short-story-pashan-baari

পাষাণ-বারি
সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়


‘নমস্কার সহযাত্রীরা। বাসটা এই যে স্ট্যান্ড থেকে ছাড়ল, যাবে ডানলপ অবধি। আমি অতদূর অবধি যাব না। না, মানে যেতেই পারি। লাভ হবে না কোনও। একটু পরেই বাসে ভিড় হতে থাকবে। আপনারা আমার কথা শুনতে পাবেন না।’

বলার পর বছর পঁয়ত্রিশের শৈবাল কাঁধের ঝোলা থেকে কাগজপত্র বার করতে থাকল। খোঁচা খোঁচা দাড়িগোঁফ, পরনে সাত পুরনো প্যান্ট-শার্ট। যাত্রী এখন সত্যিই অল্প। বাসের সব সিট ভরেনি। বেশিরভাগ যাত্রী শৈবালের দিকে একবার তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। দু’চারজন অবশ্য কৌতূহলবশে তাকিয়ে আছে।

হাতে কাগজ রেখে ফের বলতে থাকল শৈবাল, ‘আমি জানি আপনারা অনেকেই আমাকে সন্দেহ করছেন। ভাবছেন একজন ‘ঠগ’। আমিও ভাবতাম জানেন। যখন বাসে-ট্রেনে দেখতাম কোনও ব্যক্তি হাতে প্রেসক্রিপশন, এক্সরে প্লেট নিয়ে এসে বলছে আমার অমুকের প্রবল অসুখ। প্রচুর খরচা। আপনারা আমাকে সাহায্য করুন। আজ আমার তার মতোই অবস্থা। আমিও আপনাদের কাছে সাহায্য চাইতে এসেছি। এখন মনে হচ্ছে আমি যাদের ‘ঠগ’ মনে করতাম, তারা সকলেই তা ছিল না।’

দম নিতে থামল শৈবাল। খুব অল্প ক’জনই তার দিকে চেয়ে আছে। বাস জানবাজারে এসে পড়ল। যে ক’জন চেয়ে আছে, অন্য সাহায্যপ্রার্থীর বেলায় তাও থাকে না। শৈবাল জানে তার কণ্ঠস্বর, গুছিয়ে বলার ভঙ্গি এবং চেহারায় লেগে থাকা ভদ্রঘরের ছাপের জন্য যাত্রীরা তাকে খানিকটা হলেও বিশ্বাস করছে। ফের শুরু করে সে, কী আশ্চর্য দেখুন, আমার মতো যারা সাহায্য চাইতে আসেন তাদের পঁচানব্বই শতাংশরই ছেলের অসুখ। প্রধানত দুটো অসুখের কথা তোলে তারা, হার্টে ফুটো অথবা ব্লাড ক্যানসার। আমি ভাবতাম সবারই প্রায় এক অসুখ কেন? এই রোগের প্রেসক্রিপশন নিশ্চয়ই বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এদিকে কপাল দেখুন, আমার ছেলেরও ওই এক অসুখ, হার্টে ফুটো। বাজার থেকে কিনতে হয়নি প্রেসক্রিপশন। অন্যদের মতো প্রেসক্রিপশনের পাতা হলুদ হয়ে যায়নি। এখন আমি বুঝতে পারছি রোগটা খুবই কমন। যাদের টাকা আছে, তারা এই বিপদ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। আমাদের মতো গরিব লোক পারে না। আমার ছেলে পিজিতে আছে। আপনারা যে কেউ মনে করলে তাকে দেখে আসতে পারেন। সরকারি হাসপাতাল বলে বেডের খরচা নেই। কিন্তু বাইরে থেকে যে সব ওষুধ কিনতে হয় তার দাম ভয়ানক। এরপর অপারেশনে কত খরচ হবে, কে জানে! ডাক্তাররা বলছে দশ লাখ ধরে নিয়ে চলতে। আমি একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতাম। মাত্র আট হাজার টাকা স্যালারি। দশ লাখ টাকা আমার কাছে স্বপ্ন। তবু আশা ছাড়িনি জানেন। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়ার ক্লাবগুলোর কাছে গেছি। তারা যথাসাধ্য সাহায্য করেছে। দু’লাখ উঠতে বেশি সময় লাগেনি। তারপরই আমার পরিচিতের সীমানা শেষ। এরপর আপনারা। টাকা তুলতে গিয়ে অফিস কামাই হয়েছে দিনের পর দিন। কোম্পানি আমায় ছাড়িয়ে দিয়েছে। আমি কিন্তু আশা ছাড়িনি। ছেলেকে আমি বাঁচাবই। আমি জানি পৃথিবীতে এখনও ভাল মানুষ আছে। দয়ামায়ার অভাব নেই এই দুনিয়ায়। থাকলে পৃথিবীটা ঘুরত না। থেমে যেত। আমি নিশ্চিত আপনাদের সাহায্যে ছেলেকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারব। হাসপাতালে গেলেই ছেলে আমাকে জিজ্ঞেস করে, কবে বাড়ি যাব বাবা? সে কথা শুনে ওর মা কেঁদে ভাসায়। আমি কাঁদি না। ছেলেকে বলি, আর কিছুদিন বাবা। একটু ধৈর্য ধরে থাক। আবার তুই বাড়ি যাবি, স্কুলে যাবি। তোকে নিয়ে আবার নিকোপার্ক যাব, যাব চিড়িয়াখানা…’ এতদূর এসে কান্নার ভাব আনার চেষ্টা করে শৈবাল, পারে না।

কান্না তার আসে না। কথাবার্তায় সে দারুণ চৌকস। কাঁদতে না পারাটাই শৈবালের একমাত্র দুর্বলতা। শুনেছে জন্মের সময় সে কাঁদেনি। প্রচুর মারধর করে কাঁদাতে হয়েছে। মা মারা গেছে তার বারো বছর বয়সে। মায়ের জন্য আজ অবধি কাঁদেনি শৈবাল।

আরও খানিকক্ষণ শৈবাল নিজের অসহায় অবস্থার কথা বলল। যাত্রীরা মাঝে মাঝেই তার দিকে মুখ তুলে তাকাচ্ছে, অর্থাৎ অনেকেই কনভিন্স হয়ে পড়েছে তার কথায়। এদের মধ্যে একটি লোক তার দিকে তাকিয়ে আছে ঠায়। লোকটি শৈবালেরই বয়সি। কোনও ভাবে কি চেনে শৈবালকে? শৈবাল তো চিনতে পারছে না। কথা থামায়নি শৈবাল। বলে যাচ্ছে, ‘আপনাদের যদি কারোর আগ্রহ হয় প্লিজ একবার চলুন পিজিতে। আমার ছেলেটাকে দেখলে মায়ায় পড়ে যাবেন। কিছুতেই ইচ্ছে করবে না ওকে পৃথিবী থেকে চলে যেতে দিতে।’

এরপরই মাস্টার স্ট্রোকটা দেবে শৈবাল। কাঁধের ঝোলাটা থেকে একটা ব্রাউন খাম বার করে। খাম থেকে বার করে পাঁচ বাই সাত ইঞ্চির একটা ফটো। সমুদ্রতটে হাঁটু ভেঙে ছেলের পাশে শৈবাল। ছেলে পিয়াল বাবার গলা জড়িয়ে কী মিষ্টি হাসি হাসছে। ছবিটা দারুণ তুলেছিল রেবা, শৈবালের বউ। ছবিটা চার বছরের পুরনো। নতুন করে প্রিন্ট করিয়েছে শৈবাল। সেই ফটো হাতে তুলে শৈবাল এখন বলছে।

‘এই তো মাস আটেক আগের ছবি। দিঘা গিয়েছিলাম ফ্যামেলি নিয়ে। দেখুন পিয়াল, মানে আমার ছেলে কী সুন্দর হাসছে। তখন কী আর জানতাম ওর মাথার পিছনে ফণা তুলে আছে নিয়তি!’

বলার পর ফটোটা এক প্যাসেঞ্জারের দিকে এগিয়ে দিল শৈবাল। ভদ্রলোক ফটোটা ভাল করে দেখে পাশের জনের দিকে এগিয়ে দিল। লোকটি হাতে নিল না ফটোটা, পাশ থেকে দেখা হয়ে গেছে তার। দু’জন বাদ দিয়ে আর একটি লোক হাত বাড়িয়ে চাইল। এইভাবে কেউ ফটোটা দেখছে, কেউ আবার মুখ ঘুরিয়ে বসে রয়েছে। তারা ঠিকই করে নিয়েছে কোনও মতেই সাহায্য করবে না। আসলে এই ভাবে মিথ্যে বলে টাকা তোলাটা পুরনো হয়ে গেছে। কেউ আর বিশ্বাস করতে চায় না। তবু এই বিপুল জনসংখ্যার দেশে এখনও কিছু বোকা, দয়ালু মানুষ আছে। যাদের উপর ভরসা করে শৈবালের মতো ঠগেরা বেরিয়ে পড়ে টাকা কামাতে। এদের মধ্যে শৈবাল বেশ সফল। তার মৌলিক অস্ত্র ওই ফটো। পিয়ালের ওই মিষ্টি হাসি দেখে অনেকেরই মন গলে যায়।

ফটোটা এখন সেই লোকটার কাছে গেছে, যে ঠায় তাকিয়েছিল শৈবালের দিকে। লোকটা ফটোটা খুব মন দিয়ে দেখছে। বাসে ভিড় বাড়ছে।

শৈবাল ফের বলা শুরু করে, ‘জানি, এত বড় রোগে, এই বিপুল খরচায় পাঁচ-দশ টাকা দিতে অস্বস্তি হয় মানুষের। কিন্তু বিশ্বাস করুন ‘বিন্দু বিন্দু থেকে সিন্ধু’ কথাটা ভীষণ সত্যি। এই ক’মাসে এত টাকা তুলতে পারব কল্পনা করতে পারিনি। আপনাদের সামান্য দান আমার ছেলের খানিকটা নিঃশ্বাসের সমান।’

এক যাত্রী দশ টাকা বাড়িয়ে ধরল। টাকাটা নিল শৈবাল। তারপর আর একজন। উনি পাঁচের নোট। একজন ডাকছে, ‘দাদা, এই দিকে আসুন…’ উঠতে লাগল টাকা। যে লোকটা বিশেষভাবে দেখছিল শৈবালকে, সে দিল পঞ্চাশ। টাকা যা উঠছে, বেশিক্ষণ কাজ করতে হবে না। বিকেলের আগেই বাড়ি ফিরে যাবে শৈবাল। ভাড়াবাড়ি। ঢোকার আগে একটা মালের বোতল কিনে নেবে। বাংলা নয়, ইংলিশ মাল। বাংলা চলে না শৈবালের।

কলেজ স্ট্রিট পৌঁছতেই বাসে যথেষ্ট ভিড় হয়ে গেল। প্রেসক্রিপশন, এক্স-রে প্লেট, ফটো সব কাঁধ ঝোলায় ঢুকিয়ে বাস থেকে নেমে পড়ে শৈবাল। এখন সে একটা দোকানে বসে চা-সিগারেট খাবে। তারপর আবার বাসে উঠবে টাকা তুলতে। হাঁটতে হাঁটতে এমনিই একবার পিছন ফেরে শৈবাল। ভাঁজ পড়ে কপালে। তার ছ’সাত হাত পিছনে বাসের সেই প্যাসেঞ্জার হেঁটে আসছে। যে লোকটা বিশেষভাবে দেখছিল শৈবালকে। পঞ্চাশের নোট দিয়েছে যে। লোকটা কি শৈবালকে ফলো করছে? মুখ ঘুরিয়ে হাঁটতে থাকে শৈবাল। সত্যি যদি ফলো করে লোকটা, ভিড়ে হারিয়ে যেতে সময় লাগবে না শৈবালের। এ ব্যাপারে সে চিরকালই এক্সপার্ট। স্কুললাইফ থেকে লোকের চোখে ধুলো দিয়ে বেড়াচ্ছে। ফের একবার পিছন ফিরল শৈবাল, আরেঃ, লোকটা তো প্রায় ঘাড়ে এসে পড়েছে! একে একটু অন্যরকম ট্রিট করতে হবে।

আচমকা ঘুরে গিয়ে লোকটার মুখোমুখি হয় শৈবাল। থতমত খায় লোকটা। শৈবাল জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি কি আমায় কিছু বলবেন?’

‘না, মানে হ্যাঁ।’ বলে লোকটা।

শৈবাল বলে, ‘হেজিটেট করবেন না। বলে ফেলুন।’

‘না, আসলে এটা তো এপ্রিল মাস, আপনি যে ফটোটা দেখাচ্ছিলেন। বললেন আটমাস আগের। মানে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের। তখন তো শীত পড়ে না। কিন্তু ফটোতে আপনার পরনে জ্যাকেট, ছেলের গায়ে সোয়েটার।’

লোকটাকে দেখতে বোকা-সরল মনে হলেও মাথা বেশ পরিষ্কার। এই ভুলটা এর আগে কোনও প্যাসেঞ্জার ধরিয়ে দেয়নি। ব্যাপারটা যেন কিছুই না, এমন ভাব করে শৈবাল বলে, আটের জায়গায় হয়তো এগারো মাস হবে। বুঝতেই তো পারছেন ছেলেকে নিয়ে যা দুশ্চিন্তায় কাটছে, অত নিখুঁত ভাবে হিসেব রাখা সম্ভব নয়।’

‘তা অবশ্য ঠিক।’ বলল লোকটি।

শৈবাল ঘুরে দাঁড়িয়ে পা চালাল। লোকটি এবার পাশে পাশে হাঁটছে শৈবালের, লোকটাকে এড়াতে হবে। আচমকাই মিশে যেতে হবে ভিড়ে। শৈবাল তাক খুঁজছে, লোকটা বলে ওঠে, ‘আর একটা ব্যাপার বেশ আশ্চর্য লাগল।’

‘কী?’ জানতে চায় শৈবাল।

লোকটি বলে, ‘ওই ছবির আপনি আর এখনকার আপনির মধ্যে চেহারায় বিস্তর ফারাক। ফটোতে আপনাকে কত ইয়াং লাগছে। মাত্র আটমাসে বা এগারো মাসের মধ্যেই একদম ভেঙে পড়েছে শরীর।’

শৈবাল কোনও উত্তর করল না।

লোকটা নিজেই বলতে থাকে, ‘এক্ষেত্রেও আপনার কথাটাই খাটে। ছেলের চিন্তায় শরীরের অবস্থা এমন হবেই। কিন্তু আমি বলি কী, আপনার শরীর ভেঙে পড়লে ছেলের জন্য দৌড়ৌদৌড়ি করবে কে? তাই বলছি নিজের দিকেও একটু খেয়াল রাখুন।’

লোকটির কথার উত্তরে ম্লান হাসি হাসে শৈবাল। প্রসঙ্গে ইতি টানতে বলে ওঠে, ‘আমার একটু কাজ আছে কলেজ স্ট্রিটের এক দোকানে। চলি। আবার দেখা হবে কখনও।’

‘হ্যাঁ হ্যাঁ।’ বলে ঘাড় কাত করে লোকটি, এবং এগিয়ে যায়।

সংস্কৃত কলেজের দিকে ঢুকে পড়ে শৈবাল। কলেজটার গায়ে একটা ভাল চায়ের দোকান আছে। সেখানেই চা খাবে সে। একটু আগে বাসের লোকটা দুটো বড় ভুল ধরিয়ে দিয়ে গেল। কনফিডেন্স লস করেছে শৈবাল। নিজেকে দুরন্ত বুদ্ধিমান ভাবে সে। ভেবেছিল তার ফাঁদা জালে কোনও ফুটো ছেঁড়া নেই। লোকটা দেখিয়ে দিল আছে। খুব তাড়াতাড়ি দুটো জায়গা মেরামত করে নিতে হবে।

চায়ের দোকানে এসে বসল শৈবাল। দোকানটা বহু পুরনো। ভিতরে সিগারেট অ্যালাউড। সিগারেট ধরালো শৈবাল। দোকানের বয় জানে শৈবাল কড়া চা খায়, একটু পরে দিয়ে যাবে।

অন্যদিন একটা অপারেশেনর পর বেশ একটা আত্মপ্রসাদ বোধ করে শৈবাল। আজ তেমনটা হচ্ছে না। মনে হচ্ছে বাস থেকে নেমে আসা লোকটা তাকে ধরে ফেলেছে। লোক ঠকিয়ে আনন্দ পায় শৈবাল। সমাজের কত কৃতী, সফল মানুষকে বলে বলে ঠকায় সে। এ যেন একটা নেশার মতো। মদ যেমন শৈবালের নেশা, লোক ঠকানোটাও তাই।

অভ্যেসটা স্কুল থেকেই শুরু হয়েছিল। পটিয়ে পাটিয়ে বন্ধুদের টিফিন খেয়ে নিত সে। কোনও সহপাঠীর কাছে দু’পাঁচ টাকা থাকলে ঠিক হাতিয়ে নিত। কলেজে অভ্যেসটা বাড়ল। তার সঙ্গে শুরু হল নেশা করা। সব ধরনের নেশা। গাঁজা, নেশার ট্যাবলেট, কাশির সিরাপ, মদ। মা যেহেতু মারা গেছে অনেক আগে, বাড়িতে শৈবালকে শাসন করার কেউ নেই। মাথা উপর দুই দাদাকে সে পাত্তা দেয় না। বোন তাকে ভয় পায়। বাবা সকাল থেকে রাত অবধি দোকানে। শৈবালদের হার্ডওয়ারের দোকান। ছোট ছেলে বখে যাচ্ছে দেখে বাবা ছিলেন নিরুপায়। শাসন করতেন। কিন্তু শাসন মানছে কিনা দেখবে কে? শৈবালের মা নেই। তবে ওর মাথা যেহেতু ভাল, দু’মাস নোটস পড়ে আর্টস গ্র্যাজুয়েট হয়ে গেল। চেনা জানা লোক ধরে বাবা চাকরি জুটিয়ে দিলেন ছোটছেলের। এরকম দুটো চাকরি ধরে রাখতে পারল না সে। ডিউটি আওয়ার্সে মদ খায়। সুযোগ পেলেই কোম্পানি বা সহকর্মীদের থেকে টাকা হাতায়। শেষমেশ বাবা বললেন, ‘তুই আমার সঙ্গে দোকানেই বোস। আমাকে হেল্প করবি। হাত খরচা পাবি।’

হাত খরচার জন্য দোকানে বসত শৈবাল, দোকান থেকেও টাকা সরাত। কাজে এতটুকু মন নেই। সুযোগ পেলেই দোকান থেকে বেরিয়ে নেশার ঠেকে চলে যেত।

বাবার মনে হল শৈবালের বিয়ে দিলে হয়তো কিছুটা শুধরে যাবে। গরিব ঘরের মেয়ে রেবার সঙ্গে বিয়ে দিলেন। শৈবাল শোধরাল না। রোজই বাড়ি ঢুকত মদ খেয়ে। রেবার সঙ্গে খটামটি লেগেই থাকত। রেবা হাত খরচ চাইলে শৈবাল বলত বাবার কাছে চেয়ে নাও। আমাদের বিয়েটা বাবার আগ্রহে হয়েছে। মেয়েদের এমন কিছু জিনিস কেনার থাকে, যার টাকা খুব আপন লোক ছাড়া চাওয়া যায় না। চাইতে হয়েছিল রেবাকে। বাবাকে গিয়ে বলেছিল। ‘আমার একটা খুব প্রাইভেট জিনিস কেনার দরকার। আপনার ছেলে টাকা দিতে পারবে না বলছে।’

বাবা তারপর থেকে আলাদা করে হাত খরচ দিত ছোট বউমাকে। প্রকৃতির নিয়ম মেনে একসময় শৈবালও পিতা হল। নাতিকে পেয়ে শৈবালের বাবা খুব খুশি। রেবাও তার সন্তানকে নিয়ে মত্ত। ছেলেটা যখন হাঁটতে, কথা বলতে শিখেছে, তখনই একবার ওকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দিঘায়। বেড়ানোর সেই ছবি দেখিয়েই এখন লোক ঠকায় শৈবাল।

বছর কয়েক পর মারা গেল বাবা। বড় দুই ভাই দোকান ভাগ করতে বসল। শৈবালকে বলল, ‘দোকানের তো কোনও কাজেই তোকে পাওয়া যাবে না। তুই আমাদের থেকে টাকা নিয়ে তোর অংশ ছেড়ে দে।’

এর থেকে ভাল প্রস্তাব আর কী হতে পারে! টাকা নিয়ে নিজের অংশ ছেড়ে দিল প্রবাল। বাবা বেঁচে থাকতে রোজ একবার বাড়ি ফিরত প্রবাল। দোকানেও যেত। ব্যবসায় অংশ ছেড়ে দেওয়ার পর বাড়ি ফেরাও অনিয়মিত হয়ে গেল তার। বাড়ি ফিরলেই সংসার চালানোর টাকা চাইত রেবা। শৈবাল দিত না। রেবা দাদাদের আশ্রিত হয়ে গিয়েছিল।

শৈবালের তখন জীবন কাটে দু’নম্বরী লোকেদের সঙ্গে আর মদ খেয়ে। একদিন বাড়ি ফিরে দেখল রেবা ছেলেকে নিয়ে উধাও। ছেলে-বউয়ের কোনও খোঁজ নিল না শৈবাল। ভাইয়ের এমন নিস্পৃহ আচরণ দেখে বড়দা দু’দিন বাদে শৈবালকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘কীরে, কোনও খবর পেলি বউমা, পিয়ালের? আমি ওর বাপের বাড়িতে খোঁজ নিলাম। সেখানে যায়নি।’

বিরক্তির সুরে শৈবাল বলেছিল, বাপের বাড়ির লোক নিজেরাই খেতে পায় না, তারা আবার মেয়ে আর তার বাচ্চার দায়িত্ব নেবে! সেই জন্যই আমি ও বাড়িতে খোঁজ নিইনি।

‘তুই তাহলে কোথায় কোথায় খোঁজ নিয়েছিস বল’ জানতে চেয়েছিল বড়দা।

শৈবাল বলেছিল, ‘কোথাও খোঁজ নিইনি। এত বড় দেশ, এত মানুষ, দু’জন কোথায় হারিয়ে বসে আছে, খোঁজা কী এত সহজ!’

ভীষণ রেগে গিয়েছিল বড়দা। চেঁচিয়ে বলেছিল, ‘তুই কি মানুষ। পশুরাও তোর মতো নিষ্ঠুর হয় না। বউ-বাচ্চার প্রতি এতটুকু মায়া নেই!’

‘সবার সব কিছু থাকে না দাদা। এই যে তুমি আমাদের ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র কালো, হাজার চেষ্টা করেও কি তুমি ফর্সা হতে পারবে? পারবে না। তেমনই আমার মধ্যেও নতুন করে মায়া জন্মাবে না।’

ডায়লগ শুনে বড়দা মারতে এসেছিল, বলেছিল ‘দূর হয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে। ওই অলক্ষুণে মুখ আর দেখাস না।’

তখনকার মতো সরে গেলেও খুব তাড়াতাড়ি বড়দার মুখোমুখি হতে হয়েছিল শৈবালকে। বাড়ির কারুর সঙ্গে তার বাক সম্পর্ক ছিল না। ও বাড়িতে থাকা না থাকা প্রায় সমান হয়ে গিয়েছিল। তার চেয়ে ও বাড়িতে নিজের অংশ দাদাদের বিক্রি করে দিলে হাতে কিছু টাকা আসে। ভদ্রঘরের ছেলে পরিচয়টা ঘাড় থেকে নামে। বড়দাকে প্রস্তাবটা দিতে এক কথায় রাজি হয়ে গেল।

সেই থেকে শৈবাল ভবানীপুরের এক তস্য গলির মধ্যে চিলতে এক ঘরে ভাড়া থাকে। লোক ঠকানো একাধিক লাইনে কাজ করে নিজের নেশা আর পেট চালিয়েছে। কিন্তু সব কাজই একটা চক্রের মধ্যে থেকে করতে হত। স্বাধীনভাবে কিছু করা যাচ্ছিল না। এমন সময় বাসে যেতে যেতে একজনকে দেখেছিল ছেলের অসুখের জন্য টাকা তুলতে। আগেও এমন লোক দেখেছে শৈবাল, সেদিন হঠাৎ মনে হয়েছিল এই কাজটা তো দিব্যি করা যায়। কথা বলে লোক ঠকাতে যথেষ্ট পারদর্শী শৈবাল। বাসের লোকটাকে ফলো করে ফাঁকা জায়গায় ধরেছিল। বলেছিল ‘তোমার সবই তো ফলস। প্রেসক্রিপশনটা বহু পুরনো ডেটের। ব্রেন টিউমারের পেশেন্ট এতদিন বাঁচে না। এক্সরে প্লেটটা দেখছি বুকের। ওদিকে বলছ ব্রেন টিউমার। (কীসের এক্সরে নিজেও বোঝেনি শৈবাল। কথাটা বলেছিল লোকটাকে ঘাবড়ে দেওয়ার জন্য) কোথা থেকে এ সব জোগাড় করেছ বলো? নয়তো তোমাকে পুলিশে দেব।’

সহজ-সরল লোক। ভয় পেয়ে গেল চট করে। শৈবালকে বলেছিল কোথা থেকে জোগাড় করেছে এক্সরে প্লেট, প্রেসক্রিপশন। শিয়ালদার চোরা মার্কেটে কিনতে পাওয়া যায় সব। শুধু রুগিটা দিতে পারে না। কেউ যদি চ্যালেঞ্জ করে সাহায্য প্রার্থীকে, চলো তোমার পেশেন্ট দেখাও, দেখাতে নিয়ে যাওয়ার পথে যে করে হোক পালাতে হবে। এখন অবধি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি শৈবাল।

চা খাওয়া শেষ। ভাবনার মাঝে চায়ের কাপ রেখে গিয়েছিল বয়। শৈবাল চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। দোকানদারের কাউন্টারে গিয়ে পেমেন্ট করতে হবে। একটা টেবিলের দিকে চোখ যেতেই চমকে ওঠে শৈবাল, বাসের সেই লোকটা না? শৈবালের পিছন পিছন বাস থেকে নেমে এসেছিল যে?

হ্যাঁ, সেই লোকটাই চায়ের কাপ হাতে তুলে মিটি মিটি হাসছে শৈবালকে দেখে। এবার চোখের ইশারায় ডাকছে! পায়ে পায়ে লোকটার কাছে যায় শৈবাল। লোকটি চেয়ার দেখিয়ে বলে, ‘বসুন, বসুন! দু’জনের বিল এক সঙ্গে দিয়ে দেব।’

মুখোমুখি চেয়ারটায় বসার আগে শৈবাল খর দৃষ্টিতে লোকটিকে জিজ্ঞেস করে, ‘আপ‍‌নি কি আমায় ফলো করছেন?’

‘আরেঃ, না না। আপনি বসুন। বলছি কী ব্যাপার!’

শৈবাল বসে চেয়ারে। লোকটি বলে, ‘আসলে হয়েছে কী, রাস্তায় আপনার সঙ্গে কথা শেষ করে দু’পা এগোতেই আমার একজনের কথা মনে পড়ল। যিনি একটা আশ্রমের শিষ্য। অসহায় শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করে ওই আশ্রম। ভদ্রলোক ওখানে একটা বড় পোস্টে আছেন। আপনি যদি তার সঙ্গে একবার দেখা করেন, এক লপ্তে বেশ কিছু টাকা জোগাড় হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। ভদ্রলোকের কথা যখন মনে পড়ল, তখন আর আপনাকে পাচ্ছি না। গোটা কলেজ স্ট্রিট ঘুরে নিলাম। তারপর চা খেতে এখানে ঢুকেছি। কী আশ্চর্য, দেখা হয়ে গেল এখানেই! আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আপনার ভাগ্য আজ কাজ করছে। আশ্রমের এই ভদ্রলোকের কাছে আমার সঙ্গে যদি যান, পজিটিভ কিছু হয়ে যেতে পারে। তখন আর এত কষ্ট করে আপনাকে টাকা জোগাড় করতে হবে না।’

শৈবাল বুঝতে পারছে না লোকটা কোনও ভাবে তাকে ফাঁসাতে চাইছে কিনা। চা-দোকানের বয় এল। শৈবালকে জিজ্ঞেস করল, ‘আপনাকে আর এক কাপ দেব না কি?’

‘দে এক কাপ’, বলার পর শৈবাল বাসের লোকটিকে বলে, ‘আপনি হঠাৎ আমার জন্য এত করতে চাইছেন কেন বলুন তো?’

‘আপনার জন্য নয়, আপনার ছেলের জন্য। ফটোতে তো দেখলাম কী প্রাণচঞ্চল, মিষ্টি ছেলে আপনার। বাচ্চাটা হাসপাতালে শুয়ে আছে, এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে আমার।’

বয় চা দিয়ে গেল। চায়ে চুমুক মেরে শৈবাল জিজ্ঞেস করে, ‘তা আপনার সেই আশ্রম কোথায়?’

‘আশ্রম বারুইপুরে। তবে আমাদের সেখানে যেতে হবে না। যিনি টাকাটা জোগাড় করে দেবেন, তিনি থাকেন মানিকতলা। আমাদের তার বাড়িতেই যেতে হবে।’

ভাবতে থাকে শৈবাল। এই লোকটা বড়জোর কী ক্ষতি করতে পারে তার? পুলিশের হাতে তুলে দেবে। কম মেয়াদের জেলখাটার অভ্যেস আছে শৈবালের। এই চিটিং কেসেও মেয়াদ বেশি হবে না। উল্টোদিকে লোকটা যা বলছে যদি সত্যি হয় তাহলে মাসকয়েক কোনও কাজ করতে হবে না। খাওয়ার টাকা, মদের খরচ উঠে যাবে। কাপ তুলে চায়ে চুমুক মেরে শৈবাল বলে, ‘চলুন যাই মানিকতলা। ছেলেকে বাঁচানোর জন্য আমি পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে যেতে রাজি। মানিকতলা এই কাছেই।’

বাসে করে মানিকতলা মোড়ে এসে নামল দু’জন। সামান্য এই যাত্রপথে উপকারী লোকটির নাম জানা গেল, দিবাকর সামন্ত। দু’জনে এখন গলি ধরে চলেছে। দিবাকর মনে হচ্ছে এই এলাকায় প্রায়ই আসে। গলির উল্টোদিক থেকে আসা তিনজনের সঙ্গে হাসি ও কথা বিনিময় করল সে।

গলি ক্রমশ সরু হচ্ছে। শৈবাল বলে, ‘আরও কত ভিতরে বাড়ি?’

‘এই তো এসে গেছি।’ বলে পা চালায় দিবাকর।

গলি শেষ হল। সামনে ছোট পার্ক মতন। পার্কের গায়ে যে একতলা বাড়িটা আছে, গেট খুলে ঢুকল দিবাকর। গলিটা বোধহয় এ বাড়ির শর্টকাট। বারান্দায় উঠে সদরের বেল টেপে দিবাকর। খুলে গেল দরজা। কাজের লোক। দরজা খুলে দিয়ে চলে গেল মেয়েটা। দিবাকর ডাকল শৈবালকে, ‘আসুন, ভিতরে আসুন।’

চটি ছেড়ে ঘরে ঢুকল শৈবাল। অবাক গলায় দিবাকরকে জিজ্ঞেস করল, ‘আমরা এসেছি, খবরটা তো দিতে বললেন না কাজের মেয়েটাকে। তার মানে আপনার এ বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত আছে?’

মিটিমিটি হাসছে দিবাকর। বলল, ‘আপনাকে অত চিন্তা করতে হবে না। আপনি বসুন চেয়ারে।’

মধ্যবিত্তের বসার ঘর। গদি দেওয়া বেতের চেয়ারে বসল শৈবাল। দিবাকর বসেনি। ভিতর দরজার দিক মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে।

সেই দরজায় যে এসে দাঁড়াল, তাকে দেখে তড়াক করে সোফা থেকে উঠে পড়ে শৈবাল। রেবা! শৈবাল বিস্ময়ের চরম অবস্থা থেকে বলে, ‘তুমি!’

‘হ্যাঁ, আমি। এটা আমার নতুন সংসার। তোমাকে যে এখানে নিয়ে এসেছে, সে আমার প্রেমিক। তুমি ডিভোর্স দিলে আমি দিবাকরকে বিয়ে করতে পারি।’

ইতিমধ্যে নিজেকে সামলে নিয়েছে শৈবাল। বলে, ‘ডিভোর্সের জন্য অত খাতির করে বাড়িতে ডেকে আনলে কেন? নোটিশ পাঠালেই তো হত।’

‘ডিভোর্সের জন্য ডেকে পাঠাইনি। জানি চাইলেই তুমি আমায় ডিভোর্স দিয়ে দেবে। বদলে কিছু টাকা নেবে। আমি ডেকে পাঠিয়েছি তোমার পিয়ালের ফটোটা কেড়ে নিতে।’

কাঁধের ঝোলা ব্যাগটা শরীরের চেপে ধরে রাখে শৈবাল। এটাই তার রুটি-রুজি। রেবা বলতে থাকে, ‘দিবাকর তোমায় আগে একদিন ছেলের নাম করে ভিক্ষা করতে দেখেছে। একটা সুস্থ সবল ছেলেকে তুমি মিথ্যে বলে হাসপাতাল পাঠিয়েছ। অভিশাপটা যদি লেগে যায় ছেলের গায়ে? আমি তোমাকে কিছুতেই ছেলের নাম করে ভিক্ষে চাইতে দেব না।’

রেবার কথা শেষ হতেই একটা বাচ্চা এসে ওর কোমর জড়িয়ে ধরল। বাচ্চাটা পিয়াল। কত বড় হয়ে গেছে! মায়ের দিকে মুখ তুলে চোখের ইশারায় শৈবালকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কে মা?’

শৈবালের নোংরা জামা-কাপড়, এক মুখ খোঁচা খোঁচা গোঁফদাড়ির জন্য চিনতে পারছে না পিয়াল। ফের রেবাকে জিজ্ঞেস করে, ‘বলো না মা, লোকটা কে?’

রেবা শৈবালকে বলে, ‘বলো, তুমি কে, কী করে বেড়াও, কেন এসেছ এ বাড়িতে…’

পিয়ালের মুখের উপর চোখ বোলায় শৈবাল। অবিকল নিজের কিশোরবেলা। বুকের মাঝামাঝি অচেনা একটা ব্যথা টের পাচ্ছে শৈবাল। চিন চিন করছে বুকের ভিতরটা। কাঁধ থেকে ঝোলাটা নামিয়ে রাখে সোফায়। হেঁটে যায় বাইরের দরজার দিকে।

একটু পরে দিবাকর বারান্দায় আসে, দেখবে কোনদিকে গেল শৈবাল। না সে যায়নি। দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়। দিবাকর, সামান্য ধমকের গলায় বলে, ‘কী হল, এখনও দাঁড়িয়ে আছো কেন? যাও।’

নিস্তেজ কণ্ঠে শৈবাল বলে, ‘কী করে যাব এত বৃষ্টিতে? ছাতা নিয়েও আসিনি। একটু দাঁড়িয়ে যাই বরং।’

দিবাকর তো অবাক। কোথায় বৃষ্টি? চারদিকে রোদ ঝলমল করছে। পার্কের সামনে টোটো, রিকশ্‌ লোক চলাচল, সবই চালু। দিবাকর ব্যাপারটা বলতে যাবে শৈবালকে, দেখে চোখ উপচে জল পড়ছে লোকটার। রেবা বলেছিল লোকটা জীবনে কোনওদিন কাঁদেনি। দুঃখ, কষ্টর কোনও বোধই নেই তার। তাই হয়তো বৃষ্টি আর কান্নার মধ্যে গুলিয়ে ফেলেছে।

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

6 thoughts on “short-story-pashan-baari

  1. লেখকের আরও একটি অসাধারণ ছোটগল্প পড়লাম। একটাই অনুরোধ লেখকের কাছে, এই ছোটগল্প গুলোর একটা সমগ্র বের হোক।

  2. খুব সুন্দর শিক্ষনীয় একটি গল্প | লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই |

  3. ওনার প্রতিটি গল্পই এক একরকম রঙের।মাঝে মাঝে ভাবি,আমাদের জীবনে আর কত রং আছে!আর সেই সব রং সুকান্তবাবুর চোখে ধরাও পড়ে যায়।’পঞ্চাশটি গল্প’ সংকলনে পঞ্চাশটি আলাদা আলাদা রং দেখেছি।কি উপন্যাস,কি গল্প- সবই আলাদা রঙের।সেইসব রং আমাদের জীবনেরই রং।এমনকী ধূসর বা সাদা-কালোও তাঁর নির্বাচিত রঙের মধ্যেই পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *