প্রণয় চিহ্ন

প্রণয় চিহ্ন
সৈকত মুখোপাধ্যায়

       পিড়িং করে মেসেজ ঢোকার নোটিফিকেশনটা কানে আসতেই তিয়াসা লাফিয়ে উঠলো। বেলা দশটার পর থেকে এই নিয়ে সাতবার। সত্যিকারে লাফায়নি, কারণ, ও বসে আছে অফিসে। আরো কুড়িটা ছেলেমেয়ের মধ্যে বসে কাজ করছে। সেখানে লাফাবে কেমন করে? বলা ভালো, ওর বুকের মধ্যে হৃদপিন্ডটা লাফিয়ে উঠলো।
       কম্পিউটারের মনিটর থেকে চোখ সরালো না তিয়াসা; সরাবার উপায় ছিল না। একটু বাদেই ফরেন ক্লায়েন্টের মিটিং শুরু হবে। কানের হেডফোনও কানেই রইলো। তার মধ্যেই কোনোরকমে সেলফোনের স্ক্রিনে আঙুল ছুঁইয়ে ইনবক্স খুলে মেসেজটা দেখলো। ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি মেসেজ পাঠিয়েছে, ‘ভিজে আঙুলে সুইচে হাত দেবেন না, কারেন্ট খাবেন’। এর আগের ছটা মেসেজও এই গোত্রেরই ছিল… দুনিয়ার যত অকাজের সার্ভিস-মেসেজ। তিয়াসা দাঁতে দাঁত চিপে বলল, এটা এখনই পাঠানোর সময় হল রে শালা?
       বোধহয় একটু জোরেই বলে ফেলেছিল কথাটা। পাশের খোপে সুজয় ঝড়ের বেগে কী-বোর্ডে আঙুল চালাচ্ছিল। টাইপ করা থামিয়ে, প্লাইবোর্ডের বেঁটে পার্টিশনের ওপাশ থেকে ঘাড় বাড়িয়ে তিয়াসার দিকে তাকালো। গম্ভীর-গলায় প্রশ্ন করলো, কিছু বললি?
       তিয়াসা বুঝতে পারলো কথাটা সুজয়ের কানে গেছে। বড্ড ঘেঁষাঘেঁষি করে বসতে হয় ওদের। প্রিভেসি বলে কিছু থাকে না। ও তাড়াহুড়ো করে বলল, না না, তোকে নয়। সুজয় কী বুঝল কে জানে। বলল, তোকে আগেও বলেছি, দিনের মধ্যে যখন হোক দশমিনিট মেডিটেট করিস। আমি কিন্তু খুব উপকার পাচ্ছি।
       তিয়াসা বলল, চেষ্টা করবো। তারপর ওরা দুজনেই আবার যে যার কাজে ডুবে গেল।
       মন খুবই খারাপ হয়ে আছে। সুযোগ থাকলে তিয়াসা বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে থাকতো। তবুও ও কাজে ডুবে গেল। আই.টি.সেক্টরের কাজ গলায় বাঁধা পাথরের মতন মানুষকে ডুবিয়ে দেয়। এর আগে নিকট বন্ধুর মৃত্যু-সংবাদ পেয়েও ও কাজ করে গেছে। মাকে হসপিটালে অ্যাডমিট করে এসে সন্ধে ছটা অবধি কাজ করেছে। তারপর দৌড়তে-দৌড়তে ভিজিটিং-আওয়ারে হাসপাতালে পৌঁছেছে। আর নিজের লাম্বার-স্পন্ডিলোসিসের ব্যাথা? সে তো ডালভাত হয়ে গেছে। মাসের মধ্যে অন্তত পাঁচদিন পেইন-কিলার খেয়ে অফিস করে তিয়াসা।
       কিন্তু আজ ও বারবার অন্যমনস্ক হয়ে যাচ্ছিল। নিজেই বুঝতে পারছিল, এটা বিপজ্জনক। কাজে ভুল হয়ে যেতে পারে। ও যে-ধরনের কাজ করে তাতে ভুল মানে ভুল; সংশোধনের উপায় থাকে না কোনো।
       বেলা আড়াইটের সময় একবার ওয়াশ-রুমে যাওয়ার সুযোগ পেল তিয়াশা। তখনই ভালো করে ঘাড়ে-মাথায় জলের ঝাপটা দিয়ে ফিরে এলো। যে প্রোগ্রামটায় কাজ করতে-করতে উঠে গিয়েছিল, মাউস-ক্লিক করে সেটাকে আবার মনিটরে ফিরিয়ে আনলো। হিসেব করে দেখলো, এখনো অন্তত একঘন্টা লাগবে কাজটা শেষ করতে। তার মানে সাড়ে-তিনটের আগে টিফিন করার সময় পাবে না।
       নটায় বাড়ি থেকে খেয়ে বেরিয়েছে। দুটো খাওয়ার মধ্যে তাহলে কতক্ষণের গ্যাপ পড়ছে? মনে-মনে হিসেব করলো তিয়াসা – সাড়ে-ছ’ঘন্টা। ডক্টর জয়ন্ত চ্যাটার্জী গত-সপ্তাহেই ওর কান কামড়ে বলে দিয়েছেন, দু-ঘন্টা অন্তর কিছু-না-কিছু খেয়ে যাবে মামনি। অন্তত দুটো ক্রিম-ক্র্যাকার বিস্কিট। তা না হলে তোমার এই পেটে-ব্যথা ধন্বন্তরী এসেও সারাতে পারবে না।
       দু-ঘন্টা! মাই ফুট! এই তো, অলরেডি সাড়ে-পাঁচঘন্টা হয়ে গেল। কিছু খেতে পেরেছে কি তিয়াসা? ডানদিকে রিব-কেজের নিচটায় অলরেডি ব্যথা করতে শুরু করেছে।
       না, সে খাবে। এইভাবে সুইসাইড সে করবে না। সে মরে গেলে তার বুড়ি মাটাকে কে দেখবে? এইসব ভাবতে-ভাবতে টেবিলের ডানদিকের ড্রয়ারটা খুললো তিয়াসা। একটা হরলিক্সের কৌটোয় অ্যামন্ড আর কিশমিশ রাখা আছে। ক্রিম-ক্র্যাকারের চেয়ে অনেক ভালো। অনেক নিউট্রিশাস। কাজ করতে-করতেই ছ-সাতটা অ্যামন্ড চিবিয়ে খেয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু সেদিন তিয়াসা কৌটোটা বার করে হাতে নিয়েই কীরকম যেন হয়ে গেল। কী যেন মনে পড়ে গেল তার। কৌটোটা আবার ড্রয়ারে ঢুকিয়ে রেখে, কীবোর্ডটা নিজের দিকে টেনে নিলো।
       যাশশালা! পাশের খোপ থেকে সুজয়ের স্বগতোক্তি।
       কী হল? ওর দিকে না তাকিয়েই জিজ্ঞেস করল তিয়াসা।
       ঢুকিয়ে রেখে দিলি? ভাবছিলাম একটু খাবো।
       তিয়াসা আবার ঝড়াং করে ড্রয়ারটা খুলে, হরলিক্সের কৌটোটা দড়াম করে সুজয়ের টেবিলে নামিয়ে দিল। বলল, প্লিজ এটা তোর কাছেই রাখ। তুইই খাস। আমার ভালো লাগে না।
       সুজয় কিছুক্ষণ অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর কৌটোটা তিয়াসার হাতে ফেরত দিয়ে দিল।
       আহত হয়েছে।
       স্বাভাবিক।
       অজস্র দুর্বোধ্য অক্ষর ও চিহ্নে ঠাসা মনিটরটার দিকে তাকিয়ে তিয়াসা মনে-মনে বললো, তুমি সবাইকে আঘাত করছ তিয়াসা মিত্র। তুমি দূরত্ব বাড়িয়ে চলেছ সবার সঙ্গে।
       চোখের ঝাপসা ভাবটা যতক্ষণ না কাটলো, ও কাজ শুরু করতে পারলো না। তবে তার আগে একমুঠো বাদাম নিয়ে সুজয়ের দিকে বাড়িয়ে ধরলো। বললো, প্লিজ! রাগ করিস না।
       সন্ধে সাতটার সময় তিয়াসা কম্পিউটার শাট-ডাউন করে, ব্যাকপ্যাকটা পিঠে ঝুলিয়ে ওর সেক্টর-ফাইভের অফিস থেকে বাইরে বেরোলো। অগাস্টের শেষ। মনে হয় কাছেপিঠে কোথাও বৃষ্টি হয়ে গেছে, সুন্দর একটা ঠান্ডা হাওয়া বইছে। ঠিক এই সময়েই মৃন্ময় একবার ফোন করে। গত একবছরে এই নিয়মের কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু তিয়াসা জানে, আজ মৃন্ময় ফোন করবে না।
       শেয়ারের গাড়িগুলোর দিকে হাঁটতে-হাঁটতে তিয়াসার মনে পড়ে গেলো, মৃন্ময় প্রথম যেদিন ওকে বলেছিল ভালোবাসি, সেদিন কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পরে ও প্রথম যে-কথাটা মৃন্ময়কে বলেছিল, সেটা হল, তুমি কিন্তু খুব বেশিদিন আমাকে সহ্য করতে পারবে না।
       কেন? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল মৃন্ময়।
       কারণ আমি তোমাকে কিছুই দিতে পারবো না।
       তিয়াসা তার আগেই অনেকবার দেখেছে, মৃন্ময়ের ঠোঁট না হাসলেও চোখ হাসে। চোখের সেই হাসি পরিষ্কার বোঝা যায়। সেদিনও তিয়াসার কথা শুনে মৃন্ময়ের চোখ হেসে উঠেছিল। ও বলেছিল, ওসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি জানি, কী পাবো আর কী পাবো না।
       তারপর গত একবছরে তিয়াসা ওকে অনেকবার বলেছে, অন্য কাউকে ভালোবাসো মৃন্ময়। আমি মোটেই প্রেমিকা হবার উপযুক্ত মেয়ে নই। আমি রোমান্টিক নই। মিষ্টি করে কথা বলতে পারি না। সাজগোজ করার সময় পাই না। দেখতে বিচ্ছিরি, মোটা।
       প্রত্যেকবারই কথার মাঝখানে ওর হাতের মুঠোয় চাপ দিয়ে মৃন্ময় ওকে থামিয়ে দিয়েছে। মৃন্ময়ের মুখের দিকে তাকিয়ে তিয়াসা দেখেছে, ওর চোখে মেঘের মতন মায়া। সেই মেঘলা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে প্রত্যেকবারই মৃন্ময় শুধু একটাই প্রশ্ন করেছে – ভালোবাসো আমাকে?
       তিয়াসা মুখ নামিয়ে বলেছে, হুঁ।
       ব্যাস। তাহলেই হবে।
       মুহূর্তের মধ্যে মৃন্ময়ের চোখে ফিরে এসেছে সেই পুরনো ঝিলিক। ঠোঁটের কোণায় মিসচিভাস হাসি। বলেছে, আমি একাই রোমান্টিকের চূড়ামণি। এর ওপরে তুমিও যদি রোমান্টিক হয়ে যাও তাহলে আর সামলাতে পারবো না। তার চেয়ে তুমি প্র্যাকটিকাল ব্যাপার-স্যাপারগুলোর দিকে খেয়াল রেখো।
       প্র্যাকটিকাল ব্যাপার-স্যাপার মানে? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছে তিয়াসা।
       এই ধরো আমরা কবে কোথায় প্রেম করবো, সেখানে কীভাবে পৌঁছবো, কোন রেঁস্তোরায় খাবো এবং কী খাবো।
       কেন? এগুলো তুমি ঠিক করতে পারো না, নাকি?
       এমনিতে পারি। কিন্তু তুমি সঙ্গে থাকলে পারি না। দেখেছো তো, কেমন তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটি।
       তিয়াসা প্রতিবাদ করতে পারে না। সত্যিই মৃন্ময় ওর মুখের দিকে তাকিয়ে রাস্তায় হাঁটে। এমনকি ক্যাবের মধ্যেও — তিয়াসা হয়তো বলেছে, ব্যাগটা দাও, নামবো – শুনে চমকে উঠেছে মৃন্ময়। বলেছে, সেকি! এর মধ্যে পৌঁছে গেলাম! কোন রাস্তা ধরে এলে?
       তার মানে পুরো রাস্তাটাই মৃন্ময় ওর মুখের দিকে তাকিয়ে এসেছে, বাইরে চেয়ে দ্যাখেনি।
       ভালোবাসাবাসির ওই শুরুর দিকেই তিয়াসা একটা কান্ড করেছিল। বাড়ির হাফ-পাজামা আর ঢোলা শার্ট পরা একটা ছবি মৃন্ময়কে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিয়েছিল। উপরন্তু তখন সে শ্যাম্পু করার আগে মাথায় জবজবে করে তেল মেখে চুলটা ঝুঁটি করে বেঁধে রেখেছিল। সব মিলিয়ে ওই ছবিতে তাকে টিনটিনের গল্পের জেনারেল আলকাজারের বউয়ের মতন দেখতে লাগছিল।
       সেটা ছিল রবিবার। পরদিন ওদের দেখা হয়েছিল। তিয়াসা অফিস থেকে বেরিয়ে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই মৃন্ময় বলল, কী ব্যাপার বলো তো। চেয়ে-চেয়ে একটা ছবি পাই না। আর, কাল একেবারে নিজে থেকেই একটা ছবি পাঠিয়ে দিলে!
       তিয়াসা শান্তগলায় বলল, আমার আসল রূপটা তোমাকে দেখিয়ে রাখা উচিৎ বলে মনে হোলো। তোমার সঙ্গে যেদিন দেখা করার থাকে, সেদিন আমি অফিস থেকে বেরোবার আগে একটু আই-শ্যাডো লাগাই, একটু লিপগ্লস … এই এখনই যেমন … মানে একটু সেজে থাকি। পরে হয়তো বলবে, তোমাকে ঠকিয়েছি।
       ওর কথার মধ্যেই মৃন্ময় সেদিন এত জোরে হেসে উঠেছিল যে, রাস্তার লোকে ফিরে তাকিয়েছিল ওদের দিকে। তার আগে বা পরে আর কোনোদিন মৃন্ময়কে এত হাসতে দ্যাখেনি তিয়াসা। ও ভুরু কুঁচকে বলেছিল, এত হাসির কী হল?
       তুমি একটা বদ্ধ উন্মাদ। বলেছিল মৃন্ময়। তারপর তিয়াসা বিরক্ত হচ্ছে দেখে হাসি থামিয়ে একটা মোক্ষম কথা বলেছিল। বলেছিল, আচ্ছা, তুমি কখনো ভেবে দেখেছ তোমার মাকে সুন্দর দেখতে কিনা। তোমার কখনো মনে হয়, কোনো মহিলা তোমার মায়ের চেয়ে বেশি সুন্দরী হলে, তাঁকে মায়ের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে পারবে?
       যুক্তি হিসেবে মৃন্ময়ের কথাগুলো অকাট্যই ছিল কিন্তু তিয়াসা ওকে বলতে পারেনি, বছর দুয়েক আগে ব্রেক-আপের সময় একটা ছেলে খুব হিংস্র-মুখে ওকে বলে গিয়েছিল, তোর ওই নিগ্রোর মতন ঠোঁটে যে কিস করেছি, সেটা তোর বাবার ভাগ্যি। ও জানে, মৃন্ময়ের কাছে না হলেও, বেশিরভাগ ছেলের কাছেই ‘লুকস ম্যাটার’।
       তিয়াসা কিছুক্ষণ মুখ নিচু করে হেঁটেছিল। তারপর হঠাৎ সরাসরি মৃন্ময়ের চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করেছিল, রূপ নয়, গুণ নয়। তাহলে একটা কারণ তো থাকবে ভালোবাসার। সেটা কী?
       তোমার জীবন, তোমার এই প্রতিদিনের স্ট্রাগল। তোমাকে আমার একটা না-পড়া উপন্যাসের মতন লাগে, তিয়া। তোমাকে আমি একটু-একটু করে সারাজীবন ধরে পড়বো। হেল্প কোরো আমাকে। বলেছিল মৃন্ময়।
       সেই মৃন্ময় আজ সারাদিনে একটাও মেসেজ পাঠালো না। জানতে চাইলো না সে কেমন আছে। আজই প্রথম, মৃন্ময় ছুটির পরে ফোন করলো না।
       তিয়াসার আবার মনে পড়ে গেল, সে মৃন্ময়কে বলেছিল, তুমি খুব বেশিদিন আমাকে সহ্য করতে পারবে না। যেটা বলেনি, সেটা হল, তোমার আগে যারা এসেছিল, তারাও আমাকে সহ্য করতে পারেনি। যে-মেয়েরা সহজেই প্রেমিকা হয়ে ওঠে, আমি কোনোদিক দিয়েই তাদের মতন নই।

       শেয়ারের গাড়ির সামনের সিটে বসেছিল তিয়াসা। রাতের ই.এম.বাইপাস ধরে ঝড়ের বেগে ছুটে চলেছিল গাড়িটা। চোখেমুখে ঠান্ডা হাওয়ার ঝাপটায় আরাম লাগছিল তার। মনে হচ্ছিল মাথার কিছুটা তাপ শুষে নিচ্ছে ওই হাওয়া।
       শূন্যদৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকিয়ে তিয়াসা মনে-মনে বলল, তুমি খুব ভালো ছিলে মৃন্ময়। তোমার ভালোবাসা পেয়ে এই একটা বছর স্বপ্নের মতন কেটে গিয়েছিল আমার। আমি কষ্ট পাবো, খুব কষ্ট পাবো। কিন্তু বিশ্বাস করো, কাল আমারও কিছু করার ছিল না।
       গতকাল মৃন্ময়ের জন্মদিন ছিল। তিয়াসা এমনিতে মনের কোনো অনুভূতিই বাইরে প্রকাশ করতে পারে না। ও নিজেই বলে, এটা কর্পোরেট সেক্টরে বেশিদিন কাজ করার কুফল; মুখগুলো আস্তে-আস্তে রবারের পুতুলের মতন সুন্দর এবং ভাবলেশহীন হয়ে যায়। কিন্তু ওদের অ্যাফেয়ারটা দানা বাঁধার পরে এটাই ছিল মৃন্ময়ের প্রথম জন্মদিন আর তাই তার আগের কয়েকদিন ধরে তিয়াসার মনের উত্তেজনাও বাইরে বেরিয়ে আসছিল। কেমন করে পঁচিশে অগাস্ট সন্ধেটা ওরা সেলিব্রেট করব, রোজই তার পরিকল্পনায় নতুন-নতুন সংযোজন ঘটে চলেছিল।
       ফোনে-ফোনেই ও মৃন্ময়কে বলেছিল, আমরা ওরিয়েন্টালে ডিনার করবো। তুমি বলেছিলে ওয়াইন খাওনি কখনো; টুয়েন্টিফিফথ আমি তোমাকে ওয়াইন খাওয়াবো। তার আগে তোমাকে নিয়ে সি.সি.ওয়ানে ঢুকবো। আমার পছন্দের কালার আর ডিজাইনে তোমাকে একটা টি-শার্ট কিনে দেবো। আর একটা জিনস। তোমার ওই মাস্টারমশাইমার্কা শার্ট-প্যান্টগুলো আমার দু-চক্ষের বিষ।
       মৃন্ময় আস্তে করে বলেছিল – আহা, আমার জন্মদিনটা অত কিছু স্পেশাল নয়। আমি সামান্য একজন মানুষ। তিয়াসা ঝাঁঝিয়ে উঠেছিল, অফকোর্স স্পেশাল। আমার কাছে স্পেশাল। দ্যাখো, কেকের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম।
       তখনই তিয়াসাকে অবাক করে দিয়ে, মৃন্ময় একটু ইতস্তত করে বলেছিল, তাহলে আমাকে আমার পছন্দের একটা গিফট দেবে?
       বলো। তিয়াসার গলাও নরম হয়ে এসেছিল। যে-ছেলেটা কক্ষণো কিছু চায় না, সে নিজের মুখে কিছু চাইছে! কী চাইছে মৃন্ময়?
       তুমি আমাকে কাল একটু সময় দেবে? কোথাও বসে আমরা একটু গল্প করবো। অন্তত দুটো-ঘন্টা।
       জন্মদিনে তিয়াসার কাছ থেকে একটু সময় উপহার চেয়েছিল মৃন্ময়। সত্যিই তো, ও সময়টাই পায় না তিয়াসার কাছে।
       প্রতিদিন প্রশ্ন করে, কাল পারবে? কাল? কাল?
       তিয়াসা বলে, না। বলে, না। বলে, না।
       তিয়াসা ধরেই নেয়, ওর ডিফিকাল্টিগুলো মৃন্ময় নিজে থেকেই বুঝে নেবে। তাই ও ব্যাখ্যাও করতে যায় না কেন পারবে না। মৃন্ময় বেশিবার বললে বরং রেগে যায়।
       মৃন্ময় বুদ্ধিমান। ও আজকাল আর ইনসিস্ট করে না।
       তবু কোনোদিন হয়তো তিয়াসা বুঝতে পারে, কাল একটু আগে বেরোনো যাবে। সেদিন সে মৃন্ময়কে বলে, হ্যাঁ। আগামীকাল চলে এসো। তখন মৃন্ময় ওর ডোমজুড়ের স্কুল থেকে অনেকখানি ভিড়ের রাস্তা পেরিয়ে তিয়াসার অফিসের নিচে এসে দাঁড়িয়ে থাকে।
       বড়জোর একটা-ঘন্টা ওরা টেকনোপলিসের কাছাকাছি কোনো রেস্তোঁরায় বসে গল্পটল্প করে। তারপর তিয়াসাকে উঠে পড়তে হয়। মায়ের কাছে যে আয়া থাকে, সে সাড়ে আটটায় চলে যাবে। তার আগে ওকে ভবানীপুরে পৌঁছতে হবে। এই ব্যাপারটাও যেহেতু ও একদিন মৃন্ময়কে ব্যাখ্যা করে বলে দিয়েছে, কাজেই তারপর থেকে সময় হলেই ও নিরাসক্তমুখে মৃন্ময়কে বলে চলো, উঠি। মৃন্ময়ের মুখটা যে প্রতিবারই সেই মুহূর্তে প্রচন্ড বিষণ্ণ হয়ে যায়, সেটা তিয়াসা খেয়াল করে। দুঃখও পায়। কিন্তু ওর মুখের ভাবে কিম্বা কথায় সেই দুঃখ ফুটে ওঠে না।
       গাড়ির জানলার ঠান্ডা-কাচে গালটা চেপে তিয়াসা ভাবে, ওর সঙ্গে একঘন্টা সময় কাটানোর জন্যে মৃন্ময় দেড়-ঘন্টার পথ পেরিয়ে আসতো। আবার দেড়ঘন্টা জার্নি করে ডোমজুড়ে ফিরে যেতো। সেইজন্যেই মৃন্ময় জন্মদিনের দিনে উপহার হিসেবে একটু সময় চেয়েছিল আর তিয়াসা বলে ফেলেছিল, হ্যাঁ। বলেছিল, কাল আমরা পাঁচটার সময় বেরিয়ে পড়বো, কেমন? তুমি এসে পৌঁছতে পারবে তো?
       ফোনের মধ্যেই যেন মৃন্ময়ের কন্ঠস্বর ওকে ভীষণ জোরে বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরেছিল। উল্লসিত-কন্ঠে মৃন্ময় বলেছিল, পারবো।
       মৃন্ময় পেরেছিল। গতকাল ও ঠিক পাঁচটার সময়েই কল করেছিল– এসে গেছি। নিচে দাঁড়িয়ে রয়েছি।
       একটু দেরি হবে। ওয়েট করো। এইটুকু বলেই ফোন কেটে দিয়েছিল তিয়াসা।
       ওর বুক কাঁপছিল। ও বুঝতে পারছিল একটা কেলেঙ্কারি হতে চলেছে। চারটের সময় ওদের ব্যাঙ্গালোর-ইউনিটের সার্ভিস-ম্যানেজার আনোয়ারসাহেব একটা মেল পাঠান, যেটা আসলে পাগলাঘন্টি। ওদের একটা ব্যাঙ্কিং-প্রোডাক্ট কোলাপ্স করতে শুরু করেছে। তখন থেকেই ওরা সবাই মিলে ব্যাপারটাকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই কাজটা শেষ না হলে অফিস থেকে বেরোনোর প্রশ্নই ওঠে না।
       ছ-টার সময় মৃন্ময় মেসেজ করেছিল – এনি প্রবলেম?
       একটু দাঁড়াও – উত্তর পাঠিয়েছিল তিয়াসা। ফোন করার সময় ছিল না, তাই মেসেজই পাঠিয়েছিল।
       তখনো ও প্রাণপণে আশা করছিল, শেষ হয়ে যাবে। কাজটা এখুনি শেষ হয়ে যাবে। যদি আর আধঘন্টার মধ্যেও বেরোতে পারে আর যদি বাড়িতে ফোন করে প্রতিমাদিকে একঘন্টা বেশি থাকার জন্যে রাজি করাতে পারে, তাহলেও মৃন্ময়ের সঙ্গে ও ঘন্টা-দুয়েক সময় কাটাতে পারবে।
       সাতটার সময় ওর সেলফোন ভাইব্রেট করে উঠেছিল। মৃন্ময়ের কল। ও ফোনটা তুলে কানে দিয়েছিল। অন্যদিক থেকে মৃন্ময়ের গলা ভেসে এসেছিল, আমি চলে যাচ্ছি। টেক ইয়োর টাইম। তাড়াহুড়ো কোরো না।
       এই প্রথম মৃন্ময়ের গলায় চাপা রাগের আভাস পেয়েছিল তিয়াসা।
       তিয়াসা কোনোরকমে বলতে পেরেছিল, স্যরি। সেটা মৃন্ময় শুনতে পেয়েছিল কিনা তিয়াসা জানে না।
       শেষমেষ আটটার সময় অফিস থেকে বেরোতে পেরেছিল তিয়াসা। বেরিয়েই ও মৃন্ময়কে ফোন করেছিল। বলেছিল, আমাকে একটু এক্সপ্লেন করতে দাও।
       মৃন্ময় মনে হয় তখনো রাস্তায় ছিল। ফোনের মধ্যেই গাড়িঘোড়ার আওয়াজ পাচ্ছিল তিয়াসা। মৃন্ময় বলেছিল, আই ডু নট নিড এনি। স্টিল ইফ ইউ ওয়ান্ট …বলো।
       অফিসে যা হয়েছিল পুরো ঘটনাটাই খুব তাড়াহুড়ো করে বলে গিয়েছিল তিয়াসা। বলতে-বলতে ও নিজেই বুঝতে পারছিল – লাভ নেই। কোনো লাভ নেই আর এসব বলে। মৃন্ময়ের জন্মদিনের সন্ধেটা চলে গেছে। মৃন্ময় উপহার হিসেবে আজ একটু সময় চেয়েছিল; ও সেটুকুও দিতে পারেনি।
       সবটা শোনার পরে কিছুক্ষণ চুপ করে ছিল মৃন্ময়। তারপর বলেছিল, আমি একটা জিনিস ঠিক করলাম।
       খুব ঠান্ডা-গলায় কথা বলছিল ও। ওর কথার মধ্যে পরিচিত আদরটা ছিল না।
       মৃন্ময় বলেছিল, আমি তোমাকে আর মেসেজ পাঠাবো না। ফোনও করবো না। আমি জানতে চাইবো না তুমি কবে কখন দেখা করার সময় পাবে।
       তাহলে?
       তিয়াসা সত্যিই নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। ও আবার বললো, তাহলে কী করবে?
       আমি অপেক্ষা করবো। তুমি যখন সময় পাবে – কথা বলার, দেখা করার – তুমি আমাকে জানাবে। তুমি ডাকলেই আমি চলে যাবো। আমার তো অত কাজের চাপ নেই, তুমি জানো। ওকে? গুডনাইট।
       ফোন কেটে দিয়েছিল মৃন্ময়।

       একদিন গেল। দু-দিন গেল। তিনদিন কেটে গেল। মৃন্ময় ফোন করলো না। মেসেজও না।
       তিয়াসা খুব খিদে পেলে ড্রয়ার থেকে অ্যামন্ডের কৌটোটা বার করে হাতে নিয়ে বসে থাকে। মৃন্ময় যেদিন থেকে শুনেছে ওর ডেস্ক ছেড়ে উঠে খাওয়ার সময় হয় না, সেদিন থেকেই ও প্রতিমাসে এগুলো ওর জন্যে কিনে নিয়ে আসে। তিয়াসা কৌটোটা আবার ড্রয়ারে ঢুকিয়ে রেখে দেয়।
       গত একবছরে একসঙ্গে ওরা যতগুলো দিন কাটিয়েছে, যতগুলো সন্ধে, সবই তিয়াসার চোখের সামনে ক্রমাগত ভেসে ওঠে। ও অবাক হয়ে ভাবে, কতটুকু সময়ই বা ওর সঙ্গে একসঙ্গে কাটাতে পেরেছি? পনেরোদিনে একবার হয়তো একঘন্টার জন্যে দেখা হত। তাতেই এত স্মৃতি জমে গেছে! এত মধুর স্মৃতি! এত চুম্বন আর চোখে চোখ রেখে বসে থাকা! এখন এতকিছু আমি ভুলবো কেমন করে?
       চতুর্থদিন বেলা সাড়ে-দশটার সময় তিয়াসা জোর করে ডেস্ক ছেড়ে উঠে বাইরের দিকে পা বাড়ালো। সুজয় চোখের কোণ দিয়ে ওকে যেতে দেখে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় চললে বস?
       আসছি, পাঁচমিনিট। ফোন এলে একটু রিসিভ করিস।
       ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে মৃন্ময়কে ফোন করলো তিয়াসা। ও বোধহয় টিচার্সরুমে ছিল। একমিনিট, বলে বাইরে বেরিয়ে এলো। তারপর খুব ক্যাজুয়ালিই বললো, হ্যাঁ, বলো।
       এত কান্না কোথায় জমে ছিল, জানে না তিয়াসা। আকুল কান্নার মধ্যেই কোনোরকমে বলল, আমি ভেবে দেখলাম। তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না মৃন্ময়।
       শান্ত হও, শান্ত হও। ক্রমাগত বলে চলেছিল মৃন্ময়। কি আশ্চর্য পাগল তুমি। আমাকে ছাড়া বাঁচবার কথা আসছে কেন? ভালোবাসি আমি তোমাকে। প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। তুমি তো জানো।
       না জানি না। ফোঁপাতে-ফোঁপাতে বললো তিয়াসা। তুমি না বললে জানবো কেমন করে? তুমি ফোন না করলে, আমাকে তিয়া বলে না ডাকলে, আমার প্রাণ বলে না ডাকলে আমি জানবো কেমন করে?
       আমি কেমন করে জানি? মৃন্ময় বলল। তিয়াসা পরিষ্কার দেখতে পেলো ওর চোখ হাসছে। হাসতে-হাসতেই ও বলছে, আমি কেমন করে বুঝি, তুমি আমাকে ভালোবাসো? আজ অবধি তো ভুলেও একটা ভালোবাসার কথা বললে না।
       আমি বলতে পারি না, তুমি জানো।
       ও! তুমি বলবে না? – ছদ্ম ঝগড়ার সুরে বলল মৃন্ময়।
       না। বলবো না।
       আর আমাকে রোজ বলতে হবে?
       হ্যাঁ। ছোট্ট উত্তর তিয়াসার।
       আমাকে রোজ জিজ্ঞেস করতে হবে, আজ বেরোবে কিনা? কিন্তু তুমি উত্তর দেবে না।
       হ্যাঁ। চোখ মুছছিল তিয়াসা। ওর মন তখন অনেক শান্ত হয়ে এসেছে।
       ওদিক থেকে সেই নকল ঝগড়ার সুরেই মৃন্ময় বলল, এমন মামার বাড়ির আবদারের কারণ কী?
       তিয়াসা শান্তগলায় বললো, কারণটা তুমি বুঝতে পারো না? তোমার মিসড-কলগুলো, তোমার যে মেসেজগুলোর আমি উত্তর দেওয়ার সময় পাই না, সেইগুলোই যে আমায় বাঁচিয়ে রাখে। ওগুলো দেখতে না পেলে যে আমি এতদিনে পাগল হয়ে যেতাম। জেলখানার মতন অফিসে, হাসপাতালের মতন বাড়িতে, আমার চোখদুটো যে সারাক্ষণ ওই ভালোবাসার চিহ্নগুলোই খোঁজে।
       মৃন্ময় বোধহয় মাপবার চেষ্টা করছিল ঠিক কতটা নিষ্ঠুরতা সে করে বসেছে ওই আপাত কঠিন মেয়েটার সঙ্গে। অনেকক্ষণ পরে সে কোনোরকমে বললো, ঠিক আছে।
       কী ঠিক আছে?
       যেরকম চলছিল সেরকমই চলবে। রোজ তিনবার এস.এম.এস। একবার করে সন্ধের দিকে ফোন। তুমি সময় পেলে উত্তর দেবে, নাহলে দেবে না। কিন্তু আমি মিস করবো না। আই প্রমিজ।
       ঠিক আছে। কাল আসবে। অনেক কাঁদিয়েছো। কাল আদর করে দেবে?
       আমার প্রাণ। তুমি বেরোতে পারবে তো?
       কথা দিতে পারছি না। কাল বিকেলে ফাইনালি বলতে পারবো। এখন রাখলাম, প্রচুর কাজ আছে। ছুটির পর ফোন করবে।
       ইয়ে… আজ ছুটি কটায়?
       বলতে পারছি না। সাতটা থেকে ট্রাই করবে। যখন সময় পাবো তখন ধরবো। পাজি কোথাকার!
        মৃন্ময়কে স্তম্ভিত করে রেখে তিয়াসা চোখটোখ মুছে, মাথা উঁচু করে তার কাজের টেবিলে গিয়ে বসলো।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

9 thoughts on “প্রণয় চিহ্ন

  1. এই লেখক নিশ্চিত জাদু জানেন, সমস্ত চরিত্রে অনায়াসে প্রাণ সঞ্চারিত হয় সেই জাদুমায়ায়। আর সেই মায়ার ছোঁয়াচ লাগে পাঠকমনে।

  2. সৈকতদার কোনও লেখায় তাঁর নাম না থাকলেও চলে। এই লেখা আরেকবার তা প্রমাণ করল।

  3. মানুষের মনের গভীরে কি করে যে ঢুকে যান ।অসাধারণ। ছোট ছোট মুহুর্তের গোপন আলাপ।

  4. সৈকত বাবু…

    এভাবে কেন যে লেখেন! এভাবে কেন যে লোফালুফি করেন বুকের বাঁদিকে থাকা মাংস্পিন্ডটা নিয়ে! কেন! কেন!…শুধু অপূর্ব বললে, অসাধারণ বললে কতটুকু বোঝানো যায়! আবেগের লাগাম হারিয়ে ফেলে, ভালোবাসার নতুন পাঠক্রমে পারঙ্গম হয়ে উঠতে উঠতে উপলব্ধি করা যায় এ নদীর পাশে আগে তো আসিনি…সঙ্গে সঙ্গে একটা বান্ধব হাওয়া বয়ে যায়…হাজারো ঘাম ধকল পেরিয়েও জেগে ওঠে ভালোবাসার নতুন সমীকরণ…আমরা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাই অস্তরাগের প্রতিফলনের দিকে…মনে হয় বেঁচে থাকা সত্যিই বড্ড সুন্দর!

  5. গল্পটা পড়লাম সৈকত। আপনি কেন এত জনপ্রিয় সাহিত্যিক, আর একবার বুঝলাম । লেখার মধ্যে এমন দরদ না থাকলে এত উচ্চমানের সংলাপ লেখা যায় না । সত্যিই… আপনি মৃন্ময় এবং তার প্রেমিকাকে পাঠকের চোখের সামনে এনে দিয়েছেন ! আমার তো মনে হচ্ছিল, আমি দৃশ্যমাধ্যমে ভিডিও দেখছি ! কী অসাধারণ মুনশিয়ানা আপনার ! গল্প শেষ করেছেনও অনবদ্য দক্ষতায় ! আমার পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প ! আপনার জন্যে থাকছে শুভেচ্ছা এক আকাশ ।

  6. সৈকতদার গল্প সবসময়ই মনকে ছুঁয়ে যায়।এটিও তার ব্যতিক্রম নয়।দরদ দিয়ে মনের অনুভূতিগুলিকে সযত্নে তুলে ধরেছেন।

  7. কী বলব বুঝতে পারছি না সৈকতদা। ভালোবাসলে এভাবেই বাসতে হয়। থ্যাঙ্ক ইউ।

  8. কী জ্যান্ত সংলাপগুলো ! কী প্রগাঢ় ভালবাসায় লেখা এই গল্প ! মনের চোখ দিয়ে স্পষ্ট দেখতে পেলাম প্রেমিক-প্রেমিকা যুগলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *