bibidho-golpo-holeo-sotti

গল্প হলেও সত্যি
(সত্য ঘটনা অবলম্বনে)
পাঞ্চালি দত্ত

গোলাপি, লাল, কমলার মিঠে রং ছড়িয়ে বসন্তের আকাশে। রহস্যময় আলোর এই মিলনখেলায় যমুনার টলটলে জলের ক্যানভাসে ধরা দিয়েছে শ্যাম সখীদের খেলা, রাধার মান ভঞ্জন।

কেল্লার পশ্চিমকোণে খোলা জায়গাতে আরামকেদারায় বসে মুঘল শাসনকর্তা মোহাম্মদ শাহ কি বুঝবেন এই প্রেম, মান অভিমান, ত্যাগ মোক্ষর মর্ম! কেল্লার লাল পাথরে পাথরে যে শুধু রং রক্তের। চোখের নোনা জল , লাল নদীর সিক্ততায় স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে উঠেছে কেল্লার পরিখা। দুধসাদা তাজমহলে গোধূলি রং লাগতেই সম্রাট বলে উঠলেন ‘ সুবহানাল্লাহ ‘। আশেপাশের দু একজন সম্রাটের কথার তালে তাল মিলিয়ে বলে উঠল ‘ সুবহানাল্লাহ ‘। কিন্তু সম্রাটের এই শব্দটির সুরে শুধুই কি ‘তারিফ’ মেশানো ছিল! মনে মনে বললেন … তখত, তদবির, তাসির। হঠাৎ ঘুরে দাঁড়িয়ে ওসমানকে ইশারা করলেন … তাওয়াফ, লক্ষ্ণৌ কা ওয়হ তাওয়াফ কী ক্যায়া খবর হ্যায়?
— হুজুর, মানগঞ্জ পহুচ গয়ে হ্যায়। কাল শ্যাম তক ইহা তশরীফ লায়েঙ্গে।
একদিকে ইংরেজদের আধিপত্য অন্যদিকে ওই চামচিকে মারাঠাও প্রবল সেয়ানা হয়ে উঠেছে।


চারপাশে অবিশ্বাসের নিঃশ্বাসে যমুনা যেমন বিষাক্ত হয়ে পড়েছে , ঠিক তেমনি বিষাক্ত কালো রং ছড়িয়ে পড়েছে ভাগীরথির জলে, বাংলায়। সরফরাজকে খুন করে আলীবর্দী খান বাংলার সদ্য নবাব হয়েছেন। সরফরাজের ভগ্নীপতি রুস্তম জং হত্যার প্রতিশোধে হাত মিলিয়েছেন মারাঠাদের সঙ্গে। রঘোজি ভোঁসলে, ভাস্কর পণ্ডিত সুযোগের সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে আক্রমণ করলেন বাংলায় ১৭৪২ সালে। গ্রামের পর গ্রাম পোড়ানো, লুঠতরাজ, হত্যার বিভীষিকার দৃশ্য বাংলার ঘরে ঘরে। চার লাখ মানুষের রক্ত দিয়ে ভেজা বাংলার মাটিতে শুধু মরা কান্না। মারাঠা যোদ্ধাদের দাবি … চৌথ অর্থাৎ কর আদায়। অবিভক্ত বাংলাকে ( বিহার ও ওড়িশাসহ ) চার ভাগের এক ভাগ কর তুলে দিতে হবে মারাঠা বর্গীদের হাতে। আলীবর্দী খান যদিও যথেষ্ট সাহসের সঙ্গে পাল্টা আক্রমণ করেছিলেন, কিন্তু পর পর দশবার আক্রমণে তিনি সমঝোতার হাত বাড়াতে বাধ্য হলেন। ঠিক হল ১২ লাখ চৌথ তুলে দেবেন বর্গীদের হাতে প্রতি বছর। আক্রমণ বন্ধ হল। বাংলায় শান্তি ফিরে এলো। তবে অনেক বর্গীরা লুঠপাটের টাকায় বাংলার নানাজায়গায় পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে শুরু করল ব্যবসাকে জীবিকা করে। ধীরে ধীরে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, খাওয়া দাওয়া পরিবর্তিত হয়ে মিশে গেল বাংলায়। পালটে ফেললো পদবিও। যেমন কুন্দন থেকে কুন্ডু। ১৭৬৬ সালে সাফল্য নারায়ণ কুন্ডু হুগলি জেলায় ২৬ বিঘা জমিতে গড়ে তুললেন মহল যাকে বলা হয় ইটাচুনা রাজবাড়ি।





মাঘী পূর্ণিমার রুপোলি স্রোতে শ্বেতপাথরের ঠাকুরদালানে যেন মোম গলে পড়ছে। সদর দরজার দুপাশে দাঁড়িয়ে জ্বলছে টিমটিম গ্যাসবাতি। চকমিলানের দুধারে লম্বা দ্বিতল মহল। দু পাশে উঠে গেছে সিঁড়ি ছাদ পর্যন্ত। আর মাঝখানে অর্থাৎ সদর দরজার সোজাসুজি দাঁড়িয়ে ঠাকুরদালান। ভোরবেলা আমরা তিন পরিবার কলকাতা থেকে রওয়ানা হয়েছি ইটাচুনার উদ্দেশ্যে। দেওর, জা ও আমার পুচকে দেওরজি তিতির, বান্ধবী রিমি, ওর হাসব্যান্ড নীলাদ্রি, ছেলে পৃথু আর আমরা তিনজন। হাইওয়ে শেষ হয়ে তারপর শুরু মেঠো পথ। লাল ধুলো, ধানের গোলা, দুপাশে ধানক্ষেত, ফুরফুরে হাওয়া আর একরাশ ছুটির মেজাজে প্রায় সকাল ১০ নাগাদ পৌঁছলাম রাজবাড়িতে। বিশাল লোহার গেট পেরোলেই ফুলের বাগান। দুপাশে কয়েকটা ঘর রয়েছে। তারপর সদর দরজা। বুঝতে পারলাম এই রুমগুলো আপাতত অফিসঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়।






রাত ১২ টা। আমি আর রিমি ঠাকুরদালানের সিঁড়িতে বসে। ভরপুর জ্যোৎস্না ও শীত উপভোগ করছি চুটিয়ে। করছি জমিয়ে গল্প। বাকিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু সবাই ক্লান্ত থাকায় আড্ডায় সামিল হতে পারেনি। সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে আশেপাশের কিছু জায়গা দেখে সন্ধেবেলা ফিরেছি। তখন দেখি ঠাকুরদালানে বেশ কিছু লোক। বুঝলাম আমাদের মতই আরো কয়েক পরিবার ঘুরতে এসেছে। আর রয়েছে গ্রামের কিছু লোকজন সন্ধ্যের পুজো দেখতে। এখানে দুবেলা গোপাল জিউ এর পুজো হয়। চকমিলানে সন্ধেবেলার ছৌনৃত্যটি ছিল অসাধারণ। আঞ্চলিক শিল্পীদের মুহূর্তের পালটে যাওয়া শরীরী চলন, ভঙ্গিমা এবং পুরাণের যে গল্পটি নিয়ে নাচটি দেখানো হয়েছিল সেই নিয়ে শুরু হলো দুজনের গল্প। তারপর গণদেবতা, জয়দেব, অজয় নদী, ভাওয়াল সন্ন্যাসী, জয় গোস্বামী, টিনটিন থেকে হিং য়ে এসে যখন পৌঁছেছি, দেখি দু চারটে শুকনো পাতা উড়ে আমাদের পায়ের কাছে লুটিয়ে গল্পে যোগ দিয়েছে। দুজনের কথায় সামান্য ছেদ পড়ল। পাতার আকার দেখে মনে হল পেছনে পুকুরপাড় ঘেঁষে বড় বড় কিছু গাছ রয়েছে সেগুলোর পাতাই হবে। নিঝুম রাজবাড়ি। সবাই ঘুমিয়ে। তখনো মোবাইল ফোন এতটা স্মার্ট হয়ে ওঠেনি। তাই হাতে রাখার অভ্যেসটাও রপ্ত হয়নি। যত রাত বাড়ছে, ঠান্ডা বাড়ছে। ঠাকুরদালানের সিঁড়ি হিমকণায় ভিজতে শুরু করেছে। এবারের গল্পে তাই স্বাভাবিক ভাবেই চলে এল উত্তরাখণ্ডের শীত বনাম সিকিমের শীত। ব্যাগ ছিনতাই হবার পর সিকিমের রাস্তা হারিয়ে কিভাবে রিমি হোটেলে পৌঁছেছিল সেটার গল্প আবারও শুনে ওর সাহসের প্রশংসা না করে পারলাম না। রিমি বরাবর সাহসী। আমিও যথেষ্ট সাহসী। তবে ওর মত নয় এটুকু বলতে পারি। গল্পে গল্পে হঠাৎ দেখি রিমি লাফিয়ে উঠল। দালানের সিঁড়িতে কিছু দেখার চেষ্টা করছে। জিজ্ঞাসা করতে বললো, পাতার সঙ্গে শুঁয়োপোকাও উড়ে এলো কি! ঝকঝকে জ্যোৎস্নায় আমিও আশপাশ দেখে বললাম, না, কোথাও কিছু নেই। শুধু পাতাগুলো পড়ে। একগাল হাসতে হাসতে ততক্ষণে নিস্তব্দ রাতকে খানখান করে ফেলেছি। বললাম, তোকে সাপও জব্দ করতে পারল না, কিন্তু পারলো শুঁয়োপোকা ! ‘ শুঁয়োপোকাকে ও কেন যে এত ভয় পায় জানি না।


রাত প্রায় ২ টো হবে। দুজনেরই ঠান্ডা লাগার অভ্যেস আছে।
— পাঞ্চালি, এবারে চল ওপরের তলায় যাই। এখানে শীত আরও বাড়ছে। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে শুরু করলাম। হালকা পাওয়ারের বাল্ব সিঁড়ি ঘরে জ্বলছে। ওপরের তলায় লম্বা বারান্দা তিনদিক ঘিরে। কোণের ঘরের পাশে একজায়গায় টিউবলাইটের আলো অন্ধকারকে ভাঙার চেষ্টা করছে। সেখানে রয়েছে তিনটে চেয়ার ও একটি ছোট্ট টেবিল। পাশের রুমটি তালা বন্ধ। আশেপাশেও কোনো রুম নেই। যাক, এখানেও আড্ডা জমাতে অসুবিধে নেই তাহলে। আমাদের রুমগুলো এই তলাতেই। বেশ কিছুটা ঘোরানো বারান্দা পেরিয়ে। তবে রিমির রুমটা আরো একটু কাছে। শুধুমাত্র আমরা দুজন বারান্দায়। কথা পর কথা চলছে। কেটে গেছে আরও এক ঘন্টা।

হঠাৎ রিমি আমাকে অদ্ভুত একটা প্রশ্ন করে বসল, ” তুই কি আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছিস? ”

আমি তড়াক করে লাফিয়ে উঠলাম চেয়ার ছেড়ে । আ.. আ…মি ভয়, ভ..য় … তুই কী করে জানলি?

রিমির এই কথা শুনে আমি অবাক, কিন্তু আবার অবাকও হতে পারছিলাম না। কারণ ওকে শেষ ৩/৪ মিনিট ধরে একটু কেমন জানি লাগছিলো দেখতে। রিমিকে যেন খুঁজে পাচ্ছিলাম না ওর মধ্যে। কথা বলছিলাম, তাই অতটা পাত্তা দেইনি বা পাত্তা দেবার চেষ্টা করিনি বিষয়টায়। হয়ত আরো কিছুক্ষণ কেটে গেলে পর কী করতাম বা বলতাম জানি না। কিন্তু যে মুহূর্তে ও আমায় জিজ্ঞেস করলো, একটা ভয় সঙ্গে সঙ্গে ঘিরে ধরলো। ওকে আমি বেশ কিছুক্ষণ ধরে দেখছিলাম। কালো গভীর দুটো চোখ, বরফ সাদা গালের শুধুমাত্র চিবুক, শালের ভেতর থেকে টিউবলাইটের মত সাদা হাত দুটো দেখতে পাচ্ছি। আমি বিষয়টাকে পুরোপুরি চেপে গেলাম। ভেবেছিলাম সাদা আলোয়, একজায়গায় বসে গল্প করছি তাই হয়তো এমনটা মনে হচ্ছে। কিন্তু ও বুঝলো কি করে? যাইহোক ব্যাপারটিকে আমল না দিয়ে আবারও বসলাম গল্প করতে। ভাবলাম এবারে বোধহয় আর ওরকম মনে হবে না। কিন্তু আমি তখনো আগের ছবির থেকে কোনো পার্থক্য বুঝতে পারলাম না বিন্দুমাত্র। ওকে মনের এই দ্বন্দ্ব খুলে বলতে আমার কোথাও বড্ড অসুবিধে হচ্ছে।


আবারও আরেকটা অদ্ভুত কথা বলে উঠল রিমি, “তোর বোধহয় চলে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে।”

কথাটায় এবারও ধাক্কা খেলাম। আমার সত্যি তাইই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ও কী করে আমার মনের ভাষা পড়ে ফেলছে! রুমের দিকে যাব ভেবে কয়েক পা এগিয়েছি, পেছন থেকে বলে উঠল, তুই ভয় পাবি না তো! নাকি আমি আসবো তোর সঙ্গে? এবারে আমার পা আটকে গেল বারান্দায়। কিছুতেই এগোতে পারছি না। রিমি হেঁটে পাশে এলো আমার। রিমিকে আমি একটুও বিশ্বাস কেন করতে পারছি না? আমাকে ও পেছন থেকে ডেকে আটকে দিল কেন?

—- তাও বললাম, না রে লাগবে না। আমি পারবো যেতে।
— বললো, আমার ঘরে প্রথমে চল। একটু বসে তারপর না হয় যাস। ভাবলাম, আইডিয়াটা মন্দ নয়। প্রথমত, ওর রুমটা অনেকটাই কাছে আর দ্বিতীয়ত, নীলাদ্রি আর ওর ছেলে আছে। চলে এলাম এখানে। ঢুকেই সাজানো গোছানো ছোট একটা রুম যেখানে বসার জায়গা রয়েছে। তারপর বেডরুম। ছেলে ও বাবা অঘোরে ঘুমাচ্ছে। ভয় অনেকটাই কমেছে আমার। আমাকে বসিয়ে রিমি টয়লেটে গেল। জল খেয়ে শো পিসগুলো দেখছিলাম আমি।
ফিরে এসে আমায় যা বললো, আমরা নিজেদের যতই সাহসী বলে পরিচয় দেই না কেন, গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো।


—” জানিস, তুই আমাকে যেরকম চেহারায় দেখেছিলি, আমিও তোকে ঠিক সেইভাবে দেখেছিলাম ঠাকুরদালানে। ” 

 রিমি তো জানে না আমি ওকে কিরকম দেখেছিলাম। তাহলে? 

আর আমি ওকে তখনো পর্যন্ত কিছুই বলিনি এই বিষয়ে।

 ও বললো, ” ঠাকুরদালানে হঠাৎ দেখি তোকে আমি খুঁজে পাচ্ছি না। শুধু দেখছি তোর খোলা চুল, কালো গভীর দুটো চকচকে চোখ, বরফ সাদা রোগা হাত আর চিবুক। তুই মুখ নাড়িয়ে কী যে বলে যাচ্ছিস আমি শেষ কয়েক মিনিট বুঝতে পারছিলাম না। কারণ আমি তোকে খুঁজেই চলেছি। একবার শুঁয়োপোকার ছুতোয় উঠে দাঁড়ালাম। তোকেও দাঁড় করালাম। তারপর আবারও বসলাম এই ভেবে যে এবারে আর অসুবিধে হবে না। কিন্তু সেই একই দৃশ্য। আমি ঠান্ডার দোহাই দিয়ে ওপরে চলে এলাম। তোকে কিছু বললাম না যদি ভয় পাস। ভেবেছিলাম এটা হেলুসিনেশন। জ্যোৎস্নার আলোয় এইভাবে এতক্ষণ বসে ছিলাম বলেই হয়তো এমনটা মনে হয়েছিল। ”

আমি বললাম, তাহলে আমিও যে তোকে ঠিক এভাবেই দেখেছিলাম, সেটা তুই কি করে বলতে পারলি? বা আমি ভয় পেয়েছিলাম তোকে দেখে সেটাই বা তুই জানলি কী করে? 

প্রশ্নের উত্তর ছিল না। তারপর রিমি ই আমাকে পৌঁছে দিল আমার ঘরে। পরদিন সকালে বাকিদের গল্পটা শোনালাম। দুজনে গালি খেলাম খুব। আমার বর বলল, তোমাদের সাহস হয় কিভাবে এত রাতে, একা, এই নির্জন জায়গায় বসে থাকতে! অনেক কিছুই ঘটতে পারতো।

কথাটা সত্যি। এই পাগলামোগুলোই আমাদের দুই বন্ধুর জুড়ে থাকার শক্ত সাঁকো বোধহয়। 






এখনো আমরা বিশ্বাস করি, সেদিনের ভয়টা জন্মেছিল আলোকে ঘিরে। নীচে জ্যোৎস্না, ওপরে, টিউবলাইট। কিন্তু একটা জায়গায় এসে আমরা দুজনেই আটকে যাচ্ছি, কেউ কাউকে তো শেয়ার করিনি কিভাবে আমরা একজন আরেকজনকে দেখেছিলাম। সেখানে একইভাবে একে অপরকে কীভাবে দেখলাম? রিমি কী করে বলতে পেরেছিল যে আমি ওকে দেখে ভয় পাচ্ছিলাম? ওকে আমি তো ঘুণাক্ষরেও টের পেতে দেইনি। শুধু এই রাত নয়, আগেও অনেক রাত আমরা কাটিয়েছি বাড়ির ছাদে, হোটেলের লনে। আমাদের কত গল্পের যে সাক্ষী চাঁদ, হাওয়া, পুকুরপাড়, আচারের দুপুর। কিন্তু এমন অভিজ্ঞতা বা আলোর খেলার ঘোর কখনতো অনুভব করিনি।





কাসার থালায় রাজবাড়ির দুপুরের খাওয়া দাওয়া দারুন জমেছিল। কিছুক্ষণ পরেই বেরিয়ে পড়ব। পাশের ঘরের শিশুটি অবিরাম কেঁদেই চলেছে। মা ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছে বারান্দার এপ্রান্ত ওপ্রান্ত ঘুরে ঘুমপাড়ানি গানে —
খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো
বর্গী এলো দেশে
বুলবুলি তে ধান খেয়েছে, খাজনা দেব কিসে …
ধীরে ধীরে শিশুটি ঘাড় ফেলে দিয়েছে মায়ের কাঁধে।
নীচে নেমে এলাম আমরা।
সদর দরজায় এসে আমি ফিরে তাকালাম ঠাকুরদালানের দিকে।
ইতিহাসের ইতি হয় না — পালটে যায় শুধু দৃশ্যপট।

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *