prabandho-aporichoyer-rabindranath

অপরিচয়ের রবীন্দ্রনাথ
কুমার চক্রবর্তী


‘সন্ধ্যা’ নামের একটি কবিতায় রবীন্দ্রনাথ শেষ পংক্তিতে বলেছেন: ‘… তারে চিনি তবু নাহি চিনি।’ এর আগে সূত্র হিসেবে লিখেছেন যে, ‘তার দূর পরিচয়/ শেষ নাহি হয়।’ আর এসবেরই কারণ হলো, ‘অন্তরে সলজ্জ মধু /অদৃশ্য ফুলের কুঞ্জে রেখেছে নিভৃতে’। কবিতাটি যেন রূপকমাহাত্ম্যে এক সান্দ্র রবীন্দ্রনাথকেই জারি করে রেখেছে আমাদের কাছে যিনি অধরা-অপরিচিত-অপরিজ্ঞেয়, আর ‘নবীনা শ্যামলা’।

পৃথিবীর আর কোনও প্রাকৃতিক প্রতিভাকে, তাঁর একক এবং সবিস্মিত বিশালত্ব আর উন্মথিত সৃষ্টিধর্মিতা সত্ত্বেও, নতুন পরিচয়ের যাথার্থ্যে রবীন্দ্রনাথের মতো এমনটা মোকাবিলা দিতে হয়েছে, জানা নেই। কিন্তু আমরা কখনও ভাবিনি যে পরিচয় ব্যাপারটা কী বা কেমন। সিন্ধু বা নদী বা ঝরনা বা পাহাড় বা হলুদ পপিফুলের উদ্ভাসের কি নতুন পরিচয়ের প্রয়োজন হয়? এদের উপস্থিতিই অনিবার্যতা আর যা অনিবার্য তার নবভাবে পরিচয়ের প্রয়োজন কোথায়! রবীন্দ্রনাথ আমাদের এমনই এক অনিবার্যতা যাকে মোকাবিলার পরিবর্তে মোলাকাতে চিনে নেবার চেষ্টাই হতে পারে আমাদের পরিচয়ের সমাধানসূত্র। আর এটা হতে পারে পরিচয়ের ব্যাপ্তি ও গভীরতাকে বৃদ্ধির মাধ্যমে, আর অপরিচয়ের আকস্মিকতাকে ধরার মাধ্যমে। তাঁকে কতটা চিনে নেওয়া যায় অসময়ে-সময়ে, বা তাঁর উপস্থিতি কতটা ধরা-অধরার ছায়াসম্পাতি, এসবই আমাদের দায়। রবীন্দ্রনাথ এমনই এক প্রতিসন্ধান যাকে নিজ নিজ মতো করে যে-কেউ যুঝে নিতে পারে, কিংবা গ্রহণ নাও করতে পারে। কিন্তু যতটুকু গ্রহণীয় ততটুকু কি পরিচয়ের ভার নাকি আঁখিপাত? রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে পরিচয়ের ঐশ্বর্য অপেক্ষা অপরিচয়ের উজ্জ্বল অনিশ্চয়তাই তো অধিক। এর কারণ তাঁর রচনার বিপুলতা নয় বরং তাঁর অন্তরের অন্তরালবর্তী ব্যাপকত্ব। নিজ সত্তাকে বোঝানোর জন্য যে গূঢ়ার্থবোধক ‘গুহাহিত’ শব্দটি তিনি ব্যবহার করেছেন, যা বোঝায় লুক্কায়িত, গোপন-গভীর অস্তিত্ব, তার অলব্ধ আর্তিই এই অপরিচয়ের অস্বস্তির কারণ। গহনকে পাবার জন্য যে অন্তরিন্দ্রিয়ের কথা তিনি বলেছেন, সেই ইন্দ্রিয়কে জাগানোর কথা বলেছেন, বাইরের জিনিসে সন্তুষ্ট না-থেকে সম্পূর্ণকে পাবার যে-কথা তিনি বলেছেন, তা-ও অপরিচিত রয়ে গেল আমাদের কাছে আকাশবিহারের অভাবে। ফলে রবীন্দ্রনাথ এখন পরিচয়ের প্রচলিত চর্চার ঘেরাটোপে আবদ্ধ, এবং সীমিতও। কিন্তু এই ঘের অতিক্রম করে তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচয়ে পরিচিত হওয়া কি জরুরি নয়!




আমরা যখন গান শুনি বা কিছু পড়ি বা লিখি বা দেখি চিত্র ও শিল্পরূপ তখন বস্তুত ভ্রমণ করতে থাকি, হই মনোভ্রামণিক। মুহূর্ত তখন মহাকাল হয়ে ওঠে, প্রতিটি অনুভূতি তখন গতি পায়, এগিয়ে চলে নিজ খেয়ালে। শিল্প বা চিন্তার মাঝে থাকা মানে এক ভ্রমণে থাকা, কেননা শিল্প আগাগোড়াই মনকে ভ্রমণে রাখে। শরীর ভ্রমণ করে না, মন করে, শরীর তাকে অনুসরণ করে সমর্থন দেয় কখনও-কখনও; আবার শরীরের সমর্থন ছাড়াও মন ভ্রমণ করে, শরীর বিগড়ে গেলে কখনও বা মন আরও দ্রুতগামী হয়ে ওঠে। মুহূর্তের মাঝে অসীমের আনাগোনা, সময়ের পল ধরে মনের অসম্ভব সঞ্চরণকে টের পেতে থাকা তাই কবিসত্তার নিয়তি। বেরিয়ে আসে বোধিত দৃশ্য, স্ফুট হয় ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা। বাঙালির পরা-অপরার অপরিচিত পথিকসত্তার প্রথম উন্মেষক রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু এই পথিকসত্তার সঙ্গে আমাদের পরিচয় কতটুকু, এর জাগরণই বা কোথায়?

সৃষ্টিকে ভাব দিয়ে, যদি দেখতে চায় নিজেকে, তবে নিজ প্রতিরূপ খুঁজে পাবে তাঁর কবিতায়। সারা জীবন তিনি যেন এক নাছোড় স্মৃতিই নির্মাণ করেছেন যে-স্মৃতি সাহিত্য-শিল্প-সংগীতে প্রতিধ্বনিত, আপন খেয়ালে। রবীন্দ্রনাথ বাঙালির সেই যৌথ স্মৃতির আধার। রবীন্দ্রনাথের এই সহজতার আড়াল, এই অপরিজ্ঞাত উপস্থিতিও আমাদের কাছে অপরিচয়ের ঠেক।

১৯২৫ সালে এক চিঠিতে তিনি নিজের সম্পর্কে এমনটা ভাবছেন, ‘জন্মকাল থেকে আমাকে একখানা নির্জন নিঃসঙ্গতার ভেলার মধ্যে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তীরে দেখতে পাচ্ছি লোকালয়ের আলো, জনতার কোলাহল; ক্ষণে ক্ষণে ঘাটেও নামতে হয়েছে, কিন্তু কোনওখানে জমিয়ে বসতে পারিনি। বন্ধুরা ভাবে তাদের এড়িয়ে গেলুম; শত্রুরা ভাবে, অহংকারেই দূরে দূরে থাকি। যে-ভাগ্যদেবতা বরাবর আমাকে সরিয়ে সরিয়ে নিয়ে গেল, পাল গোটাতে সময় দিলে না, রশি যতবার ডাঙার খোঁটায় বেঁধেছি টান মেরে ছিঁড়ে দিয়েছে, সে কোনো কৈফিয়ত দিলে না।’ স্পষ্ট যে আজীবন নিজেকে খাপছাড়া মনে করে গেছেন তিনি। বলা যায়, এই অমিল বা দূরত্ব তাঁর আপন মুদ্রাদোষের ফল। এমনই এক কাব্যিক উচ্চারণ পরে আমরা পাব জীবনানন্দ দাশের লেখায়, যেখানে তিনি নিজের মুদ্রাদোষে নিজের আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। রবীন্দ্রনাথের এমন ভাবনা বা লেখকদের এমন ভাবনা শিল্পসৃষ্টির জন্য শিল্পীর কোনও দূরস্থিত আস্তিত্বিক প্রয়োজনীয়তা কি না তা ভেবে দেখার যদিও বিষয়, তবু এটা ঠিক যে এই খাপ-না-খাওয়া চারিত্র্য সমাজসংসারের সাথে তাঁদের অব্যবস্থাপনাকেই মনে করিয়ে দেয়। ব্যাপক-বিশাল কর্মযজ্ঞে রবীন্দ্রনাথের অংশগ্রহণ সত্ত্বেও এটা পরম সত্য যে তিনি এসবের সাথে কিছু মাত্রায় হলেও অনভিযোজিত ছিলেন। অন্তত তাঁর জীবন ও সাহিত্য তা-ই বলে। কিন্তু এটা যে একজনের জীবনে কতটা দূরগামী এবং কর্মময় হয়ে উঠতে পারে তার প্রমাণ রবীন্দ্রনাথ। বাঙালির এই সৃষ্টিশীল বহিঃস্থিততার প্রথম রূপকার রবীন্দ্রনাথ।

দেহের ভেতরে প্রাণের সমুদ্রের কথা তিনি বলেছেন যা সিন্ধু-উচ্ছ্বাসে অন্তহীন, তিনি তাকে মুক্ত এবং বাঁধহীন করতে চাই লেন। নিজের ভেতর বেজে ওঠা ‘সুখের মতো ব্যথা’র কথা তিনি বললেন, আর এসবই তাঁর ধ্যানরেখার সাথে সমান্তরাল যা আমাদের বলে, তাঁর ভাষায়, তিনটি জন্মভূমির কথা, যা একটি অন্যটির দিকে অনায়াসে ঢুকে যায় আবার বেরিয়েও আসে আয়াস ছাড়া। তিনি মানুষের তিনটি জন্মভূমির কথা বলেছিলেন: পৃথিবী, স্মৃতিলোক আর আত্মিকলোক। যারা এই তিন লোকে গতায়াত করেন, তাঁরাই জীবনপথিক। এই ত্রিভুবনের প্রথম বাঙালি সন্ধানী রবীন্দ্রনাথ। অস্তিত্বের এই বহুগুণিত বাসনার প্রকাশ যে আত্মদর্শনের কথা বলে, তা আমাদের নিকট অপ্রবেশ্য। রবীন্দ্রনাথ যে-বিশাল অজানাকে অন্বেষণ করে গেছেন সারাজীবন, তাও আমাদের কাছে অজানা। আজও আমরা বুঝিনি, বোঝার চেষ্টাও করিনি। কী সেই অজানা যাকে ‘মনের মধ্যে আহরণ করিয়া’ আনার কথা তিনি বলেছিলেন? এই অজানা কোনও ঈশ্বর নয়, এই বিশ্বজগৎ। নিকট আর দূরকে বিজ্ঞানের বাইরে গিয়ে বোঝার কথা তিনি বলেছিলেন। আকাশের তারা দূর থেকে যাদের মনে হয় স্থির আর কাছে গেলে গতিশীল… এই দুই অবস্থাকেই সমানভাবে সত্য বলেছেন তিনি। এই যে বিজ্ঞানের সত্যকে অতিক্রম করে নিজ সত্যে উপনীত হওয়া, রবীন্দ্রনাথের এই দর্শনও অপরিচিত রয়ে গেল আমাদের কাছে। এই যে ঠুলিপরা চোখের দৃষ্টিবিভ্রমকে দূর করে চক্ষুরুন্মীলন ঘটানো, এই অবাক সৌন্দর্যও অবিদ্যমান রয়ে গেল আমাদের কাছে। রক্তকরবীর অধ্যাপক যখন নন্দিনীকে বলে, যে, ‘মানুষের অনেকখানি বাদ গিয়ে পদ্ধতিটুকু জেগে আছে’, তখন এই চক্ষুরুন্মীলনকে আমরা বুঝতে শিখিনি।




রবীন্দ্রনাথের ভেতর পরিচয়ের এই বহিরাগত আলাপ, অন্তর্বৃতের তান, মনশ্চাঞ্চল্যের কাঁপন, পালিয়ে বেড়াবার গৎ সমগ্র জীবন ধরেই স্পন্দিত ছিল। কখনও বিলম্বিত কখনও-বা মধ্যলয়ে, এবং এসবের ছিল এক সাবলীল অভিব্যঞ্জনা ও অভিসন্ধান। সারাজীবন না-মেলার একটি উৎকণ্ঠা এবং অনুভাবকে নিয়ে তিনি চলেছিলেন। ভেলায় করে তীরে এসে ভেলা ঘুরিয়ে দেওয়া বা অর্থময়তাকে এক নিমেষে অর্থহীন করে দেওয়ার নান্দনিক সৃষ্টিশীলতায় তিনি আজও একক। এ হলো নিস্তব্ধ ও নিশ্চল দ্বন্দ্ব, যা রবীন্দ্রনাথের হাতে পরিণত হয়েছে পারিজাতে বা নাগকেশরের স্মিতরূপে। পালাতে চেয়েছেন তিনি কিন্তু পারেননি, ফিরে আসতে হয়েছে প্রস্থানপূর্ব কেন্দ্রে; মনকেই তাই পলায়নপর করেছেন যেন পথিক হয়ে বিশ্বকে পেতে পারেন অবলীলায়, যেন পথিকের উদাসীনতায় গ্রহণ করতে পারেন জীবন ও পৃথিবীকে অথবা তাঁর তিন জন্মভূমিকে। কবিতায় তিনি এই বোধকে ব্যক্ত করেছেন, বলেছেন, ‘ইচ্ছা করে, আপনার করি/ যেখানে যা-কিছু আছে।’ অস্তি-নাস্তি, আলো-আঁধারির দোলনে অবিরত আন্দোলিত ছিলেন তিনি, ছিন্নপত্রে তাই তিনি নির্দ্বিধায় বলেন, ‘আমি একটি সজীব পিয়ানো যন্ত্রের মতো: ভিতরে অন্ধকারের মধ্যে অনেকগুলো তার এবং কলবল আছে, কখন যে এসে জানায় কিছুই জানি নে, কেন বাজে তাও সম্পূর্ণ বোঝা শক্ত। কেবল কী বাজে সেইটেই জানি। সুখ বাজে কি ব্যথা বাজে, কড়ি বাজে কি কোমল বাজে, তালে বাজে কি বেতালে বাজে এইটুকুই বুঝতে পারি।’ কখনও পালাতে চেয়েছেন নিজেরই ভেতরে, ভেতরের আত্মঅরণ্যের গভীরে, তার অন্তর্গত আলো-অন্ধকারে:

হৃদয় নামেতে এক বিশাল অরণ্য আছে

দিশে দিশে নাহিক কিনারা,

তারি মাঝে হনু আত্মহারা।

সে-বন আঁধারে ঢাকা, গাছের জটিল শাখা

সহস্র স্নেহের বাহু দিয়ে

আঁধার পালিছে বুকে নিয়ে।

এ হচ্ছে এক অকারণ অভিঘাত, এক করুণাঘন পরিক্রমণ, যা সমগ্র রবীন্দ্রসাহিত্যে ও তাঁর জীবনে, স্নিগ্ধ উজানভাটার মতো বিরাজমান থাকে। অকারণ ভাবনার স্বেচ্ছাচারিতা, অকারণে ঘটে যাওয়া ব্যাপার তাই আজীবন তাঁকে তাড়িত করেছে। এমনকি যখন তিনি গৃহকাতর, তখনও। ছেলেমানুষের কাগজের নৌকার মতো এক একটি দিন ভাসিয়ে দেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন, কারণ, দিনগুলো ছিল অলসগমনে যেন বা মৌনমুখর। কখনও হাহাকার করেছেন জীবনের কিছু হলো না বলে। এই হাহাকার বিলাপের মতো শোনায় যখন তিনি বলেন, ‘এখনো বুকের মাঝে দিন রয়েছে দারুণ শূন্য/ সে শূন্য কি এ জনমে পূরিবে না আর?’ এই যে ‘নেগেটিভিটি বায়াস’, এবং তা যে সৃষ্টিশীল সত্তার লীলা, রবীন্দ্রনাথ শুরুতেই তা বুঝেছিলেন, কিন্তু আমরা তাঁর এই প্রান্ত ধরে আরম্ভের বোঝাপড়াকে ধরতে পারিনি। উপরন্তু ভুলভাবে একে বলেছি তাঁর রোমান্টিক মনের বাহুল্য উৎসার।




প্রতিভার যতটুকু পরিচয়ের দীপ্তি তার থেকে অপরিচয়ের আলো-আঁধারি অনেক বেশি সম্মোহক। নিরন্তর তা মানুষকে উপহার দিয়ে যায় বিস্ময়, আকস্মিকতা, অপ্রত্যাশিততা, আর হাহা ও আহা-র যুগল বন্দিশ। রবীন্দ্রনাথ এই পুরিয়া ধানেশ্রীর অপরিচয়কে বারে বারে গেয়ে গেছেন গোপনে, তাঁর অসম্ভব আলাপ, তান, বোলতান আর সরগমের মুখরতায়। এর সঙ্গে অপরিচিত থাকা খোদ নিজেকেই অপরিচিত করে রাখা। ফলে রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে শুধু ঝাঁকিদর্শনেই আমাদের বিবেচনা ফুরায় এখন। এই ‘বার্ডস আই ভিউ’ আমাদের অপরিচয়ের অন্ধত্বকে আস্তরিত করে রেখেছে। বিষয়টা শুধু অপূর্ণতার অবস্থাই নয়, বিশাল অপ্রাপ্তিরও। পরিচয়ের রবীন্দ্রনাথ প্রত্যক্ষের, কিন্তু অপরিচয়ের রবীন্দ্রনাথ প্রচ্ছন্নের এবং তা দূরস্পর্শী। অপরিচয়ের, অপরিজ্ঞাতের একজন হয়ে যে রইলেন তিনি অন্তত এই ক্ষণমুহূর্তের অবকাশে আমাদের কাছে, তা তাঁর স্বরূপ নয়। কিন্তু এটাই সত্য যে, অপরিচয়ের রবীন্দ্রনাথ, না-পাওয়ার রবীন্দ্রনাথই রবীন্দ্রনাথ। গহন, গভীর, বিশেষ, অপরিজ্ঞেয়, আর অননুমেয়। তা শাখাপল্লবের মতো মুখর নয়, শিকড়ের মতোই স্তব্ধ, এবং গভীরতাগামী। ‘যার দূর পরিচয়, শেষ নাহি হয়।’

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *