poem-sarbosadhan-aachhari

সর্বসাধন আছাড়ি
বদরুজ্জামান আলমগীর


মায়ের অন্তিম ক্ষণ এসে হাজির; বহুদূর থেকে বিমানে, ট্রেনে, বাসে, গাড়িতে তারপর খানিকটা হেঁটে মায়ের পৈথানে এসে লুটিয়ে বসে শ্যামলী।

কোন দিশা পায় না- সে জানে না- কে আসলে মা-কে সুস্থ করে তুলতে পারে- এলোপ্যাথি কী হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক, না-কী আদিবাসী ধন্বন্তরি?

ছোট মেয়ে শ্যামলী বুঝতে পারে না- কোথায় দয়াবান ঈশ্বর থাকেন! তার চোখের সামনে জননীর চোখের আলো নিভিয়া আসিতে লাগে।

অকূল শ্যামলী সমস্ত ধর্ম মহাগ্রন্থ একের পর এক খুলে খুলে পড়ে: একবার বেদের মন্ত্র আওড়ায় তো আবৃত্তি করে কোরানের কালাম, আবার মেলে পড়ে বাইবেলের সুবচন বাণী, ফের কন্ঠে তোলে ত্রিপিটকের শ্লোক!

আমাদের সামনে সারাদুনিয়া বুঝি শ্যামলীর মা। আজ ক্রমান্বয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে থাকে।

আমরা নোঙরবিহীন দুলি, আলো ক্রমে নিভিয়া আসে; ফলে আছাড়ি ব্যাকুল পড়তে থাকি ত্রিপিটকের পদ, ক্ষণে আবার কোরানের আয়াত, কী উপনিষদের মন্ত্র, নিঙারি খুলে ধরি বাইবেলের কল্যাণী কথাদের পয়ার, কখনো বা আলবার্ট আইনস্টাইনের স্ফটিকস্বচ্ছ অন্বেষার গোড়ালি!

জানালার ওপারে খিড়কি, খিড়কির ওপাশে কৌটা, কৌটা পেরুলে সিন্দুক, সিন্দুক ছাড়ালে ডিব্বা, ডিব্বা ডিঙালে মোড়, মোড়ে দাঁড়ালে লম্বাগলার জিরাফ, জিরাফের দুই চোখে আগুন ও পানি- তার উপরে আলো আর অমা।

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *