অভিশাপ

অভিশাপ
চন্দন আনোয়ার
সূর্যাস্তের মুহূর্তে দাঁতাল বিষন্নতায় ভরে ওঠে মন। কেন ভরে ওঠে জানি না। তাই, এ সময় বাইরে বের হই। মিশে যাই শহুরে ভিড়ে। হেঁটে বেড়াই এলোপাতাড়ি। অলকার মোড়ে পৌঁছা মাত্রই আচমকা এক কালো হ্যাংলা অপরিস্কার রুক্ষচুলো যুবতী সামনে দাঁড়াল প্রায় আমার বুকে বুক ঠেকিয়ে। ভাগ্যিস যুবতী দুগ্ধবতী নয়। স্তনযুগল ছোট্ট, চিপসানো। পাথর চাপা ঘাসের মতো টাইট ব্লাউজের নিচে থ্যাতলে আছে। আত্মরক্ষার্থে এক ধাপ পেছনে হঠতেই যুবতীও এগোয় এক ধাপ । ফের এক ধাপ পেছাই, যুবতী এবার দুই ধাপ এগোয়; আবার এক ধাপ পেছাতেই যুবতী তিন ধাপ এগিয়ে আমার বুকের উপরে প্রায় হামলে পরার জো। এবারই প্রথম লক্ষ করি, এবার ওর হাতে ক্ষুদ্রাকৃতির একটি কাঠের বাক্স, মুখ খোলা। ছোট্ট একটা সাপ মাতালের মতো মাথা দুলিয়ে আমাকে অভিবাদন জানাচ্ছে।
এ কি! তোমার হাতে সাপ! ছোবল দেবে যে! ভয়ে সিঁটকে গেলাম।
সর্পিল গতিতে দেহের প্রতিটি ভাঁজ কাঁপিয়ে যুবতী অট্টহাসি দিয়ে ওঠে, কাটবে না রে! কাটবে না! ও আমার প্রেমিক। ওকে দশটা টাকা দে।
ক্রোধ জন্ম নিল আমার ভেতরে। এ তো এক প্রকার ছিনতাই। পাশ কাটিয়ে ছুটে হাঁটছি। কিন্তু যুবতী নাছোড়। মিনিট দুই পিছু হাঁটল। ইনিয়েবিনিয়ে অনেক কথাই বলল। কিন্তু আমার কানে পৌঁছে নি কিছুই। শুধু শেষ কটি বাক্যই পৌঁছাল, দিলি না তো, ওকে দশটা টাকা দিলি না তো শালা হারামি! যা, তোকে আমি আভিশাপ দিলাম। দেখিস একদিন তোকে ঠিকই সাপে কাটবে!
এতো বছর হয়ে গেল। এখনও মনে হয়, দশটা টাকা দেওয়াই উচিত ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *