হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত
উঠোনের প্রায় অর্ধেক অংশ জুড়ে এমনভাবে গাছটা পড়েছে যে দেখে মনে হয় কোন মানুষ যেন দু-হাত দু-পাশে ছড়িয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। বয়স হয়েছিল গাছটার, ফ্যাকাসে বর্ণ ধারণ করেছিল তার পাতাহীন শরীর। ঠিক যেন রক্তশূন্য মানুষের শরীরের মতই। শুধু তার মগডালের দিকে টিকে ছিল একটা মাত্র পাতা, যা জানান দিচ্ছিল অতি ক্ষীণ হলেও কোথাও যেন তার মধ্যে প্রাণের স্পন্দন আছে। বৃদ্ধ শরীর নিয়ে গত রাতের অমন ঝড় সহ্য করে দাঁড়িয়ে থাকার মত ক্ষমতা এই বুড়ো কাঁঠাল গাছটার ছিল না। শিকড় সমেত উপড়ে পড়তে হল তাকে। এখন সে সত্যিই মৃত। ঝড়-জল শেষে ভোরের আলো ফুটলে ভূপতিত গাছটার কিছুটা তফাতে দাঁড়িয়ে গাছটার দিকে তাকিয়ে ছিল রমানাথ। পিছনে দাঁড়িয়ে তার স্ত্রী ফুল্লরা বলল, “কতদিন ধরে তোমাকে বলেছিলাম, লোক ডাকিয়ে কেটে ফেলো, এ গাছে আর কোনওদিন ফল-পাতা ধরবে না। যাক ভালই হল।”
রমানাথ আজন্ম গাছটাকে দেখে আসছে। অনেকটা যেন নির্বাক মানুষের মতোই এ বাড়িতে এতদিন দাঁড়িয়ে ছিলো গাছটা। শৈশবে এ গাছে দোল খেয়েছে, তার ফল খেয়েছে সে, রমানাথ বলল, “রোজই ভাবতাম লোক ডাকব, কিন্তু ডাকা হয়নি। গাছটা পড়ে যাওয়াতে কাটার খরচটা অনেক কমে গেল। তাছাড়া আরও একটা লাভ হল। এটা বিক্রি করে আজকে বাবার বাৎসরিক শ্রাদ্ধের খরচটা উঠে গিয়েও হাতে দু-পয়সা থাকবে। আগে গাছটা কেটে বিক্রি করলে তো এতদিনে সে পয়সা খরচ হয়ে যেত।”
রমানাথের কথার জবাবে ফুল্লরা কিছু বলতে গিয়ে হঠাৎই থেমে গেল একটা শব্দে। উঠোনের একপাশে রমানাথের তৈরি করা নতুন বাড়ি, আর অন্য পাশে রমানাথের দাদুর আমলের টিনের চালওলা পুরানো ঘরটা। সেই ঘরের দরজা খোলার শব্দ কানে এল ফুল্লরার। দরজা খুলে দাঁড়িয়েছেন রমানাথের মা অতসীবালা। তাঁকে দেখার সাথে সাথেই ফুল্লরা চোখের ইশারা করল স্বামীকে। রমানাথ মায়ের ঘরের দিকে তাকাতেই তিনি হাত নেড়ে ডাকলেন তাকে।
রমানাথ এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ালেন তাঁর সামনে। সত্তরোর্ধ বৃদ্ধার পরনে একটা বিবর্ণ ছাপা শাড়ি, সিঁথিতে সিঁদুর, হাতে শাঁখা-পলা। ভোরের আলোতে সধবা নারীর সব চিহ্নই তাঁর চেহারায় পরিস্ফুট। যদিও তিনি সধবা নন। রমানাথের বাবা, অতসীবালার স্বামী প্রয়াত হয়েছেন ঠিক এক বছর আগে মুম্বইতে তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর কাছে। খবরটা সেদিন যখন টেলিফোনে রমানাথের কাছে এসেছিল তখন সে মাকে খবরটা জানাতেই তিনি তাকে শুধু একটাই কথা বলেছিলেন, “আমার স্বামী জীবিত।”
পাড়ার কিছু মহিলারা এসেছিল তাঁর সধবার চিহ্নগুলো মুছে ফেলার জন্য। তাঁদেরকে অতসীবালা জানিয়ে দিয়েছিলেন, “এই শাঁখা-লোহা আমি খুলব না। আর সাদা শাড়িও পড়ব না। আমার স্বামী জীবিত।”
তারপর থেকে আজ পর্যন্ত সধবার বেশেই থাকেন অতসীবালা। রমানাথের স্ত্রী ফুল্লরার অনুমান, বয়সজনিত কারণে অতসীবালার মাথার গন্ডগোল হয়েছে। চল্লিশ বছর আগে রমানাথের জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই অতসীবালার স্বামী তাকে ছেড়ে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন পরনারীর সাথে, তারপর আর ফেরেননি। নেহাত এ বাড়ি, জমি অতসীবালার বাবার সম্পত্তি। তাই তাঁর শিশু পুত্রকে নিয়ে মাথা গোঁজার জায়গাটুকু অন্তত পেয়েছিলেন অতসীবালা। রমানাথের বাবা যে কয়েকটা বছর তার স্ত্রীর সাথে ঘর করেছিলেন, সে ক’টা দিন তিনি এ বাড়িতেই কাটিয়েছিলেন ঘরজামাই হয়ে। স্বামীর মৃত্যুর পর অতসীবালা যেমন বৈধব্য বেশ গ্রহণ করেননি, তেমনই কোনও পারলৌকিক কাজেও যোগ দেননি। তবে রমানাথ তার পিতৃশ্রাদ্ধর যাবতীয় কাজ সম্পাদন করেছিল সামাজিক সংস্কার মেনে এবং আজও সে বাৎসরিক শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। বেলা এগারোটার সময় পুরুত ঠাকুর আসবেন, পিতৃশ্রাদ্ধে বসবে রমানাথ। দুপুরে কয়েকজন লোকও খাবেন বাড়িতে। রমানাথ তার জ্ঞান হবার পরে তার বাবাকে কোনওদিন চোখে না দেখলেও এটা তার কর্তব্য। অন্তত আত্মীয়-স্বজনরা তাই বলে।
মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে রমানাথ তাঁর মুখের দিকে তাকাল। ভোরের নরম আলোতে অতসীবালার মুখমন্ডলে বিষন্নতা জেগে আছে। রমানাথ তাঁকে বলল, “মা, কিছু বলবে? আজ কিন্তু বাবার বাৎসরিক কাজ করব আমি।”
রমানাথের প্রশ্নর জবাবে কয়েক মুহূর্ত চুপ করে রইলেন অতসীবালা। তারপর তিনি ছেলেকে অবাক করে দিয়ে বললেন, “আমাকে একটা সাদা কাপড় এনে দিতে পারিস? ওই যেমন বিধবারা পরে?”
বিধবা হলেই যে সাদা শাড়ি পড়তে হবে আজকের সমাজে ব্যাপারটা তেমন নয়। অনেকেই রঙিন কাপড় পরেন এবং তা হয়তো পরা উচিতও। কারণ, জীবনসঙ্গীর মৃত্যুর কারণে হৃদয়ে শোক থাকে ঠিকই, কিন্তু তা বলে সর্বক্ষেত্রে নারীর রঙহীন জীবনের আবশ্যিকতার কথা কোথাও বলা নেই। কিন্তু অতসীবালার মুখ থেকে সাদা কাপড়ের কথা শুনে রমানাথের মনে হল, তার বাবার মৃত্যুর ঠিক এক বছরের মাথায় শেষ পর্যন্ত আজ যেন মা স্বীকার করে নিলেন তাঁর স্বামী বিয়োগের কথা।
আকস্মিকভাবে কথাটা বলাতে তা শুনে বিস্মিত রমানাথ জবাব না দিয়ে তাকিয়ে রইল মায়ের মুখের দিকে। তা দেখে অতসীবালা আবার বললেন, “কিরে, দিবি একটা সাদা শাড়ি?”
দ্বিতীয়বার প্রশ্নটা শুনে রমানাথ তার প্রাথমিক বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে বলে উঠল, “হ্যাঁ, হ্যাঁ। নিশ্চয়ই দেব। এই তো একটু পরে বাজারে যাব।”
রমানাথ এরপর আর সেখানে দাঁড়াল না। তার বউ ইতিমধ্যে ঘরে ঢুকে গেছে। সে তার নতুন ঘরের দিকে ছুটল বউকে খবরটা দেবার জন্য। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই রমানাথ সাইকেল নিয়ে রওনা হল বাজারের দিকে।
ঘন্টাখানেক বাদে রমানাথ যখন বাজার সেরে উঠানে ঢুকল তখন সে দেখল অতসীবালা একইভাবে চৌকাঠে দাঁড়িয়ে আছেন। তার দৃষ্টি উঠানে ভেঙে পড়া গাছটার দিকে নিবদ্ধ। দোকান থেকে মায়ের জন্য সাদা শাড়ি কিনে এনেছে রমানাথ। তার সাথে সে আরও একটা কাজ সেরে ফেলেছে। ফেরার পথে পুরুত ঠাকুরের বাড়ি গিয়ে তাঁকে মায়ের সত্য উপলব্ধির ব্যাপারটা জানিয়েছে রমানাথ। ঠাকুর মশাই শুনে বলেছেন, “তবে শ্রাদ্ধের কাজের সময় ওনাকে থাকতে বলবে। উনি তো এতদিন কিছুই নিয়ম পালন করেননি। তোমার সাথে ওনাকে দিয়েও কিছু কাজ সারতে হবে।”
সাইকেলটা রেখে প্রথমেই সেই সাদা শাড়িটা বার করে রমানাথ তার মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। অতসীবালা নিশ্চুপ ভাবে শাড়িটা হাতে নিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে গেলেন। রমানাথ এরপর তার বাকি জিনিসপত্র নিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে ফুল্লরাকে বলল, “শাড়িটা দিয়ে এলাম মাকে। ঠাকুর মশাইয়ের সাথেও কথা হলো। তিনি বললেন, মাকেও শ্রাদ্ধের কাজে থাকতে হবে।”
ফুল্লরা বলল, “দেখ শেষ পর্যন্ত কী হয়? তোমার মায়ের পাগলামীর জন্য পাড়ার লোক, আত্মীয়-স্বজনের কাছে কম কথা শুনতে হয়েছে!”
ফুল্লরার বদ্ধমূল ধারণা, স্বামীর মৃত্যু সংবাদ অবিশ্বাস করার জন্য অতসীবালা সধবার বেশ ধারণ করে থাকেন, তা নয়। আসলে তাঁর মাথাটাই খারাপ হয়ে গেছে। চলতি কথায় লোকে যাকে বলে পাগল হয়ে যাওয়া।
কিছুক্ষণের মধ্যেই রমানাথ আর ফুল্লরা শ্রাদ্ধর উপাচার সাজাতে সাজাতে দেখতে পেল, নিজের ঘর ছেড়ে কুয়োতলাতে গিয়ে দাঁড়ালেন অতসীবালা। প্রথমে তিনি হাত থেকে শাঁখা-লোহা খুলে ফেললেন, তারপর জল তুলে ধীরে ধীরে স্নান করতে শুরু করলেন। মা যখন ঘষে ঘষে তাঁর কপাল থেকে, সিঁথি থেকে সিঁদুর চিহ্নগুলো তুলে ফেলতে লাগলেন তখন তা দেখে রমানাথ ফুল্লরাকে বলল, “এখনও কি তোমার, আমার মা’কে পাগল বলে মনে হচ্ছে? আমি কিন্তু বারবারই বলতাম যে, আসলে বাবার মৃত্যু সংবাদটা মা ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না।”
স্বামীর কথার কোনও জবাব দিল না ফুল্লরা। স্নান শেষ করে অতসীবালা রওনা হলেন তার ঘরের দিকে, আর তারা দু’জনও ব্যস্ত হয়ে পড়ল নিজের কাজে।
ঘরে ঢুকে দরজা দিলেন অতসীবালা। চৌকির একপাশে গুটিয়ে রাখা বিছানার ওপর সাদা শাড়িটা। সেদিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে ভিজে শরীরেই চৌকির এক কোণে বসলেন অতসীবালা। জানলাটা সামান্য খোলা। ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে, শিকড় উপড়ানো প্রাণহীন গাছটাকে। অথচ এই গাছটাই একদিন সবল পুরুষের মত দাঁড়িয়ে থাকত। কোনও সময় এর ফল বেচে, পাতা বেচে ছেলের খাবার কিনেছেন তিনি। এ গাছ ছায়া দিয়েছে তার উঠোনটাকে, যার নিচে খেলা করত অতসীবালার ছোট্ট ছেলেটা। কত ঝড়ের রাতে এই গাছটাই তো বুক পেতে দাঁড়িয়ে দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করেছে তাদের শেষ আশ্রয় এই টিনের চালাঘরকে। অনেক কষ্টের দিনে স্বামীর মতো, পিতার মতো যেন সে রক্ষা করেছিল তাদের দু-জনকে। গাছটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় চৌকিতে বসে দেওয়ালে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন তিনি।
নানা স্বপ্ন ভিড় করে আসতে লাগল তাঁর চোখে পেঁজা তুলোর মতো। শেষে তিনি একটা স্বপ্ন দেখলেন— তাঁর উঠোন ভর্তি অনেক লোক! এয়োস্ত্রীরা কেউ শাঁখ বাজাচ্ছে, কেউ উলু দিচ্ছে। কনের সাজে সজ্জিত ছোট্ট অতসী। মাথায় মুকুট, পরনে লাল চেলি, হাতে ফুলের মালা। কে যেন কোলে নিল তাকে। বাবার আমলের পুরোহিত মশাই তাকে বললেন, “মা, এবার বরের গলায় মালাটা পরিয়ে দাও। এই যে এই ডালে—।”
ছোট্ট অতসী তাঁর কথা শুনে মালাটা পরিয়ে দিল কাঁঠাল গাছের গুঁড়ির গায়ে একটা নিচু ডালে। সঙ্গে সঙ্গে শাঁখ বেজে উঠল। উলুধ্বনিতে কান পাতা দায়। তারই মাঝে অতসী শুনতে পেলো, পাশ থেকে তার বাবা কিছুটা ভয়ে ভয়ে ঠাকুর মশাইকে জিজ্ঞেস করলেন, “আর কোনও ভয় নেই তো ঠাকুরমশাই?”
তিনি জবাব দিলেন, “না, আর ভয় নেই। এই কাঁঠাল গাছ, বৃক্ষ দেবতার সাথে বিয়ে হল তোমার মেয়ের। এবার ওর অকাল বৈধব্য যোগ কেটে গেল।”
এ পর্যন্ত স্বপ্নটা দেখে অতসীবালার ঘুম ভেঙে গেল। না, ঠিক স্বপ্ন নয়, তিনি যা দেখলেন, তা তাঁর শৈশবেরই সত্য ঘটনা। জানলার ফাঁক দিয়ে মাটিতে শোয়া গাছটার দিকে তাকিয়ে তিনি তার উদ্দেশ্যে মনে মনে বললেন, “তোমাকে কোনওদিন এ ঘরে আনতে পারলাম না। এত বড় কাউকে কি এই ছোট্ট ঘরে জায়গা দেওয়া যায়? সারা জীবন তোমাকে ঘরের বাইরেই দাঁড় করিয়ে রাখলাম।”
ইতিমধ্যে বেশ বেলা হয়েছে। একসময় উঠে পড়লেন তিনি। তারপর ধীরে ধীরে গায়ে জড়িয়ে নিলেন সাদা শাড়িটা। আর এরপরই দরজায় টোকা দেওয়ার শব্দ হল। দরজা খুলে তিনি দেখলেন, বাইরে দাঁড়িয়ে আছে রমানাথ আর ফুল্লরা।
সাদা শাড়ি পরা মাকে দেখে রমানাথ বলল, “ঠাকুর মশাই তোমাকে ডাকছেন, কাজে বসতে হবে।”
অতসীবালা কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে শান্ত অথচ দৃঢ়ভাবে জবাব দিলেন, “না, আমি যাব না।”
এ কথা বলে রমানাথকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তিনি দরজা বন্ধ করে দিলেন।
বিস্মিত রমানাথ তার বউকে বলল, “ব্যাপারটা কী হল বল তো?”
ফুল্লরা মুখ বেঁকিয়ে বলল, “কী আবার হবে? সবই তো ওনার পাগলামী। সাদা শাড়িও এরপর আবার ছেড়ে ফেলবে মনে হয়!”
আধো অন্ধকার ঘরের মধ্যে চুপচাপ দাঁড়িয়েছিলেন অতসীবালা। অস্পষ্ট মন্ত্রোচ্চারণের শব্দ বাইরে থেকে ঘরে ঢুকছে। পিতৃশ্রাদ্ধে বসেছে রমানাথ। হঠাৎ একটা জিনিস চোখে পড়ল অতসীবালার। গতকাল ঝড়-জলের রাতে খোলা জানলা দিয়ে কখন যেন বিছানার একপাশে এসে পড়েছে গাছের শেষ পাতাটা! যার মধ্যে জেগেছিল তার শেষ প্রাণটুকু। অতসীবালার অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণের জন্যই যেন সে প্রবেশ করেছে তাঁর ঘরে।
অতসীবালা তুলে নিলেন কাঁঠাল পাতাটা। যেন সেটা পাতা নয়, একটা করতল। পাতাটাকে দু-হাতে বুকে জড়িয়ে তিনি ডুকরে কেঁদে উঠলেন। কেউ কোনোদিন জানবে না, বুঝবে না যে, একবছর আগে নয়, গতকাল ঝড়ের রাতে এবার সত্যিই স্বামীহারা হয়েছেন অতসীবালা।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন
অসম্ভব ভালো