অনুষ্টুপ শেঠ
বুঁচিকে আপনারা হয়তো চেনেন। বুঁচি একটি মান্যিগণ্যি, সদাহাস্যময়ী, সুতনুকা (কেন রে বাপু? ফিক ফিক করে হাসির কী হল? বলি, হৃষ্টপুষ্ট সুস্বাস্থ্যের অধিকারিণীকে সুতনুকা বলব না তো কী বলব?) কিঞ্চিৎ ভুলোমনা এবং অতীব সহৃদয়া একজন মানুষ। আমি অবশ্য বুঁচিকে চিনি না, তবে না চিনলেও তার খবরাখবর নিয়মিত পেয়ে থাকি। সে খবরাখবর আবার ঠিক সাধারণ নয়, মানে বুঁচি অঘটনঘটনপটিয়সী না হলেও, তার সঙ্গে বা তার ধারেকাছে কী করে যেন সব ঘটনার ঘনঘটা হতেই থাকে।
তো, আগে বলেছি কি, বুঁচির একটি কন্যারত্ন আছেন? বলে না থাকলে এই নিন, বললুম। তিনি, মানে কন্যারত্নটি, গান শেখেন। ভারতীয় মার্গসঙ্গীত। সেই সাড়ে পাঁচ বছর বয়স থেকে শিখছে সে, বুঁচিরা পাকাপাকিভাবে মুম্বই থাকত যখন। তারপর তারা কলকাতা চলে গেল, কিন্তু গান শেখা, এবং গান শেখানোর গুরুজি – কোনওটাই পালটাল না। অনলাইনে রীতিমতো মনোযোগ সহকারে শিক্ষা এখনও চলছে।
কিছুকাল আগে অবধি বেশ চলছিল, গোল হল সে লেভেলের সিলেবাসের সব শেখা হয়ে যাওয়ায়। এর পরের লেভেল যে গুরুজি শুরু করাবেন, সেসব রাগের সরগম কই, তান বন্দিশ কই? বই কই, বই?
আমাজন ফ্লিপকার্ট তন্ন তন্ন করে খুঁজে ফেলল বুঁচি। বহু স্বরলিপি প্রকরণ পাওয়া গেল, পাওয়া গেল অসংখ্য রাগমালা, রাগবিতান, রাগলহরী। কিন্তু গুরুজির যে বইটি চাই, তার টিকির দেখা নেই।
ফলে প্রতি সপ্তাহে ক্লাসের পর শিক্ষক ও ছাত্রীর যুগ্ম হাহাকারে বুঁচির কান ভোঁ ভোঁ করতে লাগল, শয়নে-স্বপনে-জাগরণে আমাজন ফ্লিপকার্ট ঘুরতে লাগল। অবশেষে গুরুজিই মুম্বইয়ের কোনও এক ব্যাক্তির খোঁজ আনলেন, সে নাকি বই জোগাড় করে দিতে পারবে।
বলামাত্র বুঁচি ফোন করেছে সেই নাম্বারে।
হ্যাঁ, বই আছে। হ্যাঁ, বুঁচি যা বলছে সেই বই-ই আছে। হ্যাঁ, চাইলেই পাওয়া যাবে। কুরিয়ার? সেও করা যাবে, ম্যাডামজি কুরিয়ারের চার্জ দেবেন তো?
ম্যাডামজি তো এক পায়ে খাড়া। তক্ষুণি তাকে নাম ধাম সব লিখে পাঠানো হয়ে গেল। সে বরাভয়মুদ্রা প্রদান করল।
তারপর দিন যায়, সপ্তাহ যায়। তার তরফ থেকে আর কোনও সাড়াশব্দ নেই। বুঁচি যতবার ফোন করে হয় ফোন বেজে বেজে থেমে যায়, নয় যদি বা ভুল করে সে ধরেও ফেলে, প্রতিবার এক উত্তর আসে, ‘হাঁ ম্যাডামজি, ম্যায় থোড়া বাহার হুঁ ইস লিয়ে…’
দেখেশুনে বুঁচি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হল, লোকটা হয় বাড়িভাড়া দেয়নি বলে আর বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না বাড়িওলা, নয়তো কেস আরও ডেঞ্জারাস কিছু। হয়তো বা এ কোনও নটোরিয়াস গ্যাং-এর লোক (ভেবে দেখলে, যে বই আমাজন ফ্লিপকার্টে পাওয়া যায় না সে বই এ জোগাড় করে দিতে পারে! গ্যাংস্টার না হলে সম্ভব?) নির্ঘাৎ পিছনে হুলিয়া লেগেছে, পুলিশ খুঁজছে, তাই বাড়ি আসতে পারছে না। নাহলে সপ্তাহের সাত দিনের একদিন একবেলাও কেউ বাড়ি থাকে না, এমন হতে পারে!
অগত্যা আবার বুঁচি গুরুজির দ্বারস্থ হল। ভদ্রলোক তো সব শুনে বেজায় খেপে গেলেন। তারপর একদিন নিজেই সশরীরে গিয়ে হাজির হলেন সেই লোকটার বাড়ি।
দূরদর্শী বুঁচি বারণ করেছিল, বলেছিল যাতায়াতই সার হবে – কিন্তু ক্ষিপ্ত গুরুজিকে রোখার সাধ্য তার ছিল না।
বাড়িওলা থিওরিটা নাকচ হল, কারণ লোকটার জ্ঞাতিগোষ্ঠী পরিবার সবাই সে বাড়িতেই উপস্থিত ছিল। পুলিশ-টুলিশও দেখেননি বলে জানালেন গুরুজি। তবে লোকটা বাড়ির বাইরেই ছিল তখনও—কিন্তু সেটা আগে থেকেই ছিল, নাকি তিনি আসছেন দেখে পিছনের দরজা দিয়ে হল—তা নিয়ে দেখা গেল গুরুজি ঘোর সন্দিহান। ঘোরতর উষ্মা সহযোগে সে সন্দেহ প্রকাশও করলেন তিনি বুঁচির কাছে, কী ভাগ্যিস বুঁচি কানে হেডফোন লাগিয়ে ছিল কলটা ধরার সময়ে, কারণ গুরুজির ভাষাটা ঠিক ছাত্রীর শ্রবণযোগ্য ছিল না।
মোদ্দা মিশন ফেলিওর হল।
কী করা যায় ভেবে আকুল হতে হতেই এদিকে বুঁচির আপিশের কাজে মুম্বই যাওয়ার সময় চলে এল। বই খোঁজায় আপাত ক্ষান্তি দিয়ে বুঁচি পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে মুম্বই চলে এল। পরের গানের ক্লাসে সে খবর শুনে গুরুজি আরও মুষড়ে পড়লেন।
তার পরের হপ্তায় একদিন বেলার দিকে বুঁচি আপিশে বসে কোডে ঝাড়ু লাগাচ্ছে, এমন সময়ে গুরুজির ফোন।
‘ম্যাডাম! বইটা পেয়েছি! আছে একটা দোকানে! আপনি তো মুম্বইতেই, চলে আসুন চেম্বুর, আমি নিয়ে যাচ্ছি।’
বলা বাহুল্য, বুঁচি আপিশ সেরেই দৌড়ে গেল। এতকাল পরে চেম্বুর আসার আনন্দে চাট্টি আপেল নিমকি কানের দুল ইত্যাদি হাবিজাবি কিনেও ফেলল গুরুজির জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে। তারপর একটু খিদে-খিদে ভাব হওয়ায় পানিপুরি খাবে না বড়াপ্পাও এই নিয়ে যখন দোলাচলে, হঠাৎ খেয়াল হল এক দামড়া স্কুটারওয়ালা লোক তার গা একদম ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পড়ে কীসব হাতের ইশারা করছে!
হেব্বি চটেছিল বুঁচি। নাহয় তাকে নেহাৎ ভালোমানুষ, মতান্তরে ক্যাবলাপানা দেখতে। তাই বলে এ কী অসভ্যতা! ভ্রূ কুঁচকে, কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে তেড়ে ধমক দিতে যাবে, লোকটা হেলমেট খুলে ফেলল। ও হরি, এ যে কন্যের গুরুজি। এবার আবছা খেয়াল হল, তিনি স্কুটার চেপেই আসতেন বটে। এমনকী ঠাহর করতে স্কুটারটাও চেনা লাগল। কী ভাগ্যিস, মুখ খোলার আগেই হেলমেট খুলেছে!
যাই হোক, এদ্দিন পরে গুরুজিকে দেখে ভারি আহ্লাদ হল বুঁচির। পারস্পরিক নমস্কার সারা হওয়ার পর সে দরাজ গলায় বলল, ‘যান পার্কিং করে আসুন।’
ওমা, তিনি আর যান না! বরং আবার সেই হাত নাড়ানাড়ি শুরু করে দিলেন। ই কী রে বাবা, সকালেই তো কথা বলেছে সে, এর মধ্যে এমন কী হল যে আস্ত মানুষটার কথা বন্ধ হয়ে গেল! দাঁতে ব্যথা নাকি, হুঁ…গালটা ফোলাই তো লাগছে!
বুঁচির দশা দেখে মুখের ঢ্যালা হয়ে থাকা পানটা ভিতরদিকে চালান করে গুরুজি বললেন, ‘উঠে পড়ুন।’
এতক্ষণে বুঁচির হৃদয়ঙ্গম হল, ওই সব হস্তভঙ্গিমা আসলে তাকে স্কুটারের পিছনে উঠে বসতে বলার ইশারা ছিল।
স্কুটারের পিছনে! বুঁচি!
যে কিনা আজন্ম টু-হুইলার বস্তুটিকে যমের মতো ডরায়! যে জীবনে দু’বার মাত্র ওই বস্তুতে চেপেছে – একবার ছোটোবেলায় জেঠু বেড়াতে নিয়ে যাবে বলে বাইকে বসিয়েছিল, বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফেরত দিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল তার কান্নার চোটে, আর আরেকবার এক কোলিগের বাইকে বাধ্য হয়ে চড়তে হয়েছিল অফিসের বাস মিস হয়ে যাওয়ার চক্করে—সারা রাস্তা কাঠ হয়ে বসে থেকে পৌঁছনোর পর বুঁচিকে চোখ খুলিয়ে, বেঁচে আছে বিশ্বাস করিয়ে নিজের পায়ে দাঁড় করাতে তাকে যা বেগ পেতে হয়েছিল যে সে আর কোনওদিন বুঁচিকে বাইকে-সাইকেলে-ট্রাকে কিচ্ছুতে চড়াবে না প্রতিজ্ঞা করেছিল। সেও ছোটবেলার কথাই বলা যায়!
তারপর এদ্দিনে গঙ্গা এবং মিঠি নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে, বুঁচির ওজনও নাহোক আগের দেড়া হয়েছে। এখন, এই বপু এবং এতকালের সযত্নলালিত নার্ভাসনেস নিয়ে বুঁচি বসবে স্কুটারের পিছনে!
‘পুলিশ ধমকাবে এবার এতক্ষণ দাঁড়ালে! উঠে পড়ুন, উঠে পড়ুন!’
গুরুজি তাড়া দেন। বুঁচি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে উঠেই পড়ে। পিছনের হ্যান্ডলটাকে সর্বশক্তি দিয়ে আঁকড়ে ধরে বসে, চোখ খোলা রাখলে বেশি ভয় করবে না বুজে রাখলে ভেবে না পেয়ে আধখোলা করে রাখে।
চেম্বুরে যে না গেছে, তাকে সে রাস্তার বিবরণ বলে বোঝানো কঠিন। ধরুন হাতিবাগানের মতো, তার চেয়ে একটু সরু রাস্তা, তার দুপাশে সারি সারি দোকান। ট্রাম চলে না, তবে গাড়ি-অটো-দ্বিচক্রযান চলে হাতিবগানের চেয়ে ঢের ঢের বেশি। সেই অনর্গল স্রোতের মধ্যে জাহাজের মতো ভারিক্কি চালে হেলেদুলে লাল ডিব্বা, মানে স্টেট বাসও যায় মাঝে মাঝে।
এবার সেখানে সারা বছর হাতিবাগানের পুজোর বাজারের মতো ভিড় থাকে। ধারের দোকান আবার তিন স্তরে, প্রথমে বাড়ি টাড়ির নিচে যেমন দোকানঘর হয় সারি সারি, তাদের সামনে ফুটপাথ জুড়ে কাঠ-বাঁশ দিয়ে নামে অস্থায়ী কাজে চিরস্থায়ী দোকানের পশরা। তারও সামনে, ফুটপাথের সামনে রাস্তার ধারে ধারে ঠেলা অথবা কাঁধে ঝোলা বাক্স বা হাতে ধরা লাঠির আগায় ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ভ্রাম্যমান দোকানীর দল। দরে সবচেয়ে কম হবার জন্যই হয়তো সবচেয়ে বেশি ভিড়টা থাকে এদের ঘিরেই, অবধারিত তার একাংশ গাড়ি চলাচলের পথে উপচে পড়ে – ফলে রাস্তাটা হর্নে, হাঁকডাকে, এ ওর উপরে চেঁচানোয় জমজমাট হয়ে থাকে সারাক্ষণ।
একটু আগেই এইসব এক-পায়ে-নুপূরলোভী, ন্যাজঝোলা-হেয়ারব্যান্ডবিলাসিনী ললনাদের এবং ফাটা জিনসপ্রেমী, কালো-কারে-ঝোলানো-দাঁত-খিঁচোনো-খুলি-মুগ্ধ বালকদের ছত্রভঙ্গ করে হেঁটেই বুঁচি এই মোড় অবধি এসে পৌঁছেছিল। এখন গুরুজির স্কুটারের পিছনে বসে সে টের পেল, এরা হাঁটাচলার পথে যত না গ্যাঞ্জাম করে, তার চেয়েও বেশি ফ্রিকোয়েন্সিতে মুহূর্মুহু রাস্তার মধ্যে ছিটকে ছিটকে পড়ে—কেউ বা মধ্যরাস্তায় দাঁড়িয়ে চীৎকার করে দরাদরি করে যাচ্ছে, কেউ বা অন্যপারে মনোহর-তর হাপ্প্যান্ট দেখতে পেয়ে আশপাশের কাউকে তোয়াক্কা না করে দৌড় লাগাচ্ছে। তার সঙ্গে রয়েছে দুধার জুড়ে পার্ক করা বাইকের লাইন, গদাইলশকরি চালে চলা সাইকেল ভ্যান এবং সর্বোপরি বাহ্যজ্ঞানশূন্য হাত-ধরাধরি-করা যুগলগণ। বুঁচি টের পেল, গলায় সুরের মতোই, স্কুটারের হ্যান্ডলের ওপরেও গুরুজির ভালোই কন্ট্রোল আছে।
আরে! আরে! একেই তো এসবের মধ্যে বুঁচি কোনওরকমে সংকুচিতপ্রাণ হয়ে বসে আছে, এর মধ্যে কোন হতচ্ছাড়া ছোকরা রে তুই, ঠেলা ভরা আম নিয়ে বুঁচির হাঁটুতে খোঁচা দিচ্ছিস! বলি, বুঁচির হাঁটু কি ইস্ক্রুপ্ দিয়ে জোড়া, যে খুলে হাতে নিয়ে বসবে? ও গুরুজিঁ! দ্যাঁকো না কী কচ্ছে!
গুরুজি দেখেন এবং দেখান। কম কথার মানুষ, মারাঠিতে খ্যাঁক খ্যাঁক করে কয়েকটা শব্দ ছুঁড়ে দিয়েই আবার যেমন যাচ্ছিলেন যেতে থাকেন। তবে ওতেই কাজ হয়, ছোকরা আর তার ঠেলা বুঁচির হাঁটুর পাশ থেকে সরে যায়, চোখের সামনে থেকেই সরে যায় একেবারে।
গুরগুর করে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই! স্টীলের বাসন, লহরিয়া শাড়ি, উদয়া রেস্টুরেন্ট – আহা কী ভালো মাংসের সুরুয়া করত কেরালার এই রেস্টুরেন্টটি! কুর্তি আর কুর্তি, তেলের দোকান, আবার কুর্তি, আবার স্টিলের বাসন, তেলের দোকান, আবার – এত বাসন কারা কেনে? আবার শয়ে শয়ে কুর্তির দোকান, ওশানিক রেস্টুরেন্ট—উফ! এদের সী ফিশের চয়েস এত ভালো! আরে দূর বাবা, খিদে পেয়ে যাচ্ছে যে, কোথায় সেই দুর্লভ বইয়ের দোকান?
আরও খানিকটা গিয়ে স্কুটার সাইড করেন গুরুজি। নামতে বলামাত্র বুঁচি বোঁটা ছেঁড়া তালের মতো ধপ করে রাস্তায় ল্যান্ড করে। আহা, নিজের পায়ে ফিরে আসার যে কী শান্তি! কিন্তু ওই আম ভর্তি ঠেলার ছোকরা তার দিকে চেয়ে অমন মিচকি মিচকি হাসে কেন? আরে, এ যে সেই হাঁটুতে গুঁতো মারা ছোকরা! তার চোখের আড়াল দিয়ে পিছু পিছুই আসছিল বুঝি এতক্ষণ?
বুঁচির অমন তাগড়াই দাঁত খিঁচোনোটা মাঠে মারা যায়, ছোকরা ততক্ষণে এগিয়ে গেছে। মাঝখান থেকে স্কুটার পার্ক করে আসা গুরুজি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তার শরীর খারাপ হয়েছে ভেবে। তাঁকে আশ্বস্ত করে, গটগট করে রাস্তা পেরিয়ে দোকানে গিয়ে বই কিনে, ব্যাগস্থ করে, গুরুজিকে তাঁর অমূল্য সময় ব্যয় করে আসার জন্য ভূরি ভূরি ধন্যবাদ জানিয়ে বুঁচি সটান হাঁটা দেয় ফেরার পথে।
আহা, গুরুজি অতি ভদ্রলোক, তিনি অবশ্যই তাকে আবার এগিয়ে দিতে চেয়েছিলেন কিছুটা। কিন্তু কাজ মিটে গেছে, আবার কেউ এই রাস্তায় স্কুটারের পিছনে শখ করে ওঠে নাকি!
বুঁচি অদম্য গল হতে রাজি আছে, পা-গল নয়!
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন