মেরি অ্যানের কিচেন থেকে রসবতীর রসকথা
পূর্বা মুখোপাধ্যায়
নভেম্বর এসে গেলেই কলকাতা খুব নরম হয়ে যায়। নরম রোদ, লফট বা আলমারির সবচেয়ে ওপরের তাক থেকে বের করা নরম কার্ডিগান, আর কদিন পরেই পশমিনা ডিসেম্বর। কমলালেবু, পালং, কড়াইশুঁটি মিলিয়ে সুস্বাদু হয়ে ওঠে নুড়োর সবজি গাড়ি। মাঝখানে একটা কোনো ছুটির শনিবারে রসবতী চলে যায় পার্ক্সট্রিট। একা একাই। ঢুকে পড়ে পিটার ক্যাটে। চেলো কাবাব পুরোটা শেষ করতে পারে না। প্যাক করে নেয়। বাড়ি গিয়ে কাজের মেয়েটাকে দেবে। এক কাপ উষ্ণতার জন্য অক্সফোর্ডের দিকে হাঁটে। বইও দেখা হবে। হঠাতই চুলে রুপোলি শুষ্কতা আর খড়ি ফোটা পা বের করা গোলাপি ছাপা ফ্রক পড়ে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান বুড়ি এসে তার হাতের প্যাকেটটার দিকে চেয়ে বলে – সাম ফুড…… আর তারপরে যোগ করে – ফর মাই ডগি , প্লিজ। বুঝতে পারে রসবতী। তুলে দেয় প্যাকেটটা। অক্সফোর্ডে ঢোকার আগে পেছন ফিরে তাকায়। দেখে ফুটপাথে বসে প্যাকেটটা খুলে গোগ্রাসে খাচ্ছে সে।চা বারে গিয়ে দার্জিলিং চা নিয়ে বসে ডুব দেয় ফেলে আসা দিনে। শুরু করেছিল একটা মিশনারি স্কুলে। সিলভিয়া, ডরোথি, মলি, ক্রিস্টোফার, টোনি, ফেলিক্স, সব ছিল প্রাণের বন্ধু। শনিবার হলেই আর্থারের পকেটে থাকত হলুদ রঙের চটি বই – টার্ফ নিউজ। সারাদিন হাই পাওয়ারের চশমা পরা আর্থার নিবিষ্ট মনে পড়াশোনা করত কোন ঘোড়ায় বাজি রাখবে আজ। ওর বউ মেরি ডিনারের চিন্তা করত। উইকেন্ডের সন্ধ্যে, একটু পার্টি-টার্টি লেগেই থাকত। হ্যাঁ, বাঁচতে জানত ওরা। হাতে পয়সা থাকলে রাজা। আর খাওয়া-দাওয়ায় কোনো কম্প্রোমাইস নেই।ইস্কুলের সেই দিনগুলোয় রসবতী বাড়ি থেকে রুটি বা পরোটা নিয়ে যেত। ওদের পার্ক লেন বা নোনাপুকুরের বাড়ি থেকে লাঞ্চ আসত টিফিন ক্যারিয়ারে। ন্যান্সি বলত – ইট গার্ল, ইউ উইল নট সার্ভাইভ ইফ ইউ ইট সো লিটল। ভাত, ডাল, কাটলেট, মাংস বা মাছ আর চাটনি। দারুণ রান্না। ক্রীসমাসে বা বার্থডে বা উইকেন্ডে লাঞ্চ বা ডিনারে নেমন্তন্ন পেত। সেদিন স্পেশাল ভালো ভালো রান্না। কেবল অঞ্জন দত্ত নয়, রসবতীর জীবনেও বেশ জড়িয়ে গিয়েছিল এই রবার্ট, জেরাল্ড বা ভ্যালেরিরা। এই তো এখানেই ছিল ব্লু ফক্স, স্কাইরুম, উঠে গেছে এখন। একবার মিউজিক টিচার সিন্থিয়া আর সে লাঞ্চ করতে এসেছিল। একটা করে বীয়ার নিয়ে সিন্থিয়া একটা ফিল্টার উইলস ধরাতেই বেয়ারা এসে বলল – উইমেন আর নট অ্যালাউড টু স্মোক। খুব রেগে গেছিল। আজ সব কেমন দ্রুত পালটে গেছে।অ্যাংলো ইন্ডিয়ানরা সংকর। অনেকেই এ নিয়ে ঠাট্টা ইয়ার্কি করত। কিন্তু রসবতীর মতো যারা একবার এদের সাথে মিশে গেছে তারা জানে। আসলে এরা বড় হয়েছে এই ভাবনা নিয়ে যে এরা অনেক বেশি ব্রিটিশ। যদিও সেই ভাস্কো-দা-গামা আসার সময় থেকেই মিশ্রণ শুরু। তারপর ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পরে প্রচুর অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবার রয়ে গেল। এদের খানসামারা ভারতীয় আর ইংলিশ মিলিয়ে নতুন নতুন রেসিপি শুরু করল – পিশপ্যাশ, কাটলেট, ডেভিল, কান্ট্রি ক্যাপ্টেন, চিকেন ডাকবাংলা, রেলওয়ে মটন, মুলিগ্যাটাওয়ে সুপ, ব্রেড পুডিং, রোস্ট, আরো কত কী! ব্রিজেট হোয়াইট কুমারের একটা বই আছে এই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান কুইসিন নিয়ে। রসবতী নিজেও এই বইয়ের রেসিপি মাঝেসাঝেই ট্রাই করে। বাকি অনেক কিছুই ওই কালো মেম মেরি অ্যানের কাছ থেকে শেখা।ক্রীসমাসে একটা অসামান্য বীফ রাঁধা হত ; নুন মাখিয়ে সেই বীফ রেখে দেওয়া হত ফ্রীজে, তারপর ক্রীসমাস পার্টির আগে রান্না হল।আহা! আর বড় বড় কেক তৈরি হত। সুগন্ধে ভরে উঠত পাড়াগুলো। মেরি অ্যান নতুন জামা নিয়ে পিটপিট করত, পঞ্চাশবার টেলারের কাছে যেত – এ ম্যান, টুমকো ফিটিং করনেকো বোলা থা না? ডেখো লুজ হ্যায় ওয়েস্ট আউর স্লীভ। তারপর ডেলিভারি নেবার সময় – ইটনা পয়সা মাংটা টুম? ডেকয়েট হো! ওসমান টেলার্স দশ টাকা কমিয়ে দিয়ে বলত – মেরি ক্রীসমাস মিস! ক্রীসমাসের পর স্কুল খুললে যাবার পথে স্টীলের টিফিন বক্সে দু পিস কেক দিয়ে যেত মেরি অ্যান – এ ম্যান, তুমাহারা বাচ্চাকে লিয়ে। হাসত ওসমান। ঈদের বিরিয়ানি খুব পসন্দ করে মিস।রসবতী একটা নোটবই কেনে। একটা কলমও। আর এক কাপ চা নিয়ে বসে লিখতে শুরু করে,মেরি অ্যানের কিচেন থেকে ভেসে আসে শীতের স্পেশাল রান্নাবান্নার সুগন্ধ।প্রথমে, পিশপ্যাশ- পার্সিয়ান পাশ-পাশ থেকে এ নামের উৎপত্তি। অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান নার্সারির স্টেপল ফুড এটি। আতপচাল, চিকেন, আর বেসিক কিছু গোটা মশলা দিয়ে ওয়ান পট মীল। স্প্রিং চিকেন হলে সবচেয়ে ভালো। আর বাসমতি বা গোবিন্দভোগ চাল। একটা স্প্রিং চিকেন হলে দু কাপ চাল, এই মাপে। তার সাথে এক ইঞ্চি মতো আদা জুলিয়েন করে কাটা, একটা পেঁয়াজ কাটা, আর ছোটো দুটো পেঁয়াজ গোটা, জাস্ট খোসা ছাড়ানো, হাফ চামচ গোটা গোল মরিচ, দুটো কাঁচা লংকা চিরে বীজ বের করা, ঘি, নুন, চিনি অপশনালা। এবার কড়াইতে ঘি আর মাখন এক এক চামচ করে নিয়ে তাতে পেঁয়াজ কাটা, আদা , গোলমরিচ দিয়ে চিকেনটা দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নিন। রঙ চেঞ্জ হলে ধুয়ে রাখা চাল দিন। মিনিট দুয়েক নাড়ুন। চাল ওপেক হলে গরম জল দিন। ফোটান ঢিমে আঁচে। চিকেন আর চাল সেদ্ধ হয়ে যাবে। তখন ওপর থেকে চেরা কাঁচা লংকা দিন। স্প্রিং চিকেন এই জন্যে বললাম, প্রথমত এটা সহজপাচ্য; দ্বিতীয়ত তাড়তাড়ি সেদ্ধ হবে। যদি বড় চিকেন দেন তাহলে চিকেন আগে একটু সেদ্ধ হয়ে এলে চালটা দেবেন। যেহেতু এটাকে কমফর্ট ফুড বলা যায়, বা বাচ্চাদের জন্য আদর্শ, তাই চাল একটু সেদ্ধ আর ভাঙা আর গলা হলেই ভালো লাগে। ও হ্যাঁ, ইচ্ছে মতো সবজিও দিতে পারেন- আলু, গাজর, বীনস, মটরশুঁটি।অ্যাংলো ইন্ডিয়ান উইলিয়াম বা রোজেলরা যতই রোগা হোক না কেন ওদের বিলি বা রোজিদের দেখবেন , গুল্লু গুল্লু, এই স্বাস্থ্যকর পিশপ্যাশের গুণ আসলে।
এবারে চিকেন ডাকবাংলা –সেই ব্রিটিশ আমলের কথা। পথের মধ্যে থাকত ডাকবাংলা। ভ্রমণকালে ছোটো বড়ো সাহেব অফিসারেরা এখানে দু-দণ্ড জিরিয়ে নিতেন। খানসামা থাকত রান্নাবান্নার জন্যে। কিন্তু সেই তেপান্তরে তো আর দু মিনিট পরপর বাজার ছিল না। সকাল-বিকেল ভ্যান-গাড়ি করে সবজি -মাছ-মাংসওলারা হেঁকে যেত না। তারা সেই ডাকবাংলার কিচেনগার্ডেনেই শাকসবজি ফলাতো, মুরগি পুষতো, গরু-ছাগলও। আর বাকি যা তেল-মশলা আসত হাট থেকে। এভাবেই এই দেশি রান্নার আগমন। যা আছে ঘরে তাই দিয়ে সুস্বাদু করে রাঁধা।ধোঁয়া ওঠা ভাত, ডাল, সবুজ স্যালাড , লেবু-লংকা আর চিকেন এবং শেষ পাতে মিষ্টিমুখ, ডেসার্ট বলে যাকে।কিন্তু স্পেশালিটি হল এই চিকেন কারিরপাঁচফোড়নের সুবাসের মধ্যে শুয়ে থাকে এক একটা ডিমসেদ্ধ। প্রোটিন দরকার, বুঝলেন কি না?শাকাহারী সাহেব সে সময়ে ছিল না বোধহয়। এখনো কলকাতার অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান রেসিপিতে রয়ে গেছে এই রান্না।রান্নার রেসিপি তো দেবে রসবতী নিশ্চই। কিন্তু রান্নার তো কেবল রেসিপিই থাকে না, তার সঙ্গে কিছু না কিছু গল্পও থাকে। শেফ হও বা না হও, রান্নার ব্লগ থাকুক বা নাই থাকুক, রান্নাটা কিন্তু রান্নাঘরের। যেখানে গালগল্প ঘোরে পরিবারের লতায়-পাতায়, ডালে-ঝোলে-অম্বলে। কিছু বলা , কিছু না বলা।যাই হোক, কী কী লাগবে?
- মুরগী – ৬০০ গ্রাম
- ডিম – মাথা পিছু একটা
- আলু- ৩-৪ টে , মাঝারি
- পেঁয়াজ- মাঝারি ২ টো
- আদা-রসুন বাটা – ২ টেবিল চামচ
- হলুদ- ১ চা চামচ
- কাশ্মীরী লংকা গুঁড়ো – ১ চা চামচ
- গরম মশলা – ১ চা চামচ (থেঁতো করা)
- ঘি – ১ চা চামচ
- দই- ৩-৪ টেবিল চামচ ( নয়তো টমেটো ১টা বড়)
- পাঁচ ফোড়ন – ১ চা চামচ
- নুন-মিষ্টি- আন্দাজমতন
- সর্ষের তেল – পরিমাণ অনুযায়ী।
চিকেনের পরে মটন পেপার ফ্রাই-এবার একটা মটনের রান্নার কথা মনে পড়ে। মটন বা ল্যাম্ব বা বীফ অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবারের ফেভারিট। সেই সময়ের নানা রকম মটন রান্না হত। একটা আজও খুব জনপ্রিয় সেটা হল মটন পেপার ফ্রাই। ঝাল-ঝাল শুকনো মটন রান্না। এদেশের অ্যাংলো ইন্ডিয়ানরা বিশেষ করে কেরল, অন্ধ্রের অ্যাংলো ইন্ডিয়ানরা যে একটু ঝাল পছন্দ করবে তাতে আর সন্দেহ কি? যতই হোক ভারতীয় রক্ত বইছে তো শরীরে।আচ্ছা এটাতে কী কী লাগছে?
- মটন- ১ কেজি
- ফ্রেশলি গ্রাউন্ড গোল মরিচ- ৩ চামচ
- হলুদ – হাফ চা চামচ
- আদা কুচি – ১ চা চামচ
- পেঁয়াজ কাটা – বড় ২ টো
- তেল – ৩ চামচ
- নুন
- আর বড় আলু ৩ টে চার টুকরো করে কাটা।
ফোর্থ, ফিশ কাটলেট-কলকাতার বাঙালি চপ-কাটলেট খেতে শিখলো ব্রিটিশ আমল থেকে। তখন বাঙালি রেস্তোরাঁয় যেত এই সব খেতেই। আর অ্যাংলো ইন্ডিয়ান বাড়ির রান্নায় চার-পাঁচ কোর্স ডিনার বা লাঞ্চে স্টার্টার হিসেবে থাকবেই এই কাটলেট। আর তারা যে মাছ খেত না এমনটা নয়। বাংলায় থাকবে আর মাছ খাবে না এমন কি হয়? তবে ঐ আপরুচি খানা। তাই মাছকেও তাদের রুচিমাফিক রেঁধে দিত বাবুর্চিরা, কিম্বা অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মিসেসরা নিজেরাই রাঁধতেন ফিশ ইন টমেটো অ্যান্ড কোকোনাট কারি বা ফিশ মসালা বা ফিশ কাটলেট। আজ অবশ্য এই রান্না আমাদের কাছে অনেকটা ঐ মাছের চপের মতোই লাগবে। ওদের থেকেই নেওয়া কি না। বাঙালি তো খেত মাছ ভাজা। রুই, ইলিশ, মৌরলা ভাজা আর তোপসে , বেসনে ডুবিয়ে।আসলে ভাজাভুজি সব জাতেরই প্রিয় খাদ্য। মেরি অ্যান বলত – কাটলেট। সে আলুরই হোক বা মাংসের। মাছের বা বীট-গাজর-কড়াইশুঁটি দিয়ে। গোল গোল করে গড়ে নিয়ে , হাতের চাপে চ্যাপ্টা করে ডিমের গোলায় ডুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বের কোটিং দিয়ে ডূবো তেলে ভাজা সোনালী মুচমুচে কাটলেট।গন্ধ ভেসে আসে উত্তরের মন কেমন করা হাওয়ায়। তড়বড় করে ফিশ কাটলেটের রেসিপিটা লিখতে থাকে রসবতী। খুব সহজ।প্রিপারেশন টাইম – ১৫ মিনিট আর ভাজতে আরো ১৫ মিনিট।লাগবে-
- মাছ (ভেটকি, রুই বা যে কোনো বড় মাছ)- ১কেজি
- আলু সেদ্ধ ছাড়ানো আর মাখা – ৩টে
- কাঁচা লংকা কুচি – ১ চা চামচ
- আদা কুচি- ১ চা চামচ
- ধনে পাতা কুচি – ১ আঁটি
- গোল মরিচ – ১ চা চামচ
- গরম মশলা গুঁড়ো- ১ চা চামচ
- ডিম ফেটানো, ব্রেড ক্রাম্ব,নুন, তেল।
রসবতীকে আজ লেখায় পেয়েছে। তার পার্কার লিখে চলে –শেষ পাতে ক্যারামেল কাস্টার্ড-আসলে এটা পুডিং। আর লাগে খুব যৎসামান্য জিনিসপত্র, যা বাড়িতে সবসময়েই মজুত থাকে। যেমন-
- ডিম – ৪ টে
- দুধ- ২ কাপ
- চিনি- ১/২ কাপ পুডিং-এর জন্য আর ১/৪ কাপ ক্যারামেলের জন্য
- ভ্যানিলা এসেন্স-১/২ চা চামচ
- বেকিং পাউডার – ১/২ চা-চামচ
- জল- ১/৪ কাপ
আজকাল পার্ক স্ট্রিটে গেলে আর অঞ্জন দত্তের মেরি অ্যানদের দেখে না রসবতী, অফিসগুলোর রিসেপশনেও অ্যাঞ্জেলা নেই, মিশনারি বা অ্যাংলো ইন্ডিয়ান স্কুলগুলোয় মিস নর্মান আর পড়ায় না, পড়ে না রোজমেরি, ফ্র্যান্সেস্কা বা উইলিয়ামরা। আমাদের পাড়াগুলো এখন অন্য সব নামে ভরে গেছে। মন কেমন করে রসবতীর। শেষ থার্টি সিক্স চৌরঙ্গী লেনে মিস স্টোনহ্যাম ছিল, আজ সেও রেট্রো সিনেমা। অক্সফোর্ড থেকে বেরিয়ে উবর ডেকে গড়িয়াহাটে নামে রসবতী। আজ উইকেন্ড। স্যাটার্ডে। ডিনারের মেনুতে আজ অ্যাংলো ইন্ডিয়ান চিকেন রোস্ট।গুছিয়ে বাজার করতে হবে। বিয়েতে মায়ের দেওয়া বোন চায়নার ডিনার সেটটা বের করতে হবে ……আর জিন অ্যান্ড লাইম একটু, খাওয়ার আগে।পরে একদিন রেসিপিটা দেবে ‘খন।