জয়দীপ চক্রবর্তী
আমি বুদ্ধিমান নই। এক কথায় বলতে গেলে আমি বোকা মানুষ। আমার বউ রোজ বেশ কয়েক বার করে এই সহজ কথাটা আমাকে মনে করিয়ে দেয়। আমাকে বোকা বলার সময় শাল্মলী এমন একটা ভাব করে যেন এই সামান্য কথাটা বার বার মনে করিয়ে না দিলে ভুল করে আমি নিজেকে চালাক ভাবতে শুরু করে দেব ফস করে। অবশ্য আমি জানি, সত্যিই আমার মাথায় যদি বুদ্ধিশুদ্ধি থাকত, কিছুতেই পাঁচজনের কথা শুনে শাল্মলীকে বিয়ে করতে আমি রাজি হয়ে যেতাম না। শাল্মলী উচ্চ শিক্ষিত। তাকে দেখতে খুবই সুন্দর। ফর্সা, টানা টানা চোখ, কমলা লেবুর কোয়ার মতো ঠোঁট। ঘাড় পর্যন্ত ফোলা ফোলা চুল থেকে কী সুন্দর একটা গন্ধ বের হয় সবসময়। আমার নিজের অবিশ্যি লম্বা চুল পছন্দ। আমার মনে হয় শাল্মলীর যে রকম মুখের গড়ন তাইতে লম্বা চুলেই ওকে বেশি মানায়। শাল্মলীকে এই কথাটা আমি বোধহয় বলেওছিলাম একবার। আমার কথা শুনে শাল্মলী হেসেছিল। সেই হাসিতে এমন একটা কিছু ছিল, আমি মনে মনে একেবারে কেন্নোর মতো গুটিয়ে গিয়েছিলাম।
শাল্মলীর সঙ্গে আমার খুব বেশি কথা হয় না। আসলে ও-ই আমার সঙ্গে বেশি কথা বলতে চায় না। আমি বুঝি। কিন্তু ওই যে, আগেই বলেছি, আমি মুখ্যত বোকা। বুকের সব কথাই যে মুখে আনতে নেই, এ কথাটা সবসময় মনে রাখতে পারি না। তাই এই কথাটা আমি তাকে বলে ফেলেছিলাম। স্বভাবতই আমার কথাটা সে ভালোভাবে নেয়নি। বরং আমাকে বকেই দিয়েছিল সে। বলেছিল, ‘তোমার মতো নির্বোধ না হলে এ কথা বলতেই না আমাকে। সেকেলে নায়িকাদের মতো এক ঢাল চুল ম্যানেজ করা আমার মতো ওয়ার্কিং লেডিদের জন্যে যে কতখানি হ্যাপার, তা তুমি বুঝবে না…’
আমার সঙ্গেও অনেক মেয়েই চাকরি করে। তাদের মধ্যে অনেকেরই লম্বা লম্বা চুল। তারা সকলেই যে অবিবাহিত এমনটা নয়। তারা কি করে যে তাদের সংসার, চাকরি, লম্বা চুল সব কিছু সুন্দরভাবে ম্যানেজ করে কে জানে! আমি জানি এই প্রশ্নের উত্তর অন্তত শাল্মলীর কাছে চাওয়া যাবে না কোনও দিন। ইদানিং কী একটা যেন সোসাল ওয়েলফেয়ার অরগানাইজেশনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শাল্মলী। মাঝে মধ্যেই অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে দেরি হয় তার। ওই সংস্থায় কাজের খুব চাপ। শাল্মলীর যেদিন বাড়ি ফিরতে দেরি হয়, ওকে দেখে আমার ক্লান্ত মনে হয়। প্রায়ই দেখি, ওর মতো রূপ ও পোশাক সচেতন মেয়েও একেকদিন বেশি রাতে বাড়ি ফেরার সময় কপালের ঘেঁটে যাওয়া টিপ, এলোমেলো চুল ঠিক করতে ভুলে যায়। এইসব দিনে সাধারণত রাতে বাড়িতে আর খায় না ও। আমি না খেয়ে বসে থাকব জেনেও আমাকে আগাম না জানিয়ে বাইরে থেকেই খেয়ে আসে। বলে সংস্থার অফিসেই খাবার আনিয়ে নিয়েছিল রাত হয়ে যাচ্ছে দেখে। আমি বোকা মানুষ, তবু বেশ বুঝতে পারি, শাল্মলী আমাকে অনেক কথাই সত্যি বলছে না।
আজ আমি অফিস যাইনি। সকাল থেকে গা-টা ম্যাজ ম্যাজ করছিল। আগের দিন সন্ধে থেকে বৃষ্টি পড়ছিল। অফিস ফেরত বাস থেকে নেমে বাসস্ট্যান্ড থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরতে ফিরতে একেবারে ভিজে একসা হয়ে গেলাম। সঙ্গে ছাতা ছিল। আমার ব্যাগে শীত গ্রীষ্ম ছাতা রেখে দিই আমি। কিন্তু কেন কে জানে, কাল রাতে বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ছাতাটা ব্যাগ থেকে বের করে মাথার ওপরে মেলে ধরার কথা মনেই ছিল না। শাল্মলী ফিরেছিল আরও পরে। তখন বৃষ্টি থেমে গেছে। কাল রাতেও কপালের টিপটা দেখলাম অনেকখানি সরে গিয়ে ডান চোখের ওপর দিকে অনিচ্ছুক লেপটে রয়েছে। আমার কেন কে জানে, শাল্মলীকে দেখে হাসি পেল। আমি জানি এই সময় হেসে ফেললে মস্ত বিপদ। শাল্মলী কিছুতেই হাসিটা সহজভাবে নেবে না। কী ভাগ্যিস, ঠিক তখনই পাঁচ ছটা হাঁচি হল পর পর। বুঝলাম, রাতে জ্বর আসতে পারে। তখনই একটা প্যারাসিটামল খেয়ে নেওয়া যেত। তাইতে জ্বর, কাঁচা সর্দি দুটোকেই খানিক আটকানো যেত। কিন্তু ইচ্ছে করেই আমি ওষুধ খেলাম না। জ্বর হলে আমার খুব ভালো লাগে। হু হু জ্বরে যখনই একা ঘরে চুপ করে চোখ বুজিয়ে পড়ে থেকেছি, দেখেছি আমার মা ঠিক পাশে এসে বসে। মাথায় হাত রাখে আগের মতোই। আমার অসুস্থতায় মা বোধহয় এখনও অস্থির হয়ে পড়ে , সেই যেমন হতো বেঁচে থাকার সময়। কাল রাতে জ্বর খুব বেশি ছিল না। গলায় ব্যথা ছিল। চোখে নাকে জ্বালাভাবও ছিল খুব।
চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে একা বসে ছিলাম। আমার বাড়ির কাজের মেয়ে চাঁপা এসে বলল, ‘দাদা, চা দেব?’
‘দাও’ বলতে গিয়ে দেখলাম গলা বুজে গেছে। স্বর বেরোচ্ছে না ঠিকঠাক।
‘আপনার শরীর খুব খারাপ লাগছে?’ চাঁপা আবার জিগ্যেস করল।
‘না তো’, হাসার চেষ্টা করি।
চাঁপা আমার দিকে স্থির চোখে চেয়ে রইল একটুক্ষণ। সে দৃষ্টিটা ভারি অদ্ভুত। কারও চোখে অমন মায়া অনেক দিন পরে দেখলাম আমি। চাঁপা আবার জিগ্যেস করল, ‘আপনার চোখদুটো যে জবা ফুলের মতো লাল হয়ে আছে…’
‘কিছু পড়েছে টড়েছে বোধহয়’, বলে আমি অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম।
চাঁপা চলে গেল। চা নিয়ে এসে আমার হাতে দিল ডিশে করে। আমার হাতে হাত ঠেকল চাঁপার। ইচ্ছে করেই কি হাত ঠেকালো ও আমার হাতে?
চাঁপা নিজেও এক কাপ চা নিয়ে আমার সামনে একটা প্লাসটিকের চেয়ার টেনে এনে বসল। আমি জানি শাল্মলী থাকলে সে কক্ষনও আমার সামনে এসে এমন করে বসে পড়ত না। আমার চোখ খুলে রাখতে কষ্ট হচ্ছিল। এইবার বোধহয় জ্বরটা তেড়েফুঁড়ে আসছে। কাপের চা পুরোটা না খেয়েই নামিয়ে রাখলাম সামনের টি টেবলে। উঠে পড়লাম। ঘুম পাচ্ছে খুব। দাঁড়াতে গিয়ে মাথা টলমল করে করে উঠল। চাঁপা এসে ধরে ফেলল আমাকে। দু হাতে জড়িয়ে নিয়ে বলল, ‘পড়ে যাচ্ছিলে তো? আর এ কী! গা যে জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে তোমার।’
‘জ্বর আসছে মনে হচ্ছে’, আমি কাঁপা গলায় বলি।
‘আসছে নয়, এসে জাঁকিয়ে বসে পড়েছে’, চাঁপা আমাকে জড়িয়ে ধরে থেকেই বলে। চাঁপার বর অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে চলে গেছে চাঁপার কাছ থেকে। বস্তির যে ঘরটায় ভাড়া থাকত ওরা, তার ভাড়া জোটানোই তখন দায় চাঁপার কাছে। তাছাড়া একা মেয়ে মানুষের পক্ষে ওখানে থাকার অন্য সমস্যাও ছিল। শাল্মলীই প্রস্তাবটা দিয়েছিল ওকে। অন্য বাড়ির কাজ ছেড়ে দিয়ে আমাদের বাড়িতেই দিন রাতের কাজের লোক হিসেবে থেকে যাওয়ার প্রস্তাবে চাঁপা না করেনি। তারপর থেকে ও এই বাড়িতেই থাকে। নয় নয় করে তাও প্রায় বছর তিনেক হয়ে গেল বোধহয়। চাঁপার বয়েস শাল্মলীর থেকে অনেকটাই কম। শরীরের গড়ন ভালো। অযত্নেও বেশ আঁটোসাটো এবং আকর্ষণীয়।
চাঁপার বুক আমার পিঠের এক পাশে চেপে বসেছে। আমার গা শির শির করছিল। নিজেরই অবাক লাগল আমার। এই অসুস্থ অবস্থাতেও চাঁপার স্পর্শে আমার শরীর জাগছে!
চাঁপা ধরে ধরে ঘরে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল আমায়। জিগ্যেস করল, ‘বউদিকে ফোন করব?’
‘না থাক’, দু’ দিকে মাথা নাড়ি আমি।
চাঁপা অদ্ভুত চোখে চেয়ে থাকে আমার দিকে। নরম গলায় বলে, ‘কষ্ট হচ্ছে খুব?’
আমি উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকি।
ও আবার জিগ্যেস করে, ‘কোথায় কষ্ট হচ্ছে তোমার দাদা?’
কী বলব ওকে? চাঁপা কে কি বলা যায়, ‘কষ্ট আমার দিন রাতের সঙ্গী। সে কষ্টের সবটুকুই কি শুধু শরীরের…’
বুঝতে পারছি, চাঁপা ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা জল এনে তাইতে ন্যাকড়া ভিজিয়ে আমার কপালে চেপে ধরেছে। আমার মাথার মধ্যে একটা রিনরিনে অনুভূতি। চাঁপা কি তাহলে মনে মনে চায় আমাকে? একলা যুবতী মেয়েটা তা নইলে এত ভালোবাসে কেন আমাকে? ভালো না বাসলে এমন সহজ আন্তরিকতায় সে আমাকে জড়িয়ে ধরে কী করে?
কষ্ট হচ্ছে, তবু চোখ খুললাম আমি। চাঁপা শাড়ি পরে। শাল্মলী ওকে সালোয়ার কামিজ কিনে দিতে চেয়েছিল। ও রাজি হয়নি। এই যে এখন আমার কপালে জলপট্টি দিচ্ছে চাঁপা, ওর বুক থেকে আঁচল খসে পড়েছে। ব্লাউজের ওপর দিয়ে ওর ভারি দুটি বুক দু’দিকে ঠেলে বেরোচ্ছে। দুই বুকের মাঝখানের বিভাজিকাও স্পষ্ট। অথচ সেসব দিকে খেয়ালই নেই চাঁপার। সত্যিই কি খেয়াল নেই ওর, নাকি ইচ্ছে করেই ফাঁকা বাড়িতে আমাকে লোভ দেখাতে চাইছে চাঁপা?
এত কষ্টের মধ্যেও হাসি পেল আমার। আসলে সব মেয়েই বোধহয় শিকারী। প্রাণী জগতে তেমনই তো নিয়ম। অন্যের চোখ এড়িয়ে ধীরে নিঃশব্দে এগিয়ে যাচ্ছে এরা সক্কলে। সুযোগ মতো শিকারের ঘাড়ে লাফিয়ে পড়বার জন্যে। শাল্মলী, চাঁপা, সব্বাই… আমার আরও একটুক্ষণ চোখ খুলে রাখার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু পারলাম না। চোখ বন্ধ হয়ে এল আমার। দু’চোখে ঘুম এল। আর তখনই মনে হল, মা এসে পাশে বসেছে।
মা আমার মাথায় আলতো হাত রাখল। হাল্কা হেসে বলল, ‘বোকা ছেলে।’
‘তুমিও এ কথা বলছ?’ আমি অভিমান করে বলি।
‘বোকাই তো’, মা আমার মাথার উস্কোখুস্কো লম্বা লম্বা চুলের মধ্যে বিলি কেটে দিতে দিতে বলে, ‘শাল্মলী ঠিকই বলে।’
আমি চুপ করে রইলাম।
‘রাগ হল?’ মা আবার মুচকি হাসলেন।
‘হুঁ।’
‘শাল্মলীর কথায় সায় দিইছি বলে?’
‘শাল্মলী আমাকে সহ্যই করতে পারে না মা। আমি তো তার যোগ্য নই। সে এখন তার মনের মতো পুরুষ খুঁজে নিয়েছে। আমাকে চোখের সামনে দেখলে তার তো বিবমিষা হওয়াই স্বাভাবিক। শরীরের ভেতরে জমে থাকা আমার বিরুদ্ধে সমস্ত ক্রোধ, সব বিরক্তি তখন হুড়হুড় করে বেরিয়ে আসে তার মুখ দিয়ে। তাই বলে তুমি তার সুরে কথা বলবে?’
‘এত কিছু তুই বুঝিস?’
‘আমি সব বুঝি। বুঝেও চুপ করে থাকি।’
‘কেন?’
‘আমি তো ঝগড়া করতে পারি না। তর্ক বিবাদ আমার ভালো লাগে না কস্মিনকালে।’
‘কিন্তু জীবনে মন দিয়ে ঝগড়া করার মতো একটা মানুষ যে বড় প্রয়োজনীয় সোনা…’
আমি ফ্যালফ্যাল করে মায়ের মুখের দিকে চেয়ে রইলাম।
‘তুই কখনও বোঝার চেষ্টা করেছিস শাল্মলীকে?’
‘আমি তো তার কথা ভাবি না আর। তাকে আমার মন থেকে সরিয়ে দিয়েছি আমি। শাল্মলী, চাঁপা, সকলেই, সব মেয়েরাই সুযোগ সন্ধানী। শিকারি বাঘের মতো…’
‘আমিও যে মেয়ে…’
‘তুমি এই যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে’, আমি তড়িঘড়ি বলি।
‘তুই কী বলতে চাইছিস? শাল্মলীকে তাহলে আর ভালোবাসিস না তুই?’
‘না। আমি তাকে মনে মনে ঘেন্না করি।’
‘তাই?’
‘হুঁ।’
‘এ কথা যে সত্যি নয় তা তুই নিজেই সবচেয়ে বেশি জানিস।’
‘সত্যি নয়?’
‘উঁহু। আসল সত্যিটা হল, তুই মেয়েটাকে বড় ভালোবাসিস। বড্ড ভালোবাসিস। তাই প্রতি মুহূর্তে তাকে হারিয়ে ফেলার ভয় তোর।’
‘আর শাল্মলী?’
‘তার মনের মধ্যে ঢুকে সত্যিটা টেনে বের করে আনার দায়িত্ব তো তোরই ছিল। একমাত্র তোর…’
‘আমি চেষ্টা করেছিলাম…’
‘মিথ্যে কথা।’
আমি নিজের মা-কেই যেন ঠিকমতো চিনতে পারছি না আজ। আমাকে অমন বিহ্বল দেখে মা আবার বলল, ‘একজন নারীকে চিনে ফেলা কি এতই সহজ রে? একজন নারীর মধ্যে যে অনেক নারী ঘাপটি মেরে বসে থাকে। কেউ মা, কেউ বোন, কেউ স্ত্রী, কেউ প্রেমিকা…তাদের মধ্যে থেকে ঠিক জনকে চিনে নিতে না পারলেই গোলমাল…’
‘তাহলে শাল্মলী…’
‘কী বলছ? ডাকছ আমাকে?’ একটা ভীষণ উদ্বিগ্ন মুখ ঝুঁকে পড়েছে আমার মুখের ওপরে।
কার মুখ? মা-র? না তো! আমার মাথার ভয়ানক ভার ভাবটা ক্রমশ কেটে যাচ্ছে। কে যেন বলে উঠল, ‘বউদি, দাদা চোখ খুলছে।’
শাল্মলী আমার মুখের ওপরে ঝুঁকে পড়েছিল। ওর চোখে জল টলমল করছে। আমার জন্যে? শাল্মলী কি আমার জন্যে সত্যিই কাঁদতে পারে এখনও? আমার সব কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিল। ক্লান্তি লাগছে খুব। আবার চোখ বন্ধ করলাম আমি। শুনলাম শাল্মলী বলছে, ‘ভাগ্যিস ঠিক সময়ে আমাকে ফোন করেছিলি। ডাক্তার বলে গেলেন বেশি দেরি হলে বিপদ হয়ে যেতে পারত। ব্লাড প্রেসার মারাত্মক হাই। সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ পড়ে গেল বলে হয়ত এ যাত্রা রক্ষে হল…’
শাল্মলীর কন্ঠস্বর আমার অচেনা মনে হচ্ছিল। শাল্মলী আরও কত কী সব বলছিল। ছেঁড়া ছেঁড়া অনেক কথা। সব আমার মাথায় ঢুকছিল না।
চাঁপা হাউমাউ করে কেঁদে উঠল, ‘বউদি, আমার নিজের দাদা যেদিন মরে গেল, আমি তখন বছর দশেকের। কিচ্ছুটি করতে পারিনি সেদিন। আজ দাদাকে অসুস্থ দেখে…’
আমার আবার ঘুম পাচ্ছে। ক্রমশ সেই ঘুমে তলিয়ে যাচ্ছি আমি। মনে হল, মা আমার পাশে এসে বসেছে আবার। আমার লজ্জা করতে লাগল। মায়ের মুখের দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারলাম না আর।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন