short-story-sk-mintur-swapno

সেখ মিন্টুর স্বপ্ন
অংশুমান কর


–সোজা বইমেলা, সোজা বইমেলা, সোজা বইমেলা।
প্যাসেঞ্জার ডাকছে সেখ মিন্টু। আজ রবিবার। ভালো ভিড় রয়েছে মেট্রোয়। এক মিনিটেরও কম সময়ে পাঁচটা সিটই ভরে গেল। অটোয় স্টার্ট দিয়ে মিন্টুর হাতে পাঁচ টাকার কয়েনটা দিয়ে দিল রাজা। মিন্টু ততক্ষণে আবার ডাকতে শুরু করেছে, সোজা বইমেলা, সোজা বইমেলা, সোজা বইমেলা।

কলকাতা শহরের সব রুটে নেই এ ব্যবস্থা। রাজাদের রুটে আছে। প্যাসেঞ্জার ডেকে দেওয়াটাই পেশা কিছু মানুষের। এরা অটো চালায় না। শুধু প্যাসেঞ্জার ডেকে দেয়। রোজগার খুব বেশি নয়। তবে এক পয়সাও বিনিয়োগ না-করে যা রোজগার হয়, তা মন্দও নয়। মিন্টুকে এ লাইনে রাজাই নিয়ে এসেছে। পাঁচ বছর ধরে অটো চালাচ্ছে রাজা। পার্টির নেতাদের সঙ্গে ওর ভালোই ভাব। ওরা টাকা পয়সা যখন যা চায় ও দিয়ে দেয়। ওদের বলেই মিন্টুকে লাইনে নামিয়েছে রাজা। রাজার অটোতে চেপেই মিন্টু গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনের সামনের অটো স্ট্যান্ডে নামে। আবার রাজার অটো করেই বাড়ি ফিরে যায়। অটো স্ট্যান্ডে মিন্টুর সঙ্গে তেমন কথা হয় না রাজার। যত কথা ওই যাওয়া আর আসার পথে। আজ আসার পথে মিন্টুর মুখ গোমড়া ছিল। কিছু একটা হয়েছে নিশ্চিত। বলছে না। ছেলেটা অভিমানী। ফেরার সময় জিজ্ঞেস করতেই হবে। গতকাল আর আজ দু-দিনই প্যাসেঞ্জারের চাপ আছে ভালোই। করুণাময়ীতে শুরু হয়েছে বইমেলা। রাজাদের রুট উল্টোডাঙা পর্যন্ত। কিন্তু বইমেলার সময় ওরা শনি-রবিবার গুলো সেন্ট্রাল পার্ক পর্যন্ত প্যাসেঞ্জার নিয়ে চলে যায়। চাপ থাকে। তবে চাপ নিলে দু-পয়সা বেশি রোজগার হয়। রুটের ভাড়ার ওপর পাঁচ টাকা, দশটাকা বেশি চাপিয়ে যে যেমন পারে ভাড়া নিয়ে নেয় এই সময়। এই বাড়তি রোজগারের কোনো ভাগ অবশ্য মিন্টুরা পায় না। সেজন্যই কি আজ আসার পথে মুখ গোমড়া করে ছিল মিন্টু? কেউ কি ওর কান ভাঙাল নাকি? ফেরার সময় জানতে হবে ব্যাপারটা কী।

মিন্টুর বাবা হাসান ছিল রাজার বন্ধু। অসমবয়সি বন্ধু। পেশায় রাজমিস্ত্রি হাসানের সঙ্গে মিন্টুর আলাপ হয়েছিল বাবুর দোকানে। ওদের গলিটা থেকে বেরোলেই একটা ঠেলাগাড়িতে বাবুর সাজানো দোকান। চা আর টিফিনের। সকালে কাজে যাওয়ার আগে হাসান চা খেত বাবুর দোকানে। তখন কলেজে পড়ছে রাজা। মর্নিং কলেজ। বাবুর দোকানে এক কাপ চা খেয়েই মেট্রো ধরত ও। ওই চা খেতে গিয়েই হাসানের সঙ্গে বন্ধুত্ব। ওর চেয়ে প্রায় দশ-বারো বছরের বড়ো ছিল হাসান। পড়াশোনা জানত না। তাতে অবশ্য রাজার বন্ধু হতে ওর কোনো অসুবিধে হয়নি। ওদের বন্ধুত্বটা হয়েছিল আসলে শাহরুখ খানের কারণে। দুজনেই ছিল শাহরুখ খানের অন্ধ ভক্ত। তবে সহজ-সরল হাসান যে এরকম একটা কাণ্ড ঘটাতে পারে তা রাজা কখনও স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। মানুষ চেনা সত্যিই সহজ বিষয় নয়। হাসান নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়ার পরে মিন্টুর মা হাসিনা বিবি যখন খুঁজতে খুঁজতে রাজাদের টালির বাড়িতে এসে ওকে বলেছিল যে, তিন দিন হয়ে গেল হাসান বাড়ি ফেরেনি রাজা ওর বিষয়ে কিছু জানে কি না, তখন রাজা বেশ অবাকই হয়েছিল। খোঁজখবর করায় জানতে পেরেছিল যে, পাশের পাড়ার একটা বছর পনেরোর মেয়ের সঙ্গে পালিয়েছে হাসান। প্রথমটায় রাজা খবরটা বিশ্বাসই করতে পারেনি। কিন্তু মাসখানেক পরেও যখন হাসান ফিরল না, তখন বিশ্বাস না-করে আর কোনো উপায় ছিল না। এও হয়ে গেল প্রায় আট-দশ বছর আগের কথা। মিন্টু তখন কোলের ছেলে। এতটুকু ছিল। রাজার কোলে হিসিও করে দিয়েছিল কয়েকবার৷ রাজা ওকে ভালোবাসত। সস্তার চকলেট কিনে দিত। হাসিনা বিবি মাস ছয়েক আগে মিন্টুকে রাজার কাছে নিয়ে এসে যখন বলেছিল, ছেলেটাকে কোনো একটা কাজে ঢুকিয়ে দাও ভাইজান, একা আর সংসার টানতে পারছি না, তখন হাসিনা বিবির অনুরোধ ফেরানো একেবারেই ঠিক কাজ মনে করেনি রাজা। মিন্টুকে নিয়ে এসেছিল এ লাইনে। একবার ভেবেছিল ঠিক যে, ফাইভেই মিন্টুকে স্কুল ছাড়িয়ে দেওয়া ঠিক হবে কি না। তারপরে ভেবেছিল পড়াশুনা করে লাভই বা হবেটা কী! ও তো নিজেও গ্রাজুয়েট। কলেজ পাশ করে কিচ্ছু লাভ হয়নি। শেষে তো সেই অটোই চালাচ্ছে। মিন্টু ও যত তাড়াতাড়ি লাইনে ঢুকবে ততই ভালো। পড়াশুনো একটা মরীচিকা। তার পেছনে ছুটে লাভ নেই। তিনটে বাড়িতে কাজ করে দুটো মানুষের পেট চালানো এই মাগ্যিগণ্ডার বাজারে যে হাসিনা বিবির পক্ষেও বেশ কঠিন হয়ে গেছে তা তো রাজা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বোঝে। যে-ওষুধগুলো বাবার দু-বেলা খাওয়ার কথা, সেই ওষুধগুলো এখন রাজা একবেলার মতো হিসেব করে কেনে। বাবার জন্য দু-বেলা ওষুধ কেনার টাকা নেই রাজার৷ একবেলা ওষুধ পেলে অন্তত লোকটা দুম করে মরে যাবে না–ওকে পঞ্চাদা বলেছে এই কথা। চৈতন্য মেডিকেল স্টোরে কাজ করে পঞ্চাদা। ওর কথা বিশ্বাস করা যেতে পারে।

–তুই মুখ এমন হাঁড়ির মতো করে আছিস কেন রে?
–কই মুখ হাঁড়ি করে আছি?
–আমি কি বুঝি না নাকি? কী হয়েছে বল না।
জীবন আশ্চর্য ধাঁধা। একসময় এভাবেই বন্ধুর মতো রাজা গল্প করত হাসানের সঙ্গে। এখন একইভাবে গল্প করে হাসানের ছেলে মিন্টুর সঙ্গে। স্কুল ছেড়ে দিয়েছে মিন্টু। তাই ওরও বন্ধুবান্ধব নেই। রাজাই ওর বন্ধু।
–আম্মি মনে হচ্ছে আমাকে এই লাইন ছাড়িয়ে দেবে।
–মানে?

–রহমত চাচা এসেছিল আজ। বলছে ওর সঙ্গে জোগাড়ের কাজে লেগে যেতে। এতে নাকি অনেক বেশি পয়সা। মাসে আট-ন হাজার টাকা রোজগার৷ বলছে রাজমিস্ত্রির ছেলে রাজমিস্ত্রি হবে। রক্তে আছে কর্নিক ধরা।

রহমত কাজ করত হাসানের সঙ্গেই। মিন্টুর কথা শুনে রাজার মনে হল খুব খারাপ প্রস্তাব দেয়নি রহমত। এখন মাসে মেরে কেটে হাজার তিনেক টাকা রোজগার হয় মিন্টুর। রহমতের সঙ্গে জোগাড়ের কাজ করলে তা যদি এক ধাক্কায় তিনগুণ বেড়ে যায় তো মন্দ কী! গায়ে একটু কাদামাটি লাগবে এই যা। কোনো কাজই তো আর ছোটো নয়। ও কি নিজেই কোনোদিন ভেবেছিল যে, অটো চালিয়ে পেটের ভাত জোগাবে? কলেজে যখন যেত তখন তো স্বপ্ন দেখত একটা অফিসে কাজ করবে। বেল্ট পরবে। জামা থাকবে প্যান্টের ভেতর গোঁজা। এখন তো জামাপ্যান্ট আর প্রায় পড়াই হয় না। সারাদিন কেটে যায় পাতলুনের ওপর ফুটপাথ থেকে কেনা দেড়শো টাকার গেঞ্জি পরে৷

–দেখ রোজগার যদি বেশি হয় তাহলে তো তোর সে কাজটাই করা উচিত, তাই না?
মিন্টুকে বুঝিয়ে বলে রাজা। মিন্টু কোনো সাড়া দেয় না।
–তুই কেন জোগাড়ের কাজ করতে চাইছিস না সেটা তো খুলে বল। আমার সঙ্গে দেখা হবে না বলে? কাজ করতে করতেই কত নতুন বন্ধু হয়ে যায় রে খ্যাপা! জগত কি ছোটো নাকি? জগত বিশাল বড়ো।
–আমি অটো চালাতে চাই।
–অটো চালাবি? পাবি কোথায়?
–একদিন ঠিক পাব যদি লেগে থাকি। তুমি যখন স্টিয়ারিং ধরে সিটে এক পা তুলে দিয়ে বসো, তোমাকে ঠিক রাজা রাজা দেখতে লাগে। আমিও রাজা হতে চাই। জোগাড়ের কাজে লেগে গেলে আমার আর অটো চালানো হবে না। রাজা সাজা হবে না।

ওহ, এ জন্যই মিন্টুর মনখারাপ। এর মাঝে দু-একদিন মিন্টু সকালবেলা রাজার কাছে ঘ্যানঘ্যান করেছে যে, ওকে একটু অটোটা চালানো শিখিয়ে দিতে হবে। রাজা তেমন পাত্তা দেয়নি। বলেছিল আর একটু বড় হ, তারপরে শেখাব। এখন ও বুঝতে পারছে মিন্টু কেন অটো চালানো শিখতে চাইছিল। বেচারির অটো ড্রাইভার হওয়ার শখ। রাজা হাসবে না কাঁদবে ঠিক করে উঠতে পারে না। এটা সত্যিই ভালোবাসবার মতো কোনো পেশা হল? ও যখন অটো চালায় তখন ওকে রাজার মতো দেখায়? নাম রাজা হলেই কেউ কি আর সত্যি সত্যিই রাজা হয়ে যায়! মিন্টু কল্পনাও করতে পারে বটে!

–তুমি একবার মাকে বুঝিয়ে বলো না যে, আমি অটো ড্রাইভার হব? তুমি আমাকে অটো ড্রাইভার বানিয়ে দেবে?

–আচ্ছা দেখি কথা বলব রে। কিন্তু ভাবি কি শুনবে?

হাসিনা বিবিকে যখন রাজা বলল যে, মিন্টু অটো ড্রাইভার হতে চায়, হাসিনা বিবি হাঁহাঁ করে উঠল। বলল, ভাইজান তুমি ওরে বোঝাও। অটো কেনা বা ভাড়া নেওয়া কি চাট্টিখানি ব্যাপার নাকি? রহমত ভাইয়ার সঙ্গে চলে গেলে মাস গেলে ন-হাজার টাকা ঘরে ঢুকবে। যেচে এসে বলেছে কাজে নেবে ওরে, তুমি ওরে বোঝাও।

যুক্তি দিয়ে হাসিনা বিবির কথা কাটা মুশকিলের। সত্যিই তো অটো কেনা তো দূরের কথা, অটো ভাড়া নেয়াই অনেক ঝামেলার বিষয়। তার ওপর এখন মিন্টুর বয়স মাত্র বারো। লাইসেন্স পেতেই ওকে অপেক্ষা করতে হবে আরও অনেকগুলো বছর। ততদিনে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা রোজগার হয়ে যাবে রহমতের সঙ্গে জোগাড়ের কাজ করলে।

মিন্টুকে বুঝিয়ে অবশ্য লাভ হল না কোনো। ও কিছুতেই রহমতের জোগাড়ের কাজ করতে চায় না। ও অটো চালাতে চায়। রাজার মতো এক পা ভাঁজ করে সিটে বসে দু-হাত রাখতে চায় স্টিয়ারিংয়ে।

পরপর দু-দিন মিন্টু এল না। স্ট্যান্ডে যাওয়ার সময় বটতলা থেকে গাড়িতে উঠত মিন্টু। উঠল না দু-দিন। রাজা একবার ভেবেছিল হাসিনা বিবিকে ফোন করে জিজ্ঞেস করবে মিন্টু আসছে না কেন। তারপর অবশ্য আর ফোন করেনি। ভেবেছিল যে, ফোন করা ঠিক হবে না। হাসিনা বিবি হয়তো মিন্টুকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রহমতের সঙ্গে কাজে পাঠিয়ে দিয়েছে। রাজা ফোন করলে হাসিনা বিবি বিব্রত হতে পারে। মিন্টু যদি জানতে পারে রাজা ওর খোঁজ নিয়েছে তাহলে হয়তো ওরও মন খারাপ করবে। রাজা ভেবেছিল যে, এক সপ্তাহ যাক, তারপর ও নিজেই যাবে মিন্টুদের খুপরিতে৷ মিন্টুর মাথায় হাত বুলিয়ে বুঝিয়ে আসবে যে, যা হল তা ভালোই হল, ও যেন মন খারাপ না-করে। বাড়ি ঘরদোর বানানো কি চাট্টিখানি কথা নাকি! কত লোকের থাকবার জায়গা বানিয়ে দেবে মিন্টু। কত মানুষের আশ্রয়।

তিনদিনের দিন কিন্তু মিন্টু এল। বটতলায় না থেমেই হুস করে বেরিয়ে যাচ্ছিল রাজা। এক মিটার এগোতেই চিৎকার করে উঠল মিন্টু। জোরে ব্রেক কষে গাড়ি দাঁড় করাল রাজা। একটা শব্দ উচ্চারণ না-করে মিন্টু উঠে এল। বসে পড়ল রাজার পাশে।

–আমি তো ভাবলাম তুই চলে গেছিস রহমতের সঙ্গে।
–একদিন গেছিলাম। একদম ভালো লাগেনি কাজ। আর যাব না।
–মা কিছু বলেনি তোকে?
–বলছিল। আমি ভয় দেখিয়েছি।
–ভয় দেখিয়েছিস? কী বলেছিস?
–বলেছি জোর করলে আব্বার মতো আমিও পালিয়ে যাব আর ফিরব না।

চুপ করে যায় রাজা। মারাত্মক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে মিন্টু। রাজা জানে এই কথার পর প্রাণ থাকতে হাসিনা বিবি মিন্টুকে আর রহমতের সঙ্গে কাজে পাঠাবে না।
–ভালোই হল কিন্তু অটো চালাতে তোকে এখনও অনেকগুলো বছর অপেক্ষা করতে হবে।
–সে করব। একদিনে কি আর কেউ রাজা হতে পারে?
–অটো চালায় যে সে কি আর রাজারে বোকা? তার রোজগার ঐ রাজমিস্ত্রির রোজগারের থেকেও কম।
–রাজাই তো। কত ছোটো ছোটো গলিঘুঁজির মধ্যে অটো ঢুকে যায় বলো তো? বড়ো বড়ো বাসগুলোও তোমার গাড়িকে সমঝে চলে। চলে না?
তা ঠিক। অটোর হাঙ্গামা লাগাবার একটা ক্ষমতা আছে। আই অটোকে সমঝেই চলে অন্য যানবাহন।

স্ট্যান্ডে গাড়ি লাগাবার সঙ্গে সঙ্গেই লাফ দিয়ে নেমে গেল মিন্টু। চিৎকার করে প্যাসেঞ্জার ডাকতে লাগল, উল্টোডাঙা, উল্টোডাঙা…

দেখে ভালোই লাগল রাজার। বেল্টের ভেতর জামা গুঁজে পরার স্বপ্ন ছিল রাজার। ওর স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। ও হেরেই গেছে। মিন্টু ওকে রাজা ভাবলেও ও জানে যে, ও প্রজা, সামান্য প্রজা। রাজা হলে আজ পাতলুনের ওপর ওর গেঞ্জি ঢলঢল করত না, বেল্টের ভেতরে গোঁজা থাকত জামা। ও চায় মিন্টু জিতুক। জিতে যাক।

পাঁচজন হয়ে গেছে। মিন্টু এসে হাত পেতেছে। ওর হাতে পাঁচ টাকার কয়েনটা ফেলে দিয়েই গাড়ি স্টার্ট দিল রাজা। সঙ্গে সঙ্গে পেছনের বাসটা হর্ন দিতে শুরু করল। রাস্তার একটু ওপরে উঠে এসেছে রাজার গাড়ি। তাই বাসটা এগোতে পারছে না।

সিটের ওপর এক পা তুলে স্টিয়ারিংয়ে দু-হাত রেখে বসেছিল রাজা। ও স্টার্ট বন্ধ করে দিল গাড়ির। বাসটা আরও জোরে হর্ন দিতে লাগল। পেছনের সিটের একজন প্যাসেঞ্জার খিস্তি দিয়ে বলল, ইয়ার্কি হচ্ছে?

রাজা কিচ্ছু বলল না। বাঁদিকে তাকাল। পাঁচফুট দূরে মিন্টু দাঁড়িয়ে আছে৷ ‘উল্টোডাঙা, উল্টোডাঙা’ হাঁকছে না। মিটিমিটি হাসছে। দেখছে রাজাকে। রাজার মনে হল ও রাজাকে নয়, নিজেকেই দেখছে। দেখছে অটোর পেছনে লম্বা ট্রাফিক, স্তব্ধ একটা শহর নিয়ে ছ-বছর পরে সিটের ওপর এক পা তুলে দিয়ে ও বসে আছে। রাজার মতো।

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *