঘুমন্ত গোরার দেশে

আশিস গিরি

 

রাত্রির গায়ে চাঁদ এক বোবা দাগের মতো,

 তবু আলো ফোটে।

 মা বলত— ঘুমিয়ে পড়ো, স্বপ্নে যদি আগুন দেখো,

 চোখ মেলো না কখনো…

 আমি চোখ মেলেছিলাম,

 আগুনটা ছিল আমারই মুখ।

বাড়ির দেয়ালগুলো এখন কাগজ হয়ে গেছে—

 এক একটা ভাঁজে মৃত পায়রাদের ঠোঁট,

 চিঠির মতো শুকনো ডানা।

 তবু খামে খামে পাথর ভরে

 প্রতি সন্ধ্যায় ডাকপিয়ন আসে

 আমার নামহীন ঠিকানায়।

আমি জানি না—

 কোথায় রেখেছি আমার বাবার শেষ হাসিটা।

 মায়ের কাশির শব্দ আজও জানালায় বসে আছে,

 একটা চিল হয়ে।

 আমি জানি না—

 যে কিশোরটি আয়নায় নিজেকে প্রথম খুঁজে পেয়েছিল

 সে এখন কার অন্তর্জালে বন্দি।

যে মেয়েটি বলেছিল—

 “তুমি নক্ষত্রদের ভাষা বোঝো?”

 সে এখন এক মহাকাশযানের যাত্রী,

 আর আমি,

 একটা পুরোনো বইয়ের ভাঁজে

 অপঠিত শব্দ।

তবু এখনও মাঝরাতে—

 কখনো কখনো,

 আমার মৃত কবুতররা

 বসে পড়ে দরজার সামনে।

 তাদের চোখে,

 স্বর্গের আলো জ্বলে না,

 জ্বলে শুধুই—

 একটা মুছে যাওয়া মুখের দীর্ঘশ্বাস।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *