সব্যসাচী সরকার
যেখানে বাঘের হয়, সেখানেই সন্ধে হয়!
ভ্রমরের পাঁচটা মিসড কল দেখে সেটাই প্রথমে মনে পড়ল নির্ঝরের। সে বুঝল, পাঁচে আটকে থাকার মেয়ে ভ্রমর নয়। করেই যাবে ফোন। বিশেষ করে এই জটিল সময়ে তো বটেই।
কখন মোবাইল অফ করতে হবে আর কখন খুলতে হবে, তা নিয়ে পরিষ্কার একটা ধারণা আছে নির্ঝরের। কিন্তু কর্পোরেট অফিসের বড় কর্তা হলে সেই ধারণা সব সময় মেনে চলা কঠিন। এই যেমন আজ। মুম্বইয়ের হেড অফিস থেকে ফোন আসতে পারে, যখন-তখন জুম কলে ডাক পড়তে পারে। পিএ নেহাকে বলা আছে, আজ আর সে ফিরবে না। আর্জেন্ট কিছু থাকলে টেক্সট করতে। অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শুভ্রাংশু চ্যাটার্জি করিৎকর্মা ছেলে। তাকেও বলা আছে, কী কী আজকের মতো ম্যানেজ করে নিতে হবে। মোটামুটি আটঘাঁট বেঁধেই আজ এই চেনা ফাইভ স্টার হোটেলটায় চেক ইন করেছিল সে। ঠিক সময়ে চলে এসেছিল নীহারিকা।
নীচের মেক্সিকান রেস্তোঁরায় লাঞ্চটা সেরে ওরা রুমে উঠে এসেছিল। এই সময়টা নিজেকে পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়ার, উন্মুক্ত করার। ১৭ তলার এই রুমটা থেকে বাইপাসের দিকে তাকালে শহরটাকে একেবারে অন্যরকম লাগে। অফ হোয়াইট রঙের পর্দা সরিয়ে নীহারিকার পাশে দাঁড়িয়ে অনেক উপর থেকে শহরটার ছুটে চলা দেখছিল সে। অসমাপ্ত মেট্রোর লাইন, চওড়া রাস্তা দিয়ে ছুটে যাওয়া গাড়িগুলোকে দেশলাই বাক্সের মতো লাগছে। এই সময় নীহারিকার কোমরে দুটো হাত রেখে তাকে নিজের দিকে টেনে আনে নির্ঝর। নীহারিকা চোখ তুলে তার দিকে ঠোঁটটা তুলে ধরে। এই সেই দৃষ্টি, যা মুহূর্তে নির্ঝর দাশগুপ্তকে হারিয়ে দেয়, পারপার্শিক বিশ্বকে সম্পূর্ণ ভুলে যায় সে। এ হল মেয়েদের চোখের জাদু, কোন পুরুষের সাধ্য তা উপেক্ষা করে!
উপেক্ষা করার ইচ্ছেও থাকে না নির্ঝরের। কেনই বা করবে? ভ্রমরের সঙ্গে তার সম্পর্কটা এখন ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া চাউমিনের মতো ন্যাতানো, শুকিয়ে যাওয়া গাছের মতো। যে গাছের গোড়ায় দীর্ঘদিন কেউ জল দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। বিয়ের পনেরো বছর পরে সম্পর্কটা গত এক মাসে হঠাৎ কেন এই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, তার জন্য নির্ঝরের নানারকম থিয়োরি আছে। আবার ভ্রমরেরও আছে। ছুটি নিয়ে বা মুখোমুখি বসে চেষ্টা করেছে দু’জনে, যদি কিছু করা যায়। কিন্তু অবিশ্বাস যেখানে একবার মনের মধ্যে ঢুকে পড়ে, সেখানে শত সমঝোতাতেও সম্পর্কের এক্সপায়ারি ডেট এড়ানো যায় না। তার পরেও কি তারা এক ছাদের তলায় নেই? আছে, কিন্তু সেই থাকাটা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো। সারাক্ষণই বাড়ির মধ্যে চলেছে একটা অলিখিত পরোক্ষ যুদ্ধং দেহি মনোভাব। এটুকু হলে ঠিক ছিল। কিন্তু তার সঙ্গে যদি অহেতুক গোয়েন্দাগিরি যোগ হয়, ব্যাপারটা বিরক্তির শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। ঠিক সেটাই করছে ভ্রমর। ওর গাড়ির সিটে নীহারিকার রুমাল পড়ে থাকাটা ওর চোখে পড়ার পর থেকেই করছে।
আটচল্লিশ পেরিয়ে সামনের মাসে উনপঞ্চাশে পড়বে নির্ঝর, একমাত্র ছেলে সিদ্ধির বেঙ্গালুরুর কলেজে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অ্যাডমিশন হয়ে গিয়েছে, অফিসে বড় দায়িত্বে, দক্ষিণ কলকাতায় বড় কমপ্লেক্সে দু’হাজার স্কোয়ার ফিটের ফ্ল্যাট, শোফার ড্রিভন সেডান গাড়ি, কলকাতার দুটো নামী ক্লাবে মেম্বারশিপ, আর কী দরকার হয় জীবনে? মাঝে মাঝে বন্ধুবান্ধব ঢেকে নিজস্ব সেলার থেকে সিঙ্গল মল্টের বোতল খোলা, আইপিএলের ম্যাচ চুটিয়ে দেখা কিংবা খোলা গলায় দু পেগ খেয়ে একটু রবীন্দ্রসঙ্গীত, বন্ধুদের স্ত্রীদের সঙ্গে হাল্কা ফ্লার্টিং, এরকম একটা খাতে বহমান স্রোতের মতো বয়ে যাচ্ছিল জীবন।
নীহারিকার মতো একটা প্রায় হাঁটুর বয়সী মেয়ের সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে পড়ার কথা নয়। কিন্তু যা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত, তা প্রায়ই জীবনে ঘটে যায়। নয়তো ক্লাবের একটা সান্ধ্য পার্টিতে স্রেফ ঘোষিকা হিসেবে আসা নীহারিকা রায় তার সঙ্গে যেচে আলাপ করবে কেন? আর সে-ই বা অচেনা একটা মেয়েকে কেন দিয়ে দেবে তার ফোন নম্বর?
‘ক্লাবের কালচারাল সেক্রেটারি রিমাদি আলাপ করিয়ে দিয়েছিল, ‘নির্ঝর, এই মেয়েটি নীহারিকা। খুবই গুণী মেয়ে। কিন্তু এমএসসি করেও চাকরি পাচ্ছে না। আমার খুব পরিচিত। তুমি একটু দেখবে?’
নির্ঝর তাকাতেই লাল পাড়, সাদা শাড়ি পরা মেয়েটি হাত জোড় করে বলেছিল, ‘নমস্কার স্যার। আমি নীহারিকা!’
বড় জোর বছর তিরিশ বয়স, রঙটা শ্যামলার দিকেই হবে, কিন্তু মুখশ্রী ভারী চমৎকার। ঠিক যেমন কন্ঠস্বরেও আছে আশ্চর্য মাদকতা। হাস্কি! একেবারে নির্মেদ চেহারা, কোমরের বিপজ্জনক উপত্যকা চোখে পড়বেই। টানটান করে শাড়ি পরার ধরণ আর সামান্য বেরিয়ে থাকা বক্ষ বিভাজিকা ইঙ্গিত দেয়, এই মেয়ের মধ্যে চোরাবালি আছে।
‘ইউ হ্যাভ এ নাইস ভয়েস। রেডিও জকি হিসেবে ট্রাই করেছেন কখনও?’
রিমাদি পাশ থেকে বলে, ‘আরে নির্ঝর, ওকে কেউ আপনি বলে নাকি? এই সেদিনের মেয়ে! তুমি বলো!’
নীহারিকা মাথা নাড়ে, ‘প্লিজ তুমি বলুন।’
নির্ঝর স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করে। ‘ওকে, জিগ্যেস করছিলাম, জকি হিসেবে ট্রাই করোনি কখনও? নাকি আগ্রহ নেই।’
‘কেমিস্ট্রিতে এমএসসি করেছিলাম। ভেবেছিলাম হায়ার স্টাডিজে যাব। কিন্তু নানা কারণে হচ্ছে না। চাকরির চেষ্টা করছি। কিছু না পেলে না হয় রেডিওতেই ভাবতে হবে!’
‘কতদিন হল এমএসসি করেছ?’
‘বছর দুই। স্যর, আপনার নম্বরটা পেতে পারি?’
‘ওকে, টাইপ ইয়োর নম্বর ইন মাই ফোন’ বলে ফোনটা এগিয়ে দেয় নির্ঝর। লম্বা আঙুলগুলো দ্রুত টাইপ করে নম্বর। তার পরে নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসে নীহারিকা, ‘আপনি একটা মিসড কল দিলেই…’
নামটা দেখে নির্ঝর একটা কল বোতামে আঙুল ছোঁয়ায়। বেজে ওঠে নীহারিকার ফোন। সকৃতজ্ঞ গলায় তাকায়, ‘থ্যাঙ্ক ইউ স্যর।’
ক্লাবে এরকম কত লোকের সঙ্গেই দেখা হয়। মাঝে ভুলেই গিয়েছিল নির্ঝর। হঠাৎ একদিন হোয়াটসঅ্যাপে ভেসে ওঠে একটা নোটিফিকেশন। নীহারিকা রায়। ‘ডু ইউ রিমেম্বার মি স্যর? ইট ওয়াজ নাইস মিটিং ইউ।’
ডিপিটায় চোখ রাখে নির্ঝর। মেয়েটার মধ্যে একটা ব্যাপার আছে। নীল স্কার্টে ঝলমল করছে। সে একটা স্মাইলির ইমোজি দেয়। তার পরে লেখে, ‘হাউ আর ইউ?’
সেই শুরু টেক্সটিং। সেখান থেকে একদিন ক্লাবের কফি শপ। পার্ক স্ট্রিটে একটা ডিনার। সেখান থেকে একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মতো দ্রুত এগিয়েছে সব, নীহারিকার সঙ্গে খেলাটা তার জমে গিয়েছে। বহু বছর পরে যেন রক্তের স্বাদ পেয়েছে অভুক্ত বাঘ। তা-ই সপ্তাহে এই একটা দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকে নির্ঝর। চাতক পাখির মতো। এখন সে জেনে গিয়েছে নীহারিকার সঙ্গে খেলার নিয়ম। কখন কাঁধে মুখ দিতে হবে, কখন কোথায় হাত রাখতে হবে, কখন তার ট্রিম করা দাড়ি একটু পিঠে ঘষে দিতে হবে।
কিন্তু আজ সব ঘেঁটে দিচ্ছে ভ্রমর। হোটেলের ধবধবে সাদা বিছানায় শুতে যাওয়ার আগে মোবাইলটা অফ করতে গিয়েই পাঁচটা মিসড কল আর টেক্সটটা চোখে পড়ল তার। ‘কল ব্যাক, ইটস আর্জেন্ট।’
এমন কী জরুরি হতে পারে? শ্বাশুড়ির কিছু হল? বা অন্য কিছু? সে নীহারিকার দিকে তাকাল। হাসছে, ‘কী হল? হোম মিনিস্টার?’
‘কাইন্ড অফ। এক মিনিট।’ বলে ভ্রমরের নম্বর ডায়াল করে নির্ঝর।
‘এতবার কল করছ কেন? কী হয়েছে?’
উল্টোদিকে শান্ত গলা ভ্রমরের। ‘তুমি কোথায়?’
‘একটা ক্লায়েন্ট মিটিংয়ে।’ ঠাণ্ডা গলায় বলে নির্ঝর।
‘হোয়াই আর ইউ লায়িং?’ এ বার সামান্য গলা তুলল ভ্রমর।
‘কী বলছ তুমি? হোয়াই শুড আই লাই? আই টোল্ড ইউ আই অ্যাম ইন আ মিটিং!’
‘আবার মিথ্যে। রাইট নাও, আমি তোমার অফিসে বসে আছি। তোমার পিএ নেহা কাপুর তো বলছে, আজ কোনও ক্লায়েন্ট মিটিং শিডিউলে নেই। আর তোমার আর একটা চাকর শুভ্রাংশু সে তো তোতলাচ্ছে। বলতেই পারছে না, ক্লায়েন্ট মিটিংটা ঠিক কোথায় হচ্ছে?’
‘বোকার মতো কথা বোলো না। সব ক্লায়েন্ট মিটিং নেহা আর শুভ্রাংশুর জানার কথা নয়। দ্যাটস আ সিক্রেট।’
উল্টোদিকে হাসছে ভ্রমর। কেটে কেটে বলল, ‘সিক্রেট? ঠিকই। তা তো বটেই। তোমাকে ভিডিয়ো কল করছি। পিক আপ। জাস্ট শো মি দ্য ভেন্যু অ্যান্ড দ্য ক্লায়েন্ট? ক্যান ইউ?’
‘কাম অন। স্টপ ইট। তুমি লিমিট ক্রস করছ ভ্রমর। সিন ক্রিয়েট কোরো না।’
‘সিন ক্রিয়েট কোথায় করলাম? তুমি যদি ক্লায়েন্ট মিটিংয়ে থাকো, প্রুভ ইট। জাস্ট অ্যাকসেপ্ট মাই ভিডিও কল। শো মি দ্য প্লেস। সেটা কেন করতে পারছ না? এটা তো দশ সেকেন্ডের ব্যাপার!’
এ বার উত্তেজিত হয়ে পড়ে নির্ঝর, ‘অফকোর্স করছ। তোমার এই নাটক শোনার সময় আমার নেই। তা-ও যখন করছ, আমি মিটিংয়ের বাইরে বেরিয়ে তোমাকে ভিডিয়ো কলই করছি। এক মিনিট।’
ফোনটা কেটে দ্রুত জামা গলিয়ে টাইটা পরে নেয় নির্ঝর। হ্যাঙারে ঝুলে থাকা প্যান্টটা পরে বেল্ট আঁটে। তার পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলে চিরুনি চালায়। চশমা ঠিক করে। তার পরে নীহারিকার গালে একটা চুমু খেয়ে বলে, ‘ওয়েট বেবি। দু’মিনিট দাও। আসছি। করিডরে বেরিয়েই লিফ্টের কাছে কনফারেন্স রুমটার সামনে দাঁড়ায় নির্ঝর। এ বার ভিডিয়ো কল করে ভ্রমরকে।
ভ্রমরকে দেখা যাচ্ছে। একটা কফির কাপে চুমুক দিচ্ছে। নিশ্চিন্তে। ফোনটা ধরতেই নির্ঝর বলল, ‘পিছনে দ্যাখো। কনফারেন্স হল। দেখতে পাচ্ছ আশা করি?’
ভ্রমর হাসল, ‘হ্যাঁ, দেখতে পাচ্ছি। তা ক্লায়েন্ট কই?’
‘কী বলছ? ওদের সামনে বউকে ভিডিয়ো কল করব? তুমি সেন্সে আছ? স্টপ দিস ননসেন্স!’ চেঁচাল নির্ঝর।
‘কুল ডাউন ডিয়ার,’ আবার হাসছে ভ্রমর। খিলখিল করে।
‘রাখছি।’ বলে ফোন রাখে নির্ঝর। বড্ড বাড়াবাড়ি শুরু করেছে ভ্রমর। এতটা সে আশা করেনি। একেবারে অফিস পর্যন্ত পৌঁছে যাবে? মনের মধ্যে হাজার খচখচানি নিয়ে সে ফিরে আসে রুম নম্বর ওয়ান ফোর সিক্স সেভেনে। নীহারিকা ফোনে কী সব খুটখুট করেই যাচ্ছে। পিছন থেকে এসে ওকে জাপ্টে ধরে নির্ঝর। ঘাড়ে ঠোঁট রেখে বলে, ‘উমমম!’
ওর দিকে ঘুরে টাইয়ের নট আলগা করে নীহারিকা। নির্ঝর জামা খুলতে শুরু করেছে। তার ভিতরে বুনো বাইসন দৌড় শুরু করেছে। নিজেকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে ফেলতে না পারলে তার মুক্তি নেই। নীহারিকা আজ সাদা টপ আর নীল জিন্স পরে এসেছে। দ্রুত সে টপ খুলে নেয় নীহারিকার। জিন্সের বোতাম খুলে ফেলে।
দুটো শরীর নিমেষে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিছানায়। অদ্ভুত এক অজানা ক্ষোভে নীহারিকার গলার কাছে কাঁধে দাঁত বসিয়ে দেয় নির্ঝর। দু’হাতে অসুরের মতো চেপে ধরে ওর শরীরটা। নীহারিকা যন্ত্রণায় ককিয়ে ওঠে, ‘আহ, নির্ঝরদা লাগছে!’
নির্ঝর কিছু বলে না। উন্মত্তের মতো মেতে ওঠে শরীরী খেলায়। শরীর যখন জাগে, বহির্বিশ্ব, পারিপার্শ্বিক নিয়ে মানুষ ভাবতে পারে না। সেই ক্ষমতা সে হারিয়ে ফেলে। কাম ছাড়া কোনও কিছুই তখন তার মাথায় থাকে না। তা চরিতার্থ করাতেই সে সর্বস্ব দিতে থাকে। নিজেকে নিঃশেষিত করার মুহূর্তে ডোরবেল বেজে ওঠে। পরপর দু’বার।
চূড়ান্ত বিরক্তি সহ নির্ঝর হাঁফাতে হাঁফাতে বলে, ‘ডিঅ্যান্ডডি’ দেওয়া সত্ত্বেও কোন সাহসে এরা বেল বাজায়? বাস্টার্ড!’
অপরাধীর মতো গলা করে নীহারিকা তাকায়, ‘আসলে আমি রুম সার্ভিসে একটা ক্যারামেল কাস্টার্ড অর্ডার করেছিলাম!’
‘উফ্ফ! তুমিও!’ তাল কেটে যায় নির্ঝরের।
‘সরি! আসছি তো!’ বলে নীহারিকা।
আবার বেল বাজে। এবার বিছানা থেকে তোয়ালের লম্বা অ্যাপ্রনটা জড়িয়ে দরজার দিকে এগোয় নীহারিকা। নির্ঝর বলে, ‘দরজা থেকে নিয়ে নিও। ডোন্ট অ্যালাও দ্য বয় ইনসাইড!’
নীহারিকা আই ক্যাচারে চোখ রেখে দরজা খুলে দেয়। দ্রুত গটগট করে ভেতরে ঢুকে আসে চেহারাটা। চেনা একটা পারফ্যুমের গন্ধ নির্ঝরের নাকে এসে লাগে।
কোনওরকম ভণিতা না করে ভিতরে ঢুকে এসে বাঘিনীর মতো ভ্রমর গর্জন করে, ‘ক্লায়েন্ট মিটিং, না? ইউ আর সাচ আ লায়ার!’
এ বার নীহারিকার দিকে ফেরে ভ্রমর। একটা খাম এগিয়ে দিয়ে বলে, ‘দেখে নিও। তোমার চেকটা ঠিক আছে কি না। স্পেলিংয়ে ভুল থাকলে বোলো। পরে কারেক্ট করে দেব!’
জিন্স আর টপ গলাতে গলাতে কৃতজ্ঞ মুখ করে নীহারিকা বলে, ‘থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাম!’
একবার নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে মুখ বিকৃত করে রুমের কার্পেটে একবার থুতু ফেলে বেরিয়ে যায় ভ্রমর।
সাদা বিছানায় চাদরের মধ্যে কুঁকড়ে থাকা নির্ঝরের চেহারাটা দেখে নীহারিকা। তার পরে আস্তে করে বলে, ‘সরি, স্যর!’
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন