জর্জ ফ্লয়েড নামের কালো লোকটাকে মারতে
মার্কিন পুলিশের সময় লেগেছিল আট মিনিট ছেচল্লিশ সেকেন্ড।
– এই ঘটনায়, বাংলার যে মেয়েটি ফেসবুকে #wecantbreath লিখল,
ঠিক পঞ্চাশ বছর আগে তার ঠাকুরদার বিয়ে হয় এক শ্যামলা মেয়ের সঙ্গে।
গায়ের রং কালো হওয়ার অপরাধে, তার সেই ‘হলেও হতে পারতেন’ ঠাকুমার মরতে সময় লেগেছিল আড়াই মাস।
সবাই জানে, তিনি আত্মহত্যা করেন। তবে দুষ্টু লোকের
কথা আলাদা! – সংসারে শত্রুর সংখ্যা বড় বেশি।
ঠিক সেই সময়ে, আমেরিকায় লড়াই করছেন মার্টিন লুথার কিং। কালো মানুষদের গানে উত্তাল দুনিয়া –
এদিকে ঠাকুরদা দ্বিতীয়বার দার-পরিগ্রহ করেন।
প্রকৃ্ত গৌরবর্ণার সন্ধানে প্রায় চল্লিশটি মেয়ে দেখে তাঁকে নির্বাচন
করেছেন – একথা স্বয়ং ঠাকুরমাই স্বদম্ভ ঘোষণা।
পরবর্তীতে, দুইটি ধবধবে ফরসা সন্তানের জনক-জননী হওয়াও –
চাট্টিখানি কথা নয়।
কালো মানুষ যেখানে যাই-ই করুক, এদিকে কিন্তু
তার মাকে দেখে ঠাকুমা যখন বলেছিলেন,
– “ এই কেলেকুষ্টি কালিন্দীকে এই রূপের বংশে কি না ঢোকালেই নয়?”,
তাঁকে কিছুতেই দোষী ভাবতে পারেন নি তার বাবা।
চোখে আঁচল-চাপা দেওয়া মাকে দেখে পুত্র সান্ত্বনা দিয়েছিল,
-“ এতো চিন্তা করো না, তুমি ভালো করে সর –হলুদ মাখিও।
ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি কিনে দিও। রং ফুটে উঠবে। জানোই তো,
বেচারির বাবা নেই – ডাক্তার বলে ছোটাছুটিও কম করে না। আমার তিনগুণ
রোজগার করে ও। এটা মনে রেখো”।
টাকা ও ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি-র হাতযশে ঠাম্মা চুপ করে গেলেও
ঠাকুরদা থামেন নি।
শোনা যায়, নার্সিং হোমে তাকে দেখতে গিয়ে দুজনেই আতঁকে উঠে
পালিয়ে আসেন সদ্যজাতর গাত্রবর্ণের কল্যানে।
‘কালিন্দী’ বউয়ের ‘কেলেভূত’ মেয়েকে আর কোলে নেওয়া হয় নি।
কালো মানুষের হত্যায় আবার যখন মার্টিন লুথার কিং-এর
উত্তরসূরীরা তোলপাড় করছে বিশ্ব – মেয়েটি পরবর্তী স্টেট্যাস আপডেট
করল , চলতি হ্যাসট্যাগ-এর বাইরে গিয়ে– #alllivesmatter
ঠাকুমা তখন পাশে বসে Uncle Tom,s Cabin পড়ছেন।
তারা একই ঘরে থাকে।
তার ফরসা পিসিকে, এন আর আই পিসেমশাইয়ের জ্যান্ত
জ্বালিয়ে দিতে ঘন্টা খানেকের বেশি লাগে নি।
ঠাকুরদা শোকে গঙ্গায় ঝাঁপ – ।
ঠাম্মা এখন কালিন্দী বউয়ের জন্য খুব ভোরে উঠে টিফিন বানান
অঞ্জলি দিতে যান, হাত ধরে।
ওদিকে নাতনী জানিয়ে দিয়েছে,
তার একটা ‘কালো’ বাচ্চাই চাই।
ঠাম্মা বলেছেন, ‘ওর নাম রাখিস মাইকেল জ্যাকসন’।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন