স্মৃতিকথা
সৌমেন বসাক
নাগরাকাটা চা বাগান। কার্শিয়াঙের ডাউহিল স্কুল, সেখান থেকে ধূপগুড়ি। নতুন নতুন বন্ধু । তার মানেই নতুন নতুন খেলা। একটা খেলা আমরা বন্ধুরা মিলে খেলতাম। ভাওয়ালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে প্রচুর সুপারি গাছ ছিল। ওইসব গাছে সুপারিগুলো ছোট অবস্থায় মাটিতে পড়ে গেলে সংগ্রহ করতাম। তারপর সেই সুপারিগুলো দু-হাতের মুঠোয় নিয়ে জোড় না বিজোড় বলতাম। কথার সাথে মিলে গেলে তাকে সব দিয়ে দিতে হতো আর না মিললে বন্ধুকে ততগুলি ফেরত দিতে হতো। এইভাবে খেলতে খেলতে যার সংগ্রহ ফুরিয়ে যেত সে পরাজিত। ওই ছোট্ট সুপারিগুলো পরের দিন শুকিয়ে যেত আবার নতুন করে সংগ্রহ করার পালা।
কখনও কোয়ার্টার থেকে একটু দূরে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নদীর জল শুকিয়ে গেলে কোনও কোনও অংশ নালার আকার ধারণ করতো। কাদা-জল মিলে মিশে একাকার হয়ে যেত। সেই জলে নেমে মাঝে মধ্যে কাচের বোতলে রাখার জন্য ছোট মাছ ধরতে যেতাম। মাছ ধরতে ধরতে কখনও হঠাৎ পেছন থেকে কোন মহিলার চিৎকার শুনতে পেতাম। চিৎকারের বিষয়বস্তু হলো এটা ডাক্তারবাবুর ছেলে না? কালই হাসপাতালে গিয়ে রিপোর্ট করবো এই নোংরা জলে ঘুরে বেরাবার যেখানে কিনা বিষাক্ত সাপ-পোকামাকড় ঘুরে বেড়ায়। এই চিৎকার শুনলেই মাছ ধরার সব সরঞ্জাম ফেলে পড়িমড়ি করে দে ছুট। আর ছুটতে ছুটতে সোজা কোয়ার্টারে। এমন ভাবে থাকতাম যেন ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানি না।
বেশ কিছু খেলা আমরা ছেলে-মেয়ে মিলে খেলতাম। ঝগড়া খুনসুটি লেগেই থাকত। যেমন দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, চু কিত কিত, লুকোচুরি। একবার একটা খারাপ ঘটনা ঘটেছিল। আমি মাঠের মধ্যে ছোট ছোট পাথর দূরে ছুঁড়ছিলাম আর একটু দূরে আমার বোন ও তার বন্ধুরা মিলে খেলছিল। হঠাৎ বোন ছিটকে আমার পাথর ছোঁড়ার দিকে চলে আসায় সোজা তার মাথায় আঘাত লাগে। সে মাথা ধরে মাঠে বসে পড়ে। তার হাতে রক্ত। আমার ছোটপিসি কোয়ার্টারের বারান্দায় বসে আমাদের খেলা দেখছিল। সঙ্গে সঙ্গে মাঠে ছুটে এসে বোনকে কোলে নিয়ে ৫০ মিটার দূরের হাসপাতালের এমার্জেন্সিতে পৌঁছে যায়। আমি ভয়ে কোয়ার্টারের গেট ধরে সেঁধিয়ে থাকি। তখন বাবাও কোনও এক কাজে কলকাতায় এসেছিল। ফলে ভয়টা আরো চারগুন হয়েছিল। কারণ পুরস্কারের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে। যতদূর মনে পড়ে সেরকম কিছু উত্তম মধ্যম জোটেনি।
বীভৎস দৃশ্যেরও সাক্ষী থেকেছি। একদিন সকালে উঠে কোনও এক বন্ধুর মুখে শুনলাম আমাদের হাসপাতাল থেকে দু-কিলোমিটারের মধ্যে গতকাল ডাকাতরা ডাকাতি করে যাওয়ার সময় বাড়ির দুই পুরুষ মানুষকে মেরে ফেলেছে। এমন ভাবে রামদা চালিয়েছে যে মুণ্ডুটা শরীর থেকে ঝুলছে। সেই দেহ এনে হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। পোস্টমর্টেমের জন্য দেহগুলিকে জলপাইগুড়িতে পাঠাতে হবে। দেহগুলি মর্গ থেকে গাড়িতে তোলার সময় দেখেছিলাম। তাকানো যায় না। ডাকাতির রাতেই ছোট ভাইয়ের বৌয়ের পুত্রসন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে ওই হসপিটালেই। ঈশ্বরের কী বিচিত্র লীলা! মর্গে যখন শুয়ে আছে বাবার নিথর দেহ তখন পৃথিবীর আলো দেখছে তারই সন্তান, যে কোনও দিন জানবে না বাবা কেমন হয়।
হাসপাতালের চৌহদ্দির মধ্যে বড় মাঠের কথা আগেই বলেছি। মাঠের চারিপাশে ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে বেশ কিছু গাছ ছিল। একটা কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বাঁশ দিয়ে মাচা বানিয়েছিলাম। যেখানে বসে গরমকালে সুন্দর আড্ডা হতো। একবার আড্ডা মারতে মারতে কোন এক দাদার মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলে যায়। সে আমার দিকে ইঙ্গিত করে আর এক লুঙ্গি পরে দাঁড়িয়ে থাকা দাদার লুঙ্গির গিঁটের দিকে। আর আমারও দুষ্টু বুদ্ধি লুঙ্গির গিঁটকে তাক করে। কাজ সেরেই দে ছুট। ছুটতে ছুটতে পেছন ফিরে দেখি ওই দাদাও লুঙ্গি বাঁধতে বাঁধতে আমার দিকে ছুটছে। আর বাকিরা হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। একটু ছোটার পরেই ওই লুঙ্গি দাদা ইঙ্গিত করে আড্ডাস্হলে ফিরে আসার। আমিও ফিরে এসে একটু কানমলা খেয়ে বসে পড়লাম। আবার জমিয়ে আড্ডা। তখন পারস্পরিক সম্পর্কটা এতটাই গভীর ছিল। হাসপাতালের মাঠের ধারে বেশ ক’টা গাব গাছ ছিল। সেই গাব ফল পাড়ার পারস্পরিক রেষারেষিও কম ছিল না। পাকা গাব ফলের গন্ধ ম ম করত। গাব গাছ আজকাল সেইভাবে চোখেও পড়ে না।
পুজোয় আরতি প্রতিযোগিতায় প্রথম অংশগ্রহণ করি খুব সম্ভবত তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময়। ধূপগুড়িতেই। দুর্গাপুজোর নবমীর দিন রাতে কোয়ার্টারের কাছেই এক মন্দিরে বাবার সাথে যাই। বাবাকে প্রধান অতিথি করে নিয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ করে উদ্যোক্তারা আমাকে আরতি করতে বলে। আমিও মহানন্দে রাজি হয়ে যাই। অবশেষে একটা সান্ত্বনা পুরস্কার স্বরূপ কলমও জুটে যায়। পরের দিন কিছু বন্ধুর কাছে শুনতে হয়েছিল, পুরস্কারটা বাবার কারণেই। এইসব তখনও ছিল।
কোয়ার্টার থেকে দু-কিলোমিটারের মধ্যে ছিল আমার মায়ের মামার বাড়ি অর্থাৎ আমার দাদুর বাড়ি। দাদুর বাড়ির সীমানা ছিল অনেকটা জায়গা জুড়ে। বাড়ির চারপাশে প্রচুর গাছপালা ও গোটা তিনেক পুকুর ছিল। এই গাছপালার মধ্যে একটি গাছ ছিল নটকোনা (উত্তরবঙ্গে প্রচলিত) ফলের। থোকা থোকা ফল। ফলের হলদেটে খোসার ভেতরে এক থেকে চারটি পর্যন্ত রসালো দানা থাকতো। খেতে টক মিষ্টি। খুবই সুস্বাদু। আষাঢ় মাসে রথের সময় মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল। আজও এই দক্ষিণবঙ্গে আষাঢ়ে রথের সময় খুঁজে বেড়াই। কিন্তু চোখে পড়ে না।
হ্যাঁ, যা বলছিলাম। দাদুর একশো বিঘার ওপর জমি ছিল। বাড়ি থেকে একটু দূরে। সুপারি বাগান ছিল। সারা বছর বিভিন্ন সময়ে ধান-পাট-সুপারি-কাঁচা লঙ্কা ইত্যাদির পাইকারি ব্যবসা করতো। এইজন্য নিজস্ব গোডাউনও ছিল। স্কুল ছুটি থাকলেই দাদু মামা-মাসিদের পাঠিয়ে আমাদের নিয়ে যেত। ওই বাড়ি ছিল আমার অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। যা খুশি করতাম। বায়নার শেষ ছিল না। কেউ বকলে তার কপালেই দাদুর বকা জুটতো। আক্ষরিক অর্থেই দাদুর বাড়ি ভারি মজা। হয়তো বাজারে ভালো মাছ পাওয়া গেছে বা পুকুরে বড় মাছ ধরেছে সঙ্গে সঙ্গে মামা-মাসিদের কাউকে পাঠিয়ে দিত আমাদের আনার জন্য। তখন তো এত ফোন ছিল না। যদি কোনও কারণে আমরা যেতে পারলাম না তখন আবার ওই মাছ কোয়ার্টারে মামার সাইকেলে করে পাঠিয়ে দিত। এই ছিল আমার দাদু।
দাদুর বাড়ির পাশের জমিতে কাঁচালঙ্কার চাষ করতো। একবার আমি ওখানে থাকাকালীন দাদু আর ছোটমামা কাঁচালঙ্কা জমি থেকে নিজেরাই হাত দিয়ে তুলতে লেগে গেল। আমিও জোর জবরদস্তি কাঁচালঙ্কা তুলতে জমিতে নেমে গেলাম। এরপর আমায় আর দেখে কে? অতি উৎসাহের ফলে হাত দিয়ে চোখের ঘাম মোছার পর চোখ ডলেই যাচ্ছি। চোখ জ্বালা করতে করতে লাল হয়ে উঠলো। সে যাত্রায় চোখে জলে ঝাপটা দিয়ে নিষ্কৃতি পেয়েছিলাম। এরকম অনেক টুকরো টুকরো স্মৃতি মাথায় ভিড় করে আসছে।
হঠাৎ একদিন দেখলাম দু’জন জমিতে কাজ করে এমন মানুষ একটা বাঁশের দুদিক ঘাড়ে করে হাজির। দূর থেকে দেখলাম বাঁশের মাঝখানে কিছু একটা ঝুলছে। কাছে আসতে বুঝলাম বিশাল একটা হলদেটে রঙের বোয়াল মাছ। জমি থেকে ধরেছে। এখন তো এই হলদে বোয়াল চোখেই পড়ে না। সেই বোয়াল মাছ নিয়ে অনেকক্ষণ খেলা চলল। তখন তো মোবাইল ফোন ছিল না। যার ফলে সেলফিও তোলা হয়নি। পুকুরে জল ছেঁচার দিন আমরাও নেমে পড়তাম। কাদার মধ্যে হাত দিয়ে মাগুর, ল্যাটা, খলসে, পুঁটি ইত্যাদি মাছ ধরতাম। সেই মাছ কোয়ার্টারের চৌবাচ্চার জলে ছেড়ে দিতাম। খেলা এবং খাওয়া দুটোই চলতে থাকতো।
ভাওয়ালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে বৈরাতিগুড়ি হাই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। সেই স্কুলে হাইওয়ে ধরে যেতে হতো। কোয়ার্টার থেকে আধ মাইলের মতো দূরত্ব ছিল। আমরা দল বেঁধে স্কুলে যেতাম। কারণ ওটাই ছিল ছেলেমেয়েদের জন্য কাছের হাই স্কুল। এছাড়া আরও কোয়ার্টার মাইল দূরে ছিল মেয়েদের হাই স্কুল। আর একটা হাই স্কুল ছিল ধূপগুড়ি বাজারের কাছে। আমাদের হাই স্কুলে যাবার রাস্তায় দূরে পথের পাঁচালী সিনেমার মতো ট্রেন লাইন দেখা যেত। কখনও কখনও ট্রেন ছুটে চলেছে কয়লার ধোঁয়া উড়িয়ে পাট গাছের আড়াল দিয়ে। হাইওয়ে ও ট্রেন লাইনের মাঝখানের জমিতে প্রচুর পাট চাষ হতো। যার জন্য হাইওয়ের পাশ ঘেষে অনেক ডোবা ছিল। বর্ষাকালে জলে টইটম্বুর থাকতো। পাট ওই জমি থেকে তুলে ডোবায় ডুবিয়ে রাখা হতো। পাট পচার এক অদ্ভুত গন্ধ ছিল। কিছুদিন পর পচানো পাট মাঠে রৌদ্রে শুকিয়ে ছাড়িয়ে নেয়া হতো। পাটের ভেতরের অংশকে বলা হয় পাটকাঠি। তখনকার দিনে কয়লার উনুন ধরানোর অবশ্যম্ভাবী জিনিস। এছাড়াও পুজোআচ্চায় এর ব্যবহার আছে। তখনকার দিনে পাটকাঠি দিয়ে প্রচুর সরস্বতী পুজোর প্যান্ডেল হতো। দেখতেও ভারি সুন্দর লাগত।
রেললাইনের কথায় মনে পড়ে গেল কলকাতা ভ্রমণের কথা। পঞ্চম শ্রেণীর গরমের ছুটিতে। আমার প্রথম উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা ভ্রমণ। ধূপগুড়ি রেল স্টেশন থেকে দুপুর ১২টায় জনতা এক্সপ্রেসে রওনা হয়েছিলাম। ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞ অনেকের কাছে শুনেছিলাম ট্রেনে নানা রকম খাবারদাবার ও জিনিস বিক্রি করতে হকাররা ওঠে। তার মধ্যে অন্যতম ডিম সেদ্ধ। তাই আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম ট্রেনে ডিম সেদ্ধ লুকিয়ে খেতেই হবে। বাবা রাস্তার খাবার খেতে দেবে না। হাত খরচের পয়সা বাঁচিয়ে সঙ্গে নিয়েছিলাম। ট্রেনে উঠেই তক্কে তক্কে ছিলাম। ডিম সেদ্ধ নিয়ে উঠতেই তার পিছু নিয়ে আমাদের সিটের থেকে চারটে কুপ পরে ফাঁকা কুপে ২৫ পয়সা দিয়ে একটা নুন মাখানো সেদ্ধ ডিম আরাম করে সবে তারিয়ে তারিয়ে খেতে শুরু করেছি, তখনই বাবার নাম ধরে ডাক শুনে কোনওমতে নাকে মুখে দিয়ে খেতে খেতে হাজির হলাম।
কখনও কখনও স্কুল ছুটি থাকলে বাবার সঙ্গে হাসপাতালের গাড়িতে চড়ে বসতাম। গন্তব্য বিভিন্ন চা বাগান অঞ্চল। বাবারা স্বাস্থ্য পরিষেবা দেবার জন্য এইসব চা বাগানে যেত। আমাকে চা বাগানের চেনা কারোর জিম্মায় দিয়ে কাজে যেত। কাজ হয়ে গেলে সন্ধ্যার দিকে আমাকে নিয়ে ধূপগুড়ির পথে রওনা হতো। মাঝের এই সময়ে আমি সমবয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নানারকম খেলাধুলো করতাম ও ঘুরে বেড়াতাম। গাড়িতে চলার পথে কখনও পাঞ্জাবি ধাবায় নেমে দড়ির তাকিয়ার ওপর বসে গরম গরম তড়কা-রুটি খাওয়া হতো, যেটা ছিল পিছু নেওয়ার অন্যতম কারণ। রাস্তার দু’ধারের সবুজের সমারোহ দেখতেও ভালো লাগতো। বন্য জীবজন্তুর সঙ্গেও মোলাকাত হয়ে যেত। অন্যতম ছিল বুনো হাতি। এছাড়াও বনমুরগি, ময়ূর, বাঁদর, হরিণ, বনবিড়াল ইত্যাদি।
একবার কালচিনি চা বাগান থেকে ফেরার পথে আমাদের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয় একটা বনবিড়াল। ড্রাইভার ব্রেক চেপে গাড়ি দাঁড় করায়। আমরা গাড়ির আলোয় পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখি বনবিড়ালটা ছটফট করছে। আমরা কিছু বলার আগেই ড্রাইভার গাড়ি ব্যাক করতে করতে বনবিড়ালটার দিকে যেতে লাগল। বনবিড়ালটাও কিছু একটা বুঝতে পেরে আহত পা-টাকে হিঁচড়ে জঙ্গলের দিকে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু রাস্তা থেকে জঙ্গলে ঢোকার আগের মূহুর্তে ড্রাইভার গাড়ির চাকায় পিষ্ট করে দেয়। আমরা মুহূর্তের জন্য হতভম্ব হয়ে যাই এবং দেখতে থাকি বনবিড়ালটা কাটা পাঁঠার মতো ছটফট করতে করতে থেমে যায়। সম্বিত ফিরতেই আমরা সমস্বরে ড্রাইভারকে জিঙ্গাসা করি ‘এটা আপনি কী করলেন?’
সে উত্তর দিয়েছিল, ‘বনবিড়ালটা সেরে উঠে ভাঙা পা নিয়ে বেঁচে থাকতে কষ্ট পেত তাই পৃথিবী থেকে চিরতরে সরিয়ে দিলাম। তিলে তিলে কষ্ট করে বাঁচার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো’, এটাই ছিল তার যুক্তি। আমরা ভেবে দেখলাম – যুক্তি অকাট্য। কিন্তু মনটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। রাতে কোয়ার্টারে ফিরেও বারেবারে চোখের সামনে দৃশ্যটা ভেসে উঠছিল। ভারাক্রান্ত মনে অল্প কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
এইসব ভ্রমণে প্রচুর নদী ও পাহাড়ি ঝর্ণা চোখে পড়ত। বিশেষত ঝর্ণাগুলোকে বছরের বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রূপে দেখা যেত। ভারি মনোরম এবং কখনও কখনও ভয়ঙ্করও ছিল। এভাবেই সুখে দুঃখে ছোটবেলার দিনগুলো কেটে গেছিল ডুয়ার্সকে সাক্ষী রেখে ।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন