পাঞ্চালি দত্ত
বার মহলের প্রকাণ্ড রান্নাঘরে দশ বারোজন ঠাকুর সকাল থেকে রান্নার কাজে লেগে পড়ত। আত্মীয় স্বজন, অতিথি, ঠাকুর চাকর সব মিলে গমগম ঠাকুরবাড়ি। এই বাড়িতে রান্নাঘর ও রান্নার প্রস্তুতি দেখলে মনে হবে যেন প্রতিদিন উৎসবের রান্না হচ্ছে। মেঝেতে ফর্সা কাপড়ে ভাত রান্না করে ঢালতে ঢালতে ছোটখাটো একটি পাহাড় বললেও মিথ্যে বলা হবে না। শয়ে শয়ে মাছ ভাজা হচ্ছে। চারপাশে গামলাতে নানারকম নিরামিষ ও আমিষ পদে ভরে থাকত পাকঘরের আঙিনা। বাড়ির এক একজনের বিশেষ পছন্দ অনুযায়ী কোনো গামলাতে ঝোল, কোনোটাতে ঝাল, কালিয়া, কোফতা, শুক্ত, বাটা থেকে শুরু করে কী নেই! কোন মহলে কতজন মানুষ রয়েছে তার হিসেব রাখত ঠাকুররা। ঠিক ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী শ্বেতপাথরের থালা ও বাটিতে নানা পদ সাজিয়ে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয় হত খাবার। এছাড়া প্রত্যেক মহলে আলাদা রান্নার ব্যবস্থা ছিল যাতে বাড়ির মহিলারা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কিছু রান্না করতে চাইলে অসুবিধে না হয়। ভাঁড়ার ঘরের সামনের বড় বারান্দাতে সকাল থেকে বসত সবজি কাটার আসর। বাড়ির বউ মেয়েরা বটি নিয়ে বসে যেত। ঝুড়িতে সবজি সাজানো। সবজি কাটার সঙ্গে সঙ্গে চলত গল্প। বার মহল হাসি, গল্পে, রান্নার ঘ্রাণে, ফোড়নের শব্দে হয়ে উঠতো উৎসবমুখর একটি পরিবেশ।
ঠাকুরবাড়ির প্রতিটা বিষয়ের মধ্যেই যে লুকিয়ে থাকত শিল্প! সমাজ সংস্কার, বানিজ্য, ধর্মসংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে সাহিত্য, শিল্পকলা, পরিধেয় বস্ত্র, অন্দরমহল সজ্জা, সঙ্গীত, রান্না … সবেতেই মনকাড়া একটা গ্ল্যামার থাকতো এবং বলা যেতে পারে সেটা থেকেই সৃষ্টি হয়েছিল একটি নতুন ঘরানা। বলা যেতে পারে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি ছিল বাংলার নবজাগরণের অন্যতম মুখ্য ধারক ও বাহক। রান্নাঘরের বাইরেও যে নারীদের জীবনে আরো কিছু কাজ করার জায়গা রয়েছে সেটা বাংলায় শুরু হয়েছিল ঠাকুর পরিবারের হাত ধরেই। যেহেতু ঠাকুরবাড়ির রান্না নিয়ে আমার এই লেখা, তাই তাঁদের হেঁশেল এবং তাঁদের ভালোলাগা খাবারগুলো নিয়ে কিছু কথা ভাগ করে নেব আপনাদের সঙ্গে।
নিরামিষ রান্নাকে একটা আলাদা জায়গায় নিয়ে যাবার ক্ষমতা দেখিয়েছিলেন প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী ।
নিরামিষ রেসিপিগুলোকে কয়েকটি শাখায় ভাগ করে তিনি আমাদের শেখাতে পেরেছিলেন সুক্ষ্ম পার্থক্যগুলো। আজ দুটো ঠাকুরবাড়ির নিরামিষ পদ শেয়ার করছি।
আলু: এক পোয়া টক দইয়ে বড় দুই চামচ সর্ষের তেল ও আদা পেঁয়াজবাটা দিয়ে খুব ভালো করে ফেটিয়ে নেবে। সিদ্ধ আলু মত চাকা করে ও কাঁচালঙ্কা দিয়ে দইয়ে দেবে। পরে উনুনে চড়িয়ে ফুটিয়ে নিয়ে দমে রাখবে।
বেগুনের ঘন্ট: বেগুন কুচি করে রাখ। নুন ও হলুদ মেখে বেগুন ভাজো। তেল চড়াও। তেজপাতা দাও। হলুদ, লঙ্কা, আদা, পেঁয়াজ বাটা দিয়ে খুব ভালো করে কষতে হবে। কষা হলে জল দাও। ফুটে উঠলে বেগুন ও চিড়ে দাও। ঝোল কমে এলে জিরে বাটা দাও। নামাবার আগে ঘি, গরমমশলা বাটা দাও।
৩)রেসিপি… মাদ্রাজি মুরগির কারি
ঘি বা বাদাম তেল চড়িয়ে পেঁয়াজ লাল করে ভাজ। এক মাঝারি চামচ কারি পাউডার কষে মাংস ও আলু দিয়ে কষতে থাকো। একটু কষা হলে কারিপাতা, ধনেপাতা, কাঁচালঙ্কা মিশিয়ে অল্প জল দিয়ে ঢেকে রাখ। মাংস নরম হলে খানিকটা নারকোল দুধ দাও। মিনিট কুড়ি বাদে ভালো সিদ্ধ হলে অল্প লেবুর রস দিয়ে নামাও। বেশ ঘন হবে।
পয়লা বৈশাখের খাওয়াদাওয়া হত বাড়ির দোতলায়, টানা বারান্দায়। মেঝেতে কার্পেট বিছিয়ে দেওয়া হত। পর পর সাজানো থাকত কলাপাতা তাতে ভাত আর মাটির খুরিতে পরিবেশন করা হত কাঁচা ইলিশের ঝোল, চিতল মাছ, চালতা দিয়ে মুগের ডাল, নারকেল চিংড়ি, মাছের পোলাও, আম দিয়ে শোল মাছ এবং আরো খাবার। শেষপাতে থাকত দ্বিজেন্দ্রনাথ এর প্রিয় খাবার — পাঁঠার হাড়ের অম্বল। ঠাকুরবাড়ির মেয়ে কিংবা বউ, রান্নায় যাদের হাতে জাদু ছিল তাদের মধ্যে কাদম্বরী দেবী, প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী, মৃণালিনী দেবী, পূর্ণিমা দেবীর কথা বারবার উঠে এসেছে। বাড়ির কন্যা ইন্দিরার রান্নার বিষয়ে জানার অদম্য কৌতুহল ছিল। যেখানে গিয়ে নতুন কিছু খেয়েছেন, বাড়ি এসে লিখে রেখেছেন খাতায়। তাঁকে রান্নাঘরে হাতা খুন্তি নিয়ে কখনো দেখা যায়নি সেভাবে কিন্তু সেই রেসিপিগুলোকে এক জায়গায় লিখে তুলে দিয়েছিলেন পূর্ণিমাদেবীকে। পূর্ণিমা দেবীর রান্না শেখার প্রতি ঝোঁক ছিল। পূর্ণিমার মা নলিনীদেবীও রান্না করতেন ভালো। মায়ের থেকেও তিনি শিখেছিলেন অসংখ্য রান্না। তাই ঠাকুরবাড়ির প্রিয় ব্যঞ্জনগুলো দিয়ে তিনি পরবর্তীকালে একটি বই লেখেন “ঠাকুরবাড়ির রান্না”। তাতে শুধুমাত্র যে বাঙালি রেসিপি রয়েছে তা নয়, ভিন্দালু থেকে শুরু করে চাওমিন, বাটাটা পোয়া, মাদ্রাজি চাটনি, শিক কাবাব, চিজ স্ট্র … এধরনের নানারকম দেশী বিদেশী রেসিপি সমেত বইটি মোড়া তাতে খুব ভালোভাবে বোঝা যায় যে ঠাকুরবাড়িতে কিন্তু সবধরনের আহারের চল ছিল এবং সেটাকে উৎসাহিত করতেন পরিবারের কর্তারা।
৪) রেসিপি…. বাটার সসে পাবদা
পাবদা পরিষ্কার করিয়া ফেলো। পেঁয়াজ লম্বা কুচি কাটো। হাঁড়িতে জল চড়াও। জল যেই ফুটিবে নামাইয়া তাহাতে মাছগুলি এক একটি করিয়া ছাড়িবে। মিনিট দশের ভিতর মাছ ভাপিয়া উঠিলে নামাইয়া জল ঝরাইয়া ফেল। এখন একটি প্লেটে আস্ত সাজাইয়া রাখ। মাখন গলাও। ঘি চড়াইয়া পেঁয়াজ ব্রুন কর। মাছের উপর গলানো মাখন ঢালিয়া দাও। তাহার উপরে পেঁয়াজ ভাজা ছড়াইয়া দাও। ইহার উপরে নুন ও গোলমরিচ গুঁড়া ছড়াইয়া দিবে। পরিবেশন কর।
ঠাকুরবাড়ির রান্নায় একটু বেশি মিষ্টি দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। গরম মশলা, লবঙ্গ, দারচিনি, দই এর ব্যবহার বেশি হত। কবির বাড়িতে কোনো সভা বসা মানেই তাতে যোগ হত মৃণালিনীদেবীর রান্না। শুধু ফরমায়েশ নয়, রবীন্দ্রনাথকে দেখা যেত মাঝেমাঝে রান্নাঘরে মোড়াতে বসে মৃণালিনীর পাশে। যেখানে তিনি হাতে হাতে উপকরণ তুলে দিতেন স্ত্রীকে।
রবীন্দ্রনাথ শুধুমাত্র খাদ্যরসিক ছিলেন না, সেটাকে তিনি একটি শিল্প হিসেবে খুঁজে দেখতেন, সেই আগ্রহে দেশ বিদেশে যেখানে যেতেন মেনু কার্ড নিয়ে আসতেন। হয়তবা সেই প্রেরণায় প্রজ্ঞাসুন্দরীদেবী বাংলার ভোজসভায় এনেছিলেন ক্রমণী। এই ক্রমনী কেমন হবে, ভোজ পাল্টানোর সময় কী কী ধরনের বিষয় থাকবে, পদগুলোকে কী ভাবে সাজানো হবে এবং ক্রমণীর মাধ্যমে যাতে ফুটে ওঠে খাবারের বিষয় ও শিল্প সেটাতেও কড়া নজর দিতেন। একটা নিরামিষ ক্রমনীর উল্লেখ করছি : ভাত, মাখন মারা ঘি, নুন, নিমে শিমে ছেঁচকি, ছোলার ডাল ভাতে, বেগুন দিয়া শুলফা শাক ভাজি, ছোলার ডালের কারী, কুমড়ো এঁতোর ফুলুরি, পুনকো শাকের চড়চড়ি, থোড়ের ঘন্ট, তিলে খিচুড়ি, ছানার ডালনা, পাকা শশার কারী, পটলর দোলমা, তিল বাটা দিয়ে কচি আমড়ার অম্বল, পাকা পেঁপের অম্বল, লক্ষ্ণৌ কড়ুই, কাঁচা আমের পায়েস।
আমিষ ক্রমনী: ডিম দিয়া মুলুকতানী সূপ, ভাত, আলু ফ্রেঞ্চ স্টু, চঁওচঁও, বড় রুই মাছের ফ্রাই, মাংসের হুশনী কারী, পোলাও, ফ্রুট স্যালাড, ফল। এরকম আরো সংক্ষিপ্ত বা বড় মেনু কার্ড রয়েছে যেখানে নানারকম খাবার ও তার সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে গভীর চর্চার মাধ্যমে। মাঝে মাঝে কিছু রান্নার নামকরণ করতেন প্রিয়জনের নাম দিয়ে। যেমন দ্বারকানাথ ফিরনি পোলাও, রামমোহন দোলমা পোলাও, সুরভি পায়েস। রবীন্দ্রনাথের পঞ্চাশতম জন্মদিনে ফুলকপি, খোয়া ক্ষীর, বাদাম, কিশমিশ, জাফরান পাতা ও সোনা রুপোর তবক দিয়ে বরফি তৈরি করে নাম দিয়েছিলেন কবিসম্বর্ধনা বরফি। কোথায় পার্থক্য ঘন্ট, ডালনা, শরশরি, চড়চড়ি, ছেঁচকি, হিঙ্গি ইত্যাদি রান্নার, প্রতিটা বিষয় সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছিলেন তার আমিষ নিরামিষ রান্নার বইয়ের মাধ্যমে। যেমন বলেছিলেন ‘ হিঙ্গি করতে শিখলেই বুঝিতে পারিবে ইহা ঠিক যেন ডালনার এক ধাপ উপরে উঠিয়াছে অথচ কালিয়াতে উঠিতে পারে নাই।’
তনুজা, যিনি পাঁচ নম্বর বাড়ির কুমুদিনীর মেয়ে তাঁর বিয়ে হয়েছিল সৌদামিনীর নাতি সুপ্রকাশের সঙ্গে। তনুজার রান্নার হাত ছিল অসাধারণ। তবে দু বাড়ির রান্নায় কিছু পার্থক্য ছিল। সেগুলোকে ধীরে ধীরে খাতায় লিখে রাখতে শুরু করলেন। পরে তাঁর একটি রান্নার বই প্রকাশিত হয় যার নাম ছিল, পাঁচমিশেলি। তিনি সাধারণ গৃহিণীদের কথা ভেবেই রান্নার বইটি লিখেছিলেন ” একই রান্না রোজ খেতে অরুচি। তাই রান্না কি করে একটু অদল বদল করা যায় এই দুর্ভাবনা লেগেই থাকে মেয়েদের। এক সপ্তাহের রান্নার এই ফর্দ সেই দুর্ভাবনা দূর করবে। এর যে সবই করতে হবে তা নয়, ইচ্ছেমত বেছে নিলেই চলবে!” ঠাকুরবাড়ি ও শিল্প … যেনো একটা আরেকটার পরিপূরক। বড়ি দেওয়াতেও ফুটে উঠত আর্ট। সুমিতেন্দ্র এর কথায়, “সারা বছর হরেক রকমের নানাবিধ ডালের বড়ি দেওয়ার আসর বসত মা দিদিমণিদের সামনে ওই তরকারি ঘরে। … মা ও দিদিমণির সামনে মাঝখানে জাল লাগানো ছোট ছোট বড়ি দেবার খাট দেওয়া হত। … মায়েদের সামনে থেকে এক একটি বড়ির খাট শেষ হচ্ছে ও তা চলে যাচ্ছে রোদে ও সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা খালি জালের খাট মায়েদের সামনে বসিয়ে দিয়ে যাচ্ছে দাসীরা। এইভাবে পনেরো দিন ধরে বড়ি দেওয়া হত তরকারির ঘরে ওই শীতের সকালে। কত রকমের কত ধরনের ছোট -বড় – ক্ষুদে বড়ি হত মা দিদিমণিদের হাতে।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় খাবার যেমন ছিল কাঁচা ইলিশের ঝোল, চিতল মাছ, কৈ মাছ, চালতা দিয়ে মুগের ডাল, নারকেল চিংড়ি, সুরাটী মিঠা কাবাব, তুর্কি কাবাব, আপেল দিয়ে খাসির মাংস ইত্যাদি। কাদম্বরীর চিংড়ি মাছের চচ্চড়ি নিয়ে বলেছিলেন, ” বউঠাকুরণের জায়গা হল বাড়ির ভিতরের ছাদের লাগোয়া ঘরে। সেই ছাদে তাঁরই হল পুরো দখল। পুতুলের বিয়েতে ভোজের পাত পড়ত সেইখানে। নেমন্তন্নর দিনে প্রধান ব্যক্তি হয়ে উঠত এই ছেলেমানুষ। বউঠাকুরণ রাঁধতে পারতেন ভালো। খাওয়াতে ভালোবাসতেন, এই খাওয়ার শখ মেটাতে আমাকে হাজির পেতেন। ইস্কুল থেকে ফিরে এলেই তৈরি থাকত তাঁর আপন হাতের প্রসাদ। চিংড়ি মাছের চচ্চড়ির সঙ্গে পান্তাভাত যেদিন মেখে দিতেন অল্প একটু লঙ্কার আভাস দিয়ে, সেদিন আর কথা ছিল না।”
লেখার শেষে শেষ পাতের গল্প না করলে গল্প অসমাপ্ত থেকে যাবে।
মিষ্টির মধ্যে দইয়ের মালপো, চিঁড়ার পুলি, ফলের পুডিং, চন্দ্রপুলী, পাকা আমের মিঠাই, পায়েস, নারকেল দিয়ে তৈরি মিষ্টি ইত্যাদি ছিল কবির প্রিয় মিষ্টি। মৃণালিনীর হাতের মানকচুর জিলিপি ছিল তার আরেকটি ভীষন পছন্দের মিষ্টি। মাঝে মাঝে ছোটবেলার অতি প্রিয় খাবার সন্দেশ আর কলা দুধে মেখে খেতেন। তার সেই পছন্দের খাবার থেকে লিখেছিলেন কবিতা ” আমসত্ত্ব দুধে ফেলি, তাহাতে কদলি দলি, সন্দেশ মাখিয়া দিয়া তাতে। হাপুস হাপুস শব্দ, চারিদিক নিস্তব্ধ, পিঁপড়া কাঁদিয়া যায় পাতে।”
ফলের মধ্যে আম ছিল তাঁর ভীষন প্রিয়। একবার গ্রীষ্মকালে জাপান যাবার সময় আম বরফ বক্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যাতে কোনো অবস্থায় সেই বছর আমের স্বাদ থেকে যেন বঞ্চিত না হন কবি।
খাবার শেষে কবি পান খেতে ভালোবাসতেন। এবং ঠাকুরবাড়িতে পান সাজানো আরো একটা শিল্প ছিল। ওই যে বললাম, প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁদের রুচি অন্যমাত্রায় আকর্ষণ লাভ করত। প্রতিদিন কয়েকশো পান সাজাতে হত কারণ আহারের পর মোটামুটি সবাই মুখে পান দিতে ভালোবাসতেন। পারুল খুব ভাল পান সাজাতেন। তিনি পান সাজাতেন চুন, খয়ের , সুপুরি, দারচিনি ও মৌরি দিয়ে। সুমিতেন্দ্রর কথায়, “নানারকম পান সাজানো হত। তার মধ্যে মা যেটা বেশি করতেন সেটা হত একটা ত্রিভুজাকৃতি। মাঝখানটায় গাঁথা থাকত একটা লবঙ্গ। মা সামনে সাজিয়ে রাখা নানাজনের পানের ডিবেয় গুনে গুনে পান সাজিয়ে বন্ধ করে যার যার ঘরে পাঠিয়ে দিতেন।”
ঠাকুরবাড়ির খাদ্য চর্চা এই কিছু কথায় শেষ করা সম্ভব নয়। তবুও আজ এখানেই ইতি টানছি। পরে আবার কখনো বাকি কথা নাহয় গল্প করবো ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার : আমিষ ও নিরামিষ আহার ( প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী ) ঠাকুরবাড়ির রান্না ( পূর্ণিমা ঠাকুর ) , প্রথম আলো (সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ), ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল (চিত্রা দেব ) রেসিপির ভাষা অপরিবর্তিত রাখা হলো ।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন