aparbangla-editorial-edition-19

সম্পাদকের কলমে

খুব দ্রুত চলে এল আরও একটা নতুন বছর, বাতিল হয়ে গেল আরও একটা ক্যালেন্ডার, ঝরে গেল অনেক ফুল, আবার নতুন কুঁড়িও এল অনেক শাখায়। “কার চুল এলোমেলো, তাতে কি বা এলো গেলো”- সত্যিই কিছুই আসে যায় কারও, কোথাও। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের বছর গড়ালো, তাতে কী-ই বা এলো গেলো! ইজরায়েল-প্যালেস্তাইনে নতুন যুদ্ধ শুরু হল, লাখো মানুষের মৃত্যু হল পৃথিবীর এক পাড়ায়, আবার অন্য কোনো পাড়ায় জীবনের স্বপ্নে বিভোর নতুন বছর শুরু হল।

তবে যেখানে যা-ই ঘটুক না কেন, বাঙালিদের জন্য জানুয়ারি/ ফেব্রুয়ারি মাস উৎসবের মাস, আনন্দের মাস। জানুয়ারিতে চলে অক্ষরযাপন, বই এবং চিত্রে ঠাসা বৈচিত্র্যময় এবং রঙিন এর দিনলিপি। সারাটা বছর ধরে বর্ণমালার সঙ্গে কালযাপনের ব্রত রাখেন যাঁরা, জানুয়ারিতে চলে তাঁদের ব্রত উদযাপন। লেখক, পাঠক প্রকাশক, প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত সকল কর্মী, সবাই অপেক্ষা করে থাকেন যে উৎসবটির জন্য, বাঙালির সেই বইপার্বণ শেষ হয়ে গেলো কলকাতায়। শুরু হয়ে গেলো বাংলাদেশের বইমেলা।

আমরা যারা অক্ষরের সাথে বিশ্বভ্রমণ করি তাঁরা এইবছরে শ্রদ্ধায় স্মরণ করব বিশ্বসাহিত্যের কয়েকজন দিকপালকে। রবার্ট ফ্রস্ট, সমারসেট মম, মিগেল আনহেল আস্তুরিয়াস, ভ্লাদিমির নবোকভকে তাঁদের দেড়শো বছরের জন্মদিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে পর্যালোচনা করব বিশ্বসাহিত্যকে তাঁরা কতটা সাবালক করে দিয়ে গেছেন।

পঁচিশ বছরের ব্যবধানে জন্মে বিশ্ব কাব্যসাহিত্যের আঙ্গিকটাকে বদলে দিয়েছিলেন আরও দুই স্তম্ভ, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, হোর্হে লুইস বোর্হেস। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করব তাঁদেরও। বাংলা কবিতা এবং সাহিত্যকে কয়েক বছরে কয়েকশো মাইল পথ হাঁটিয়ে এক ঝটকায় অন্যরকম এক পথে এনে ফেলেছিলেন যাঁরা, তাঁদের অন্যতম নীরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী এবং সমরেশ বসু এবছর শতাব্দী প্রাচীন হলেন। শ্রদ্ধা জানাই তাঁদের। অপারবাংলার বিগত সংখ্যায় সমরেশ বসুর সুপুত্র শ্রী নবকুমার বসু তাঁর বাবাকে নিয়ে স্মৃতিকথা লিখেছিলেন। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে অন্য প্রথিতযশাদের জীবন এবং কাজ নিয়ে এইবছরের অন্যান্য সংখ্যাগুলিতে কিছু লেখা প্রকাশ করার।

ষষ্ঠ বছর, প্রথম সংখ্যা এবারেও আপনাদের ভালো লাগবে আশা করি। জয়ন্ত দে এর রহস্য উপন্যাস দিয়ে এবছরের অপারাবাংলা র যাত্রা শুরু। অবিভক্ত ভারতবর্ষর সমসাময়িক দুই মহিয়সী লীলা নাগ এবং সরলা ঠাকরেল কে নিয়ে লিখেছেন পূরবী বসু এবং বিতস্তা ঘোষাল। আশা করি ওনাদের নিয়ে আলোচনা আপনাদের নতুন ভাবে উদ্বুদ্ধ করবে।

এবারের সংখ্যাতে আছে আটটি গল্প, দশটি অণুগল্প, দুটি প্রবন্ধ, পনেরোটি কবিতা। এছাড়াও পড়তে পারবেন নিয়মিত বিভাগের অনুবাদ, ভ্রমণ, রান্নাঘর, ফিল্ম রিভিউ। ষ্টুডিওপাড়ার দশম ধারাবাহিকে প্রিয়ব্রত দত্ত লিখেছেন অনেক অজানা কথা অঞ্জন ভট্টাচার্য কে নিয়ে। জানতে পারবেন তাঁর ফিল্ম নিয়ে নিষ্ঠা, সবাইকে উৎসাহিত করা আর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, অন্যায় নিয়ে আপোষহীনতা; সত্যি এক প্রকৃত হিরোর চরিত্র রুপোলি পর্দার বাইরে।

বিগত পাঁচটি বছর আপনারা যেমনভাবে “অপারবাংলা” কে ভালোবেসে সাথে ছিলেন, আগামীতেও তেমনভাবে থাকবেন, বছরের শুরুতে এই প্রত্যাশা। সকলের শুভ হোক, সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নতুন বছরে এই শুভকামনার মধ্যে দিয়ে দৃঢ হোক আমাদের বন্ধন।

আনন্দ হোক।

শুভ নাথ
সম্পাদক
অপারবাংলা সাহিত্য পত্রিকা

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

2 thoughts on “aparbangla-editorial-edition-19

  1. খুব ভালো সংখ্যা। পড়তে সময় নেবে। শুভেচ্ছা- কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায়

  2. খুব সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা। খুব ভালোলাগল পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *