Micro Story – Asruto Kothara

অশ্রুত কথারা
মহুয়া মল্লিক


বিষ্ণুপ্রিয়া এসে দাঁড়ায় পুকুর ঘাটে, আর ও আসা মাত্র মেঘ করে। প্রকৃতি আজকাল বড্ড বেখেয়ালী; বিষ্ণুপ্রিয়ার মতই যেন কিছুটা। অনিমেষ ছিপখানা জলে ডুবিয়ে মৌন হয়ে আকাশ দেখছিল, মেঘ চুঁইয়ে নামা স্বর্গীয় আলোর কণা দেখছিল অথবা এসব কিছুই দেখছিল না। বিষ্ণুপ্রিয়ার থমথমে মুখে লুকিয়ে থাকা অপার রহস্য খুঁজছিল। বাসন মাজছিল বিষ্ণুপ্রিয়া, কাজ শেষ হলেই বড় পাথরটার উপর বসে পুকুরের জলে পা ডুবিয়ে দেবে। এভাবেই বসে থাকবে কিছুক্ষণ তারপর নিঃশব্দে উঠে যাবে, আজও অনিমেষের কথাটা বলা হবেনা। দু’জনে এভাবে এতকাল পাশাপাশি বসেও মনের কথা বলতে পারল না। বিষ্ণুপ্রিয়ার চোখ ছিপের দিকে, লোকটা প্রতিটা ছুটির দুপুর এভাবেই বসে থাকে, একটা মাছও কোনদিন ধরা পড়েনি। ও সশব্দে হেসে উঠতেই, অনিমেষ অবাক হয়ে তাকায় একবার, তারপর চোখ সরিয়ে নেয়। বিষ্ণুপ্রিয়া কি টের পায়, অনিমেষ মাছ ধরতে আসেনা, তার জন্যই প্রতিটা রবিবার ছুটে আসে? আকাশ কালো হয়ে এসেছে, এখুনি বৃষ্টি নামবে। আজকেও কথাটা বলা হবে না বিষ্ণুপ্রিয়াকে। এভাবেই সময় বয়ে যাচ্ছে, হয়ত বাকি জীবনটাও বয়ে যাবে…।

“উঠুন ভিজে যাবেন তো”, বিষ্ণুপ্রিয়ার কথায় ঘোর ভাঙে। এদিক ওদিক তাকায়, ওই তো ভাঙা শিব মন্দিরটা চোখে পড়ছে। সেদিকেই ছুটে যায় দুজনে। বৃষ্টি এই মধ্যবয়সে তাদের কাছে এনে দিয়েছে, চার দেওয়ালের ঘেরাটোপে তারা বড্ড কাছাকাছি এসে পড়েছে। অনিমেষ বুঝেছে কথাদের আর প্রয়োজন নেই।

3 thoughts on “Micro Story – Asruto Kothara

  1. খুব খুব মিষ্টি অণুগল্প মহুয়া ! তোমার লেখার গুণে বিষ্ণুপ্রিয়া আর অনিমে… দু’জনকেই চোখের সামনে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। শেষ মোচড়টা মন ভরিয়ে দিল! অনেক অনেক শুভেচ্ছা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *