শিশিরে সূর্যের মুখ, সূর্যেও শিশির; কে তুমি সূর্যের মুখ নিসঙ্গ নিশির? শিশির শোষণ করে সূর্যের শরীর, নিশির শিশির-স্নানে সূর্যও অধীর। একটি শিশিরে তুমি আমাকেও ধরো, দহনে গহনে দগ্ধ, পিপাসার্ত করো। ক্ষুধিত তৃষিত জানে পিপাসার ভাষা, কে তুমি কেবল খোঁজো তৃপ্তি সর্বনাশা?
ধর্ষকদের বাঁচাতে মিছিল ? আর পারছিনা নিতে কাশ্মীরে আমি ,ভূস্বর্গে আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি শীতে। মা ,তোর জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছি তিনমাস আমি একা মন্দিরে ওরা নিয়ে গেছে তোকে তিনমাস নেই দেখা। তোকে নিয়ে গেছে মন্দিরে ওরা তুষার ঝঞ্ঝা শীতে ভগবান তুমি আল্লা রসুল হেরে গেছো সব জিতে।
ঘরটাকে ওরা শেষবার দেখে নিল এখানে কখোনো আসবেনা আর ফিরে , একটা বাক্স ; দুটো রং পেনসিল অনেক তফাত জম্মু ও কাশ্মীরে… # ঘোড়াগুলো ঠিক বুঝতে পেরেছে সব যেতে চাইছেনা ; ছেড়ে জান পহেচান ওরা তো বোঝেনা জম্মু ও কাশ্মীর ঘোড়া তো জানেনা হিন্দু-মুসলমান । # লম্বা সফর কঠিন পাহাড়ি পথে হিমালয় ঢেলে দিয়েছে নিজের রূপ ; পোষ্য এবং বউ বাচ্চাকে নিয়ে মহল্লা ছেড়ে চলে গেছে ইউসুফ । # কত ভাঙাচোরা ,চালচুলো খড়কুটো, ছোট ঘর, কত বছরের সংসার অনেককিছুই জম্মুতে ফেলে রেখে দূরে চলে গেছে আসিফার পরিবার। # হিন্দুস্তান ছেড়ে চলে গেল নাকি? এদিকে জম্মু ওইদিকে কাশ্মীর , রাত শেষ হলে আলো ফুটে ওঠে ঘরে আলো তো বোঝেনা মসজিদ- মন্দির। # ইউসুফ আর ফিরবেনা জম্মুতে লম্বা সফর ; বহুদূর মঞ্জিল গ্রামের বাড়িতে ফেলে রেখে চলে গেলএকটা বাক্স দুটো রং পেনসিল।
পুরোনোদের চাও না তুমি কেবলমাত্র নতুন চাও? অন্ধকারে একটা নদী নেমে যদি না সাঁতরাও কেমন করে বুঝতে পারবে ঢেউ কীভাবে জন্ম পায় নতুন, আমার নতুন, দেখো পুরোনোরাও তোমায় চায় কিন্তু যদি চায়ও তাতে সত্যি বলতে তোমার কী শহর থেকে গ্রামে এলাম, নিশ্বাসে তাই বাতাস নিই তোমায় নেব ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে রাখব দশ বছর জানলা যদি বন্ধ করো, দরজা দিয়ে আসবে ঝড় ঝড়ের পরে বৃষ্টি এলে, আপত্তি নেই তোমার তো? মাঠের মধ্যে এসে দাঁড়াও মাঠ হয়ে যাক মর্মার্ত তোমার নতুন পোর্ট্রেটে আজ প্রাচীন কোনও রঙ লাগুক পুরোনো এক কলম তোমায় যাক দিয়ে যাক, নতুন সুখ
পাড়ার গলিতে সাকুল্যে তিনটি বাতি, কিছুদিন ধরে একটাই শুধু জ্বলত যে সারারাত; চাঁপা আঁধারের চাদরে গা মুড়ে বারান্দায়, হাতে ধরে রেখে তোমার দুহাত, দেখতাম; সানুদের সীমানা ঘেঁষা নারকেল গাছটা রোজ কি অদ্ভুত প্রেম প্রেম খেলায় মাতে বাতি জ্বলে উঠলেই, বাবড়ি ঝোলানো উদ্দাম তরুণের মত এলোমেলো পাতা ঝাঁকিয়ে অবিরাম কথা শুরু করে যত, লাজুক আলোর ইশারাতে বেহায়া বাতিটাও সাড়া দিত ওর ডাকে। মনে হয় আস্তে আস্তে ছুতেও চাইছিল তাকে? এইতো সেদিন; এক শীতের ভোরে তুমি হেসে ভীষণ জোরে ঠেলাঠেলি করে ঘুমটা ভাঙালে, টেনে ধরে নিয়ে কি কাণ্ডটাই না দেখালে। ছোঁয়ার নেশায় পুরো দেয়ালটাই ভেঙ্গে দিল যেদিন, হেলতে হেলতে দুর্বিনীত গাছটা শেষমেশ। মন বলছে, প্রেমিকা বাতিটা জ্বলেনি যে আজরাতে উচ্ছল প্রেমিক গাছ, ঘাড় গুঁজে মাঝরাতে তাই চেয়ে আছে শুধু অভিমানী, অনিমেষ। নায়লাদের বাসার গেট হবে নিশ্চয়, জং ধরা কব্জায় ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ তুলে বন্ধ হল এই, তাহাজ্জুদ সেরে জব্বার চাচা ফিরলেন মনে হয়? ওপরের ঘরেও কিছুক্ষণ বেশ, ভাবিদের সাড়াশব্দ নেই সিরিয়াল নিয়ে হইচই তবে আজকের মত শেষ! বড় রাস্তাটা এখন শুনশান নির্জন; আমাদের বাড়ীর পাশ ধরে, ক্লান্ত দু-পায়ে ধীরে প্যাডেল চেপে, জমির মিয়া ঘণ্টি বাজিয়ে চলে গেছে, সেও বহুক্ষণ। মোড়ের চা স্টলের ফুটফরমাশ খাটা ছেলেটাও তেল-চিটচিটে তোষক, বালিশের বান্ডিল খুলে বিলক্ষণ, রোজকার মতো ফুটপাতের কানা ঘেঁষে ভীতু কুকুরটাকে বুকে করে অবশেষে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে; ভাবচিন্তালেশ। তুমি? ঘুমাতে পারছনা জানি; ঘড়ির কাটা যে দুটো ছোয় ছোয়! তোমাকে ঘিরে গভীর রাত, চারপাশ শব্দহীন কি আশ্চর্য, এখানে একদমই রাত নয়; বরং কোলাহলে আলোময় অদ্ভুত ভর-দিন। আমি? কালো ফিতেয় লাইন করা এই গোলকধাঁধায় কখন থেকে হেটে চলেছি অবিশ্রাম, কেবলই এক ইতস্তত অনুসরণে বুকে আঁকড়ে সেই অমূল্য বাদামী খাম। হলকা বাতাস ঢেউ তুলে যায় বয়ে তোমারি মতন অক্লান্ত অপেক্ষায় থাকে দূরে ওই রানওয়ে। কনকোর্স ঘিরে ঝাঁঝাঁ রোঁদ ঝলসায় ধুঁকছে দাঁড়ানো ক্লান্ত বিমান নির্বাক বিষণ্ণতায়। কাচ ঘেরা ঘরে এই বুঝি ডাক এলো আমার দীর্ঘ যাত্রা শুরু হলো। নাকি হলো শেষ? সন্ন্যাস না বিরহ বেদনার এই দুর্বোধ্য গৃহপ্রবেশ? ভার্জিনিয়াঃ নভেম্বর ২৩, ২০১১
গভীর অন্ধকারে ইলেকট্রিক মহিমা, মনের অন্ধকারে বায়বীয় স্কোয়াড্রন; ইচ্ছে করে মুচড়ে দিই ছন্দোবদ্ধ ডানা- উড়ে যায় ভালোবাসা উড়ে যায় অন্ধকার, হিসেব নিকেশ করে কবিতাদি লেখা এ জীবনে আর হলো না। আজীবন যুদ্ধে কেটেছে আমার, যুদ্ধ নিজের সঙ্গে, বধ্যভূমি বারবার ডেকে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, অস্তিত্ব জানিয়ে বলেছে বাঁচার বাস্তব উপায় কেবল কল্পনা থেকে দূরে সরে গিয়ে ভোরের ট্রেনের হুইসিল শোনা। বাস্তবে কত কিছু আশ্চর্য ঘটে, বিবাগী ভ্রমর নামে কলতলাতে, শরীর স্ক্রাব করে মুলতানি মাটি মেখে যৌবন ধরে রাখে তারা, জীবনের প্রকৃত অর্থ যারা নিজের মতো বুঝেছে।
১- অভিমানের মেঘপুঞ্জে অসন্তোষের ছাপ। দানায় দানায় ঝরায় শুধু জলের মনস্তাপ। মুখোশগুলো ভিজছে দেখো; ভেতর ভেজায় কে? মরচে পড়া হৃদয়গুলো আগেই জেনেছে ; এই শহরের বিবেকগুলো উইপোকাতে খায় জোছনা শুধু কয়েক ফোঁটা প্রশ্ন রেখে যায়। ২- তপ্ত মাটিতে মুখোশের কত রঙ গলিত শহর পোড়ায় কত না ভূঁই। মুখোশ মানুষ দুঃখ দেবার আগে নিজেই নিজের বেদনার বীজ রুই। একদিন দেখো আমিও তোমার মত। হয়ে যাবো ঠিক মুখোশের কারবারি হিসেব তখন মিলবে না কিছুতেই কে কাকে কখন কিভাবে গেলাম ছাড়ি।
ঝড় আসছে, ঝড়…কালবৈশাখী বা সাইক্লোন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে জঙ্গল মহল থেকে ঘাস বাঁধানো হাইরাইজের পাশের ঝুপড়ি থেকে দেশের সত্তর কোটি মানুষের পেটের খিদে থেকে তুমি বলবে ঝড়ের কথা বলছো কেন? বলো তুমি জন্মভূমির সাজের কথা বলো তুমি তিরিশ কোটি আশার কথা বলো তুমি সোনার বাংলা, নতুন ম্যারিয়ট বলো কত সবুজ আলো রঙ বেরঙের গাড়ির স্রোতের কথা বলতে তো চাই অনেক কিছু কে যেন আঁটে স্তব্ধ তালা ঠোঁটের ওপর আমার চোখের তারায় নাচে ঘূর্ণি ঝড় আমিতো দেখি হাজার হাজার সন্তোষী দশ কোটি রেশন ছাড়া সাভিত্রী বলব আমি, আমার ভুখা মায়ের কথা চিতায় শোয়া মেয়ের কথা অন্নভরা জন্মভূমির অন্নহীন ঘরের কথা আমার জন্মদেশে ঝড় আসছে, ঝড়….
বয়ঃসন্ধির নাম পাপাই আর পাপাই আমার ছেলের বন্ধু তার অনুগত , ভ্যাবাচ্যাকা , বিপর্যস্ত চাহনির নাম বয়ঃসন্ধি গলির ক্রিকেট এর নাম পাড়া সকাল , বিকেল পাড়ার বন্ধুদের ডাকের নাম ছেলেবেলা.. ধুলোমাখা রক্তাক্ত পায়ে ঘরে ফেরার পথে ,ঘাড় ঘুরিয়ে “আবার কাল আসছিস তো ? “ বলার নাম প্রতিশ্রুতি মুহুর্মুহু বাসা বদলের ফলে বন্ধু হারানোর নাম বিচ্ছেদ হঠাৎ রাস্তার মোড়ে পুরোনো পাড়ার খেলার সাথীকে আলিঙ্গনের নাম জীবন আর তাই আমার বাবাও ব্যারাকপুর ছাড়তে পারেননি সারাটা জীবন মৃত্যুর আগেই নিজস্ব মৃত্যুতে তালি বাজানো দুরূহ আর এই দুরূহকে আলিঙ্গন করার নাম বাজি ll