সাবিনা ইয়াসমিন রিঙ্কু
দড়াম্ করে দরজাটা লেগে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়তীর বুকটা ধড়াস করে উঠল! যাহ্! কী হবে এইবার! এই নিয়ে দ্বিতীয়বার। ছেলে কলেজে, ছেলের বাপ অফিসে। ড্রাইভার নৌশাদ থাকলেও হতো! কিন্তু সে তো ভাগ্নির বিয়ে উপলক্ষ্যে একমাস ছুটি নিয়ে বিহার গিয়েছে! রান্নাঘরে কড়াইতে নিভু নিভু আগুনে পেঁয়াজ- মৌরলা শুকনো শুকনো হচ্ছে। লাস্ট যখন কড়াইয়ের ঢাকনা তুলে দেখেছিল, তখনও রান্না শেষ হতে মিনিট তিনেক বাকি ছিল। নামানোর আগে চেরা কাঁচালঙ্কা আর এক চামচ সর্ষের তেল ছড়ালেই ব্যাস! রান্না কমপ্লিট হয়ে যেত। পনের মিনিট হয়ে গেল! পেঁয়াজ -মৌরলা এতক্ষণে নিশ্চয় পুড়ে ঝামা হয়ে গিয়েছে! পোড়া গন্ধ খুব সহজেই বাতাসে মিশে যায়। নাক টানল জয়তী। কিন্তু কোনও পোড়া গন্ধ পেল না। সম্বরের গন্ধ পেল। থ্রি বি ছাড়া বেলা এগারটায় ইডলি ধোসা আর কে খাবে! মাড়োয়ারি এবং সাউথ ইন্ডিয়ানদের মতো এখন বাঙালীরাও অবশ্য ব্রেকফাস্টে পাউরুটি, রুটি তরকারি ছেড়ে ওসব খাচ্ছে।
এখন কী হবে! কী করে ঢুকবে ঘরে! কিছুক্ষণ আগে সামনের ফ্ল্যাটের তনিমা ঝড়ের গতিতে কলিং বেল বাজিয়ে তাকে ডেকে হাতটা ধরে টান দিল “শিগগির চল বৌদি টু এ’র সঙ্গে টু ডি’র চরম লেগেছে।”
জয়তী বলল “ওতো রোজই লাগে! নতুন আর কী!”
তনিমা বলল “আজ পালবাবুর বউ এত্ত বড় একখানা লাঠি বের করেছে! মিস মণিকা ঘাবড়ে গিয়েছে!”
জয়তী অবাক হয়ে বলল “বলো কী! তাহলে তো যেতেই হবে! দাঁড়াও গ্যাসটা অফ করে ওড়নাটা নিয়ে আসি!” ফ্ল্যাটের ভেতরে ঢুকবে কী তার আগেই দখিন দিকের ব্যালকনি দিয়ে আসা উমরোঝুমরো বাতাসে দরজাটা দড়াম করে লেগে গেল!
এইসব দরজা অটোমেটিকভাবে লক হয়ে যায়। চাবি না থাকলে লক ভেঙে তবেই ঘরের ভেতরে ঢোকা সম্ভব।
মিস মণিকার সঙ্গে পালবাবুর বউয়ের একেবারেই বনে না। মুখোমুখি ফ্ল্যাট। ঝগড়া লেগেই থাকে। মিস মণিকা যেন হিন্দি সিনেমা থেকে উঠে আসা একটা চমকপ্রদ চরিত্র। আবাসনের প্রায় সব পুরুষেরই গোপন ডার্লিং। দারুণ দেখতে মিস মণিকা। যেকোনো ড্রেসেই তাকে চমৎকার মানিয়ে যায়। ফিগারটা ভালো। ভালো মানে চাবুকের মত। এইরকম ফিগারের মেয়েদের মুখে কমনীয়তার অভাব দেখা যায়। কিন্তু মিস মণিকার মুখখানা বড় কোমল আর স্নিগ্ধ। বাঙালি মেয়েদের মত মুখখানি আলগা মায়া দিয়ে গড়া। মিস মণিকা স্লিভলেস ব্লাউজ আর শিফন শাড়ি পরে যখন আবাসন থেকে বেরোয়, তখন কেয়ারটেকার থেকে ক বাবু, খ বাবু, গ বাবু …. সব বাবুরাই হাঁ করে দ্যাখে। মেয়ে বৌরাও দ্যাখে। তবে আড়চোখে। দু তিন বাচ্চার মায়েরা সংসারের পাঁকে গলা ডুবিয়ে হিংসে হিংসে মুখটুকুনি বের করে মিস মণিকার প্রজাপতির মত উড়ে যাওয়া দ্যাখে আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।
মিস মণিকাকে কেউ কখনো রাগতে দ্যাখেনি। ব্যাগে চকলেট রেখে দেয়। বাচ্চারা সামনে এলেই সেগুলো হাতে ধরিয়ে দেয়। খ্রিস্টমাস-এর সময় এলাকার দুস্থ শিশুদের হরেকরকমের লোভনীয় গিফট বিতরণ করে। নিজের জন্মদিনে আবাসনের প্রায় সবাইকেই কেক খাওয়ায়। ঝাড়ুদারের সঙ্গেও মিষ্টি করে হেসে কথা বলে। সঙ্গী বলতে ঘরে একটা গুবলু টাইপের হুলো আছে। নাম জিন্দেগি। একজন বিশেষ পুরুষ বন্ধু মাঝেমাঝে মণিকার ফ্ল্যাটে আসে। রণবীর সিংয়ের মত দেখতে। মনে হয় পাঞ্জাবী! এসব জবার মায়ের মুখে শোনা। জবার মা জয়তীর ফ্ল্যাট নিয়ে আরো তিনটে ফ্ল্যাটে কাজ করে। জয়তীর ঘর মোছে, বাসন মাজে, কাপড় কেচে দিয়ে যায়। জবার মায়ের মুখেই শুনেছে মিস মণিকা নাকি ব্যাটাছেলেদের মত মদ খায়। কথাটা প্রথমে ধরতে পারেনি জয়তী। ব্যাটাছেলেরা কিভাবে মদ খায়! চাটের সঙ্গে মদ খায়। কাজুবাদাম, চিকেন ফ্রাই …. এসব থাকে। পরে জবার মায়ের কথাটার মানে ধরতে পেরে মনেমনে হেসেছে জয়তী। মেয়েদের মদ সিগারেট খাওয়া এখনও অনেকের কাছে খুব আশ্চর্যের।
জিন্দেগি নামের হুলোটা মিস মণিকার আদরের পোষ্য। খুব যত্নে থাকে। মিস মণিকা দুনিয়ার সমস্ত বেড়ালকেই প্যায়ার করে। আবাসনের আশেপাশে ফ্যা ফ্যা করে ঘুরে বেড়ানো গোটা পাঁচেক নানা সাইজের বেড়াল সকালের দিকে টু এ’র সামনে জড়ো হয়। চেল্লামেল্লি করে। মিস মণিকা অফিস যাওয়ার আগে নিজের হাতে তাদেরকে খাওয়ায়। ভাত আর তেলাপিয়া মাছ মেখে দুটো বড় প্লেটে রাখে। ক্ষুধার্থ বেড়ালগুলো হামলে পড়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে প্লেট সাফ করে দেয়। কিছু দুষ্টু বেড়াল মানুষেরই মত। কৃতজ্ঞতাবশত মাঝরাতে এসে দরজার সামনে পটি করে দিয়ে যায়। জবার মা গজগজ করতে করতে সেসব নোংরা পরিস্কার করে। আজ নাকি কোনো একটা বেড়াল টু ডি’র সামনে পটি করে দিয়ে গেছে! বেড়ালগুলো যখন খাচ্ছিল পালবাবুর বউ লাঠি নিয়ে তেড়ে গেছে। মিস মণিকা বেলা করে অফিসে বেরোয়। মিস মণিকা যখন অফিস যাবে বলে বের হচ্ছে, তখন পালবাবুর বউ তার দিকে চোখ পাকিয়ে বলেছে বলেছে এবার বেড়াল যদি তার ঘরের সামনেটায় নোংরা করে, তবে মিস মণিকা যেন নিজে পরিষ্কার করে দেয়। মিস মণিকা অনেকের চোখের মণি। তার দল ভারী। একা পালবাবুর বউ বেড়ালের অপকারিতা নিয়ে যখন একগাদা লেকচার দিয়ে যাচ্ছে, তখন মণিকার পক্ষের লোকজন পশুপ্রেমিক হয়ে পালবাবুর বউকে ঠুসে দিচ্ছে। মণিকা মিচিক মিচিক করে হাসছে শুধু। ওই হাসি দেখে পালবাবুর বউয়ের রাগ বেড়ে চারগুণ হচ্ছে। গলার আওয়াজ বাড়ছে। নাটক জমে উঠেছে। ওই নাটক দেখতেই তনিমা জয়তীকে আওয়াজ দিয়েছিল। আওয়াজ শুনে তড়িঘড়ি ফ্ল্যাটের বাইরে আসতেই এই দুর্ঘটনা! মোবাইল ঘরের ভেতরে। ফোন করে যে গোপুকে ডাকবে সে উপায় নেই। রানাকে ফোন করে লাভ নেই। মুখ করবে। রানার ফোন নম্বর মুখস্থ থাকলে তনিমার ফোন থেকে একটা কল করাই যেত! আরেকবার নাক টানল জয়তী। শুধু মৌরলা নয়, কড়াইখানাও নিশ্চয় এতক্ষনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে! কোনো পোড়া গন্ধ পেল না বলে বেশ আশ্চর্য হল।
জয়তীর শ্বশুর শাশুড়ি বারাসাতে থাকেন। বিশাল বড় বাড়ি। কাজের লোকের ওপরে নির্ভরশীল তাঁরা। তবু ছেলের কাছে থাকতে রাজী নন। আলো বাতাস ভরা ওই বাড়ি তাঁদের কাছে একটা ইমোশন। রানার বাবা একসময় অনেক কষ্ট করে ওই বাগানওয়ালা বাড়ি করেছিলেন। সরকারি চাকরি করলেও অমন স্বপ্নের মত বাড়ি বানানো সম্ভব ছিল না। টাকা জমিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন তিনি। এই কর্মকাণ্ডে স্ত্রীকে পাশে পেয়েছিলেন। বউদের এই পাশে থাকার ব্যাপারটা সরাসরি প্রত্যক্ষ করা যায় না। একটা তরকারি দুবেলা চালানো, বুদ্ধি করে বাড়তি খরচে রাশ টেনে সংসারের টাকা বাঁচানো …. এগুলো চরমভাবে পাশে থেকে স্বামীকে সাহায্য করার মধ্যেই পড়ে। একমাত্র ছেলে বিয়ে করে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে এই বাড়িতেই থাকবে …. এমনটা ভেবে ঘরের সংখ্যা বাড়িয়ে ছিলেন রানার বাবা। কিন্তু ছেলের অফিস কলকাতায়। রোজকার যাতায়াতের সমস্যার জন্য ছেলেকে কলকাতায় ফ্ল্যাট কিনতে হয়েছে। মাঝেমাঝে রানার বাবা মা ছেলে বউয়ের কাছে কিছুদিন কাটিয়ে যান। কাছে থাকেন না বলে বেশ যত্ন পান আর ওই কটা দিন জয়তীরও খুব ভালো লাগে। বেশ একটা উৎসবের মেজাজ থাকে ওই কটা দিন। বাইরে খাওয়াদাওয়া হয়। কাছেপিঠে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করা হয়। ওইরকম দিনে একবার সবাই মিলে দক্ষিণেশ্বর গিয়েছিল। একবেলা ওখানে কাটিয়ে রাতের খাবার খেয়ে আবাসনে ফিরে তালা খুলে ফ্ল্যাটে ঢুকতে যাবে …. কিন্তু লক আর কিছুতেই খোলে না। রানা চাবি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আঙুল লাল করে ফেলল, লক খুলল না। প্রচণ্ড গরমে সবার কাহিল অবস্থা। ড্রাইভার নৌশাদ অনেকবার চেষ্টা করে বিফল হয়ে “ইয়ে হামসে নেহি হোগা” বলে নিচে চলে গেল। জয়তীর ব্যাগেও চাবি থাকে। সেটা দিয়ে ট্রাই করা হল! হল না। লকের ভেতরে সমস্যা হয়েছে। বাকি তিনটে ফ্ল্যাটের মেম্বাররা বেরিয়ে এসে নানারকম পরামর্শ দিতে শুরু করলেন। কেউ লকটা ভেঙে ফেলতে বললেন। কেউ চাবিওয়ালাকে ডাকার কথা বললেন। লকটি যে কোম্পানির, তার সার্ভিস সেন্টারে ফোন করে দেখতে বললেন একজন। সমস্যা একটাই। রাত হয়ে গিয়েছে। আবাসনের ছাদে বসবার ব্যবস্থা রয়েছে, জয়তী শ্বশুর শাশুড়িকে ওখানে বসিয়ে দিয়ে এল। জয়তীর ছেলে খুব অস্থির হচ্ছিল। বারবার লক ভাঙার কথা বলছিল। আজকালকার প্রজন্ম খুব অস্থির মানসিকতার। ধৈর্য কম। কেয়ারটেকার, দারোয়ান খবর পেয়ে চারতলায় ছুটে এল। নিচের তলা থেকে আরও দু একজন এলেন। বেশিরভাগ জনই দরজার লকটা ভেঙে ফেলার জন্য উৎসাহ দিতে লাগলেন।
জয়তীর ছেলে দুবার দরজায় জোরে জোরে লাথি মারল। রাগ করে লাথি মারলেই যেন দরজা খুলে যাবে! রানাও আস্তে আস্তে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছিল।
আবাসনের নিজস্ব ইলেকট্রিশিয়ানকে ডেকে পাঠানো হল। ওর কাছে নানান যন্ত্রপাতি থাকে, লকটা ভেঙে ফেলতে পারবে। ইলেকট্রিশিয়ান মন্টু এসে রানাকে বলল “লক ভেঙে ফেললে এত সুন্দর কাজ করা কাঠের দরজাটা নষ্ট হয়ে হয়ে যাবে। আপনারা অন্যকিছু ভাবুন। ছাদ থেকে চারতলায় নেমে গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে কেউ যদি ভেতর থেকে দরজাটা খুলে দেয়, তাহলে অন্তত দরজাটা অক্ষত থাকবে।”
জয়তী ভাবল লক ভেঙে দরজাটা নষ্ট করার চাইতে মন্টু যেটা বলল সেটা হলেই ভালো। রানাও সেটাই ভাবল। কিন্তু মুশকিল হল কাজটা কে করবে! আর কোন দিক দিয়ে কীভাবে ঢুকবে! হঠাৎ মনে পড়ল ছাদের পাইপ যেদিকে নেমেছে, সেদিকটায় ড্রইংরুম লাগোয়া একটা বাথরুম আছে। বাথরুমে একটা ছোট জানলা আছে। জানলায় রংবেরংয়ের ছোট ছোট কাঁচের টুকরো ক্লিপ দিয়ে আঁটা। জানলায় জয়তী সুদৃশ্য পটে মানিপ্ল্যান্ট রেখেছে। ওই জানলার কাঁচ বাইরে থেকে খুলে বাথরুমে ঢুকে সহজেই ড্রইংরুমে গিয়ে দরজাটা খোলা সম্ভব। তবে ওইটুকু জানলা দিয়ে ভেতরে গ’লে যাওয়া মুখের কথা নয়। অজস্র আলোচনার পর একটা নাম উঠে এল। গোপু। একমাত্র গোপুই পারবে। ইতিমধ্যে রানার বাবা ছাদ থেকে নেমে খবর নিয়েছেন। রানার মা ক্লান্ত। জয়তীর ছেলে ক্রমশ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। অতএব গোপুকো জলদি বুলাও। গোপু পেছনের বস্তিতেই থাকে। রঙের কাজ করে। বাদবাকি সময় মানুষের উপকার করে বেড়ায়। দশ মিনিটের মধ্যে গোপু চলে এল। বারমুডা আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরিহিত তিরিশ গ্রাম ওজনের গোপুকে চাক্ষুষ করে জয়তী ভাবল এই লোক কী করে এমন একটা ভারী কাজ করবে! গোপুর চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। হাতে স্মার্টফোন। গোপুকে কাজটা বুঝিয়ে দেওয়া হল। গোপু তামাক খাওয়া ক্ষয়াটে দাঁতগুলো বের করে হেসে বুঝিয়ে দিল এসব কাজ তার কাছে বাঁ হাতের খেল। নিজের মোবাইল ফোনটা জয়তীর হাতে ধরিয়ে একটা টর্চ চাইল। সামনের ফ্ল্যাটের তনিমা একটা পুঁচকে চাইনিজ টর্চ জোগাড় করে দিল। গোপু বীরের মত ছাদের দিকে এগোল। রানা আর জয়তী ছাড়া বাকিরা মজা দেখতে ছাদে দৌড়ল। গোপু টর্চটা জ্বালিয়ে টর্চটাকে দাঁত দিয়ে চেপে ধরে সবার চোখের সামনে দিয়ে পাইপ ধরে সড়সড় করে নিচের দিকে নেমে গেল। ছাদে আলো আছে বটে, কিন্তু সে টিমটিমে আলোর মধ্যে গোপু যেন হঠাৎ করে নাই হয়ে গেল। রানা ছাদের রেলিং ধরে খানিকটা ঝুঁকে দেখার চেষ্টা করল। গোপুকে দেখতে পেল না। রানা চিৎকার করে বলল “গোপু নেমেছ?”
উত্তর পাওয়া গেল না।
ছাদে উপস্থিত একজন বললেন “ছেলেটাকে ওভাবে নামানো ঠিক হয়নি। ফসকে চারতলা থেকে নিচে পড়ে গেলে স্পট ডেড।”
আর একজন বললেন “দরিদ্র মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ঠিক নয়। আজ কোনো বন্ধুর বাড়িতে রাত্তিরটা কাটিয়ে সকালে কিছু একটা ব্যবস্থা করতেন!”
এসব শুনে জয়তীর বেশ ভয় করতে লাগল। কী ঝামেলায় পড়া গেলরে বাবা! লক খুলছে না সেটা ঝামেলা কিন্তু গোপুর কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না, এটা তো ভয়ংকর বিপদ। তাকিয়ে দেখল রানা তখনও ঝুঁকে রয়েছে। জয়তী রেলিংয়ের কাছে গিয়ে খুব জোরে গোপুর নাম ধরে অনেক কবার ডাকল। সাড়া দিল গোপু। ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল রানার। উত্তর এল। “গেঞ্জি খুলতেছি ভৌদি। হাতের মধ্যে গেঞ্জিটাকে জড়িয়ে কাঁচগুলান খুলব। নইলে হাতে কাঁচ ঢুকে যাবে।”
মুখ থেকে টর্চটা যে নামিয়েছে বোঝা যাচ্ছে।
আরও কিছুক্ষণ নীরবতা।
রানা খুব জোরে চেঁচাল “গোপু তুমি বাথরুমে ঢুকতে পেরেছ?”
ক্ষীণ আওয়াজ এল। “হ্যাঁ। আপনারা নিচে আসেন।”
রানা দৌড়ে নিচে গেল। জয়তী শাশুড়িকে নিয়ে আস্তে আস্তে নিজেদের ফ্ল্যাটের সামনে পৌঁছল। বাকিরাও নেমে এসে জড়ো হয়েছে। মজার শেষটুকু না দেখে কেউ যাবে না। আরও পাঁচমিনিট কেটে যাওয়ার পর রানা ধৈর্য হারিয়ে ফেলল। জোরে জোরে দরজা ধাক্কা দিতে লাগল। মিনিট দুয়েক পর খুটুস করে ছিটকিনি খোলার শব্দ হল। হাতে স্যান্ডো গেঞ্জি জড়িয়ে গোপু বেরিয়ে এল হাসিমুখে।
রানা বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করল “এত দেরি হল কেন?”
“ভৌদির গাছগুলাকে বাঁচাতে গিয়ে এট্টু দেরি হল। কাঁচগুলান লাগায়ে দিয়ে তবে দজ্জা খুললাম।”
শ্বশুর শাশুড়ি প্রথমে ঘরে ঢুকলেন। জয়তীর ছেলে ঢুকে গেল। রানা পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে গোপুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল “কত দেব?”
“আপনি খুশি হয়ে যা দেবেন তাই নেব।”
রানা মুশকিলে পড়ল। রানার খুশি গোপুর খুশির সঙ্গে ম্যাচ করবে তো!
অন্য ফ্ল্যাটের একজন বললেন “দুশ টাকা দিয়ে ছেড়ে দাও রানা। কালকে বাথরুমের জানলায় গ্রিল লাগানোর ব্যবস্থা কর। দিনকাল খুব খারাপ। “ঠিক তখনই রানার দিকে তাকিয়ে গোপু বলল “আমার একখান ফটোক তুলে নেন দাদা। তাহলে অনেকটা নিশ্চিন্ত হবেনগে।” গেঞ্জিটা পরে নিয়ে সব কটা দাঁত বের করে একটা পোজ দিল গোপু। অনেকক্ষণ পোজে অনড় রইল দেখে অগত্যা রানা ছবি তুলে নিল। বখশিস নিয়ে গোপু ঘরের দিকে মুখ করে জয়তীকে উদ্দ্যেশ্য করে হাঁক দিল “অ ভৌদি আসছি। আপনাদেরগে অনেকখুন বাইরে থাকতে হল। মাফ করে দিয়েন।”
যাইহোক, গোপুর কল্যাণে সে যাত্রায় ঘরের বাইরে থাকতে হলো না। পরেরদিনই রানা দরজার লক পাল্টে ফেলল। তবে বাথরুমে আর গ্রিল বসানো হল না। অনেকেই বললেন একটা ইমারজেন্সি প্রবেশপথ থাকা ভালো। একটা ছোট্ট লোহার গেট মত বানিয়ে তালা দিয়ে রাখলে কোনো বিপদ হলে তালাটা ভেঙে ভেতরে ঢোকা যাবে। তবে সেরকম অবস্থায় বাইরে থেকে চারতলার বাথরুম ফুঁড়ে ভেতরে ঢুকতে গোপু ছাড়া আর কেউ পারবে না।
কিন্তু এখন সে কি করবে? টেনশনে জয়তীর কপাল থেকে ঘাম গড়াতে শুরু করল। রংচটা একটা ম্যাক্সি পরে রয়েছে। গায়ে ওড়না তো দূর একটা গামছা পর্যন্ত নেই! এই ম্যাক্সি নিয়ে রানার সঙ্গে বহুবার ঝগড়া হয়েছে।
“জয়ী এই অদ্ভুত খারাপ পোশাকটা এবারে ত্যাগ করো। প্লিজ। দেখেই গা ঘিনঘিন করে। মিস মণিকাকে কখনো এইসব থার্ডক্লাস ড্রেস পরতে দেখেছ?”
জয়তী সঙ্গে সঙ্গে মুখ ঝামটা দিয়ে বলেছে “তুমি যেদিন থেকে ভুঁড়ি দেখিয়ে বারমুডা পরার অভ্যাস ত্যাগ করে পাজামা পরা শুরু করবে, সেদিন আমিও ম্যাক্সি পরা ছেড়ে দেব। মিস মণিকাকে আমার মত হেঁসেলে হাঁড়ি ঠেলতে হয় না। স্বামী পুত্রের সেবা করতে হয় না। অমন উড়ে বেড়ানো জীবন হলে স্কার্ট আর শিফন পরেই জীবনটা কেটে যেত!”
জয়তী ভাবলো ম্যাক্সি পরার অভ্যেস এবার সত্যিই ত্যাগ করতে হবে। আলমারি ভর্তি কুর্তি আর লেগিংস, এবার থেকে ওগুলোই বাড়িতে পরবে। কিন্তু ঢোলা ন্যাতানো ম্যাক্সির মত এত্ত আরাম ওতে পাবে না।
তনিমাই কেয়ারটেকারকে দিয়ে গোপুকে খবর দিল। গোপু চলে এল।
জয়তীকে শুধোলো “কী কেস ভৌদি? আবার আঁটকেছে নাকি?”
“দ্যাখো না এবারে বাতাসে লক হয়ে গেছে। চাবি ভেতরে। তরকারি পুড়ে গিয়েছে এতক্ষণে। কড়াইটাও আগুনের তাপে গলে গিয়েছে মনে হয়!” জয়তীর গলায় বিষণ্ণতার সুর।
গোপু ভৌদির দুঃখে গ’লে যেন খানিকটা নেতিয়ে পড়ল। “কিচ্ছু হয়নি ভৌদি। তরকারিও একদম ঠিক আছে। গোপুর কথা মিলিয়ে নিবেন।”
গোপু সেই আগের মতই ছাদ থেকে নেমে চারতলায় বাথরুমের কাঁচ সরিয়ে ভেতরে ঢুকে ড্রইংরুমে গিয়ে দরজা খুলে দিল। গোপুকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দৌড়ে রান্নাঘরে গেল জয়তী। কিছুই পোড়েনি। গ্যাস অন করা আছে। কিন্তু জ্বলছে না। গ্যাস ফুরোনোর টাইম এসে গিয়েছিল। মোক্ষম সময়ে ফুরিয়েছে। গোপুর কথা মিলে গেছে।
বাড়ির পুরুষরা এই সময়ে কর্মস্থলে থাকেন। আজকে জয়তীদের ফ্ল্যাটের সামনে মহিলারা জড়ো হয়েছেন। জয়তী টুক করে ম্যাক্সিটা চেঞ্জ করে একটা সালোয়ার কামিজ পরে নিল। চুলটা ঠিক করে কপালে ছোট্ট লাল টিপ পরে বেরিয়ে এল। দরজার কাছে গিয়ে দেখল মিস মণিকা এসেছে। গোপুর সঙ্গে মায়া মায়া মুখে কথা বলছে। জয়তীকে দেখেই গোপু জয়তীর দিকে মুখ ফিরিয়ে বলল “আমার কথা মিলেছে ভৌদি? দেখলেন তো কিচ্ছু পুড়েনি! ভাল মানুষদের সঙ্গে সবসময় ভালো হয়। আপনি কোমরে একটা কার বেঁদে সেখানে চাবিটা রাখবেন। তাইলে আর এমন বিপদে পড়তে হবে না।”
মিস মণিকা বলল “কোমরে কালো বা লাল কার দেখতে খুব বাজে লাগবে। বৌদি আপনি বিছে পরবেন। গলার হারের মত একটা সিম্পল চেন। খুব সুন্দর লাগবে। চওড়া কোমরে মানাবে খুব। একটা বাংলা গান আছে না …. কোনো এক বাংগালি গায়ক গেয়েছেন …. লাইনটা মনে আসছে না….”
পাশ থেকে তনিমা ফোড়ন কাটল …. হব কাঁখে রূপোর বিছে, নইলে জীবন হবে মিছে ….
বুঝবে বধূ কি যে জ্বালা সেই বিছেরই কামড়ে ….
তনিমা জয়তীর দিকে তাকিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে হেসে চোখ মারল।
জয়তী মুচকি হেসে বলল “মান্না দে ….”
মিস মণিকা হাসতে হাসতে বলল “দাদা এই গানটা গাইবে ….”
জয়তী মনে মনে বলল “দাদা কচু গাইবে!”
মিস মণিকা হাসিমুখে জয়তীকে বলল “ধরমতলায় আমার একটা চেনা দোকান আছে, মহেশবাবুর চাঁদির গয়নার দোকান …. বিছেটা ওখান থেকে তৈরি করলে অনেকটা ছাড় পাওয়া যাবে। বৌদি আপনি সময়মত জবার মাকে দিয়ে কোমরের মাপটা পাঠিয়ে দেবেন, আমি তৈরি করিয়ে এনে দেব।”
জয়তী এখন বুঝতে পারল ঠিক কি কি কারণে মিস মণিকা সবার দিল চুরি করেছে।
জয়তী গোপুর হাতে তিনশ টাকা দিল। গোপু খুশি হয়ে চলে গেল। যাওয়ার আগে মিস মণিকাকে বলল “হেবি বুদ্দি দিয়েছেন ম্যাডাম। ভৌদিকে আর বিপদে পড়তে হবে না।”
অনেকটা ছাড়ে খুব সুন্দর আর স্লিম একটা বিছে বানিয়ে এনে জবার মায়ের হাত দিয়ে পাঠিয়ে দিল মণিকা। খুব পছন্দ হল জয়তীর। বিছের গায়ে চাবি ঝোলানোর জন্য একটা ছোট্ট আংটা রয়েছে। মেয়েটির রুচি সত্যিই খুব ভালো। জয়তী বিছের টাকা, এক শিশি চালতার আচার আর থ্যাংক ইউ লেখা একটা কার্ড জবার মায়ের হাত দিয়ে পাঠিয়ে দিল।
দরজার লক নিয়ে আর সমস্যা হয়নি। তবে কিছুদিন পরে একটা অভূতপূর্ব কাণ্ড হল।
শাশুড়ি-মায়ের একমাত্র ভাই বহরমপুরে থাকেন। ওই অকৃতদার ভাইটি ছাড়া শাশুড়ি- মায়ের নিজের বলতে আর কেউ নেই। রানাও বাসুমামা বলতে অজ্ঞান। ছোটবেলার প্রচুর স্মৃতি। ফোনে কথা হয় নিয়মিত। লালদীঘির কাছে সুন্দর বাড়ি বানিয়েছেন। কমার্স কলেজে পড়াতেন, সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন। ঠিক হল সকলে একসঙ্গে বাসুমামার বাড়ি ঘুরতে যাবে। সেই সঙ্গে মুর্শিদাবাদের নবাব প্যালেস ঘুরে দেখবে। কদিনের ছুটি পাওয়া গেলে সবাই মিলে বাড়ির গাড়িতে করেই রওনা দিল। তনিমা আর পেপারওয়ালা ছাড়া আর কাউকে তাদের বেড়াতে যাওয়ার খবরটা জানানো হল না। বহুদিন পর প্রায় এক সপ্তাহ বাইরে থাকা হল।
মাঝে একদিন তনিমাকে ফোন করেছিল, তনিমা বলেছে “সব ঠিক আছে।”
তনিমার কথায় শান্তি হয়নি জয়তীর। ফ্ল্যাটের মধ্যে কী হচ্ছে না হচ্ছে কে বুঝবে! সিকিউরিটিদেরও বিশ্বাস নেই। তার ওপরে প্রায় সবাই জেনে গিয়েছে বাথরুম দিয়ে ঘরে ঢোকা যায়! গ্রিলটা লাগানো উচিত ছিল। এখন কোনও অঘটন হলে তাদের বোকামির জন্য সকলে হাসবে।
ফেরার দিন দুর্গা দুর্গা বলে বেরিয়ে পড়ল সবাই। রানাকে দেখে মনে হল, সেও বেশ চিন্তিত।
পাঁচঘণ্টার রাস্তা প্রায় সাতঘণ্টা লাগল। বারাসাতে প্রবল জ্যাম। সেই সব জ্যাম কাটিয়ে আবাসনে ঢুকতে ঢুকতে রাত হয়ে গেল। চারতলায় উঠে লক খুলে রানা ভেতরে ঢুকেই আবার ছিটকে বেরিয়ে এল। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল “সোফায় কারা যেন বসে রয়েছে!” দরজা খুলতেই ধূপকাঠির গন্ধ নাকে এসে লেগেছে। টাটকা গোলাপের গন্ধ। এই গন্ধের ধূপকাঠি জয়তী জ্বালায় না। জয়তীর মুখে কথা আসছে না। জয়তীর শ্বশুর শাশুড়ি খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। শাশুড়ি-মা কাঁপছেন। এমন সময় জয়তীর ছেলে রিকু ঘরে ঢুকে ফট করে লাইটের সুইচটা অন করে দিল।
সবাই বিস্ফারিত চোখে দেখল সামনের সোফায় গোপু আর একটা বছর পাঁচেকের বাচ্চা বসে আছে।
রানা ভয়ংকর রেগে গিয়ে ওর দিকে তেড়ে গেল।
“কী ব্যাপার গোপু? এসব কী? আমি কিন্তু এবার পুলিশ ডাকব। বেইমান কোথাকার।”
তিরিশগ্রাম ওজনের গোপু ভয় পেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে হাতজোড় করে বলল … “আমার কুনো দোষ নাই। আপনারা যেদিন বেড়াতে গেলেন তার দুদিন পর মণিকা ম্যাডাম আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন।
তার আগের রাতে ওদিকগার একটা বিল্ডিংয়ে বড় রকমের চুরি হয়েছিল। বুড়ো বুড়ি থাকত। ছেলের কাছে গিয়েছিল। চোররা জানলা ভেঙে অনেককিছু নিয়ে পালিয়ে গেছে। মণিকা ম্যাডাম বললেন আপনারা বেড়াতে গেছেন, ফেলাট ফাঁকা …. সনঝে বেলায় রোজ আপনার ফেলাটে ঢুকে যেন পাহারা দিই! সকাল হলেই বাড়ি চলে যেতাম। আবার সনঝেবেলায় বাথরুমের জানলা দিয়ে ঢুকতাম। খুব গরম পড়েছে। বাড়িতে ছোট ছেলেটা গরমে ঘুমাতে পারে না। ওকেও আনতাম। আপনার বেলকনি দিয়ে দারুণ বাতাস আসে, ছেলেটা তিনদিন খুব আরাম করে ঘুমিয়েছে।”
ছেলের দিকে তাকিয়ে গোপু বলল …. “কিরে! ভয় পাচ্ছিস কেন? উনি আমার ভৌদি। দয়ার শরীল। বকবেনাকো। পেন্নাম কর।”
ছেলেটা প্রণাম করতে এলে আটকে দিল জয়তী। “থাক! থাক! তোমার নাম কি?”
ছেলেটা কিছু বলার আগেই গোপু উত্তর দিল ….”সোমদেব। সোমবারে জন্মেছিল তো!” তামাকে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতগুলো বের করে বিচ্ছিরিভাবে হাসল গোপু। তারপর বলল “ভৌদি আপনার গাছগুলাতে জল দিয়েছি। লক্ষ্মীভাণ্ডার থেকে পাঁচটাকার ধূপ কিনে এনে জ্বালিয়েছি। সনঝের সময় ঠাকুরের নাম করেছি কদিন। ”
“আচ্ছা আচ্ছা বুঝেছি। এই নাও একটা প্যাকেটে সরভাজা দিলাম, খেও।” …. জয়তী বাচ্চাটার হাতে একটা প্যাকেট ধরিয়ে দিল।
গোপু ছেলের হাত ধরে বেরিয়ে যেতেই জয়তী তড়িঘড়ি করে ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ করল। রানাকে বলল “কালই বাথরুমে গ্রিল লাগাবার ব্যবস্থা করো।”
রানা বলল “সেতো করবই! তার আগে আর একটা প্যাকেটে কটা সরভাজা দাও তো মিস মণিকাকে দিয়ে আসি। ভদ্রমহিলাকে একটা ধন্যবাদ জানানো দরকার।”
মিস মণিকার সঙ্গে দেখা করার জন্য মনটা আনচান করছে তাই না? ধন্যবাদ আমি জানিয়ে দেব। তুমি বরং ঘরগুলো একটু গুছিয়ে দাও।”…. জয়তী কথাগুলো রানার মুখের ওপরে ছুঁড়ে দিয়ে কিচেনে ঢুকে গেল।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন
ওরে কি দারুণ লিখেছো। চুমু! 😘
বরাবরই সাবিনা খুব ভালো লেখেন । টানটান উত্তেজনা , গল্পের ধারাবাহিকতা , চরিত্রদের আসা যাওয়া , নিখুঁতভাবে গল্পটিকে একেবারে একটি সঠিক গন্তব্য পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে । আর সেই গন্তব্যটি হল পাঠকের হৃদয় ।
ওহ্, দারুণ লাগলো।
ভাল লাগল , এই দিন যাপনের গপ্পোটি পড়ে
কি বলবো জানি না…!!! অপূর্ব…!!! জীবনকে দেখার সূক্ষ্ম দৃষ্টিভঙ্গী গল্পের পরতে পরতে মিশে আছে। কাহিনীবিন্যাসের নাটকীয়তা জমাট, টান টান। রসবোধের সুপ্রযুক্ত প্রয়োগে গল্প আরও বৈচিত্র্যময়… “কিছু দুষ্টু বেড়াল মানুষেরই মত” অথবা “তিরিশ গ্রাম ওজনের গোপু” … ভুলবো না 😄😄। আর শেষে বলি, মানবিকতার, সহমর্মিতার প্রচ্ছন্ন আলোয় গল্পটি দীপ্ত সুন্দর, অপরূপ…!!!
ক্রিসপি, তরতাজা, আঙ্কল চিপস’এর মতোন
আপনার লেখা । আরওওও লিখুন ।