রতনতনু ঘাটী
ক’দিন ধরে একটা লোক হরিদাসপুরের মোড়ে দাঁড়িয়ে
আমাকে একটা দম-দেওয়া খেলনা দেবে বলে ডাকছে।
তাকে বোঝাতে পারি না, বুড়ো বয়সে খেলনা নিয়ে আমি কী করব?
একটা দৃষ্টিহীন মেয়ে জানলার ধারে বসে আকাশের তারার মতো
আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে রবীন্দ্রনাথের গান গায়।
সুরটুর সেই কোন যুবক বয়সে একটা নদীর ধারে ফেলে এসেছি।
কুড়ি-বাইশ বছরের ছেলেটা একটা আধপোড়া মাইন নিয়ে
কেমন করে পিঠে বাঁধতে হয় সে আমাকে শেখাতে চায়।
আমি সেই কবে আগুনের ব্যবহার ভুলে গেছি।
আমি এখন কারও দিকে না তাকিয়ে রাস্তা হাঁটি,
এখন ঘরে ফেরার তাড়া আমার।
বুড়ি মা বিকেলের ওষুধ ঠিকমতো খেয়েছে কি না কে জানে!
বুড়ো বাবা দু’ চোখ ভরতি ছানি নিয়ে গঞ্জের হাটে গেছে
সন্ধে হলে ফিরবে কেমন করে?
আর ছোট ভাইটা রাতের অন্ধকার চিনে চিনে
দেশাত্মবোধক গান গাইতে গাইতে যখন বাড়ি ফেরে
আমি ওর গায়ে প্রতিদিন বারুদের গন্ধ পাই।
ভাইকে সাবধান করে দেব, রাত করে বাড়ি ফিরিস না!
আজ কোত্থাও আমার এক মুহূর্ত দাঁড়ানোর সময় নেই!
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন