চুমকি চট্টোপাধ্যায়
ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে গেলে যে বিয়ে কেন করিনি তার কারণ জানাতে হয় সেটা আমার জানা ছিলনা। যাইহোক, অফিসের কোয়ার্টার যতদিন না পাচ্ছি, মাথা গোঁজার একটা জায়গা দরকার তাই সত্যিটাই বলছি। বানিয়ে মিথ্যে বললে পরে ভুলে যাব কী বলেছি, তখন আবার কেস ঘেঁটে যাবে।
দিয়া আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। একসঙ্গে পড়তাম। ওর দাদা দীপ্রকে আমার বেশ ভালো লাগত। ওদের বাড়ি প্রায়ই যেতাম এবং তার কারণ অবশ্যই দীপ্র। চিরকালই আত্মসম্মান বোধ বেশি থাকার দরুন দিয়াকেও বুঝতে দিইনি ব্যাপারটা। পরে বুঝেছি, আসল দোষ বয়েসের।
গ্র্যাজুয়েশনের পর দিয়ারা শিফট করে গেল জলপাইগুড়ি, ওদের আদি বাড়িতে।
দিয়ার বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছিল। ও তাই বার বার আমাকে অনুরোধ করছিল জলপাইগুড়ি যেতে। একসঙ্গে কিছুদিন ঘুরে নেওয়া যাবে।
গেলাম। আমাকে নিয়ে দিয়া আর দীপ্র ডুয়ার্স, দার্জিলিং, কালিম্পং ঘোরালো। অনেক আদর যত্ন করল ওরা, বিশেষ করে দীপ্র। ও যে আমার প্রতি দুর্বল, সে বিষয় নিশ্চিত হয়ে গেলাম এবং প্রজাপতির মতো উড়তে লাগলাম মনে মনে।
যেদিন চলে আসব তার আগের দিন সন্ধেবেলা মাসিমার সঙ্গে গল্প করব বলে ওঁর ঘরের দিকে যাচ্ছিলাম, দরজা ভেজানো দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। ভেতরে দীপ্র কিছু বলছে।
নিশ্চয়ই আমাকে পছন্দের কথা জানাচ্ছে মা’কে। হৃদপিন্ড পিং পং খেলতে শুরু করেছে। মন স্থির করলাম কোনোরকমে। শুনতে পেলাম দীপ্রর কিছু কথা।
– কবে যাবে বল দেখি আপদটা! কাজ নষ্ট করে, গাড়ির তেল পুড়িয়ে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে ঘোরো। আবার কত নখরা– রডোডেনড্রন চুলে গুঁজে ছবি তুলব, একটু এনে দাও না দীপ্রদা। ন্যাকা!
– দাদা, কী রে তুই? এভাবে কেন বলছিস, আমিই তো ইনভাইট করেছি ওকে এখানে আসার জন্য।
– ইনভাইট করলেই আসতে হয়? যদি আসেও, আমাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত তো, না কি? গেলে বাঁচি।
পরদিনই চলে এসেছি। আর কোনো যোগাযোগ রাখিনি দিয়ার সঙ্গে। যদিও ও নির্দোষ। এমন ধাক্কা খেয়েছিলাম যে আর কোনো ছেলেকে ভরসাযোগ্য মনে হয়নি। আর তাই বিয়ে করিনি।
আমি বিয়ে করিনি বলে আমার ভাইও বিয়ে করল না। আমরা যমজ। একই কম্পানিতে চাকরি করি। ও সাড়ে সাতটা নাগাদ ফিরবে,তখন দেখা করে আসবে আপনাদের সঙ্গে। ওর নাম সৌমিত। ভাই-বোনে থাকলে আপনাদের অসুবিধে নেই তো?
গ্রেট! তাহলে এই নিন অ্যাডভান্স। থ্যাঙ্ক ইউ!
রাত্রে বিছানায় জোনাকিকে জাপটে ধরে সৌমিত বলল, ‘ কী করে ম্যানেজ করলি বল তো? আজকাল তো ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশনের সার্টিফিকেটের জেরক্স জমা রাখে অনেক বাড়িওয়ালা। তুসি গ্রেট হো ইয়ার!’
– অত কথায় কাজ নেই, শুধু খেয়াল রাখবি তুই আমার ভাই। আমরা যমজ। তাহলেই হবে। একবার যদি খাড়ুসটা জানতে পারে আমরা লিভ ইনে আছি, লাথি মেরে বের করে দেবে।
জোনাকিকে আর কথা বলতে দেয় না সৌমিত। রাত তখন গভীর।
দিয়া আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। একসঙ্গে পড়তাম। ওর দাদা দীপ্রকে আমার বেশ ভালো লাগত। ওদের বাড়ি প্রায়ই যেতাম এবং তার কারণ অবশ্যই দীপ্র। চিরকালই আত্মসম্মান বোধ বেশি থাকার দরুন দিয়াকেও বুঝতে দিইনি ব্যাপারটা। পরে বুঝেছি, আসল দোষ বয়েসের।
গ্র্যাজুয়েশনের পর দিয়ারা শিফট করে গেল জলপাইগুড়ি, ওদের আদি বাড়িতে।
দিয়ার বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছিল। ও তাই বার বার আমাকে অনুরোধ করছিল জলপাইগুড়ি যেতে। একসঙ্গে কিছুদিন ঘুরে নেওয়া যাবে।
গেলাম। আমাকে নিয়ে দিয়া আর দীপ্র ডুয়ার্স, দার্জিলিং, কালিম্পং ঘোরালো। অনেক আদর যত্ন করল ওরা, বিশেষ করে দীপ্র। ও যে আমার প্রতি দুর্বল, সে বিষয় নিশ্চিত হয়ে গেলাম এবং প্রজাপতির মতো উড়তে লাগলাম মনে মনে।
যেদিন চলে আসব তার আগের দিন সন্ধেবেলা মাসিমার সঙ্গে গল্প করব বলে ওঁর ঘরের দিকে যাচ্ছিলাম, দরজা ভেজানো দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। ভেতরে দীপ্র কিছু বলছে।
নিশ্চয়ই আমাকে পছন্দের কথা জানাচ্ছে মা’কে। হৃদপিন্ড পিং পং খেলতে শুরু করেছে। মন স্থির করলাম কোনোরকমে। শুনতে পেলাম দীপ্রর কিছু কথা।
– কবে যাবে বল দেখি আপদটা! কাজ নষ্ট করে, গাড়ির তেল পুড়িয়ে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে ঘোরো। আবার কত নখরা– রডোডেনড্রন চুলে গুঁজে ছবি তুলব, একটু এনে দাও না দীপ্রদা। ন্যাকা!
– দাদা, কী রে তুই? এভাবে কেন বলছিস, আমিই তো ইনভাইট করেছি ওকে এখানে আসার জন্য।
– ইনভাইট করলেই আসতে হয়? যদি আসেও, আমাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত তো, না কি? গেলে বাঁচি।
পরদিনই চলে এসেছি। আর কোনো যোগাযোগ রাখিনি দিয়ার সঙ্গে। যদিও ও নির্দোষ। এমন ধাক্কা খেয়েছিলাম যে আর কোনো ছেলেকে ভরসাযোগ্য মনে হয়নি। আর তাই বিয়ে করিনি।
আমি বিয়ে করিনি বলে আমার ভাইও বিয়ে করল না। আমরা যমজ। একই কম্পানিতে চাকরি করি। ও সাড়ে সাতটা নাগাদ ফিরবে,তখন দেখা করে আসবে আপনাদের সঙ্গে। ওর নাম সৌমিত। ভাই-বোনে থাকলে আপনাদের অসুবিধে নেই তো?
গ্রেট! তাহলে এই নিন অ্যাডভান্স। থ্যাঙ্ক ইউ!
রাত্রে বিছানায় জোনাকিকে জাপটে ধরে সৌমিত বলল, ‘ কী করে ম্যানেজ করলি বল তো? আজকাল তো ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশনের সার্টিফিকেটের জেরক্স জমা রাখে অনেক বাড়িওয়ালা। তুসি গ্রেট হো ইয়ার!’
– অত কথায় কাজ নেই, শুধু খেয়াল রাখবি তুই আমার ভাই। আমরা যমজ। তাহলেই হবে। একবার যদি খাড়ুসটা জানতে পারে আমরা লিভ ইনে আছি, লাথি মেরে বের করে দেবে।
জোনাকিকে আর কথা বলতে দেয় না সৌমিত। রাত তখন গভীর।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন
খুব সুন্দর ভঙ্গিতে লেখা। তর তর করে পড়ে গেলাম
চুমকি ম্যাডাম, আপনার অণুগল্প “ধাপ্পা” পড়ে আমি মুগ্ধ বললে কম বলা হবে, আমি হতবাক! অভিনব প্লট, নিখুঁত উপস্থাপন এবং পরিশেষে নির্মল আনন্দ ছড়িয়ে দিয়েছেন পাঠকের মনে। ২০২০ সালে ‘লিভ ইন’ অ্যালাও না করার পালটা দাওয়াইতে কোনও দোষ আছে বলে আমি মনে করি না। আপনি এখনকার প্রজন্মের ভাষা আয়ত্ত করেছেন, যেমন ‘খাড়ুস’…অবাক হয়েছি এবং এটা করায় উপহার দিতে পেরেছেন সাবলীল গদ্য এবং যথাযথ সংলাপ। কুর্নিশ আপনাকে ম্যাডাম। তবু, আরও কিছু লেখার যেন ছিল! বক্স ভরে গেছে। শুভেচ্ছা এক আকাশ।
অপূর্ব, খুব অভিনব প্লট
বাঃ বাঃ এগিয়ে যাও গো ও আমার ছোট্টোমেয়েটা
ভীষণ ভালো গল্প।
Daarun laglo….onugolpo hishebe duto layer e darun akta golpo