short-story-dori-o-nobabjada

দড়ি ও নবাবজাদা
জয়ন্ত দে


যাকে আমি দেখলাম তাকে দেখার কথা নয়। তবু দেখলাম। হঠাৎই। এই রাস্তা দিয়ে আমার আসার কথা ছিল না। আসিও না কখনও। কিন্তু আজ আসতে হল। আমাদের ওদিকের রাস্তা বন্ধ। তাই গাড়িটা ঘুরিয়ে মাঝরাস্তায় আমাকে নামতে হল। নেমেছি, নেমে একটা সিগারেট ধরিয়ে হাঁটছি। হঠাৎ সামনে দেখলাম গুণময়দাকে। একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
যেন ভূত দেখছে! আমিও দাঁড়িয়ে পড়েছি। গুণময়দা বলল, ‘কী রে তুই এদিকে!’
আমি হাসলাম, ‘অফিস থেকে ফিরছি। ওদিকে রাস্তা বন্ধ—। তাই।’
গুণময়দা বলল, ‘তোর সঙ্গে কতদিন পরে দেখা? ভালো আছিস?’
‘আছি।’
‘দে একটা সিগারেট দে।’
আমি গুণময়দাকে একটা সিগারেট দিলাম। ‘বললাম, তুমি এত রাত্রে এখানে কী করছ?’
গুণময়দা বলল, ‘ক’টা বাজে বলত?’
‘বারোটা।’
‘গুড। ইংরেজি মতে একটা দিন থেকে আমরা আর একটা দিনে চলে যাচ্ছি। বা বলতে পারিস আমরা দুটো দিনের মাঝে।’
আমি হাসলাম, গুণময়দার মধ্যে তখন খ্যাপামোটা ছিল। তবে সেটা সবসময় বুদ্ধিদীপ্ত। ইদানীং যা খবর পেয়েছি, সেটা একটু বেশিমাত্রায় বেড়েছে। মাথাটা ঘেঁটে গেছে!
গুণময়দা বলল, ‘তোর গা থেকে মদের গন্ধ বেরুচ্ছে।’
‘হ্যাঁ, খেয়েছি।’
‘গুড। কোথায়?’
‘অফিসের একটা পার্টি ছিল।’
‘গুড। হালকা শীত গা গরম! আমি অনেকদিন মদ খাইনি।’
‘খাবে কি, খেলেই তো তোমার বমি হবে।’
‘এখন বমি হয় না। ঠিক এক বছর আগে খেয়েছিলাম। হয়নি।’
‘গুড।’ এবার আমি বললাম।
গুণময়দা হাসল, ‘তুই আমার গুডটা ঝেড়ে দিলি? শোন, একটু মাল খাবি?’
‘মাল, কোথায় পাবে তুমি?’
‘একজন একটা দিয়েছে, এক সপ্তাহ আগে। স্কচ! কিন্তু ঠিক লোক পাচ্ছি না, যে খাব।’
আমি স্পষ্ট গলায় বললাম, ‘না, আমি আর খাব না।’
‘তাহলে আমারও খাওয়া হবে না। তোকে পেলাম তাই বললাম। আমি তো রসিক নই। জিনিসটা পড়েই থাকবে।’
‘আজ অনেক রাত হয়ে গেছে। অন্য দিন খেও। কাউকে না কাউকে পেয়ে যাবে।’
‘ভাগ! গুণময় চ্যাটুজ্জে সবার সঙ্গে মাল খায় না। আর শোন, আমাকে কেউ মালের বোতল দেয়নি। আমাকে মালের বোতল দেবে এমন সাহস কারো নেই।’
‘তবে আমাকে মালের কথা বললে কেন?’
‘তোকে চেক করলাম। যদি পাঁড় মাতাল হতিস, অ্যাডিক্টেড হতিস, যতই খাস, ঠিক খেতে রাজি হতিস। আমি দেখলাম, তুই কতটা ডুবেছিস? ঠিক আছিস। পাস! পাস! যা, চলে যা। এই শোন, সাবধানে যাস।’
আমি একটা হাত তুলি, ‘এই তো এখান থেকে এখানে, তার আবার সাবধানে? চলি—।’
গুণময়দা বলল, ‘শোন, তোকে কি আমি এগিয়ে দিয়ে আসব?’
‘এগিয়ে দেবে? কেন?’
‘এমনি, রাস্তায় যদি তোর কোনও সমস্যা হয়। দড়ি-টড়ি পড়ে—।’
‘দড়ি-টড়ি পড়ে মানে?’ আমি দাঁড়িয়ে গেলাম।
গুণময়দা চাপা স্বরে বলল, ‘দিন পালটে গেছে। আজকের ডেটটা তোর মনে পড়ছে?’
আমি চুপ করে গুণময়দার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। গুণময়দা বলল, ‘মনে পড়ছে না, তাই তো? আজ সেই দিন— বিলাস, বিলেস—। তাই বলছিলাম, রাস্তায় দড়ি-টড়ি ঝুললে— ঠিক ঠিক পাশ কাটিয়ে যাবি।’
গুণময়দার কথায় আমার হঠাৎ মনে হল রাস্তাটা বড্ড লম্বা, বাড়িটা বেশ দূরে—।
অনেক অনেকদিন আগে আমার বন্ধু কাম দাদা এই গুণময়দার বোন গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। সে আত্মঘাতী হওয়ার জন্য বেছে নিয়েছিল একটা অদ্ভুত জায়গা। একটা নির্মিয়মাণ বাড়ি। বাড়িটি কমলা সরকারের। বাড়িটির মাথায় সবে অ্যাসবেসটস লাগানো হয়েছিল। সেই অ্যাসবেসটস লাগানো কাঠের ফ্রেম থেকে বিলাসী ঝুলে পড়েছিল। বাড়িটি ছিল ফাঁকা মাঠের মধ্যে। তখন ভরা বর্ষাকাল। চারদিকে থইথই করছে জল। পুলিশ এসেছিল অনেক কষ্টে। পুলিশের মেজবাবু স্পটে আসতে পারেননি। তিনি ডাঙার একটা বাড়িতে বসেই সব তদারকি করছিলেন। আর একটা হনুমান কাটিংয়ের হাবিলদার এসে হম্বিতম্বি করছিল। পুলিসের কাছে এমন কেউ ছিল না, যে বিলাসীর ঝুলন্ত বডি নামাবে। শেষে আমি সিলিংয়ে উঠে বিলাসীর গলার দড়ি কাটি।
বাড়ি ফিরতে আমার ওপর মা বোন বউদি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তোকে কে পাকামি মারতে বলেছে, যে তুই দড়ি কাটতে গেলি? তারপর মা অনেক মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। বউদি ফিসফিস করে বলেছিল, কথায় বলে, যে দড়ি কাটে, তাকে নাকি দড়ি ডাকে।
আমাকে কোনওদিন দড়ি ডাকেনি। কিন্তু গুণময়দা আজ হঠাৎই আমাকে এলোমেলো করে দিল। ফিসফিস করে বলল, ‘আমি কিন্তু তোকে দিয়ে আসতেই পারি। আমার কোনও অসুবিধে হবে না।’
আমি ঘড়ঘড়ে গলায় বললাম, ‘আমারও কোনও অসুবিধে হবে না, তুমি বাড়ি যাও গুণময়দা।’
গুণময়দা মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, ‘বাড়ি যাব কী করে— এই সেই রাত, প্রতি বছর এই রাতে আমি রাতচরা হই— হারামজাদা খুঁজি। কার জন্য, কার জন্য আমার বোনটা গলায় দড়ি দিল, বুঝি, বোঝার চেষ্টা করি। নইলে তো আমি ন’টার মধ্যে খেয়ে চিৎপাত হয়ে ঘুমাই। এই একটা দিন আমি রাত জাগি— দেখি—।’
আমি ঘড়ঘড়ে গলায় বললাম, ‘কী দেখো?’
‘হারামজাদা! এই তো গতবছর মুকুল এসেছিল মাকে দেখতে। মুকুল মানে আমার ছোট ভাই। দেখে টেখে ঠিক রাত বারোটার সময় বেরচ্ছিল। আমি ওকে সাবধান করলাম— “মুকুল সাবধানে বাইক চালাস।” ও পালটা আমাকে বলল, “তুই আর রাস্তায় ঘুরে ঘুরে পাগলামি করিস না। ঘরে গিয়ে ঘুমো।” আমি ওকে বললাম, “মুকুল আজ দিনটা ভালো নয়। তুই বিলেসের সঙ্গে বড্ড খারাপ ব্যবহার করতিস। সাবধানে যাস।” একথা শুনে মুকুল বাইক থেকে নেমে আমার গালে ঠাস করে একটা চড় মারল। আমার গায়ে হাত তোলা কি মুকুলের উচিত হল, শত হলেও আমি বড়দাদা। ব্যস। আর কী, সে রাতেই বাড়ি পর্যন্ত ও যেতে পারল না, বাইক উলটে পড়ে, ডান পা মায়ের ভোগে। স্টিলের রড বসেছে। এখন ক্রাচ নিয়ে হাঁটে। আমাকে দেখলেই গালমন্দ করে। যেন আমি করেছি? আরে আমি কী করব? বিলেস, বিলেস করেছে। তুই দাদা হয়ে কী করে যখন-তখন ছোট বোনকে ধরে ঠ্যাঙাস? মারিস? আমি তো হাততালি দিয়ে বলেছি— স্যাকরার ঠুকঠাক কামারের এক ঘা। এক ঘায়েই মুকুলের বগলে ক্র্যাচ!’
‘এসব কথা তুমি বলো কেন? মুকুল না তোমার ভাই হয়? বলবে না।’
‘বিলেস আমার বোন হয়! তার বেলা? তুই কিন্তু সাবধানে যাস। দড়ি-টড়ি কিছু রাস্তায় পড়ে থাকলে ডিঙোবি না। শোন, যদি রাস্তায় জুড়ে কোনও দড়ি পড়ে থাকে, তবে প্যান্ট খুলে ছড় ছড় করে মুতে দিবি। টোটকা দিলাম। যা পালা!’
কিন্তু আমি যে পালাতে পারছি না। গুণময়দার কাছেই দাঁড়িয়ে আছি। মদের নেশা ছিল। ঘোর ঘোর! সেটা হঠাৎই যেন উধাও।
গুণময়দা বলল, ‘কি রে আমি তোকে দিয়ে আসব? ভেবে দেখ? বছর দুই আগে, সেম ডে সেম টাইমে আমার সঙ্গে রাজার দেখা হয়েছিল। সেদিনও আমি রাজাকে বলেছিলাম— রাজা এত রাতে কোথায় যাচ্ছিস? শুনে রাজা আমাকে কী খিস্তি করল। জানিস, আমাকে পাগলাচোদা বলল। আমাকে বলল— “দিনের কাক রাতে বেরিয়েছিস কেন?” বারোটা কোনও রাত হল, জানিস না, আজ সবাই রাত জাগবে—বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল। তবু আমি বললাম, “রাজা সাবধান। তুই সুযোগ পেলেই বিলেসের গায়ে হাত দিতিস।” ও কিন্তু তোর নামে পরিষ্কার অভিযোগ করেছিল। উলটে তুই ওকে এর তার নামে জুড়ে দিয়ে অকথা-কুকথা শুনিয়েছিল। ঠিক করিসনি। আজ বাড়ি থেকে বেরসনি। কোপে পড়ে যাবি। জানিস আমার কথা শুনে, রাজার সে কী হাসি। বলল, “বিলাসী কত বছর আগে ঝুলেছিল বলত? সতেরো-আঠেরো বছর আগে। যা, পাগলাচোদা, তোর বোন আবার জন্মে সেক্সি মাগি হয়ে গেছে।”’
কথাটা বলে গুণময়দা থামল, বলল, ‘সেক্সি মাগি! খুব খারাপ কথা। দাদার সামনে বোনকে নিয়ে এমন কথা কেউ বলে! রাজা বলেছিল। আমি তখন ওকে বলেছিলাম, “যা আজ তুই খালাস! বিলেসকে আমি ছেড়ে দিলাম। লে লে বদলা লে লে! তারপর তো তুই জানিস—।”’
‘হ্যাঁ, শুনেছিলাম, ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবলের ফাইনালের দিন ও টয়লেট করতে ক্লাবের নীচে যাচ্ছিল, সিঁড়ি থেকে পড়ে, স্পাইনাল কর্ডে চোট।’
‘চোট!’ গুণময়দা দু হাতে তালি মারে। ‘এখন জানালায় বসে থাকে। নট নড়নচড়ন! মাঝে মাঝে আমি গিয়ে টুকি— টুকি মেরে আসি! আমাকে দেখলেই খিস্তি দেয়। কিন্তু আমি কী করব? ওকে সাবধান করেছিলাম। উলটে ও আমাকে পাগলাচোদা, বিলেসকে সেক্সি মাগি বলেছিস। এখন ও জানলার সামনে বসে হেঁচকি তুলছে। তুই কিন্তু সাবধানে যাস ভাই, মাথার ওপর দড়ি টড়ি ঝুলতে দেখলে, মাথা নামিয়ে নিবি—।’
আমি বিড়বিড় করি, ‘আমি কিন্তু কখনও বিলাসীকে অসম্মান করিনি, খারাপ কথা বলিনি।’
‘জানি তো। বরং তুই ওকে একটু-আধটু ভালোবাসতিস। বিলেস ওর ডায়েরিতে তোর নাম বার বার লিখেছিল। লিখেছিল আর কেটেছিল। ইয়েস-নো, ইয়েস-নো করে কী সব খেলেছিল। সব দেখেছি আমি। কিন্তু তুই একটা কাজ ঠিক করিসনি—।’
‘কোন কাজ তুমি বলো?’
‘ও দড়িতে ঝুলতে চেয়েছিল। কেউ যখন দড়ি কাটছিল না, তখন তুই কে হে ওর দড়িটা কেটে দিলি? ওকে একটু শান্তিতে ঝুলতে দিলি না? মরে গেছে বলে ওর কি কোনও রাইট নেই!’
আমি মুখে হাত চাপা দিয়ে কেঁদে ফেললাম, ‘ওকে ওই ঝোলা অবস্থায় দেখতে পারছিলাম না গুণময়দা, আমার কষ্ট হচ্ছিল, মনে হয়েছিল, ওকে আমি মুক্ত করে দিই।’
‘গুড, গুড। খুব ভালো কাজ করেছিস ভাই, ভালোবাসার লোককে মুক্ত করে দিতে হয়। যা, চলে যা। দিনকাল ভালো নয়, এই রাত ভালো নয়, এই সময়ও ভালো না, তুই কি একা যেতে পারবি? না আমি তোকে দিয়ে আসব?’
‘আমার কোনও অসুবিধে হবে না, আমি একাই যেতে পারব—।’
‘ঠিক আছে সাবধানে যাস—।’ কথাটা বলেই হঠাৎ থেমে গেল গুণময়দা। তারপর উত্তেজিত গলায় বলল, ‘এই নড়বি না, একদম নড়বি না। স্ট্যাচু! স্ট্যাচু! ওটা কী রে?’
গুণময়দার আঙুল আমার পায়ের দিকে। আমি নীচের দিকে তাকাই।
গুণময়দা বলে, ‘দেখেছিস, কী কাণ্ড, তোর দু’পায়ের স্নিকারের দড়িটাগুলো খোলা। কে খুলে রেখেছে? আরে পাগলা শত্রুকে যেমন মানুষ শিক্ষা দেয়, তেমন ভালোবাসার মানুষকেও টানে। তোকে বিলেস টানবে! উফ, এক্ষুণি একটা বিপদ ঘটত। হাঁটতে হাঁটতে, একটা জুতোর দড়ির ওপর তুই নিজেই মাড়াতিস— তারপর পায়ে পা জড়িয়ে— সর্বনাশ! দুম করে পড়ে যেতিস। রাস্তার ধারে নানারকম ইট পাথর! মাথার বে-জায়গায় লাগলে, ওরে তোকে বাঁচাতে পারতাম না রে! দড়ি! দড়ি! এই দিন ভালো নয়, এই রাত ভালো নয়, এই সময় ভালো নয়—’
আমি ঠক ঠক করে কাঁপি। উবু হয়ে বসে দু’পায়ের স্নিকারের দড়ি বাঁধি—
গুণময়দা তখন বলে চলেছে, ‘একেই বলে সর্বনাশের মাথায় পা! পূর্ণিমার রাত, কারও ঘুড়ি ওড়াতে ইচ্ছে করল। চিনা মাঞ্জার সুতো। ওই সুতো মানেই দড়ির জোর। কিংবা তার থেকেও বেশি। গলার নলিতে পড়লেই ঘ্যাচাং ফুঃ। তারপর, রাস্তা জুড়ে নানা ধরনের তার। মাথার ওপর দড়ি হয়ে ঝুলছে— সাবধানে যাস। দিনটা ভালো নয়, এই রাত ভালো নয়, সময়টাও ভালো নয়। তোকে কি দিয়ে আসতে হবে? একা যাবি? ভেবে দেখ। এতটা রাস্তা! তোর মনে হচ্ছে এ-পাড়া থেকে ও-পাড়া। মুকুল কিন্তু হরদম বাইকবাজি করে দিঘা, ডায়মন্ডহারবার করত। রাজা কিন্তু হররোজ ক্লাবে সিঁড়ি দিয়ে মদ খেয়ে ওঠানামা করত। কিন্তু ওদের কী হল? দিন রাত সময়— হারামজাদা খুঁজে নিল।’ কথটা বলেই গুণময়দা আবার থামল, তারপর ভূত দেখার মতো বলল— ‘ওটা কী? কী রে?’
আমি কাঁপতে কাঁপতে বললাম, ‘কোনটা?’
‘ওইটা— তোর গলার কাছে দড়ি কেন?’
‘দড়ি!’ হাত ঝপাত করে চেপে ধরি। ‘এটা তো আমার উইন্ডচিটারের দড়ি— গাড়িতে ওঠার আগে হালকা এক প্রস্থ বৃষ্টি হচ্ছিল, তখনই পরেছি, আর খুলিনি!’ আমি বিড়বিড় করি।
গুণময়দা ফিসফিস করে, ‘খুলে ফেল। খুলে ফেল! সাবধানের মার নেই!’
আমি কাঁপা হাতে গায়ের থেকে উইন্ডচিটার খুলি। গুণময়দা আমার কোমরের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে, তীক্ষ্ণ গলায় বলে, ‘তোর কোমরে কী?’
আমি কোমরে হাত রাখি— ‘বেল্ট!’
‘বেল্ট— মানে চামড়ার দড়ি! দড়িই বটে। খুলে ফেল! খুলে ফেল! সাবধানের মার নেই! দেখছিস না, বড়দাদা হয়ে ওর দায়িত্ব নিতে পারিনি বলে, ওকে আশ্রয় হতে পারিনি বলে, বিলেস আমার সঙ্গে কী ব্যবহারটাই না করছে? রাত হলেই আমাকে খেপা বানিয়ে দিচ্ছে! তুই তো খেপা নোস। ভালো, টাটকা, যা তবে সাবধানে চলে যা। তোর রাস্তা আজ অনেক লম্বা! এতদিন বিলেস হারামজাদা খুঁজেছে, আমি-মুকুল-রাজ! আজ বিলাস যদি ভালোবাসার মানুষ খোঁজে…। আজ যদি নবাবজাদা খোঁজে!’

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

2 thoughts on “short-story-dori-o-nobabjada

  1. জয়ন্ত দে’র গল্প অন্য রকম হয়। এটাও তার ব্যতিক্রম নয়। এ যেন অন্য জগৎ। যেখানে দুটো মানুষ কথা বলছে আর কেউ কোথাও নেই।

    গল্পটা পড়তে পড়তে ভাবছিলাম হয়তো তা এই জগৎ থেকে সম্পূর্ণ অন্য কোন জগতে ঝাঁপ দেবে। তা দেয় নি তবুও যা পাওয়া গেল ভালো লাগলো।

  2. জয়ন্ত দে’র গল্প অন্য রকম হয়। এটাও তার ব্যতিক্রম নয়। এ যেন অন্য জগৎ। যেখানে দুটো মানুষ কথা বলছে আর কেউ কোথাও নেই।

    গল্পটা পড়তে পড়তে ভাবছিলাম হয়তো তা এই জগৎ থেকে সম্পূর্ণ অন্য কোন জগতে ঝাঁপ দেবে। তা দেয় নি তবুও যা পাওয়া গেল ভালো লাগলো।
    লেখককে অভিনন্দন জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *